ভালবাসা ও কর্তব্য

ভালবাসা ও কর্তব্য

ছোটবেলা থেকেই রায়নের স্বপ্ন ছিল আর্মি তে চাকরি করার।
সেই স্বপ্ন নিয়েই নিজেকে প্রস্তুত করছিল সে!!
উচ্চতা মোটামুটি ভাল ছিল সেই সাথে ব্যায়াম করে নিজের শারিরিক ফিটনেস ও দিন দিন উন্নতি করছিল সে।
তবে এখনও অনেক ধাপ বাকি আছে।
সবে তো ইন্টার ২য় বর্ষে পড়ে কিন্তু চোখে স্বপ্ন আছে সুবিশাল।
ভালই দিন চলছিল তার।
পড়াশোনা বন্ধুদের সাথে আড্ডা খেলাধুলা সব কিছু মিলিয়ে বিন্দাস লাইফ যাকে বলে।
হটাৎ করেই এক বন্ধুর সুবাদে রায়নের সাথে পরিচয় হয় স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ের।রায়ন একটু চাপা স্বভাবের হলেও খুব হাসি খুসি আর চন্চল ছিল।
আর প্রথম দেখাতেই একটু আধটু স্নিগ্ধার প্রতি ভাল লাগা কাজ করে রায়নের।
কিন্তু পরিচয় এর পর থেকে তেমন কোন কথা হয় না তাদের মধ্যে দেখা হলে একটু হায় হ্যালো আর সাথে রায়নের ফান তো আছেই।
রায়নের অভ্যাস ছিল একা একা বসে সময় কাটানোর এমনই এক বিকেলে রায়ন বসে ছিল হটাৎ তার ফোন বেজে উঠে…..
-হ্যালো।
রায়ন সাহেব??(স্নিগ্ধা)
-হুম।কে বলছেন??
(রায়ন)
-আরে বুদ্ধু আমি স্নিগ্ধা!!
-ওহ স্নিগ্ধা।
নম্বর পেলি কই??
-কেন তুই কি সেলিব্রটি যে তোর নম্বর পাওয়া যাবে না??
-নাহহ তা না!!!
কিন্তু তুই তো সেলিব্রেটি একটু কথাও কম বলিস তাই!!
-তোর সাথে একটু বেশি কথা বলি তুই জানিস না?
-হুম জানি তো!!
-গুড।
কি করিস??
-কিছু না রে।
বসে আছি!!
তুই??
-এই তো ঘুম দিয়ে উঠলাম!!
-ওহ আচ্ছা!!!

এমন কিছু টুকিটাকি কথা হয় তাদের।
প্রতিদিন ই একটু একটু কথা বলতে বলতে খুব ভাল বন্ধুত্বও হয় তাদের মাঝে!!
দেখতে দেখতে রায়নের আর স্নিগ্ধার টেষ্ট পরীক্ষা এসে যায়।
প্রতিদিন এর মতই টেক্সট এ কথা হচ্ছিল রায়ন আর স্নিগ্ধার
-কি রে কি করিস??(স্নিগ্ধা)
-কিছু না রে!(,রায়ন)
-তোর মন কি খারাপ??
-নাহহ!
বাট টেনসনে আছি!!
-কেন??
কি হইছে??
-সামনে তো পরীক্ষা কিন্তু প্রিপারেসন ভাল না।
-আরেহ!
চিন্ত করিস না।
সব ঠিক হয়ে যাবে!!
-কেমন!!??
লিখমু ক্যামনে??
-আরে পারবি।
আর এখন পক পক না করে পড় যাহহ।
-,যাচ্ছি

পরীক্ষা এসে গেল,
রায়নের পরীক্ষা ছিল বিকেলের সিফট এ আর স্নিগ্ধার সকালের সিফটে।
তাই যাওয়া আসার সময় দুজনের দেখা হত।
আর যদি দেখা না হত তবে সেদিন স্নিগ্ধা আর রায়নে দুজনেই মন খারাপ করে থাকত!!
রায়নের হলে ফোন নেওয়া এলাউড ছিল না তবুও ফোন নিয়েই যেত রায়ন।
আর স্যার দের চোখ এরিয়ে স্নিগ্ধা কে প্রশ্নের ছবি তুলে পাঠাত আর স্নিগ্ধা পাঠাতো উত্তর।এভবেই দিন চলছিল দুজনের,
কিন্তু তাদের বন্ধুত্ব আস্তে আস্তে ভালবাসায় রুপ নেই।
রায়ন আর স্নিগ্ধার ফোনে কথা না হলেও প্রায় প্রতি দিন ই ম্যাসেজ হত।
হটাৎ একদিন রাতে স্নিগ্ধার ম্যাসেজ
-রায়ন কাল একটু দেখা করতে পারবি??(স্নিগ্ধা)
-হুম পারব।কেন কি হইছে??(রায়ন)
-কিছু হয় নি!!
কিন্তু কাল একবার দেখা করিস।
তোর সাথে খুব জরুরি কথা আছে!!!
-কি কথা??
ফোনে বল!!
-নাহ।কাল ১০ টায়…… এ আসিস।
-ওকে আসব!!
-ওকে বাই গুড নাইট।



রায়ন কিছুই বুঝতে পারছিল না!!
স্নিগ্ধা কি বলতে চায়!
নানা প্রশ্ন মাথায় ঘুর পাক খায়।
তবে কি স্নিগ্ধাও ওকে ভালবাসে??
কিছু বুঝে উঠতে পারে না।
অবশেষে ঘুমিয়ে পরে রায়ন।
কিন্তু অতি চিন্তায় যা হয় আর কি!!
পর দিন ঘুম থেকে ভাঙে ১০.০৩ এ।
উঠে দেখে স্নিগ্ধার ৪৭ টা মিস কল।
তারা তারি উঠে ফ্রেস হয়ে রায়ন নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে পৌছায়।
গিয়ে দেখে স্নিগ্ধা অনেক আগেই দাড়িয়ে আছে!!
-কি করে কটা বাজে??(স্নিগ্ধা)
-এই তো ১০.৩৫! (রায়ন)
-তোর আসার কথা ছিল কখন??
-১০ টায়।
-তো ৩৫ মিনিট লেইট হল কেন??
-আসলে হইছে কি!!
ধুত তুই কি খালি জেরা করবি নাকি কোথও বসবি??
-চলে ওই বেন্চ টায় বসি!!
(বেন্চে দুজন খুব পাশা পাশি বসল)
-রায়ন!!!!
-হুম বল!!
-আচ্ছা আজ তোকে কিছু কথা বলব।
প্লিজ সিরিয়াসলি নিস!!
-হুম নিব বল!!
-আচ্ছা রায়ন!!
তোর কি আমার প্রতি কোন ফিল হয়??
-পেতনির উপর কিসের ফিল হবে রে??
-রায়ননননন 😠😠!
তোকে বলছিলাম সিরিয়াসলি নিতে।



(কথাটা বলেই স্নিগ্ধা মাথা নিচু করে মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে বসে ছিল।)
-আচ্ছা স্যরি,!
কান ধরলাম।
এখন বল!!
-নাহহ।
যা তুই তোর ফান নিয়ে!!
-স্যরি বল্লাম তো।
বল না কি বলবি??
-আচ্ছা বল তুই কি আমাকে ফিল করিস??
-হুম করি তো খুব।
কেন তুই করিস না??
-করি তো তাই তো বল্লাম।
-ওহহ।
-আচ্ছা রায়ন আমরা কি শুধু বন্ধু নাকি আরও কিছু??
-আর কি??
পেত্নি তো বন্ধুই হবে!!!
-ওহহ।
হুম তোর জন্য হয়ত কোন রাজ কন্য অপেক্ষা করছে।
আচ্ছা আমি উঠি রে।
(বলেই স্নিগ্ধা উঠে যাচ্ছিল,
তখনই রায়ন স্নিগ্ধার হাতটা ধরে একটা হ্যাচকা টান দিল।
)
-কই যাস আমাকে ছেড়ে??
-মরতে যাই।
-খাপ্পর দিমু।
আর একবার মরার কথা বললে।
-হইছে??
এখন বল হাত ধরে টেনে আনলি ক্যান??
কি বলবি??



রায়ন হাটু গেড়ে সোজা একটা ফুল নিয়ে স্নিগ্ধার দিকে বারিয়ে
-“দেখ আমি আমার জন্য কিছুই চাই না,
আমি শুধু আমার বাবুর জন্য তোমার মত একটা সুন্দর ভাল মা চাই।
তুমি কি আমার বাবুর মা হবে???”
-হুম হবো তো।
এমন আজগুবি প্রোপোজ কেউ করে??(স্নিগ্ধা)
– okk.
I LOVE U.
WILL U MARRY ME??
-YES YES.I’LL MARRY U.
(বলেই স্নিগ্ধা কাঁদে উঠে রায়ন কে জড়িয়ে ধরল)
-এই পাগলি কাঁদ কেন??
-তোমাকে পেয়েছি তাই!!
-কেন আমি কি হারিয়ে যাচ্ছি???
-হুম যদি যেতে??
আমি তোমাকে হারাতে দেব না।
-আচ্ছা আমি তোমার আছি,তোমার ছিলাম,তোমারই থাকব।
-আচ্ছ চলো একটু ঘুরি।
.



এভাবে রায়ন স্নিগ্ধার দিন গুলো খুব ভালই যাচ্ছিল।
স্নিগ্ধার একটু রাগ বেশি থাকলেও ওদের বুঝাবুঝি খুব ভাল ছিল!!
তাই ঝগড়া হলেও তা ৩০ মিনিটের বেশি স্হায়ি হত না,!!
দেখতে দেখতে পরীক্ষাও এসে পড়ল!!
পরীক্ষা গুলো বেশ ভালই হলো দুজনের।এরপর
রায়ন স্নিগ্ধা চলে গেল কোচিং।
পড়াশোনার চাপে যোগাযোগ একটু কমে গিয়েছিল,
কিন্তু কেয়ার আর ভালবাসা এক চিমটিও কমে নি!!
রায়ন আর স্নিগ্ধা দুজনেই বুয়েটে কোচিং করছিল,
এর মধ্যে রেজাল্টও এসে যায়,
দুজনের রেজাল্টও বেশ ভাল হয়।
তখনই শুরু হয় ভর্তি যুদ্ধ।
কিন্তু এর মধ্যে সেনাবাহিনীর নিয়োগ আসে ভাইস লেফটেনেন্ট পদের জন্য।
রায়নের ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনী তে যাওয়ার।
তাই সে পরিক্ষাও দিল,
আর চাকরিটাও পেয়ে গেল!!
এদিকে স্নিগ্ধাও বুয়েটে চান্স পেয়ে গেল।
এখন দুজনের পথই আলাদা কিন্তু তবুও ভালবাসা একটুও কমে নি!!
যাই হোক রায়ন চলে গেল ট্রনিং এ আর স্নিগ্ধা পড়াশোনা নিয়ে ব্যাস্ত।
যোগাযোগ প্রায় বন্ধই ছিল কিন্তু যখনই দুজন একা থাকে তখনই একে অপর কে খুব মিস করে!!
এরমধ্যে রায়নের এক কর্নেলের এর সাথে খুব ভাল পরিচয় হয়,
সম্পর্কও বেশ ভাল হয়।
রায়ন তাদের সব কথাই তার সাথে বলে!!
কর্নেল ও তাকে আস্বাস দেয় তাদের নিয়মিত যোগাযোগ করতে দিবে!!
কিন্তু একটা শর্ত আছে,
শর্তটা বেশ অদ্ভুত
যদি এক সাথে ১০০ বুকডান দেয় তবে ৩০ সেকেন্ড কথা বলতে পারবে এভাবে ২০০ দিলে ১ মিনিট
!!
রায়ন আগে থেকেই এক্সার সাইজ করত কিন্তু অত গুলো বুকডান দেওয়ার অভ্যাস ছিল না,
তবুও স্নিগ্ধার সাথে ৩০ সেকেন্ড কথা বলার জন্য সে সব করতে পারবে!
প্রথম ৩ দিন ট্রাই করল তবে ৬৬ টার বেশি পারল না!!
কিন্তু ৪ র্থ দিন আসল কাঙ্খিত মুহূর্ত ১০০ বুকডান দেওয়ার পর রায়নের খুসি কে দেখে??
সোজা দৌর দিয়ে কর্নেল এর কাছে গেল!
-স্যার ১০০ দিছি!!!(হাপাতে হাপাতে)
-ওকে ওকে!!
একটু শান্ত হয়ে বসো।
-স্যার আমি স্নিগ্ধার সাথে কথা বলব!!
-কেন আর তর সইছে না বুঝি??
-নাহহ মানে!!
স্যার!!
-হইছে আর মানে মানে করা লাগবে না!!
এই নাই ফোন,!
-থ্যাংকস স্যার!!
-ওই দাড়াও আগের ৩ দিনে ১৭৬ টা দিছিলা
তার জন্য আরও ৩২ সেকেন্ড বেশি কথা বলবা।
ঠিক ১ মিনিট ২ সেকেন্ড!!
-জ্বি স্যার!!



বলেই রায়ন হাসি মুখে অফিসার ও হাসি দিল হয়ত তাদের ভালবসা দেখে।
এদিকে রায়ন ফোন পেয়েই স্নিগ্ধাকে কল দিল!!
একটা রিং হওয়ার পরই স্নিগ্ধা রিসিভ করল!!
-হ্যলো স্নিগ্ধা!!
-রায়ন!!
তুমি কেমন আছ??
তোমাকে খুব মিস করছি!
তোমাকে ছাড়া কিছু ভাললাগে না।
(এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে স্নিগ্ধা কেঁদে দিল!!)
-এই পাগলি কেঁদ না।
মাত্র ১ মিনিট কথা বলতে পারব!!
-তুমি ভাল আছ তো??
-হুম।
তুমি কেমন আছ??
-আছি!!
কবে আসবা??
-এই তো সামনে ছুটি আছে।
আচ্ছা ১ মিনিট হয়ে গেছে।
বাই love u.
-love u too.




রায়ন ফোনটা কেঁটে দিল।
ওরও খুব কষ্ট হচ্ছিল!!
কিন্তু তবুও তো থাকতে হবে।
দেখতে দেখতে রায়নের ট্রনিং শেষ হয়ে গেল!!
রায়ন জয়েন করল চাকরিতে স্নিগ্ধাদের এরিয়াতে তাই ওর সাথে প্রতিদিনই দেখা করত!!
এভবে আরও ২ বছর কেটে গেল।রায়ন নিজের দক্ষতায় খুব ভাল র্যাংক এ চলে গেল।
স্নিগ্ধাও একজন ইন্জিনিয়ার।
তবে দুজনের ভালবাসা আগের মতই অটুট, নেই কোন অহংকার বোধ।




আজ রায়ন স্নিগ্ধার বিয়ে,
রায়ন বাসর ঘরে ঢুকলো,
কিন্তু কেমন জানি অন ইজি লাতছেল!!
যদিও স্নিগ্ধার সাথে ৫ বছরের প্রেম তবুও!!
ঘরে ঢুকে সামনে এগুতেই কেউ একজন রায়নের পা ধরে সালাম করছিল!!
-এই এই কি করো??
-কেন,?
স্বামি কে সালাম করি!!
-এই পেত্নী স্নিগ্ধাও বড় হয়ে গেল??
-ওই হারামি একদম ফান করবি না!!
এত বড় হইছিস এখনও দুষ্টামি কমে নাই??
-নাহ কমে নাই।
আচ্ছা বারান্দয় চলো!!
-ওকে চলো!!
-এই দাড়াও দাড়াও,
আমি থাকতে আমার বউ হেটে যাবে কেন??
(বলেই স্নিগ্ধা কে কোলে তুলে নিল রায়ন)
-বাব্বাহ!!
লেফটেন্ট রায়ন তো ভালই রোমান্টিক!!
-জ্বি!
ইন্জিনিয়র স্নিগ্ধা!!
আপনি আমার ভালবাসা,
আর দেশ আমার কর্তব্য।
-হুম বুঝছি সাহেব!!
এবার নামান!!
-এহহ!!
এত সহজে??
ঘুস ছাড়া নামানো হবে না!!
-কেন??
চাকরি তে তো ঘুস
খাও না!!
বউ এর কাছে ঘুস??
-হুম।
বউয়ের কাছে ঘুস চাই!!
-তো ঘুস হিসেবে কি নিবেন!!
-মিষ্টি!!!
বলেই উমমমমমাহ!!
-যাহ দুষ্ট!!
একটু ও লজ্জা নেই।
(বলেই লজ্জায় রায়নের বুকেই মুখ লুকায় স্নিগ্ধা)




এভাবেই তাদের হাসি খুসির সংসার চলছিল!!
আজ রায়ন একটু বেশিই খুসি!!
কারন আজ স্নিগ্ধার প্রেগনেন্সি পজেটিভ এসেছে!!
রায়ন বাবা হতে চলেছে!!
খুসিতে রায়ন স্নিগ্ধাকে কোলে তুলে নিল!!
-এই ছাড়ো ছাড়ো!!
-কেন??
-এমন করলে বাবুর ক্ষতি হবে।
-ওহ তাই তো!!
(বলেই রায়ন আস্তে করে স্নিগ্ধা কে নামিয়ে দিল)
-আচ্ছ বলো তো কি হবে??
ছেলে না মেয়ে???(স্নিগ্ধা)
-obiusly মেয়ে!(রায়ন)
-জ্বি না।ছেলে।
-নাহ মেয়ে!!
-ওই চুপ আমি বলছি ছেলে তো ছেলে একদম বেশি বুঝবি না।(একটু রাগি লুকে স্নিগ্ধা বলল)
-আচ্ছা মেয়ে হলে মেয়ের নাম রাখবা কি?(রায়ন)
-স্রেশা!!
-বাহ খুব সুন্দর নাম!!
-ছেলে হলে কি নাম রাখবা??
-রাই…….
বলার আগেই রায়নের ফোন বেজে উঠল!
-হ্যালো।(ওপাস থেকে)
-হ্যালো কে বলছে?(রায়ন)
-রায়ন সাহেব বলছেন??
-জ্বি আপনি কে??
-আমি কর্নেল নাসিম!!
আপনি ইমিডিয়েট ডিউটি তে জয়েন করুন।
পরিস্হিতি গুরুতর।
As soon as come our camp.
– Yes Sir.
-কে ফোন করেছে??(স্নিগ্ধা)
-কর্নেল স্যার।
এখনই ডিউটিতে জয়েন্ট করতে বলছে!!
-কিন্তু তুমি তো ছুটিতে!!
-তবুও যেতে হবে।
কোন কঠিন কাজ হয়ত।
(বলেই রায়ন রেডি হয়ে রওনা দিল)
-আমার এই অবস্থা না গেলে হয় না??
-তুমি আমার ভালবাসা,
দেশের মানুষ দের বাঁচানো আমার কর্তব্য।
আর একজন যোদ্ধার বউ এর মুখে এসব মানায় না!!
-ওকে সাবধানে যেও।



কিছু না বলেই রায়ন চলে গেল!!
সেদিন কিছু সন্ত্রাসী একটা ভবনের অনেক মানুষ কে জিম্মি করে রেখেছিল!
তাই আর্মির স্পেসাল টিম গঠন করা হয় রায়ন তার লিডার।
সেদিন রাতে বেশ গোলা গুলি হয়।
সন্ত্রাসীরা সব মারা গেলেও ৫ জন সেনাবাহিনীর অফিসার ও শহীদ হয়,
তার মধ্যে একজন রায়ন রহমান !!
স্নিগ্ধা রাতে ঘুমোয় নি সকালে টিভি তে নিউজ দেখে পাগলের মত ছুটে যায়।
গিয়ে দেখে জাতীয় পতাকা মোরানো একটি কাফিন তার মধ্যেই ঘুমোয়ে আছে রায়ন।
কর্নেল নাসিম এগিয়ে গিয়ে স্নিগ্ধার হাতে একটা চিঠি দেয়,
রায়ন নাকি ফিরে না আসলে তাকে দিতে বলেছিল।
কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠিটা খোলে স্নিগ্ধা!!
“স্নিগ্ধা,
আজ একটা কঠিন অপারেশন এ যাচ্ছি।
যানি না বেঁচে ফিরতে পারব কি না।
তবে তোমাকে একটা কথা বলে আসতে পারি নি,
“আমি তোমাকে খুব ভালবাসি”
আর হা আমি যদি ফিরে না আসি আমাদের বেবির দেখা শুনা করো কিন্তু।
আর ওকে বলবে যে ওর বাবা কত বড় দেশ প্রেমিক ছিল।
আর জিজ্ঞেস করেছিলে না?
আমাদের ছেলের নাম কি রাখবে?
ওর নাম “রাইসান” রেখো!!
এই একদম কাঁদবে না,
আজ তোমার গর্বের দিন কারন তুমি একজন শহীদের স্ত্রী!!
নিজের খেয়াল নিও।
বেশি সময় নেই অপারেশন এ যেতে হবে!!
ভাল থেকো
I love u Snigdha”
স্নিগ্ধা চিঠাটা পড়ে খুব জোরে চিৎ কার দিয়ে বলে উঠল
I LOVE U TOO RAYON

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত