বিকেলের দিকে একটু ঘুরতে বেরিয়েছি । কানে হেডফোন
 লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে হাটতাছি। বেশ ভালোই লাগছিল
 হাবিব ওয়াহিদ এর গান সাথে পড়ন্ত বিকেল।
 হঠাৎ একটা ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলাম। পিছনে ঘুরে
 দেখি একটা মেয়ে পড়ে আছে পাশে একটা সাইকেল।
 – এই ছেলে চোখে কম দেখেন নাকি?(মেয়ে)
 – কই নাতো।(আমি)
 – তাহলে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাটছিলেন কেন? আর বেল দিছি শুনতে পাননি?(মেয়ে)
 – ওহ সরি কানে হেডফোন ছিলো তো তাই শুনিনি? (আমি)
 – বজ্জাত ছেলে কোথাকার কি ব্যাথাই না পেলাম।(মেয়ে)
 – -আচ্ছা আমি না হয় কানে কম শুনি আপনি কি ব্রেক
 করতে পারলেন না।(আমি)
 – ইসস আবার জ্ঞান দিতে আসছে?(মেয়ে)
 ,
 থাক এই মেয়ের সাথে কথা বলে লাভ নেই, ঝগড়াটে একটা।
 মেয়েটাকে দেখলাম উঠার চেষ্টা করছে কিন্তু পায়ে ব্যাথা পাওয়ায় উঠতে পারছে না?
 আমি চলে আসছিলাম মেয়েটা বলল,
 – কি ছেলে রে বাবা সামনে একটা সুন্দরি মেয়ে কষ্ট পাচ্ছে
 কোথায় একটু বাড়ি পৌছে দিবে তা না হাবলার মতো চলে
 যাচ্ছে।(মেয়ে)
 কিইই আমাকে হাবলা বলল ?
 – উঠুন হাতটা বাড়িয়ে দিলাম।(আমি)
 – সাইকেলের সামনে বসবেন নাকি পিছনে?(আমি)
 – (দুষ্ট একটা হাসি দিয়ে)
 সামনে বসবো?(মেয়ে)
 – বাড়ি চিনেন তো?(মেয়ে)
 – আপনি তো আছেন দেখিয়ে দিন কোনদিকে যেতে হবে?(আমি)
 তারপর বাড়ি পৌছে দিয়ে আসলাম।বেশ মজাই লাগলো
 বেশ সুন্দরি মেয়েটা। তবে বদরাগি। আস্ত একটা বজ্জাত,
 বাড়ির সামনে এসে সাইকেল নিয়ে দৌড় দিলো আর ওখানে উঠতেই পারছিলো না।তাহলে বুঝুন কি অবস্থা হয়েছে আজ
 কালকার মেয়েদের।
 হাত মুখ ধুয়ে এফবিতে ডুকতেই চোখে পড়লো,
 মারুফের ইন এ রিলেশনশিপ এর স্টাটাস।
 সালার এতো বড় হইছি এখনো একটা প্রেম করতে পারলাম
 না। যাকগে করবো নি একদিন?
 ফেসবুক রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম।
 .
 আচ্ছা পরিচয় দেই। আমি সানভি আহমেদ সাকিব। ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি।
 .
 পরেরদিন কলেজ যাওয়ার জন্য বেড়িয়েছি। কিছুদুর যেতেই
 সেই মেয়েটার সাথে দেখা হলো?
 আমি দাড়িয়ে পড়লাম। মেয়েটা আগে যাক তারপর যাবো?
 কিন্তু মেয়েটা যাচ্ছে না দেখে আমিই চলে আসছিলাম।
 আবার একটা ধাক্কা তবে এবার সাইকেলের না। মেয়েটার সাথে ধাক্কা খেয়েছি?
 – ওই আপনার মতলব টা কি হ্যা সুন্দরি মেয়ে দেখলেই ধাক্কা
 দিতে ইচ্ছে করে তাই না?(মেয়ে)
 – আরে আমি ইচ্ছে করে কেন দিতে যাবো? আমি তো চলে যাচ্ছিলাম আপনাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তা আপনি আবার এগুতে গেলেন কেন?(আমি)
 তারপর আরেকচোট ঝগড়া।
 সব শেষে?
 – এইযে শুনুন, আপনি মোটেও সুন্দরি না। আস্ত বান্দরনি একটা?(আমি)
 – কিই আমি বান্দরনি? (মেয়ে)
 আমি যানি আবার শুরু হবে তাই চলে আসলাম, ক্লাস এর
 লেট হবে তাই আর ঝগড়া করলাম না।অবশ্য ভালোই লাগছিল। সুন্দরি মেয়েদের সাথে ঝগড়া করার মজাই আলাদা।
 কলেজ গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে ক্লসের দিকে
 রওনা দিলাম। ক্লাসে ডুকতেই আবার ধাক্কা হয়তো কেউ বাইরে যাবার চেষ্টা করেছিল কিন্তু আমি প্রবেশ করাতে
 ধাক্কা লেগে গেছে?
 তাকিয়ে দেখলাম সেই মেয়েটা। আল্লাহ আজকে কপালে
 যে কি আছে?
 – এই আপনার প্রবলেম টা কি হ্যা পেছন পেছন কলেজেও
 চলে আসছেন?(মেয়ে)
 – সরি এইটা কারো বাবার কলেজ না এখানে আমিও পড়ি
 এখানে কারো পেছন পেছন আসা লাগেনা।(আমি)
 হঠাৎ নিলা বললো,
 – কিরে তোরা ঝগড়া করছিস কেন?(নিলা)
 – আরে দেখ না এই ঝগড়াটে মেয়েটা কখন থেকে ঝগড়া
 করেই চলেছে?(আমি)
 – আরে তুই সানভিকে চিনোস না?(মেয়েটাকে বললো)
 – চিনি তো বাদর একটা?(মেয়ে)
 – বাদ দে তো আয় তোদের পরিচয় করিয়ে দেই?
 ও হলো সানভি আর সানভি ও হলো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড নিশি?(নিলা)
 তারপর চলে আসলাম মুড টাই খারাপ হয়ে গেল?
 তারপর আবার কলেজ থেকে ফিরে রাফির বাড়ি গেলাম।
 রাফি আমার বন্ধু। একটু কাজ ছিলো তাই।কাজ সেরে
 ওর বাড়ি থেকে বেড়ুতেই আবার সেই বজ্জাত মেয়ের
 সাথে দেখা।
 – আগে আপনি শুরু করেন?(আমি)
 – না আপনি শুরু করেন?(নিশি)
 – না আগের বার আমি শুরু করেছিলাম আজকে আপনি করেন?(আমি)
 – না আপনি করেন?(নিশি)
 – আচ্ছা আমরা একটা কাজ করি? আপনি আর আমি বন্ধুত্ব করি?(আমি)
 – আমার তো বন্ধুর অভাব হইছে আপনার মতো ঝগড়াটে ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করবো?(নিশি)
 – না আমি শুধু ঝগড়া না ভালো কথাও বলতে পারি?(আমি)
 – থাক আমার ভালো কথা শুনতে হবেনা।(নিশি)
 -আচ্ছা তাহলে আর কি বাই?(আমি)
 -আচ্ছা বাই।(নিশি)
 ,
 হুরর কি রকম মেয়ে এটা বন্ধু হতেও আপত্তি আছে?
 মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল?
 পরেরদিন আবার কলেজ দেখা,
 – কি মিস্টার বজ্জাত কেমন আছেন?(নিশি)
 – বজ্জাত মানে, আমার মতো ভালো ছেলে আপনি এলাকায় পাবেন?(আমি)
 – কি আমার ভালো রে? (নিশি)
 – আমি তো অনেক ভালো?(আমি)
 – বান্দর একটা? (নিশি)
 – আমি জানি আমি সুন্দর এটা আমাকে বলতে হবেনা।(আমি)
 – হ্যা আপনি অনেক বান্দর।(নিশি)
 – ধন্যবাদ। ওই কি বললেন আমি বান্দর আপনি তাহলে বান্দরনি(আমি)
 – আচ্ছা ধরুন?(নিশি)
 – কি এইটা?(আমি)
 – বাড়িতে গিয়া দেখবেন?( নিশি)
 তারপর কলেজ শেষ করে বাড়ি চলে আসলাম।
 যেহেতু বৃহস্পতিবার তাই শার্ট টা ধুয়ে দিলাম।
 রাতে মনে হলো কাগজ টা খুলে দেখি?
 কিন্তু কোথায় যেন রাখছিলাম। এইরে শার্টের
 পকেটে রাখছিলাম ভুলে গেছি এখন কি হবে?
 শার্ট টা খুজে দেখলাম একটা নাম্বার ছিলো?
 কিন্তু কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। যাকগে একটা
 দিনই তো শনিবার আবার চেয়ে নিবো?
 কিন্তু দিনটা কাটছে না। একটা দিন যেন একযুগ
 মনে হচ্ছে? মিস করছি ঝগড়াগুলোকে। তাহলে
 কি আমি ওকে ভালোবেসে ফেললাম। নাহ তা
 কি করে হয়? নাহ তাই হয়েছে? মনের বিরুদ্ধে
 যেতে পারলাম না সত্তি মেয়েটাকে ভালোবেসে
 ফেলেছি?
 দির্ঘ একটা দিন পর আজকে আবার দেখা হলো,
 – ওই কি মনে করেছেন কি হ্যা আমি কালকে
 থেকে ফোন হাতে নিয়ে বসে ছিলাম আর আপনি
 ফোন দিলেন না কেন?(নিশি)
 – কাগজ টা শার্টের পকেটে রেখেছিলাম শার্ট ধুয়ে
 দেওয়াতে ভিজে গেছে তাই? (আমি)
 – আপনি না আস্ত একটা বান্দর?(নিশি)
 – কিন্তু একটা কথা আপনি আমার ফোন ওর জন্য
 সারা রাত জেগে ছিলেন?(আমি)
 – হুমম(নিশি)
 – কেন?(আমি)
 – কারনটা বুঝে নিন?(নিশি)
 – নাহ আমি তো বুঝতে পারছি না।(আমি)
 – আপনি না আস্ত একটা স্টুপিড?(নিশি)
 – নাহ কিছুই বুঝতে পারছি না একটু বলবেন? (আমি)
 – পারবোনা।এই যে আমার নাম্বার রাতে ফোন দিয়েন? (নিশি)
 বলেই হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল।
 আমি বসে বসে ভাবছি আর হাসছি কিভাবে কি হয়ে
 গেল?
 নাহ কালকে বলে দিবো নইলে আবার পাখি খাচা ছেড়ে
 চলে যাবে?
 রাতে ফোন দিলাম,
 – হ্যালো?(আমি)
 – হুমম বলেন?(নিশি)
 – কি করছেন?(আমি)
 – ভাবছি?(নিশি)
 – কি? (আমি)
 – কালকে একজন আমাকে প্রোপোস করবে ভাবছি এক্সেপ্ট
 করে নিবো?(নিশি)
 – কিইইই? (আমি)
 – হুমম অবাক হচ্ছেন?(নিশি)
 – নাহ অবাক হবো কেন?(আমি)
 – আচ্ছা রাখি ?(নিশি)
 – কালকে একটু দেখা করতে পারবেন? (আমি)
 – কোথায়????(নিশি)
 – যেখানে প্রথম দেখা হয়েছিল?(আমি)
 – আচ্ছা।(নিশি)
 তারপর ফোনটা রেখে ভাবতে লাগলাম কিভাবে বলবো।
 ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
 সকালে উঠে নাস্তা করে বেড়িয়ে পড়লাম।
 আমি গিয়ে কাউকে পেলাম না।বসে থাকলাম কিছুক্ষন
 20 মিনিট পর নিশি আসলো?
 – এতো লেট কেন?(আমি)
 – কাজটা সেরে আসলাম।(নিশি)
 – কি কাজ?(আমি)
 – সেটা আপনার না জানলেও চলবে, আপনি কি বলবেন বলেন?(নিশি)
 – নাহ কিছু না ভালো থাকবেন?(আমি)
 চলে আসছিলাম,
 – এইযে শুনুন(নিশি)
 – জি বলুন?(আমি)
 – ভালোবাসেন? (নিশি)
 – হুমম কিন্তু আপনার বি এফ?(আমি)
 – ওইটা মিথ্যা ছিলো?(নিশি)
 – মানে?(আমি)
 – ওইটা আপনার মুখ থেকে শোনার জন্য বলছিলাম? তাওতো বলতে পারলেন না গাধা একটা।(নিশি)
 – আমি তোমাকে ভালোবাসি ?(আমি)
 – নাহ এভাবে হবে না। একশ একটা গোলাপ ফুল দিয়ে প্রোপোস করতে হবে নইলে রিজেক্ট?(নিশি)
 দৌড়ে গেলাম ফুল আনতে কিছুদুর যেতেই একটা ফুলের দোকান পেয়ে গেলাম।নিয়ে আসলাম একশ একটা ফুল।
 ,
 – নিশি তুমি কি আমার স্বপ্নের রাজকন্যা হবে? হবে কি নিশি রাতের সাথি কথা দিচ্ছি কখনো তোমার হাতটা ছাড়বো না।
 তুমি কি আমাকে ভালোবাসবে?(আমি)
 নিশি দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো আর বলল,
 – ভালোবাসি তোমাকে? (নিশি)
 – ভালোবাসি তোমার এলোমেলো চুলগুলোকে তোমার চোখের কাজল হতে ইচ্ছে করে?(আমি)
 – থাক এতো রোমান্টিক হতে হবে না।( নিশি)
 – তাহলে চলো যাই?( আমি)
 – কোথায়??(নিশি)
 – দুর এক অজানায় যেখানে কেউ আর?(আমি)
 কথাটা শেষ হতে না হতেই একটা মেয়ে আমাকে ধাক্কা
 মারলো ,নিশির দিকে তাকিয়ে দেখলাম রেগে আগুন
 হয়ে গেছে?
 মেয়েটা সরি বলে চলে গেল?
 আমি নিশির দিকে তাকাতেই,
 – ওই এখন থেকে যদি ধাক্কা খেতেই হয় তাহলে আমার সাথে
 খাবা ওকে?(নিশি)
 – আচ্ছা। ( আমি)
 – অবশেষে আবার একটা ধাক্কা। কিন্তু এর পর আর বলা
 যাবে না।।
 ** ধাক্কা থেরাপি **
 
  
 Loading...
Loading...













