অসমাপ্ত প্রেমের গল্প

অসমাপ্ত প্রেমের গল্প

অরিন>> হ্যালো অভিঅভি
>> শুনতেছি বল,
অরিন>> কোথায় তুই?
অভি>> বাসর রুমে বউর সাথে গল্প করছিঅরিন
>>কি (কিছুটা রাগি সুরে) ভার্সিটিতে আসিস নাই কেন?
অভি>> আমি ভার্সিটিতে যাই না সকালে। দুপুর গেলো বিকেল গেলো এখন রাত ১১.৪৫ এখন তুই আমার খোজনিলি।?
অরিন>>ফোনে ব্যালেন্স ছিলো না সে জন্য ফোন করতে পারি নাই।।
কেন তুই তো একবারও ফোন দিলি না।নিজে দেয় না আবার অন্যকে বলে।
অভি>> কোটিপতি বাবার মেয়ে যদি বলে তার ফোনে ব্যালেন্স নেই তাইলে আমার মতো মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলের ফোনে কি ভাবে থাকবে???
অরিন>> এ তুই না একটু বেশি কথা বলিস। রাতে খাইছস???
অভি>> হুম। আচ্ছা ফোনটা রাখ আমার একটু কাজ করতে হবে। বলেই ফোনটা কেটে দিলো অভি তার কোন কাজ নেই ঘুমাবে সে অভি ঘুম পাগল মানুষ।
অভি গ্রামের মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান ঢাকা এসে পড়াশোনাকরে হিঃবিঃ তে অনার্স করে।অরিন বোড় লোক বাবার একমাত্র মেয়ে।ভার্সিটিতে পরিচয় হয় দুজনের তারপর বন্ধুত্বঅরিন অভিকে অসিম ভালোবাসে কিন্তু বলে না।অরিন চায় অভি বলবে।__________
অরিন>>আজকে ক্লাস করবি অভি??
অভি>>> কেন আজ কি তোর দাদার মৃত্যু দিবস নাকি যে ক্লাস করবো না।
অরিন>> চুপ কর (ধমকের সুরে) তুই বেশি কথা বলা বন্ধ করনা হয় ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
অভি>> (চুপ)
অরিন>> আজকে আমার ভালো লাগে না, তাই ভাবলাম ক্লাশ নাকরে আজকে ঘুরবো। চলনা দুজনে ঘুরি আজকে সারাদিন ঘুরবো।
অভি>> তাইলে সে জন্য এতো তাড়াতাড়ি তলব করলি।
অরিন>> হেসে দিয়ে হুম চল অভি একটা গান শুরু করলো……বন্ধু যখন বউ লইয়া আমার বাড়িড় সামনে দিয়ারঙ্গ কইরা হাইট্টা যায় ফাইট্টা যায় বুকটা ফাইট্ট যায়….
অরিন হটাৎ দাড়িয়ে গেলো রেগে তাকিয়ে আছে অভির দিকে অরিনের দাড়িয়ে থাকা দেখে অভি গানটা বন্ধ করেদিলো।।।।।।
মুচকি একটা হাসি দিলো
অরিন>>> এইটা কি গান গাইলি? এটা কোন গানের মধ্যে পরে।এই গানের চল আছে কোন লোক শুনে এই গান?
অভি>> পাগল নি কোন। এর চাইতে সুন্দর কোন গান হয়, এটি বেশি শোনে কারা জানস।
এটা বেশি শুনে যারা পড়াশোনা শেষ করে চাকরিও পায় না বউও পায় না। অথছ তার পাশের বন্ধুরা বিয়ে করে তার বাড়ির সামনে দিয়ে বউনিয়ে যায়।। হিহিহিহি
অরিন>>> তোরতো কোনটাই এখন প্রয়োজন নেই।তো তুই কেন গাইলি?
অভি>>এইতো আর ৪বছর তারপর তো শেষ তখন তো জানি আমার চাকরিও হবে না ঠিক সময়ে বউও পাবো না। আমিতো আর মোটা অংকের ঘুস দিতে পারবো না। বর্তমানে তো ঘুস ছাড়া চাকরি হয় না
অরিন>> আগে তো পড়াশোনা শেষ কর। তারপর এই চিন্তা।চল আমরা ওই যায়গাতে বসি।
অভি সারা সময় অরিনের সাথে দুস্টামি করেই থাকে
অভি>>> অরিন
অরিন>> হুম
অভি>> চল আমারা পালিয়ে বিয়ে করি
অরিন>>দেশে কি ছেলের অভাব পরছে যে তোকেবিয়ে করতে যাবো।।।
অভি>> এএএ আমার মতো ছেলে পাওয়া তোর ভাগ্যের ব্যাপার,তুই জানিস আমাদের বাসার পাশের কত মেয়ের বাবা মাতাদের মেয়ে আমার সাথে বিয়ে দিতে পাগল।
কিন্তু আমি করি না (কিছুটা বুক ফুলিয়ে)
অরিন>>>করে ফেল তাড়াতাড়ি না হয় পরে মেয়ে নাও পেতে পারিস। হিহিহিহিহিহিহিহি
অভি>>না তোকে করবো। এবং আমি ৮০০ সন্তানের বাবা হবো তুই মা হবি বলেই হেসে আবার বলে আমারা বিশ্বরেকর্ড করবো চারদিকে আমাদের নাম ছড়িয়ে যাবে
অরিন>>মনের অজান্তেই হেসে দিয়ে বললো তোরমতো বানরকে আমি বিয়ে করবো মাথা নস্ট
অভি>>> হাগল নি কোন। আমাকে বাংলা ছবির পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর একবার বলছিলো যে তোমার চেহারা তোঅনেক সুন্দর তুমি নায়ক হতে পারবা। আমি বলছি না আমি নায়ক হবো না তাহলে বাংলার হিরোরা ফকির হয়ে যাবে।।।
অরিন>>> হাহাহাাহাহাহাহাহাহাহাহাাহাহোহোহোহোহোহোহোহোহোহোহো এই চেহারায়আয়নায় কখনো নিজক। দেখেছিস? তোকে তো বিলেন হিসেবেও নিবে না।
অভি>>> দেত তোর সাথে কথাই বলবো না।
অরিন>>> হাহাহাহাহাহাহা অভি প্রচুর ক্ষুদা লাগছেরে কিছু নিয়েআয়।।
অভি>> টাকা নাই তোকে খাওয়ানোর কোন ইচ্ছা নাই
অরিন>> কোন দিন তোর টাকা ছিলো। আর কোন দিন আমাকে তুই খাওয়ালি??হুম আজ পর্যন্ত অভি অরিনকে দশ টাকার বাদাম ছাড়া কিছুই খাওয়ানি,যাই হোক না কেন প্রতিদিন অরিনই বিলটা দেয়। তারপরেও তার মাঝে কোন বিরক্তির ছাপ নেই কোন হিংসার ছাপ নেই হয়তো এটাই ভালোবাসার রুপ
অরিস>>> এই নে টাকা ভালো দেখে বার্গার ছুমুছা আর স্পিডনিয়ে আয়।
অতপর অভি নিয়ে আসলো অরিন খাচ্ছে কিন্তু অভি মুখ ফুলিয়ে বসে আছে অরিন সেটা কিছুসময় পর সেটা খেয়াল করলো
অরিন>> কি ব্যাপার নায়ক সাহেব আপনি খাচ্ছেন না কেন?
অভি>> খাবো না!
অরিন>> কেনো রাগ করছেন। নাকি খাইয়ে দিতে হবে?বলেই অরিন তার হাতের ছমুছাটা অভির মুখের ভিতর দিয়েদিলো।
অভি>> আচ্ছা অরিন তুইকি আমাকে সত্যি ভালোবাসিস?
অরিন>>> কেনো? হটাৎ এই প্রশ্ন কেনো
অভি>>না এমনি জানতে ইচ্ছে হলো।।
অরিন>> না (মিথ্যা)
অভি>> আমারো তাই মনে হইছিলো। আচ্ছা আমি যদি কখনো দূরে কোথাও চলে যাই তুই কি কস্ট পাবি?
যেখান থেকে আসার আর কোন সুযোগ নেই
অরিন>> তুই চলে গেলে আমি কস্ট পাবো কেন?(ফানকরে)
অভি>>হুম সেটাই তো। জানিস আমি একদিন চলে যাবো বহুদূর আর আসবো না তুই সত চেস্টা করেও আনতে পারবিনা আমাকে এবং সেই দিনটা বেশি দূরে নারে (আকাশের দিকে তাকিয়ে)
অরিন>>> তোকে কোথাও যেতে হবে না সারা জীবন আমার কাছে রেখে দিবো এখন চল বাসায় যাবো১.০০ বাজে
তারপর দুজন চলে আসে।বিকালে অরিনের কেন জানি বারবার অভিকে ফোন দিতে ইচ্ছে করে একটু কথা বলবে তার সাথে। অভিকে কেনজানি বলতে ইচ্ছে করছে তোকে অনেক ভালোবাসি অভি। অরিন ফোন দিলো কিন্তু অভি ফোন তুলছে না প্রায় ২০ মিনিট পর রিসিভ হলো
অরিন >>ওই কুত্তা হারামি বান্দর শয়তান ফোন রিসিভ করস নাকেন???
ওপাশ>> সরি আমি অভি না তার বন্ধু দুপুরে হটাৎ অভির কি যানো হইছে দুপুরে কোই থেকে যেনো এসে হটাৎ বিছানায় পরে যায় আর প্রচুর রক্ত ভুমি হয়। আমরা এখন হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি
অরিন>> কি। আপনি কি বলছেন এসব?
ওপাশ>> হুমম ঠিকই বলছি আপনি হাসপাতালে চলে আসেন(বলেই ফোনটা কেটে দিলো)
অরিনের চোখ দিয়ে পানি পরছে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো একটা সিএনজি নিয়ে চলেগেলো হাসপাতালে বারবার চোখের পানি মুছে অভির কিছু হয়ে গেলে আমি বাচবো না। কি নিয়ে বাচবো কাকে নিয়ে বাচবো কি করেরে বাচবো কিন্তু এতক্ষনে অভি নেই চলেগেছে না ফেরার দেশে।
অভির এই রোগটা সেই ছোট বেলা থেকেই কোন সমাধান দিতে পারে না ডাক্তারএবং আজও বাচিয়ে রাখতে পারলো না অভিকে ।
তার বন্ধুরা তার বেডের পাশে দাড়িয়ে আছে কারো মুখে কোন কথা নেই সবার চোখ দিয়ে পানি পরছে অরিন দৌড়ে এলো রুমে
অরিন>> অভি কোথায়
বন্ধু>> চুপ
অরিন>> কি ব্যাপার চুপ করে আছেন কেন অভি কোথায়(চিতকার করে)একজন হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে দেখিয়ে দিলো অরিন দেখলো সাদা কাপড় দিয়ে ডাকা একটা লাশ অরিনের বুজতে বাকি রইলো না কি হইছে সাদা কাপড়টা উঠিয়ে চিৎকার করে কেদে দিলো কি হইছে তোর অভি এইতো আমি দেখ আমি এসেছিতোর কিচ্ছু হবে না।
তুই উঠ অভি আমার সাথে ঝগড়া করবি না আমাকে রাগাবি না এই আমি দুপুরে যাওয়ার পথে তোর জন্য একটা শার্ট কিনছি তুই জানতে চেয়েছিলা না আমি তোকে ভলোবাসি কিনা আমি তোকে প্রচুর ভালোবাসিরে অভি তোকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখিরে তুই রাগ করে আছিস অভি রাগ করিস না উঠে আয় অভি আমরা গল্প করবো তুই ৮০০ সন্তানের বাবা হবি না?
আমি রাজিরে রে তোর বউ হতে আমি তোকে আর রাগাবো না
অভিকে ধরে চিৎকার দিয়ে বলে যাচ্ছে অরিন জোরে জোরে নারছে অভিকে অভির বন্ধুদের চোখে বৃস্টির মতো পানি যাচ্ছে অরিনের এই অবস্থা দেখে নার্স এসে অরিনকে টেনে আনতে চেস্টা করলো কিন্তু অভিকে ছাড়ছে না অরিন শুধু চিৎকার করে করে বলে কিরে অভি তুই এতো
বেইমান হয়ে গেলি আমার কথা তুই শুনছিস না।অরিনের চিৎকারে মানুষের ভির জমে গেলো।অরিন হাসছে শুধু হাসছে চারদিক অন্ধকার নেমে আসছে।৩ দিন পর অরিনকে এখন শিকল দিয়ে বেধে রাখতে হয় রুমের ভিতর।শুধু হাসে আর বলে অভি আমি তোর বউ হবো ।
…………………………………………সমাপ্ত …………………………………………

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত