হ্যালো, এই যে, আপনাকে। জী আপনি, আপনি থেকে তুমি, তুমি থেকে তুই, তুই থেকে বেশী বেশী তুই। ইরা কে তুই বলে ডাকার ইচ্ছে সানির কোন দিনই ছিল না। তবু ইরা এক সময়ে তুই হয়ে যায়। তুই থেকে বেশী বেশী তুই। সম্পর্ক তুই তে নিয়ে যাওয়া যদি কোন গুনের কাজ হয়, তবে ইরা সেই কাজে গোল্ড মেডেল পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। অল্প সময়ের ব্যবধানে কাউকে বন্ধু বানিয়ে ফেলার অসম্ভব ক্ষমতা আছে ইরার মাঝে। মানুষ কে কাছে টানার ক্ষমতা সবার থাকে না, ইরার আছে।
ইরা কে সানি মাঝে মাঝে তুমি বলে ডাকত। ইরা কেমন করে তাকিয়ে থাকত। ইরা বলত, “কিরে প্রেমে পড়েছিস নাকি, সাবধান আমার প্রেমে পড়লে জীবনটা শেষ হয়ে যাবে”। ইরার কাছে বন্ধু মানে তুই, তুই মানেই বন্ধু। বন্ধুরা কেউ তুমি বলে ডাকলে ইরার কাছে প্রেম প্রেম মনে হত। সানি ইরার শুধু একজন বন্ধু নয়, একজন তুমি হতে চাইতো। ইরা কে সানি প্রতিদিন কোন না কোন ভাবে তুমি বলতে চাইতো। ইরা কে তুমি বলতে গেলে সানির গলা শুকিয়ে আসতো, কথা জড়িয়ে আসতো।
তিন জুলাই ইরার জন্মদিন। ছয় বছর আগে ইরার জন্মদিনে সানি একটা দামী গিফট দেয় সাথে একটা চিরকুট। সেই চিরটুকে লিখা ছিল, “আমি তোর তুমি হতে চাই”। চিরকুট পড়ে সন্ধ্যে বেলা ইরা একটা SMS দেয়, “তুই একটা গাধা”। ইরা একজন তুই কে সহজে গাধা বানিয়ে দিতে পারে। সানি গাধা হয়ে থাকল, রাগ করার চেষ্টা করল। কিন্তু পরের দিন ইরা এতো সহজ ভাবে সব ভুলিয়ে দিল যে সানি সত্যি গাধা হয়ে গেল। ইরা শুধু মানুষ নয় একটা গাধাকে ও সহজে বন্ধু করে ফেলার ক্ষমতা রাখে। গাধা সানি ইরার উপর কোনদিনই রাগ করতে পারেনি।
ইরা এখন লন্ডনে, ইংরেজি ভাষার শহরে। এই ভাষায় তুই, তুমি, আপনে আলাদা শব্দ নেই। সবই তুই, সবই তুমি। ইরা সবার সাথে এখন “You” বলে কথা বলে। কাকে তুই বলে, আর কাকে তুমি বলে, তার আলাদা অস্তিত্ব ইরার ভেতরে থাকে। এই ভাষায় যে কেউ ইচ্ছে করলেই ইরাকে তুমি বলে দিতে পারে। সেইসব “You”এর মাঝে ইরা একজন তুমি খুঁজে নিবে। বাকী সব “You” রা হয়ে যাবে “তুই”, হয়ে যাবে “গাধা”। তুই আর গাধারা ইরার উপর রাগ করতে পারে না। তারা ইরার ভালো বন্ধু হয়, ইরার জন্মদিনে শুভেচ্ছা পাঠায়। সানিও আজ ইরা কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠাবে। ক্ষুদে বার্তার নিচে লিখবে, “Your গাধা”। সানির কাছে এই “You” এর এক অর্থ আর ইরার কাছে অন্য অর্থ। একই শব্দের দুটো অর্থ আর দুটো অনুভূতি নিয়ে দুই পৃথিবীতে দুটো মানুষ বেঁচে থাকবে।