–সরুন এটা আমার জায়গা।(একটা মেয়ে)
রাসেল বাসে একটা সিটে বসে ছিল।জানালার কাছে।একটা মেয়ে এসে উপরের কথাটি বলল।
–জি, আপনার ভূল হচ্ছে।এটা আমার সিট।আপনার সিট নাম্বারটা দেখুন?(রাসেল)
–ওহ সরি।আপনি যদি কিছু মনে না করেন তবে একটা কথা বলি?(মেয়েটি)
–আমি বুঝতে পারছি কি বলবেন।আসুন বসুন এখানে।(রাসেল)
মেয়াটা খুশিই হলো।
–আপনাকে ধন্যবাদ।(মেয়েটা)
–জি শুকরিয়া।(রাসেল)
–আপনার নামটা জানতে পারি?(মেয়েটা)
–আমি রাসেল আহম্মেদ।আপনি?(রাসেল)
–আমি কেয়া আক্তার।(কেয়া)
যাক মেয়েটার নাম জানতে পারাগেল।এবার রাসেলের পরিচয়টা দিই।রাসেল এবার মাধ্যমিক পাশ করেছে।এ+পেয়েছে সে।তাই কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য শহরে যাওয়া তার।একটা ভাল কেলেজে সুযোগ হয়েও গেছে।এখন শুধু যেয়ে ভর্তি হওয়ার পালা।
–আপনি কি করেন?(কেয়া)
–মাধ্যমিক পাশ করছি এখন কলেজে ভর্তিহতে যাচ্ছি(রাসেল)<কলেজের নামটাও বলল সে>
–আরে আমিওতে ওখানেই যাচ্ছি।ভালই হল আগেই একজন বন্ধুু পাওয়া গেল।(কেয়া)
–হুমমমম।ভালই হলো।(রাসেল)
পুরাটা রাস্তা তারা আরও অনেক কথা বলল।যতটুকু জানা গেল তা হল কেয়ার বাড়ি রাসেল পাশের গ্রামে।মেয়েটা অন্য স্কুল থেকে পরিক্ষা দেওয়ায় তারা একে অপরকে দেখার সুযোগ পাইনি।প্রায় ৪ঘন্টা জার্নির পর তারা গন্তব্যে পৌছায়।কলেজে ভর্তির পর ক্লাস শুরু হয়।তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সৃষ্টি হয়।কলেজে তারা প্রায় সময় একই সাথে থাকে।সবার ধারনা তারা প্রেম করে।।কিন্তু তারা দুজন ভাল বন্ধু ছাড়া আর কিছুই ভাবেনা।দুজন অনেক দুষ্টামি করে।তবে কেয়া রাসেলের উপর একটু বেশিই নির্ভরশীল।তারা দুজনই কাছাকাছি দুটো ম্যাচে থাকে।কেয়ার কিছু দরকার হলেই রাসেলকে সেটা জানায়।রাসেল সেই প্রয়োজনটা মিটায়।কেয়া আস্তে আস্তে রাসেলকে ভালবেসে ফেলে।তবে জানায় না এই ভয়ে যদি তাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায়।এভাবে অনেকটা সময় পার হয়ে যায়।কলেজ বন্দ পড়ায় দুজনই বাড়ি যাবে ঠিক করলো।সব কিছু ঠিক করে তারা রওনা হল বাড়ির উদ্দেশ্যে।দুজন দুজনকে একদিনও না দেখে থাকেনি।এখন এই কয়টা দিন কিভাবে কাটাবে তারা।বাসের ভেতর দুজন অনেক কথা বললো।বাস থামলো তার গন্তব্যে।দুজন এখন আলাদা দিকে হাটা শুরু করলো।দুজনের মনে এখন একটাই টান অনুভূত হচ্ছে।এই টানটাই কি তাহলে ভালবাসার টান।দুজন পিছনে ফিরে তাকালো।একে অপরকে শেষ বারের মত দেখলো।তারপর যে যার বাড়ি চলে গেল।রাত অনেক হয়ে গেছে।কিন্তু কারও চোখে ঘুম নেই।একটাই চিন্তা কিভাবে রাতটুকু পার হবে।কেয়াতো আগে থেকেই রাসেলকে ভালবাসে।এবার রাসেলও সেটা অনুভব করতে শুরু করলো।অনেক কষ্টে রাত পর হলো।সকাল বেলা উঠে রাসেল আর দেরি করলো না।সোজা কেয়াদের বাসায় রওনা দিল।কেয়ার কাছ থেকে তাদের বাড়ির ঠিকানা নিয়েছিল অনেক আগেই।কেয়াদের বাড়ির কাছে যেয়ে কেয়াকে কল দিল রাসেল।রাসেলের কল পেয়ে কেয়া ছুটে আসলো।দুজন দুজন কে দেখে একটু প্রশান্তির নিশ্বাস নিল।এভাবে তারা যতদিন বাড়িতে ছিল ততদিন এভাবে দেখা করত।কিন্তু কেও কাওকে এখনো ভালবাসার কথা জানাইনি।ছুটির সময় ও শেষ হয়ে আসলো।দুজন বাড়ি থেকে কলেজের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়লো।একই বাসে পাশাপাশি তাদের সিট।ঠিক সেইদিনটার মত যেদিন তাদের ১ম দেখা হয়।আজকে দুজনই চুপ।এই কয়দিনে দুজনই বুঝতে পেরেছে তারা একে অপরকে ভালবাসে।বাস চলতে শুরু করলো।দুজন এখনো চুপ।নিরবতা ভেঙ্গে কেয়া আগে কথা বলল
–চুপ কেন(কেয়া)
–এমনি(রাসেল)
–তুমি আমাকে ওভাবে প্রতিদিন দেখতে আসতে কেন?(কেয়া)
–আসলে…না….মানে….ইয়ে……(রাসেল কিছু বলতে পারছেনা)
এদিকে কেয়া হেসে উঠলো।এই হাসিতে রাসেল আরও পাগল হয়ে উঠলো।নাহ আর দেরি করা ঠিক হবেনা।
–কি দেখ এমন ভাবে?(কেয়া)
–কিছু একটা হারিয়ে ফেলছি।তাই খুজছি(রাসেল)
–কি হারালে।মনটা নাতো?(কেয়া একটা দুষ্টু হাসি দিলো)
–হুমমমম।মনটাই হারিয়েছি।(রাসেল)
দুজন হেসেই চলেছে।বাসটাও তার আপন গতিতে চলছে।
–কেয়া একটা কথা বলবো?(রাসেল)
–বলো(কেয়া)
আসলে কেয়াতো চাইছে যেন রাসেল তাকে ভালবাসার কথাটা বলে।এটাই হতে চলেছে
–কেয়া আমি বলি আমি তোমাকে ভালবাসি আমাকে ফিরিয়ে দিবেনাতো। এই বুকের ভেতর খুব যত্ন করে রাখবো।অনেক অনেক ভালবাসা দিব,তোমার চলার সঙ্গী হব,সারা জীবন হাতটা ধরে রাখবো।দেবে আমাকে সেই সুযোগ।(রাসেল)
–<কেয়া কেঁদে দিল>এটাইতে সে চাইছিলো।রাসেল তাকে পরম মমতায় বুকে টেনে নিল।তাদের গল্পটা শুরু হল এই এক্সপ্রেসের ভেতর।এটাইতো লাভএক্সপ্রেস।বাসটা তার আপন গতিতে ছুটে চলেছে আর তাদের ভালবাসাও সেই গতিতে চলার জন্য প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়েছে তারা।বেঁচে থাকুক তাদের এই ভালবাসা।এমন হাজারো ভালবাসা প্রতিনিয়ত চলছে।আমরা তাদের জন্য শুভকামনা করবো।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা