– এই তুই এখানে বসে আছিস কেন??
– তোমার জন্য জান।
– এই দেখ ফাজলামো করিস না
– কেন জান আমি কি তোমার জন্য অপেক্ষা করতে পারি না???
– না পারিস না। তুই রিপার জন্য অপেক্ষা করসি তাইনা??
– হ্যাঁ, তো জানিস যখন জিজ্ঞেস করলি কেন।
– ওকে বাবা ভুল হয়ে গেছে মাফ কর।
অতক্ষণ মৌ আর মৃনাল এর মধ্য কথা হচ্ছিল। মৌ আর মৃনাল খুব ভাল বন্ধু। কিন্তু মৌ মৃনাল কে ভালবাসে, সেটা মৌ আজও মৃনাল কে বলেনি।
– দেখ মৃনাল রিপা তোর জন্য ঠিকনা। ও তোর সাথে খালি টাইম পাচ করে, ও তোকে ভালবােসনা। তুই ওর সাথে রিলেশন করিস না কষ্ট পাবি। (মৌ)
– তাই তো আমি কষ্ট পেলে তোর কি আসে যায়।( মৃনাল)
– আমার আসে যায়, কারণ,( মৌ)
– কারণ কি বল,?? (মৃনাল)
– আমি বলতে পারবনা। ( মৌ)
– না তোকে বলতেই হবে, আমি যাকে ভালবাসি সেই রিপাকে নিয়ে তোর এত কেন চিন্তা, তাছাড়া আজনা তুই প্রায়ই এই কথা বলিস। তোকে আজ বলতেই হবে, মৃনাল জোর জবরদস্তি করে মৌ এর ওপর, মৌ একটা থাপ্পড় দিয়ে মৃনাল কে বলে,
– কারণ আমি তোকে ভালবাসি আজ থেকে না পাঁচ বছর আগে থেকে আর আমি তোকে সেটা বলতে পারেনি।
– অতক্ষণ মাথা নিচ করে ছিল, বলল সে জন্য আমি কারো সাথে প্রেম করলে তোর জ্বালা হয়। সেজন্য রিপার মত একটা ভাল মেয়ের সম্পর্কে বাজে কথা বলতে তোর একটুও মুখে আটকালো না। আমি তোকে আমার বেস্ট বন্ধু ভাবি আর তুই,,। (মৃনাল)
– , দেখ তুই আমাকে ভুল বুঝছিস আমি তোর ভালোর জন্য বলছি রিপা মেয়েটা ভাল না ও তোকে কষ্ট দেবে, আমি তোকে সত্যিই খুব ভালবাসি মৃনাল । (মৌ)
– তুই আর একটা কথা ও বলবি না আমি তোর কোন কথা শুনতে চাইনা আর পারলে তোর মুখ আমাকে আর দেখাস না,
এই বলে মৃনাল ওখান থেকে চলে গেল, এদিকে মৌ সব কিছু হারিয়ে কাঁদতে লাগল।………….
“মৃনাল রাস্তা দিয়ে বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় দেখল রিপা আরেকটা ছেলের হাত ধরে ঘুরে বেরাচ্ছে, তখন মৃনাল রিপাকে কল দিয়ে শুনল ও কি করছে, রিপা বলল ও এখন ক্লাস করছে। এই কথা শুনে মৃনাল আর রাগ ধরে রাখতে পারলনা। তখনি রিপার সামনে গিয়ে দুই গালে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে বলল,
এই তোমার ক্লাস। তোমার জন্য আজ আমি আমার প্রিয় বন্ধু কে হারালাম, তাকে কত খারাপ খারাপ কথা বলছি শুধু তোমার জন্য, এই বলে আরও কয়েক টা থাপ্পড় দিয়ে মৃনাল ওখান থেকে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল। তখন মৃনাল এর শুধু মৌ এর কথা মনে পড়তে লাগল, সেজন্য মৌ এর কাছে মাফ চাওয়ার জন্য ছুটে গেল, কিন্তু যাওয়ার পথে মৃনাল একটা বাস এর সাথে একসিডেন্ট করল। মৌ কাঁদতে কাঁদতে ওই পথ দিয়েই যাচ্ছিল, তখন খেয়াল করল রাস্তার পাশে অনেক লোক জড় হয়েছে। দেখল মৃনাল এর বাইক রাস্তার পাশে পরে রয়েছে, মৌ রিকশা থামিয়ে দেখল মৃনাল একসিডেন্ট করে পড়ে আছে আর তার দেহ থেকে প্রচুর রক্ত পড়ছে। মৌ দৌড়ে গিয়ে মৃনাল কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে হাসপাতালে নিয়ে গেল… “””মৌ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে মৃনাল এর সব বন্ধুকে খবর দিল, মৃনাল এর শরীর থেকে অনেক রক্ত বেড়িয়ে গিয়েছিল সেজন্য অনেক রক্তের দরকার ছিল, কিন্তু ওই সময় হাসপাতালে ওই গ্রুপের কোন রক্ত ছিল না। মৃনাল এর রক্তের গ্রুপ আর মৌ এর রক্তের গ্রুপ একছিল। তাই মৌ ডাক্তার কে তার থেকে রক্ত নিতে বলল। মৌ মৃনাল কে রক্ত দিয়ে বাচিয়ে দিল। কিছুক্ষণ পরেই মৃনালের সব বন্ধুরা চলে আসল। মৃনাল কে ভাল হতে দেখে মৌ ওখান থেকে বেরিয়ে চলে গেল। কিছুক্ষণ পরে মৃনাল এর হুস ফিরে এল। মৃনাল এর সব বন্ধুরা তাকে দেখার জন্য ভিতরে আসল। মৃনাল শুনল তোরা কিভাবে জানলি আমি একসিডেন্ট করছি আর আমাকে হাসপাতালে কে নিয়ে আসল??
মৃনাল এর বন্ধুরা বলল, মৌ আমাদের খবর দিল আর এসে দেখি মৌ তোকে রক্ত দিচ্ছে। ওই তো তোকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। মৃনাল এসব শুনে কান্না আর ধরে রাখতে পারল না। “”মৃনাল কান্না কান্না কন্ঠে বলল,
– মৌ কোথায়????
মৃনাল এর বন্ধুরা বলল তোকে রক্ত দেওয়ার পড় ওকে তো আর দেখিনি।মৃনাল অস্থির হয়ে উঠল মৌ এর সাথে দেখা করার জন্য। মৃনাল মৌ এর মোবাইলে ফোন দিল কিন্তু ফোন বন্ধ। মৃনাল মৌ এর এক বান্ধবীর সাথে কথা বলে জানতে পারল মৌ একটু পড়ে ট্রেনে করে ওদের গ্রাম এর বাড়ি চলে যাবে । “”””মৃনাল সেই অবস্থায় train station চলে গেল গিয়ে মৌ কে খুজতে লাগল দেখল মৌ একপাশে বসে কাঁদছে। মৃনাল মৌ এর পাশে গিয়ে বসে পড়ল। মৃনাল কে দেখে মৌ ওখান থেকে উঠে যাচ্ছিল মৃনাল মৌ এর হাতটা ধরে
-আমাকে একা রেখে চলে যাচ্ছ মৌ।
– কেন তুমি তো আমার মুখ দেখতে চাউনা সেজন্য আমার মুখ যেন না দেখতে হয় সেজন্য আমি চলে যাচ্ছি।
– চলেই যখন যাবে তাহলে আমাকে তোমার রক্ত দিয়ে বাচালে কেন। please মৌ আমাকে মাফ করে দাও, তুমি ঠিক বলেছিলে রিপা মেয়েটা ভালনা। প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও। আমিও তোমাকে খুব ভালবেসে ফেলেছি প্লিজ আমাকে একা রেখে চলে যেওনা।এরই ভিতর ট্রেন চলে এসেছে,
– মৃনাল আমার হাত ছাড় আমার দেড়ী হয়ে যাচ্ছে, আর তুমি তো কখনো আমাকে ভালবাসোনি আর আমি তোমার কে যে আমাকে ভালোবাসবা আর আমার মুখ ও তো তুমি দেখতে চাউনা। সেজন্য আমার চলে যাওয়াই ভাল। প্লিজ আমার হাত ছাড়
– ঠিক আছে মৌ
, এই বলে মৃনাল মৌ এর হাত ছেড়ে দিল। মৌ ট্রেনে ওঠার জন্য হাটা দিল। পেছন থেকে মৃনাল বলল, ঠিক আছে যাও কিন্তু তুমি যে রক্ত দিয়ে আমাকে বাচালে সেই রক্ত আমি আমার শরীর থেকে বের করে দিতে চাই। এই বলে মৃনাল দেয়ালে মাথা জোরে জোরে আঘাত করতে লাগল।মৌ পেছন ফিরে দেখল মৃনাল এর মাথা থেকে রক্ত পড়ছে। মৌ দৌড়ে গিয়ে বলল
– কি করছ তুমি এমন করলে তে তুমি মারা যাবা।
– আমি মারা গেলে তোমার কি আসে যায়।
মৌ মৃনাল কে থামিয়ে মৃনাল এর গালে দুইটা ঠাসসসস করে চড় দিয়ে জামার কলার ধরে কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে, আমার আসে যায় আমি যে তোমাকে অনেক বেশী ভালবাসি, এই বলে মৌ কাঁদতে কাঁদতে মৃনাল কে জড়িয়ে ধরল,
মৃনাল ও মৌ কে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল আমিও তোমাকে খুব ভালবাসি আমি তোমাকে ছাড়া বাচবোনা মৌ তুমি আমাকে কোনদিন ছেড়ে যেওনা, গেলে আমি সত্যি সত্যি মারা যাব,, মৌ মৃনাল কে থামিয়ে দিয়ে বলে কোনদিন আর এ কথা মুখে আনবানা, মৃনাল আবার মৌ কে জড়িয়ে ধরে আদর করতে লাগল…
…………………………………………………. সমাপ্ত………………………………………..