মেয়েটা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পাড়া-মহল্লার কোনো ডাক্তারই রোগটা ধরতে পারছে না। ওষুধ-বড়ি কিছুই কাজে আসছে না। হোমিওপ্যাথি এলোপ্যাথি সব শেষ। একজন খবর দিল ওমুক শহরে এক বয়োবৃদ্ধ হেকিম আছেন। তিনি আগে শিরা ধরে রোগ নির্ণয়া করতে পারেন। এখন বয়স হয়েছে চোখে দেখতে পান না। আপাতত: ঘরেই থাকেন। বাইরে কোথাও জান না। তাকে একবার এনে দেখা যেতে পারে।
অভিভাবকরা পরামর্শ করে হেকিম সাহেবকে আনার ব্যবস্থা করলেন। মেয়েটা তখনও অর্ধচেতন। প্রায় সংজ্ঞাহীন। হেকিম সাহেব শিরা ধরে বুঝতে পারলেন, মেয়ের শরীরে শরীরে কোনো রোগ নেই। সম্পূর্ণ নিরোগ। কিন্তু মেয়েটা বড়ই নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। চোখ গর্তে ডোবে গেছে। কোনও রকম বেঁচে আছে। এভাবে চললে কিছুদিনের মধ্যে মারা যাবে।
হেকিম সাহেব যৌবনে এ এলাকাতেই চিকিৎসা করতেন। তাই তার এদিকের সব ঘরবাড়ি চেনা আছে। তিনি মেয়েটার কানের কাছে এক এক করে শহরের বিভিন্ন মহল্লার কথা উচ্চারণ করলেন। অভিভাবকরা অবাক। বুড়ো হেকিম পাগল হয়ে গেলেন না তো!
হেকিম সাহেবের চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। তিনি এবার ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়ির নাম উচ্চারণ করতে শুরু করলেন। একটা বাড়ির নাম আসতেই মেয়ের পালস রেট আরো বেড়ে গেল।
হেকিম সাহেব এবার এক এক করে সে বাড়ির বিভিন্ন যুবকের নাম বলতে শুরু করলেন। অনেকক্ষণ পর, একটা নাম শোনার সাথে সাথে মেয়ের পালস রেট সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গেল।
হাত ছেড়ে দিয়ে মুখ ফিরিয়ে তাকিয়ে বললেন,
মেয়েকে অমুক বাড়ির অমুক ছেলের সাথে বিয়ে দাও। সব ঠিক হয়ে যাবে। আর এ পুরিয়াটা খাইয়ে দাও। এক ঘন্টা পরেই সে চেতনা ফিরে পাবে। তখন মেয়ের মা তাকে বিয়ের সংবাদটা দিবে। তাহলে কোনো ওষুধ লাগবে না।