পালিয়ে বিয়ে

পালিয়ে বিয়ে

সুহাদা:- আজকে ১২ টা অনলাইন থাকবে তুমি!!
রাসেদ:- আজকে তো সম্ভব না।
সুহাদা:- আমি কিছু জানি না। থাকতে বলছি থাকতে হবে।
না হলে আমি রেগে যাবো বলে দিলাম।
রাসেদ:- তুমি রাগ করো না প্লিজ আমি আসবো ১২ টা অনলাইনে।
এই বলে রাসেদ কথা শেষ করে ফোন কেটে দিলো।
সরি তাদের পরিচয় দিতে ভুলে গেছি রাসেদ হলো সুহাদা বয় ফ্রেন্ড আর সুহাদা হলো রাসেদ গার্ল ফ্রেন্ড।
এই তো কিছু দিন আগে তারা একে ওপরকে ঠিকমত চিনতো না।
কিভাবো চিনলো জেনে নেই আসেন।
সুহাদা যখন ফেসবুক প্রথম খুলে ঠিক তখনই সে ভাবছে সে প্রথম একটা ছেলে কে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিবে।
তার Find Friend মধ্যে প্রথম যে ছেলে ছিল তাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিলো।
দিতে না দিতে ওই পাশ থেকে একসেপ্ট করে ফেললো।
আমার মনে হয় অপেক্ষা ছিল একটা মেয়ের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট জন্য ছেলেটা,,,, (বেচারা)।
সুহাদা:- আসসালামু অলাইকুম।
রাসেদ:- অলাইকুম আসালাম।
সুহাদা:- আপনি কেমন আছেন?
রাসেদ:- আপনি কি আমাকে চিনেন?
সুহাদা:- না কেন??
রাসেদ:- তাহলে যে বললেন আমি কেমন আছি??
আপনি জেনে বা কি করবেন??
সুহাদা:- হয়েছে কি আমি আজকে প্রথম ফেসবুক আইডি খুলছে।
আর আপনি আমার প্রথম বন্ধু হয়েছেন তাই আমি চেয়েছি যে আপনার সাথে কথা বলি।
রাসেদ:- ভালো করছেন।
ঠিক আছে তো আমরা পরিচয় হয়ে নেই আগে তারপর না হয় জিজ্ঞাসা করা যাবে কে কেমন আছে।
অনেকক্ষণ কথা বলে একে ওপরে অনেক কিছু জেনে গেছে।
প্রতিদিন কথা হতো তাদের।
৮ মাস কথা বলার পর।
তাদের আপনি থেকে তুমি তে নেমে আসে।
মেয়েটা ছেলেটার সাথে প্রতিদিন কথা বলার জন্য ব্যাকুল ছিল।
ছেলেটা কম ছিল না মনে হয় একে ওপরে চোখের মত । যা না থাকলে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়।
ঠিক তেমনে এক জনের সাথে অন্য জন কথা না বললে সামনে কিছু দেখে না।
ইতিমধ্যে তাদের আপনি থেকে তুমি তে চলে আসছে।
বলতে পারেন একপ্রকার attraction লাভ।
হঠাৎ একদিন তাদের কথা মধ্যে,,,,
রাসেদ:- তোমার ফোন নাম্বার টা দিতে পারবা?
সুহাদা:- কি করবা?
রাসেদ:- তোমার সাথে কথা বলব।এর বেশি কিছু না।
সুহাদা:-দিতে পারতাম কিন্তুু কথা বলতে পারবো না।
রাসেদ:- তাহলে আমার সাথে কথা বলো কি করতে??
সুহাদা:- তুমি রাগ করো কেন? আমি কথা বললে আমার পরিবার দেখতে পেলে অনেক খারাপ হবে।
তুমি একটু বুঝার চেষ্টা করো।
রাসেদ:- কি বুঝবো আমি কিছু বুঝি না যা বুঝার তুমি বুঝ।
সুহাদা:- আচ্ছা বাবা ঠিক আছে আমি নাম্বার দিচ্ছি।
রাসেদ:- লাগবে না আমার।
সুহাদা:- প্লিজ বাবু রাগ করে না।
আমি সরি বললাম তো বাবু এই যে আমার ফোন নাম্বার ০১৬৩২……….!
ফোন নাম্বার পর দেখা হয় তাদের এবং অনেক বার তারা দেখা করে।
যা বলে রাসেদ সব কথা পাগলীর মত মেনে নেয় সুহাদা।
সুহাদা রাসেদ কে ছারা কিছু ভাবতে পারে না।
কথা আছে না ভালোবাসা অন্ধ করে দেয়।
সম্ভবত সুহাদার সেই রোগ দেখা দেছে।
কিছুদিন পর রাসেদ Birthday চলে আসলো।
এই প্রথম সুহাদা করো birthday wish করতে যাচ্ছে।
সে অনেক গুলো ইনজেকশন সিরিজ দিয়ে Happy Birthday লিখে একটা পিকচার তুলে রাখছে।
আপনারা ভাবতাছেন ইনজেকশন সিরিজ দিয়ে কেন??
সুহাদা নার্সিং পড়া পরে।
তারপর ঠিক ১২:০০ অনলাইন সুহাদা আসে।
কোকিল কন্ঠে নিজের সুরে নিজের লেখা গান এই প্রথম রাসেদ কে গেয়ে শুনাইলো।
রাসেদ কে সবার আগে Wish করল।
ঠিক ১২:০০ টা।
রাসেদ পুরাই অবাক যে সুহাদা তার জন্য এত কিছু করছে আর করবে না কেন তার গার্ল ফ্রেন্ড বলে কথা।
রাত কেটে গেল কথা বলে দুজন দুজনার।
সকাল ঘুম থেকে রাসেদ বাবা ডেকে দিয়ে বলল।
বাবা:- তোমার সাথে কথা আছে রুম থেকে বের হয়ে আসো।
রাসেদ রুম থেকে বের হয়ে অবাক হয়ে গেল তার পুরো বাড়ি সাজানো আর তার জন্য নতুন একটা মোটর সাইকেল অপেক্ষা করছে।
রাসেদ খুব খুশি হয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলো।
বাবা:- ওয়েট ওয়েট তোমার জন্য আর একটা গিফট আছে।
রাসেদ:- বাবা আর একটা গিফট? কোথায় সে গিফট?
বাবা:- তিথি মা একটু এইদিকে আসো।
এই হচ্ছে তোমার গিফট।
রাসেদ:- বাবা ঠিক বুঝলাম না তিথি গিফট মানে?
বাবা:- এই আমাদের ঘরের বউ হবে।
আজকে তিথিকে আংটি পড়িয়ে দিবি।
এই কথাশোনা মাত্র রাসেদ সব খুশি মুহূর্ত মধ্যে শেষ হয়ে গেল।
রাসেদ কিছু না বলে চুপ করে দাড়িয়ে রইলো।
এবং আংটি পড়িয়ে দূরে চলে আসলো।
দিন যেতে রাত চলে আসলো আর সুহাদা ফোন বাজতে লাগলো।
সুহাদা ফোন ধরতে ওই পাশ থেকে কন্ঠ শুনে বুজতে পারলো রাসেদ মন খারাপ।
সুহাদা:- কি হয়েছে তোমার?
রাসেদ:- আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি তোমাকে ছারা কিছু কল্পনা করতে পারি না।
সুহাদা:- কি হয়েছে তোমার কেউ কিছু বলছে?
রাসেদ:- আব্বু আমার বিয়ে ঠিক করেছে তিথির সাথে আমার খালাতো বোন।
সুহাদা:-,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, ,জবাব নাই।
রাসেদ:- আমি কি করবো কিছু বুঝতেছি না।
আমি তোমাকেই চাই আবার আমার পরিবার খুশি দেখতে চাই।
আমি এখন কি করবো কিছু বুঝতাছি না।
সুহাদা:-,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, জবাব নাই।
এইভাবে অনগোল কথা বলতে লাগলো রাসেদ।
সুহাদা:- তোমার কাছে যা ভালো মনে হয়।
আমি তোমাকে ছারা কখনো মানতে পারবো না।
কিছু সমধান পায় নাই কথা বলে অনেক রাত হয়ে যাওয়ার কারনে ফোন কেটে দেয়।
রাসেদ শুতে যাবে ঠিক তখনই রাসেদ দাদি।
রাসেদ:- দাদী তুমি এখানে?
দাদী :- দাদু ভাই তুই আমার কাছ থেকে এত বড় একটা জিনিস লুকিয়ে রেখেছিস।
রাসেদ:- দাদী ভয় বলতে পারি নাই।
দাদী :- আমি যা বলি তুই তাই করবি।
আমার কথা শুন আমার সিলেট একজন পরিচিত ভাই থাকে আমি তার নাম্বার দিয়ে দিবো তোকে তুই ফোন যোগাযোগ করে চলে যাবি আমি সব বলে দিবো আর বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রথম কাজী অফিস গিয়ে বিয়ে করে নিবি।
রাসেদ:- কিন্তুু দাদী বাড়িতে সবাই,, ( কথা শেষ না করতেই)
দাদী :- আমি দেখবো বাড়িতে কি হয়!
তোরা কালকে বিয়ে করে সিলেট পালিয়ে যা।
রাসেদ:- ঠিক আছে দাদী,,,,,,, উম্মা।
দাদী:- হয়েছে হয়েছে এখন শুয়ে পর।
কালকে আবার সকাল উঠে রওনা দিবি।
এই বলে দাদী চলে গেল।
রাসেদ আবার ফোন দিলো সুহাদাকে।
সুহাদা:- কিছু উপায় হয়েছে?
রাসেদ:- দাদী থাকতে কোন ঝামেলা নাই।
কাল তুমি সকাল ৯:০০ টা যে জায়গা দেখা করি সেখানে আসবা।
তারপর বিয়ে করে সিলেট চলে যাবো হানিমুন করতে।
সুহাদা:- সত্যি।
রাসেদ:- সত্যি সত্যি সত্যি।
ফোন রেখে প্রহর গুনতে লাগলো কখন সকাল হবে।
সকাল হতে হতে ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে গেল।
দুজন দেখা করল তারপর কাজী অফিস গেলো বিয়ের জন্য সাক্ষী যা যা দরকার ছিল সব আগে থেকে হাজির হয়ে আছে কারন রাসেদ ফোন দিয়ে তার বন্ধুদের আগে থেকে বলে রেখেছিল।
কাজী :- শুভ কাজে দেরি করতে নাই।
১০ মিনিট মধ্যে বিয়ে হয়ে গেল।
বন্ধুদের বিদায় জানিয়ে বাস উঠলো।
তারা দুজন আপন মনে সিলেট চলে যেতে লাগলো।
আর যেতে যেতে একে ওপরে জরিয়ে মনের অজান্তে হাওয়া বাসতে লাগলো।
দাদী নিজ হাতে চিঠি লিখে বলল রাসেদ লিখে গেছে।
অন্য দিক দিয়ে বাড়িতে কান্না শুরু করে দিলো রাসেদ দাদী আমার দাদু ভাই তোদের জন্য ঘর ছারতে হলো।
তোদের নামে আমি কেস করবো।
আর হে ভালো হয়েছে আমার দাদু ভাই তোদের কে ছেরে অন্য কোথায় সুখে থাকবে মেয়েটাকে নিয়ে।
দাদী অভিনয় ভালোই কাজ করেছে রাসেদ আর সুহাদা ভালোবাসা মেনে নিয়ে সুহাদা কে ঘরের বউ বানিয়ে নিল।
তাদের সাংসারিক জিবন অনেক সুখে কাটুক আমরা সবাই দোয়া করি আমিন।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত