অবুঝ ভালবাসা

অবুঝ ভালবাসা

স্মৃতি : এই হিমু তুমি নাকি একটা মেয়েকে তোমার ফোন নাম্বার দিয়েছো?
হিমু : কি? এসব তোমায় কে বললো?
স্মৃতি : আমার এক ছোট বোন। তুমি নাকি ওর বান্ধুকে তোমার ফোন নাম্বার দিয়েছো?
হিমু : ও এই বেপার। আরে আমার নাহ। আমার এক ফ্রেন্ডএর সাথে রিলেশন ছিলো হালকা হইছে আমি আবার জোরা লাগানোর চেষ্টা করছিলাম।
স্মৃতি : তাই বলো…….
হিমু : বুঝলাম তবে তোমায় কে উল্টা-পাল্টা বলছে আমার নামে আমি তাকে দেখতে চাই।

তারপর স্মৃতি সেই মেয়েটিকে দেখালো।

হিমু : দ্যাখো স্মৃতি আমি ওই মেয়েকে একদম ছারবো না। আমার নামে বাজে রিপোর্ট। দাড়াও ওকে যে আমি কি করি।
স্মৃতি : এই হিমু খবরদার ওকে কিছু বলবে না। ও আমার খুব প্রিয়। ছোট বোনের মতো।

তার কিছুদিন পর হিমু ও স্মৃতি বসে গল্প করছিল।

স্মৃতি : আমিতো তেমার বেষ্টফ্রেন্ড তাই না?
হিমু : হুমম, অবশ্যই।
স্মৃতি : তাহলে তুমি তেমার গার্লফ্রেন্ড এর কথা বলো না কেন?
হিমু : আরে পাগল আমার গার্লফ্রেন্ড থাকলেতো বলবো তোমায়।
স্মৃতি : তেমার ফ্রেন্ডরা তো প্রেম করে অথচ তুমি কর না।
হিমু : নাহ,,,,ও হ্যা ভাল কথা তুমি একটা খুজে দাও নাহ প্লিজ মাই ফ্রেন্ড।
স্মৃতি : আরে বোকা আমি কি করে খুজে দেবো। তুমি চয়েস্ করো তারপর আমি আছিই তো।

তার কয়েকদিন পর হটাৎ এক সময়।

হিমু : আচ্ছা তোমার ছোট বোনের মতো ওর নাম কি ?
স্মৃতি : রিমু।
হিমু : রিমু কি কারও সাথে সম্পর্ক করে ?
স্মৃতি : কি জানি আমি জানি না। মনে হয় নাহ।
হিমু : তুমি আজকে রিমুকে আমার কথা বলবে কেমন।
স্মৃতি : ওকে ঠিক আছে মাই ডিয়ার ফ্রেন্ড।

তারপর হিমু পরের দিনটার জন্য অধির আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছিলো। পরের দিন সকালে স্মৃতির সাথে হিমুর দেখা হলো।

হিমু : কি তুমি রিমুকে বলেছিলে আমার কথা?
স্মৃতি : হুমমম…..
হিমু : কি বলছে বলো আমায় তারাতারি ?
স্মৃতি : কিছুই বলেনি ।
হিমু : মানে? 😖😖😖
স্মৃতি : মানে আমি রিমুকে বলেছি তেমার কথা। ও হ্যা না কিছুই বলেনি ।
হিমু : এটা কি বললে তুমি। যাও তারাতারি শুনে এসো।
স্মৃতি : তুমি এত অধৈর্য হচ্ছো কেন? তুমিতো এ রকম না । আমি কালকে তেমায় জানাবো কেমন ।
হিমু : হুমমম……

তারপরে কয়েকদিন একই ভাবে চলে গেলো। এক সময়,

হিমু : এইটা নাও। আমার ফোন নাম্বার তুমি আজকেই রিমুকে দেবে। আমি হ্যা না ওই কাছ থেকেই শুনতে চাই, আমি চললাম আমার কাজ আছে।

সেইদিন বিকেলে হিমুর ফোনে অচেনা নান্বার থেকে ফোন। হিমু কিছু বুঝে উঠতে না পেরেই ফোনটা রিসিভ করলো। আর তখনই ফোনে ভেসে উঠলে এক বালিকার কন্ঠ। হিমুর বুঝতে বাকি রইলো না ফোনটা ছিল রিমুর। সেই দিনটা ছিল ২৯ এপ্রিল। সেই দিন থেকে হিমু আর রিমুর প্রেম শুরু হলো। তাদের একটানা ১৪ দিন কথা হলো। তারপর একদিন হিমু রিমুর ফোন অনেক্ষন waiting পেল। আর পরে হিমু খুব রাগ হয়ে রিমুকে গালাগালি করে। তাদের মাঝে ঝগরা হয় । পরে হিমু অভিমান করে রিমুকে ফোন না দিয়ে রিমুর ফোনের অপেক্ষায় ছিলো। কিন্তু রিমুও হিমুকে ফোন দিন না। হিমু মনে অনেক কষ্ট পেল। তখন তার হৃদয় কষ্টে আর অপূর্ন রইলো না। হিমু কষ্ট পেয়ে ২/৪ দিন ফোন দেয়নি। কিন্তু কয়েকদিন পর হিমু আর পারছিল না। তাই রিমুকে একটা এসএমএস পাঠায় এসএমএস টা ছিলো-

“প্রতিটা বাগানে লেখা থাকে ফুল ছেড়া নিষেধ”
যদি ভালবাসার মাঝেও লেখা থাকতো “কারো মন ভাঙা নিষেধ”, তাহলে পৃথিবীটা সত্যি অন্য রকম হত…!!

তারপর রিমু ফোন দেয় আর তাদের মাঝে বোঝাপরা করে নেয়।
তারপর বেশ কিছু দিন পর যেকোনো কারন বশত তাদের মাঝে একে অপরের প্রতি অবহেলা সৃষ্টি হয় ।
এবার আর হিমুও খুব একটা ভেঙ্গে পরে না। তারপর বেশ কিছুূদিন পর এক সন্ধায় হটাৎ রিমুর ফোন।

হিমু : কি হয়েছে? ( একটু রেগে)
রিমু : তুমি এভাবে কথা বলছো কেন?
হিমু : আরও কি ভাল করে বলতে হবে। এতদিন কই ছিলা। কি মরছিলা?
রিমু : আসলে আমি একটু সম্যসার মধ্যে ছিলাম।

তারপর হিমু রাগ করে ফোন কেটে দেয়।

তার কিছুক্ষন পর হিমুর এক বন্ধু ফোন করে। আর তার প্রেমের সম্পর্কে কথা বলে। সে হিমুকে সাবধান করে রিমুর থেকে কেটে পরতে। সে আরও বলে রিমু একটা বাজে টাইপের মেয়ে।

যাই হোক, তারপর হিমু রিমুকে ফোন দেয়। কিন্তু রিমু ফোন ধরছিলো না। কয়েকবার ফোন দেবার পর রিসিভ করলো।

হিমু : এ তোর কি হইছে রে?
রিমু : কিছু হয়নি।
হিমু : তোর নামে এসব কি শুনলাম আমি?
রিমু : কি শুনেছো?
হিমু : তুই নাকি বাজে টাইপের, কয়েক জনের সাথে সম্পর্ক করিস। আর তোর বাড়িতে কি হইছিল কালকে ?
রিমু : তোমায় কে বলেছে এসব?
হিমু : সেটা তোর জেনে লাভ নেই। আমি যা শুনলাম তা কি সত্যি?
রিমু : না সত্যি না।
হিমু : তাহলে সত্যিটা কি বল?
রিমু : গত ১ সপ্তাহ্ আগে আমার বিয়ে ঠিক হইছিলো।
হিমু : কি……?? তারপর…..??
রিমু : আমার কাজিন এর সাথে আমার ছোটবেলায় সম্পর্ক ছিলো।
হিমু : তারপর?
রিমু : সে আমার বিয়েটা আটকে দেয়। তাই নিয়ে একটু ঝামেলা হইছিলো।
হিমু : তোর কাজিন বিয়ে আটকাইছে। তার মানে তোদের সম্পর্ক এখনও আছে?
রিমু : আরে না তুমি এটা কি বলছো। আমি শুধু তোমায় ভালবাসি শুধু তোমায়।
হিমু : কি করে বুঝবো?
রিমু : আমি তোমার কথা বাড়িতে বলেছি। বিয়ে করতে হলে তোমাকেই করবো।

এবার আবার তাদের প্রেমটা গভীর হয়। এভাবে কিছুূদিন চলে যায়। বেশ কিছুদিন পর হটাৎ রিমুর ফোন,,,,

হিমু : হ্যালো ।
রিমু : আজ আমি তোমায় একটা সিরিয়াসলি একটা কথা বলতে চাই।
হিমু : তারাতারি বলে ফেলো ।
রিমু : তুমি কি আমায় এ অবস্থায় বিয়ে করতে পারবে?
হিমু : হটাৎ বিয়ে। কি হয়েছে বলবেতো আমায়।
রিমু : তুমি শুধু বলো বিয়ে করতে পরবে কি না ।
হিমু : তুমি কি বলছো জানো, বিয়ে আমায় একটু ভাবতে দিবা তো না কি ।
রিমু রাগ করে ফোন কেটে দিলো। ২ মিনিট পর আবার ফোন দিলো,
রিমু : কি ভাবলে?
হিমু : আরে ২/৪ দিন টাইম দাও। তারপর বলি।
রিমু : তুমি এখন বিয়ে করতে পারবে কি না বলো। একটা কথা ভাল করে শুনে রাখ, তোমায় ভালবাসি বিয়ে করলে তোমায় করবো না করলে বিষ খাবো 😎😎😎😎

বলেই ফোনটা কেটে দেয়। আর হিমুর নাম্বার ব্লাকলিষ্ট,,,,,,
হিমুতো এবার পুরোই Null…… 😜😜
তারপর রিমুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। এভাবে বেশ কিছু দিন অতিবাহিত হয়। তারপর একদিন জানতে পারে হিমুর সাথে প্রেমের আগে তার এক বন্ধুর সাথেও নাকি রিমুর প্রেম ছিলো। তারপর আরও ২ জনের কথা জানতে পারলো। তখন হিমুর সেই বন্ধুর কথা মনে পরলো যে হিমুকে সাবধান করেছিল। তো একদিন রাতে রিমুর একটা এসএমএস আসে। লেখাছিল, ” আমি তোমাকে সত্তিই ভালবেসে ছিলাম। কিন্তু তুমি অন্য কাওকে ভালবাসো। তুমি যদি আমায় বিয়ে না করো আমি বিষ খাব ” হিমু রেগে ফোন দেবার চেষ্টা করলো। পারলো না। কেননা তার নাম্বারটা ব্লাকলিষ্ট ছিলো। তাই হিমু রিপ্লাই করে, ” স্যরি, কে তুই। তোকে আমি চিনিনা “।

তারপর মাঝে মাঝেই এই রকম ডিষ্টাব করতো রিমু হিমুকে। একদিন হিমু তখন একটা ঝামেলার মধ্যে আবার সেই ডিস্টাব। হিমু ফোন দেবার চেষ্টা করলো। ওই যে ব্লাকলিষ্ট। তো হিমু রেগে তার বন্ধুর ফোন নিয়ে ফোন দিল। রিমু ফোন রিসিভ করা আর ডাইরেক গালি। কেননা হিমু খুবই রেগে ছিলো। রিমু ফোনটা কেটে দেয়। হিমুও ট্রাই করেই জাচ্ছিলো। রিমু আর ফোন ধরছিলো না। সবশেষে রাতে ফোনটা রিসিভ করলো,,,,

রিমুর মা : হ্যালো কে?
হিমু : আরে আপনিই কে? আপনার মেয়ে রিমু কই?
রিমুর মা : বাবা তোমার কোথাও ভূল হচ্ছে। রং নাম্বার মনে হয়।
হিমু : আরে নাহ। আমি ঠিক নাম্বারেই দিয়েছি। আপনার মেয়েকে ফোনটা দিন।
রিমু : হ্যালো,,,,
হিমু : ওই কুত্তার বাচ্ছা কি শুরু করছিস হ্যা। আমার মতো কতো ছেলেকে নষ্ট করেছিস। কি ফাজলামি শুরু করছিস। তুই আমাকে ঠিক মতো চিনিস না এখনও। যে খেলা শুরু করছিস তুই তা শেষ করবো আমি। তোর এমন হাল করবো যাতে আর কোন ছেলের সাথে এই রকম ফাজলামি করার সাহস না হয় ।।
আরও অনেক কিছু,,,,,

তার পরের দিন হিমুর সেই সাবধান করা বন্ধুর সাথে দেখা হলো। সে বলল, হিমু শুনেছো, রিমুর আজকে বিয়ে। হিমু প্রথমে শুনে খুশি হলেও পরে কিছুটা দূঃখ হয়। তার বুঝতে বাকি রইলো না যে রিমু একটু বাজে টাইপের হলেও শেষে হিমুকে সত্যিই ভালবেসে ছিলো–

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত