হিন্দু মেয়ের মুসলিম ছেলের সার্থক প্রেমের কাহিনী

হিন্দু মেয়ের মুসলিম ছেলের সার্থক প্রেমের কাহিনী

আমি: এই শ্রাবণী শোনো

শ্রাবণী: আমার সময় নেই

আমি: কেন বাসায় কি বাচ্চা রেখে আসছো তুমি যে সময় নেই

শ্রাবণী: দেখেন ভাইয়া আমি আপনাকে চিনি না তাই কথা বলার ইচ্ছা নাই বুঝলেন

আমি: আমার ভালো নাম মোঃ জাহিদুল ইসলাম সজল আর ডাক নাম সজল তোমাদের কলেজের ইন্টার 2 য় বর্ষের ছাত্র আমার বাসা তোমাদের পাশের থানায়

শ্রাবণী: আজব তো এগুলো আমায় বলছেন কেন আমি এগুলা দিয়ে কি করবো

আমি: কিছু করতে হবে না আমি তো এবার পরিচিত হলাম এবার তো কথা বলা যায় কিছুক্ষন

শ্রাবণী: না কথা বলা যায় না এভাবে রাস্তায় মেয়েদের ডিস্টাব করতে লজ্জা করে না আপনার

আমি: হুম লাগে দেখো পাশে ফুসকার দোকান তো চলো ফুসকা খেতে খেতে কথা বলি তাহলে আর লজ্জা করবে না আমার

শ্রাবণী: আপনি তো খুব বেহায়া দেখছি বাসায় কি কোন শিক্ষা দেয় নাই আপনারা

সজল : দেখো এবার একটু বেশি যাচ্ছে আমি তো তোমারে কিছু কথা বলবো বলছি আর তুমি এমন ভাব করছো মনে হয় আমি তোমায় বিয়ের প্রস্তাব দিছি

শ্রাবণী:ফালতু ছেলে কোথাকার (এই কথা বলেই শ্রাবণী সোজা হাটা ধরলো নিজের বাসার দিকে)

আমি: যা ভাগ ভাব নিতে আইছে আমার লগে আবাল মাকা মাইয়া(কথা টা রাগের মাথায় মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে) আমাদের পরিচয়টা তো দেয়া হলো না আমি সজল ইন্টার 2য় বর্ষের ছাত্র আর শ্রাবণী ইন্টার 1ম বর্ষের ছাত্রি আমি মুসলিম পরিবারে সন্তান আর শ্রাবণী হীন্দু পরিবারের মেয়ে আমার শ্রাবণীকে প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে গেছে এখন এই ভালোলাগাটা আমার মনে ভালোবাসায় রূপ নিয়েছে আর 1ম দিনের কথা তো বন্ধু তোমরা উপরে পড়লাই সেদিনের 10 দিন পর আবার আমার দেখা হলো শ্রাবণীর সাথে কলেজের মাঠে আমি ডাক দিলাম

আমি: শ্রাবণী দাড়াও

শ্রাবণী: কি সমস্যা আপনার আপনি আমার পিছনে লেগে আছেন কেন

আমি: আগে দাড়াও তো তারপর বলছি

শ্রাবণী: এই যা দাড়ালাম এখন বলেন ভাইয়া

আমি: তুমি এতো রাগি কেন

শ্রাবণী: সেটা আমার বেপার আপনারে বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না

আমি: এই মেয়ে এত ভাব নাও কেন তুমি

শ্রাবণী: ভাব আছে তাই নেই

আমি: তোমার আব্বু আম্মু সিনিয়র ভাইদের সাথে কি ভাবে কথা বলতে হয় শিখায় নাই

শ্রাবণী: শিখায়ছে কিন্তু আমি বখাটে ছেলেদের সাথে এর থেকে ভালো কথা বলতে পারি না বুঝলেন

আমি: বুঝলাম তোমার মতো সুন্দরি মেয়েরা তো বখাটে ছেলের সাথেই প্রেম করে

শ্রাবণী: মানে কি

আমি: কিছু না তোমার বফ আছে

শ্রাবণী: আছে 5/6 টা আপনার সমস্যা

আমি: আমি কি তোমার কোন পাকা ধানে মই দিছি যে তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলো

শ্রাবণী: আমি আমার বান্ধবীদের কাছ থেকে শুনছি আপনি আর আপনার বন্ধুরা কেমন

আমি: কী শুনছো আর কে বলছে বলো

শ্রাবণী: থাক সেগুলো আর আমার না বললেও চলবে ভালো হইয়া যান আমার এখন ক্লাস আছে আমি যাই (বলেই চলো গেলো )

এভাবেই শ্রাবণীর রাগ বকা খেয়ে বেহায়াপনা করতে করতে 2 মাস কেটে গেলো কিন্তু আমার ওকে জ্বালাতন করা বন্ধ হলো না আমি আজও ওকে বলতে পারলাম না যে ভালোবাসি তোমায় জীবনের থেকেও বেশী এবার আমি ভেবেই নিয়েছি ওকে আমার মনের গহীনে থাকা সব কথা বলেই দিবো আমি রেডি হয়ে কলেজে গেলাম আমি রুমে পা দিবো এমন সময় দেখলাম শ্রাবণী এক ছেলের সাথে বসে আছে দেখেই মাথাই রাগ চাপলো 100% ছেলেটার কপালে আজ খারাপিই আছে ভাবতে ভাবতে বন্ধুরা মিলে শ্রাবণীদের দেকে যেতে লাগলাম আমাদের দেখেই ছেলেটি উঠে দাড়ালো আমি ছেলেটার হাত ধরে জিঙ্গেস করলাম

আমি: তোমার নাম কী

ছেলেটা : জয়

আমি : এখানে তোমার কী দরকার তুমি তো এই কলেজে পড়ো না

শ্রাবণী : ও আমার মামাতো ভাই কলেজে ঘুরতে নিয়ে আসছি কোন সমস্যা আপনার

আমি : আগে বলবা তো এখানে বসে থাকলে কলেজ দেখবে কেমনে জয় আমার সাথে আসো ঘুরে আসি

শ্রাবণী: আপনার এগুলা করার দরকার নাই এখান থেকে যান প্লিজ আর পারছি না আপনাকে সহ্য করতে

আমি: আমি কি তোমার ঘারে উঠছি নাকি যে সহ্য করতে পারছো না

শ্রাবণী: ধুর যান তো

আমি: যাবো কিন্তু কিছু কথা বলার পর কথা গুলো বলা শেষ হলে আর তোমাকে জ্বালাবো না

শ্রাবণী: আমার আপনার কথা শোনার সময় নেই

আমি: আমার তো আছে তোমার পাশে থেকে কথা গুলো বলার

শ্রাবণী: আপনি বদলাবেন না আজ যান কাল বলেন যা বলার কিন্তু মনে রেখেন আর কখনো আমাকে ডিস্টাব করবেন না আপনি

আমি: ওকে কাল সকাল 7 টাই কলেজে আসবা

শ্রাবণী: এতো সকালে কেনো আমি পারবো না আসতে এত সকালে

আমি: একটা দিন আসো আর তো বলবো না কোনদিন একটু কষ্ট করো কালকের দিন টা

শ্রাবণী: আচ্ছা আসবো এখন আপনি যান

আমি: ওকে বাই (বলেই আমি চলে আসলাম)

বাসায় এসে টেনশনে আর ঘুম হলো না রাতে ভাবছি কাল শ্রাবণীকে কিভাবে প্রপোজ করবো শ্রাবণী রাজি হবে তো আমার প্রস্তাবে এইসব এনমনে ভাবতে ভাবতে রাত পার হয়ে সকাল এলো আমি রেডি হয়ে বাজার থেকে একটা লাল গোলাপের তোরা নিয়ে সোজা কলেজ যাওয়া শুরু করলাম কলেজের মাঠে পা রাখতেই দেখি শ্রাবণী নীল রং এর একটা ড্রেস পড়ে আসছে খোলা চুল গুলো বাসাতে উড়ছে ওকে দেখে মনে হচ্ছে আকাশ থেকে পরী নেমে আসেছে আজ আমি চোখ ফিরাতে পারছিলাম না এমন সময় এক বন্ধু এসে বলল শুধু কী দেখবি না প্রপোজ ও করবি আমি কথাটা শুনে আবার বাস্তব জীবনে ফিরলাম আমি গোলাপের তোরা টা হাতে নিয়ে শ্রাবণীর সামনে গিয়েই হাটু গেরে বসে বললাম

আমি: ILove You Srabony

শ্রাবণী: দেখেন ফাজলামো করেন না প্লীজ

আমি: আমি সিরিয়াস আমি তোমায় ভালোবাসি তোমাকে যখন প্রথম দেখি সেদিন থেকেই তোমায় জীবন সঙ্গী করে পেতে চেয়েছি প্লীজ আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো না

শ্রাবণী: আমি জানি আপনি আমায় ভালোবাসেন কিন্তু এটা সম্ভব না

আমি: কেনো সম্ভব না

শ্রাবণী: আমি হিন্দু আর আপনি মুসলিম এটা সমাজ কখনো মেনে নিবে না

আমি: তুমি মেনে নিলেই হবে সমাজ আমার ভালোবাসায় বাধা দিতে পারবে না

শ্রাবণী: আবেগ দিয়ে জীবন চলে না আপনি ঠিকি আপনার পরিবার বললে আমাকে ভুলে যাবেম তখন কষ্ট গুলো আমায় পেতে হবে আমি তা চাই না

আমি: আরে আমার বাসার সবাই জানে যে আমি তোমায় ভালোবাসি আমার বাসা থেকে আমি সব ধরনের সাহায্য পাবো কোন ভয় নাই

শ্রাবণী: আমাকে এতো স্বপ্ন দেখিয়ো না আমি চাই না আমার পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাক আমার জন্য

আমি: তুমি কি আমায় ভালোবাসো আমার কসম খেয়ে বলো

শ্রাবণী: আমি পারবো না বলতে

আমি: আজ তোমাকে আমার জীবন নয়তো তোমার পরিবার যেকোন একটা বেছে নিতে হবে আমায় যদি ভালো না বাসো তাহলে আমার হাতের ফুলগুলো আমার মুখে ছুরে মেরে চলে যাও

শ্রাবণী: আমি সত্যিই তোমায় ভালোবাসি কিন্তু আমি তো আমার মা বাবা কে কষ্ট দিতে পারি না নিজের সুখের জন্য পারি না তাদের সম্মান নষ্ট করতে

আমি: আমি কিছু জানি না তুমি আমার না হলে আমি মরে যাবো এটা আমার ভালোবাসার কসম

শ্রাবণী: পাগল একটা আমায় সারা জীবন এভাবে ভসলোবাসবে তো আজ যে পথে পা বাড়ালাম সে পথ থেকে পিছনে আসতে হলে আমার মৃত্যু ছাড়া কোন পথ থাকবে না

আমি: ধুর পাগলী আমি তোরে মরার আগে পযন্ত ছারবো না কিন্তু প্রতিদিন জ্বালাবো মাঝে মাঝে কাদাবো সহ্য করতে পারবি তো

শ্রাবণী: তুমি আমার পাশে থাকলে সব সহ্য করতে পারবো

আমি: I Love You Srabony

শ্রাবণী: এভাবে না দাধা গোলাপ ফুলের তোরা টা হাতে নিয়ে সিনামার নায়কের মতো প্রপোজ করো নয়তো ফুল নিবো না

আমি: হাটু 2 টা মাটিতে রেখে হাতে গোলাপের তোরা টা নিয়ে বললাম I Love You Srabony

শ্রাবণী: I Love You To Pagol

আমি: তা সিনেমার কিস্ টা দাও

শ্রাবণী: সর দুষ্টু ( বলেই শ্রাবণী আমার বুকে এসে পড়লো)

আমি: ছাড় পাগলী তোর সমাজ দেখলে কি বলবে

শ্রাবণী: সমাজ যা বলার বলুক আমি তোমায় সারা জীবন এভাবেই জড়িয়ে ধরে রাখবো

আমি: রাখো ছারতে বললো কে আমার তো ভালোই লাগছে

শ্রাবণী: যা শয়তান ক্লাসে যা

আমি: না চলো না বাসর টা করার ব্যবস্তা করি

শ্রাবণী: মানে

আমি: চলো বিয়ে করে ফেলি তাহলে আমাদের আর কেউ আলাদা করতে পারবে না

শ্রাবণী: 8 টা মাস অপেক্ষা করো তোমার HSC পরিক্ষা টা হোক আমার 18 বছর টাও পূন্য হোক

আমি: ওকে মেম মুসলিম হতে সমস্যা নাই তো পাগলী

শ্রাবণী: তোমার জন্য আমি সব করতে পারবো

আমি: I Love You Picchi Bow

শ্রাবণী: I Love You To Gadha

আমি: আমি গাধা

শ্রাবণী: হুম আমার দাধা আর সারা জীবন আমারি থাকবা

আমি: থাকবো রে পাগলী এখন ক্লাসে যাও

শ্রাবণী: তুমি যাবা না

আমি: না বন্ধুদের আর তোমার শশুর শাশুরী কে আগে খবর টা দিয়ে আসি তুমি ক্লাস করো বাসায় গিয়েই কল দিবা কিন্তু 01638985954 এই নাম্বারে

শ্রাবণী: ঠিক আছে গাধা

আমি: তাহলে এখন আসি গাধী

শ্রাবণী:হুম আসো

এভাবেই চলতে থাকলো আমাদের ভালোবাসা রাগ অভিমান দুষ্টামি আর রাত জেগে 2 জন 2 জনের স্বপ্নের কথা শুনতে শুনতে দিন চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ আব্বু আম্মু আমাকে একদিন বললো শ্রাবণীকে বাসায় নিয়ে আসতে আমি নিয়ে আসলাম তার পর আম্মু আব্বু শ্রাবণীকে একা ঘরে কী বলল বুঝলাম না কিছুক্ষন পর দেখি কাজী সাহেব উপস্তিত আব্বু ঘর থেকে বের হয়ে বলল মনের আশা পূরণ হয়েছে তো বাবা আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আমি আমাদের বিয়ে টা হয়ে গেলো কিন্তু সমাজের মানুষ বা শ্রাবণীর বাসার কেউ জানতে পারলো না আমি জীবন সুন্দর করে চলতে লাগলো আর কোন হারানোর ভয় নেই ভালোবাসার মানুষটাকে

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত