সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী আরাত্রিকা। বাসে স্কুল যাচ্ছে সে। তখন চলেছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাদের স্কুলে সেন্টার না হওয়ায় রীতিমতো স্কুলে যেতে হতো। তখন তার পরিচিত এক দাদা পরীক্ষা দিচ্ছে। সেই দাদার অনেক বন্ধুর সাথে তার পরিচয় হয় কিন্তু,একজনের নাম সে প্রতিদিন শুনলেও তাকে বাসে কোনোদিন খুঁজে পায় না। তার নাম শৌনক। দাদাকে বা তার বন্ধুদের জিজ্ঞেস করলে কেউ দেখিয়েও দেয় না। আরাত্রিকা তো শৌনককে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। কিন্তু, পরীক্ষা শেষ। দেখাও আর হল না।
তারপর হঠাৎ একদিন আরাত্রিকা দেখলো শৌনককে আর অন্যের মুখে নাম শুনে বুঝতে পারে এই সেই শৌনক যাকে দেখার জন্য সে ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল। শৌনক কিন্তু আরাত্রিকাকে তখনও চেনে না।
তারপর যখন শৌনক একাদশ শ্রেণীতে উঠল আরাত্রিকার সাথে পরিচয় হয় টিউশন পড়ার সূত্র ধরে।
আরাত্রিকা স্কুল যায় আর শৌনক যায় টিউশন পড়ার পর বাড়ি। তাদের মধ্যে কথোপকথনও হয়।
হঠাৎ একদিন আরাত্রিকাকে শৌনক বলে সে ওকে ভালোবাসে কিন্তু আরাত্রিকার শৌনককে ভালো লাগলেও সে জানায় শৌনককে সে ভালোবাসে না। তারপর দু বছরে হয় তো শৌনককে সে রাস্তায় তিনবার দেখেছে।
আরাত্রিকা যখন দশম শ্রেণীতে ওঠে তখন হঠাৎ শৌনককে দেখল রাস্তায় ওর হাত ভেঙেছে বন্ধুর সাথে বাইকের পিছনে চেপে আছে। সেদিন তাকে দেখার পর আরাত্রিকার
ইচ্ছে হয় শৌনককের প্রস্তাব গ্রহণ করার। সে তার বান্ধবীর দ্বারা শৌনককে জানায়। শৌনক দেখাও করতে আসে। এভাবেই চলছে তাদের প্রেম। আরাত্রিকা জানতো না সে শৌনককে আদৌ ভালোবাসে কিনা। আসলে শৌনক ছেলেটা খুব একটা ভালো ছিলো না আরাত্রিকা সবই জানত ভেবেছিল শৌনক পাল্টে যাবে। শৌনক কিন্তু মুহূর্তের জন্য হলেও আরাত্রিকাকে ভালোবেসেছিল। হঠাৎ একদিন আরাত্রিকা জানায় সে এই সম্পর্ক রাখতে পারবেনা। শৌনক কারণ জানতে চাইলে সে বলে বাড়িতে অসুবিধা হচ্ছে ব্যাপারটা নিয়ে। সম্পর্ক ভেঙেও যায়। তার এক মাসের মধ্যে আরাত্রিকা অনুভব করে সে শৌনককে কতটা ভালোবাসে। আবারও শৌনককে জানায় কিন্তু শৌনক আর তার সাথে ভালো ব্যবহার করে না। বলে ভাঙা কাচ জোড়া লাগানো যায় না। আরাত্রিকা ফোন করলে সে বিরক্ত হতো।
কালীপুজোর রাতে ঠাকুর দেখতে গিয়ে আরাত্রিকা হঠাৎ জানতে পারল শৌনকের বিয়ে ঠিক হয়েছে।কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি এল আরাত্রিকা রাতের অন্ধকারে। সব জেনেও সে শৌনককে ফোন করত। শৌনক তাকে খুব অপমানও করত। সব সহ্য করে সে আবারও ফোন করত। শুধুই অপমানিত হতো আরাত্রিকা। কিছু দিন পর তারা দেখাও করতে যেতো মাঝে মাঝে। কিন্তু শৌনকের তো বিয়ে দেখা করেই বা কি হবে। এভাবেই শৌনক তাকে খুব অপমান করত। কিছু দিন পর আরাত্রিকা থাকতে না পেরে আবার ফোন করত। শেষ পর্যন্ত আরাত্রিকা নিজেকে পরিবর্তন করে সে আর ফোন করে না। কিন্তু আজও সে শৌনককেই ভালোবাসে।
হঠাৎ আরাত্রিকা এক সপ্তাহ আগে জানতে পেরেছে শৌনকের দু বছর আগে ঠিক হওয়া বিয়ে ভেঙে গেছে। তাহলে কি শৌনক আবার আরাত্রিকার জীবনে ফিরে আসবে? যদি আরাত্রিকার ভালোবাসা সত্যি হয় আর শৌনক মুহূর্তের জন্য হলেও আরাত্রিকাকে ভালোবেসে থাকে তাহলে তাদের মিলন হবেই।