–আমি তোর বাপ আমার গায়ে হাত তুলিসনা বাপ! এভাবে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিসনা,একবার শোন বাপ আমার কথা তোর সাথে আমি অন্যায় করেছি তবুও তো আমি তোর বাপ..?
–তুমি বাবা নামের কলঙ্ক, যাও বেরিয়ে যাও…আমার কোনো বাবা নেই।আমার বাবা মরে গেছে সেদিনই যেদিন আমি ত্যাজ্য হয়েছি!আজ আমার বাবা নামক কোনো পিছুটান থাকতে নেই।যাও বেরিয়ে যাও… কি হল যাচ্ছোনা কেন! যাও এক্ষুনি বিদেয় হও টেনে হিঁচড়ে গলা ধাক্কা দিয়ে নিজের বাবাকে বের করে দিয়ে দরজা লক করে দিল সাবিল। কিন্তু দরজার কাছ থেকে নড়লোনা। বাবার পায়ের খড়মের শব্দ শুনে চলে যাওয়া নিশ্চিত করতে কান খাড়া করে ছোট ছোট ক্রুর চোখ দুটো তীক্ষ্ম হতে লাগলো। পেছন থেকে ছোট্ট নীলয় অবাক দৃষ্টিতে প্রশ্ন করে– “ঐ লোকটা কে বাবাই? তুমি ওনাকে বের করে দিচ্ছ কেন?” নিলীমা বিরক্ত মুখে ছেলেকে ভুলিয়ে কোলে তুলে রুমে চলে যায়। সাবিল কান খাড়া করেই থাকে।
“সাবিল বাপধন আমি চলে যাচ্ছি,আর কোনদিন আসবনা। বৃদ্ধ বয়সে অসহায় বাপকে তাড়িয়ে তুই ভালো থাকিস বাপ” ১৯৮০ সাল, তখনও কিছু কিছু মানুষের খড়ম পরার অভ্যাস বদলায়নি।সাবিলের বাবার ছোটবেলা থেকেই খড়মের অভ্যাস। সিঁড়িতে ঠকাস ঠকাস খড়মের শব্দ তুলে ইঞ্জিনিয়ার সাবিল খন্দকারের বাবা চলে গেলেন।বাংলোর গেটে দারোয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে একবার পেছনে তাকিয়ে ছিলেন। পরক্ষণেই দেনা পাওনার হিসাব মেলাতে হয়তো চিন্তিত মুখে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেলেন।সাবিলের বৌ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। বিয়ের সাত বছর পর যেন প্রতিশোধ নিয়ে এক পৈশাচিক আনন্দ পেল। ঠিক যেমন করে সাত বছর আগে সাবিলের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির দরজা থেকে বিতাড়িত হয়েছিল নিলীমা তেমনি আজ শ্বশুরকে বিতাড়িত হতে দেখে তৃপ্ত হল চাহনি।
নিলীমা বাবার আদুরে কন্যা ছিল। দেখতে একহারা গড়নের নান্দনিক সুন্দরী।কলেজের ছাত্র-অধ্যক্ষ অনেকেরই ক্রাশ ছিল এই নিলীমা। পুরান ঢাকায় বাবার ব্যবসা চলত রমরমা। সুপাত্রের হুড়োহুড়ি লেগেই থাকতো। কিন্তু বাবার ইচ্ছায় নিলীমার পড়াশোনা ঠিকঠাক চলছিল সাবিলের সঙ্গে দেখা হবার আগ পর্যন্ত। সেবার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তির জন্য এপ্লাই করতে গিয়ে সাবিলের সঙ্গে পরিচয় , প্রেম। সাবিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ চাঞ্চ পেলেও নিলীমা পায়নি।নতুন প্রেমে পড়া কপোত কপোতি দুরত্বের সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে পালিয়ে বিয়ে করতে হলো। কেননা সাবিলের পরিবার স্বচ্ছল হলেও সুদূর বরিশালের অঁজপাড়ায়। শিক্ষিতা,সুন্দরী,একমাত্র কন্যার জন্য যেখানে শিল্পপতিদের আশা করেন নিলীমার বাবা, সেখানে সাবিল কেবলই দুধের মাছি।যতই তাড়াবে ততই মঙ্গল।
ওদিকে বিয়ের পর সাবিল বৌ নিয়ে শ্বশুরবাড়ির দরজায় পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সৎ শ্বাশুড়ী ঝাঁ মেরে উঠেপড়ে লেগেছিল শ্বশুর মশায়ের উপর। সাবিলের জন্মের সময় মা মারা যায়, সৎ মা’ই তার আসল মা হয়েছিল এককালে ,নিজের বন্ধ্যাত্ব টের পাওয়ার আগ পর্যন্ত। যখন নিশ্চিত হল সে বন্ধ্যা-সন্তান জন্ম দানে অক্ষম তখন মানে সাবিলের কৈশোর থেকেই সৎ মা যেন কালসাপ হয়ে গেল।তার উপর গ্রামের মেয়েলোকের উস্কানিতে কতদিন যে অবহেলার মাত্রা জ্বলে জ্বলে উঠেছে ! নাওয়া খাওয়া হয়নি এমনি মন খারাপের কালে কেটেছে কতদিন! কতদিন বাবা জানতেও চাননি সাবিল খেয়েছে কিনা! গ্রামীণ সেই ডায়লগের মতোই “মা মরলে বাপ তালই” কথাটার সত্যতা মিলাতে মিলাতে কেটে গেছে কৈশোর। তবে সাবিল মেধাবী হওয়ার কারণে পড়াশোনাটা এগিয়ে গেছে বেশ। আশপাশের তিন চার গ্রামের মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে সাবিলের নাম থাকে প্রথম সারিতে। সাবিলের বাবার বুক গর্বে ফুলে উঠে।। ছেলের পড়াশোনার খরচের জন্য কখনও দ্বিমত করেননি।তাতে সৎমায়ের নাক কাটা পড়ে যেন !
এত খরচাপাতি করে ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ছেলেকে পাঠানোর পর যখন ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার বদলে ঢাকাইয়া সুন্দরী বৌ নিয়ে বাড়ি ফিরে তখন সাবিলের বাবা আর বাবা থাকেন না। একমাত্র সন্তানের উচ্ছন্নে যাবার আশংকায় রূঢ় হয়ে উঠেছিলেন। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারেন নি যে সাবিল আসলেই ঢাকায় পড়াশোনা করছে। তাছাড়া একমাত্র ছেলের বিয়ে হবে যেখানে সাত গ্রাম নিমন্ত্রণ করে সেখানে কিনা ছেলে নিজে বিয়ে করে বৌ নিয়ে হাজির! সমাজে তিনি মুখ দেখাবেন কি করে? সুতরাং নিলীমা সেদিন শ্বশুরবাড়িতে ঢোকার নির্দেশ পায়নি। শ্বশুর সাহেব সাফ জানিয়ে দিলেন –” তুই আর তোর বৌ এবাড়ির জন্য হারাম, তোকে আমি ত্যজ্য করলাম,
আমার সবকিছু থেকে আমি তোকে বঞ্চিত করলাম” ঠিকঠিক করেছিলেনও তাই।সমস্ত সম্পত্তি সাবিলের সৎমায়ের নামে লিখে দিয়েছিলেন।সাবিল ও প্রতিজ্ঞা করে বসেছিল “এজীবনে আর কখনও এবাড়ির চৌকাঠে পা রাখবে না। এবাড়ির সঙ্গে আজকের পর থেকে তার আর কোনো সংযোগ নেই। মা তো কবেই মরেছে, আজ থেকে বাবাও তার জন্য মৃত!”
অতএব নিলীমার সংসার হল জলেভাসা। প্রথম দুবছর প্রচণ্ড অর্থকষ্টে কেটেছে তাদের।এক প্লেট ভাত দুজনে ভাগাভাগি করে খেয়েছে কতদিন! তখন সৎমায়ের সঙ্গে রাগ করে না খেয়ে থাকা দিনগুলো মনে পড়ে যেত সাবিলের।শরীরের অসুস্থ অংশের মতোই বাবা শব্দটি তার বুকের একপাশে খামচে ধরে, যন্ত্রণা দেয়। সাবিল মুখে বিড়বিড় করতে থাকে “আমার বাবা নেই, আমি এতিম, আমার বাবা মৃত” নিলীমার সঙ্গে মান অভিমান ছাপিয়ে সাবিল ভেবেছিল বিত্তবান ঘরের নিলীমাও এতো অভাবের তাড়নায় একদিন তাকে ছেড়ে চলে যাবে ঠিকই। কিন্তু বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়েনি তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেল।তিন বছরের মাথায় মেধাবী সাবিল বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গেল।সরকারি কর্মকর্তা বলে কথা।নিলীমার মতোই দুধ সাদা রঙের ছোট্ট একটা বাবুও হলো তাদের।বাবুটার নাম রাখা নিয়ে স্বামী স্ত্রী তে চলে
ভালোবাসার খুনসুটি।
নিলীমার ইচ্ছে তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে হবে ছেলের নাম, ওদিকে সাবিলের ইচ্ছে তার নামে পরিচিত হবে ছেলে।হাজার টা নাম বাছাই করে অবশেষে দুজনের নামের সমন্বয়ে ছেলের নাম রাখা হল “সাদমান নীলয়” বিধাতা যেন সুখ ঢেলে দিলেন সাবিলকে। বাবুটা নিয়ে হাজার টা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে সাবিল-নিলীমা।
পেছনে ফিরে দেখার প্রয়োজন হয় না আর। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সাবিলের এখন যথেষ্ট নামডাক। দুবার প্রমোশনে সেলারি বেড়ে গেল অনেক। নিজের একটা বাড়ি করার প্রয়াসে সাবিল অর্থ জমাতে থাকে। তবুও কখনও আর পিতৃনিবাসে যাবার সাধ জাগে না। দৃশ্যপটের অপরদিকে সাবিলের সৎমা আরিফার কাছ থেকে সমস্ত সম্পত্তি জোরপূর্বক লিখিয়ে নিয়েছিল তার ভাইয়েরা।মধ্যবয়েসী নিঃসন্তান আরিফা এখন ভাইদের হাতের দাবার গুটি।
সাবিলের বাবা আশরাফ খন্দকার এখন এখানকার উচ্ছিষ্ট।নিজের সম্পত্তির নামকাওয়াস্তে কেয়ারটেকার এখন তিনি, দুবেলা খাবারের বিনিময়ে।বয়স বেড়েছে, আগের মতো এখন আর জমিজমা দেখার জন্য শরীরে জোর পাননা।গ্রামের কুটিল লোকজন এখন তার দূরবস্থায় হাসে।দুএকজন আবার সদুপদেশ দেয় “নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছো যখন কি আর করা! সাবিলের খোঁজ নাও সে তো আর বাপকে ফেলে দিতে পারবে না” কয়েকবছর মুখ বুজে অত্যাচার হইলেও শেষমেশ নিজের সন্তানের কাছে ঠাঁই পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছিলেন। সুদূর বরিশাল থেকে ঢাকায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর সাবিলের খবর যখন পেলেন তখন সাবিলের পোষ্টিং চট্টগ্রামে।গর্বে আবারও বুক ফুলে উঠে তাঁর। সাবিল অনেক বড় ইঞ্জিনিয়ার,অনেক টাকা রোজগার তার, সাবিল তো আসলে তাঁরই ছেলে …!
পেছনের অতীত ইতিহাস ভুলে আশরাফ খন্দকার তবুও ছেলের কাছে ছুটে আসেন এক চিলতে ঠাঁইয়ের আশায়।বিনিময় গলাধাক্কা। আশরাফ খন্দকার সেদিন বাড়ি ফিরেছিলেন কিনা খবর নেওয়া হয় না। ছেলের হাতের গলাধাক্কায় তার বুকের হৃদপিণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে আকাশটাও কি ভেঙে চুরমার হয়েছিল? সে খবর রাখা হয় না। বাবার মুখের দোয়াও সেদিন বদদোয়া হয়ে বিধাতার দরজায় টোকা ফেলেছিল কিনা তা নিয়ে ভাবার ফুসরত খোঁজেনা কেউ। আমরা মানুষরা ভুলে যাই আমাদের কৃতকর্ম। কিছু কিছু কর্মের আবার কোনো সূচি, ইতিহাস থাকে না।কিন্তু কালের খাতায় এসব কৃতকর্ম স্মরণ করিয়ে দেবার জন্য বোধকরি কর্মের ফলাফল নামক চ্যপ্টারটা আছে। সে আসবেই মনে করিয়ে দিবে সকলের ফেলে আসা কর্মের ফলাফল।
সেদিন বাংলো ছেড়ে গাড়িতে উঠার সঙ্গে সঙ্গে বুকের ব্যাথাটা চড়িয়ে উঠে। চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল তখন টানা দু’তিন দিনের জার্নি। বাড়ি পৌঁছনোর পর তিনি পুরোপুরি অসুস্থ হয়ে পড়েন।তার উপস্থিতিতে আরিফা আর তার ভাইদের আচরণ দ্বিগুণ চরম হয়ে উঠে।তবে পৃথিবীর খাতা থেকে তার নাম মুছে ফেলার সময় হয়েছিল।তিনিও ছেলের সম্পর্কে কারো কাছে কিছুই প্রকাশ করেননি, কোথায় থাকে,কি করে,ঠিকানা কি? চট্টগ্রাম থেকে ফিরবার চৌদ্দ দিন পর বেলা এগারোটার দিকে আশরাফ খন্দকারের মৃত্যু।তার কবরে সাবিলের হাতের মাটি পড়ে না।আরিফা আর তার ভাইয়েরা বিজয়ের স্বস্তি পায়। বাবাকে তাড়িয়ে দেবার চৌদ্দ দিন পর বেলা এগারোটার পর বাংলোতে টানা ন’ঘন্টা বিদ্যুত না থাকায় ইলেকট্রিশিয়ানদের উপর প্রচণ্ড রোষ ঝাড়ে সাবিল। একনাগাড়ে পনেরো মিনিট বকাঝকার পর সব কর্মচারীদেরকে বের হয়ে যেতে বলল সাবিল।
তখন এখনকার দিনের মতো এসির চল নেই,একমাত্র বুকের ধন নীলয়টা কাঁদছে গরমে!। শেষে মই বেয়ে বাংলোর আউটসাইড সানসেটের উপর উঠে কাজে লেগে যায় সে। রাগের মাথায় দ্রুতলয়ে হাত চালিয়ে কাজ করছে সাবিল।ইলেকট্রিক তারেগুলোতে সমস্যা। পাকিস্তান আমলে তৈরি এসব বাংলো গুলোতে ইদানিং ইলেকট্রিক সমস্যা লেগেই থাকে।সানসেটের উপর উবু হয়ে বসে কাজ করছে সে।টানা বিশ মিনিট ধরে কাজ করছে সাবিল। ভর দুপুরের রৌদ্রের তাপে সাবিলের মাথার ঘাম কপাল বেয়ে গলা গড়িয়ে হাত পায়ের উপর পড়ছে। সাবিলের কাজ প্রায় শেষের দিকে, আর একটা বৈদ্যুতিক তার জোড়া লাগলেই বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে। ফ্যান ঘুরবে, নীলয়টার কান্না থামবে। একজন বাবার কাছে তার সন্তানের স্বস্তির জন্য কোনো বাধা থাকবেনা, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। এই নিয়মকে কেউ কেউ অন্যভাবে লিখতে চেষ্টা করে।কেউ সফল হয় কেউ হয় না।সাবিল ও হয়নি।
বাংলোর মেইন সুইচ আগে থেকেই অন করা ছিল। তাড়াহুড়োতে সাবিলের ঘর্মাক্ত হাতের আঙ্গুল গিয়ে স্পর্শ করে গলাছোলা মুরগির মতো তামার উজ্জ্বল তারটায়। ব্যাস একটা মাত্র ঝটকা।সানসেট থেকে সাবিল বৈদ্যুতিক শক খেয়ে মুহূর্তে পড়ে যায় নিচের খোলা ড্রেনে।দুই পা ড্রেনের দুপাশে পড়ে ঠিক মধ্যিখানটায় আটকে যায় সাবিল! মুখের গোঙানিও বের হয়নি। কেবল পায়ুপথে কূলকূল ধ্বনিতে রক্তের বন্যা বইয়ে দিল ড্রেনে। সুনসান নীরব বাংলোর কেউই টের পেলোনা, নিলীমা ও না, দারোয়ান,কাজের লোক কেউ না। ঘন্টাখানেক পর যখন খোঁজাখুঁজি করে আবিস্কার করা গেল তখনও সাবিল বোবা মূর্তির মতো ড্রেনের মধ্যিখানটায় আটকে আছে।
দেড়মাস চিকিৎসার পর সাবিল সুস্থ হয়ে বাংলোতে ফিরল তবে হুইল চেয়ারে চড়ে।আজীবনের মতো সাবিল আটকে থাকবে এই হুইল চেয়ারে।সঙ্গে হারিয়ে ফেলেছে যৌনক্ষমতা। সাবিলের চাকুরী নিয়ে তখন টানাটানি।পিডিবির বিভাগীয় প্রধানের সুপারিশে সাবিলকে অফিসিয়াল স্টাফ রিপোর্টার করে রাখা হল।হুইল চেয়ারে বসে বসে সাবিল রিপোর্ট লেখাজোখার কাজ তো করতে পারবে। তবে এই নতুন পোষ্ট এ জয়েন দেওয়ার আগে সাবিলের বারবার করে মনে পড়তে লাগলো বরিশালের এক পাড়াগাঁয়ের এক পিতাকে , এক হত জর্জরিত বৃদ্ধ জন্মদাতাকে। হস্পিটালে শুয়ে শুয়ে এই জন্মদাতার করুন মুখখানি অসংখ্য বার তার চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। তখনই ঠিক করেছিল যদি বেঁচে থাকে বৃদ্ধ জন্মদাতার সঙ্গে দেখা হবে।
কিন্তু নিয়তির নিয়মে তা লিখা ছিল না। কবরের পাশেও মোনাজাতটাও হুইল চেয়ারেই বসে হবে এটাও হয়তো নিয়তিতেই লেখা ছিল। পৌরুষ হীন জড় মানুষের জন্য আর কি কি আঘাতের ধাক্কা অপেক্ষা করছে তা ভেবে হৃদপিণ্ডে কাঁপন ধরে সাবিলের। জীবনে রং রূপ এক এক করে সব মিলিয়ে গিয়েছিল। সব আশা তার মিইয়ে গিয়েছিল। শুধু পাশে ছিল নিলীমা! সাবিলের জীবনের শেষ নিঃশ্বাস অব্দি একটি জড় পদার্থকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিতে কুণ্ঠিত হয়নি এ আগুন সুন্দরী। সবশেষে নিলীমা, স্যালুট তোমাকে! স্যালুট তোমার ভালোবাসাকে!
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা