– ভাইয়া আপনার পাশে একটু বসবো?
– ধরে নেন বসার জায়গাটা আপনার। তাহলে আপনি কি করবেন বসবেন না বসবেন না?
– অবশ্যই, বসবো ।
– তাহলে বসেন ।
– আচ্ছা আপনি সবসময় একটা উদাস ভঙ্গি নিয়ে থাকেন কেনো বলেন তো?
– দিক হারা ভ্রান্ত পথিক, খুঁজি পথের দিশা। সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা করি তো, একটু আলাদা ভাব থাকতে হয়।
– মেয়েদের সাথে কি এই ভাবটা একটু বেশিই দেখান?
– তা ঠিক। এটা মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষণের একটা পদ্ধতি বলতে পারেন।
– আমাকে তো সব বলেই দিচ্ছেন দেখি। আমি তো তাহলে আর আপনার ছলনায় ভুলবো না।
– নতুন করে ভোলার কিছু কি অবশিষ্ট আছে? আপনি তো সেই প্রথম থেকেই ভুলে বসে আছেন।
– আপনার ধারনা ঠিক না। লজ্জা পেয়ে চলে যাবার জন্য উঠে দাড়ায় অদ্রিতা।
– আমি জানতাম আপনি এখনই চলে যাবেন।
– চলে না গিয়ে কি করবো? আপনার হাত ধরে বসে বসে কবিতার লাইন শুনবো?
– আচ্ছা ঠিক আছে। আপনি চলে যান। আমি বরং অন্য কারো জন্য অপেক্ষা করি।
রাগে দুঃখে চোখে জল চলে আসে অদ্রিতার। মানুষটা বুঝলো না ওকে। ওকে এতটুকু পাত্তা দিলো না। মানুষটার মাঝে অদ্ভুত কি যেন একটা আছে তাই এতো ভালো লাগে তাকে। প্রতিদিনই তাকে দেখে সে কিন্তু কখনও কাছে যায় না ও।
আজ আকাশি একটা শাড়ি পড়ে এসেছিলো ভার্সিটিতে। আজকে বাসা থেকে বের হবার সময় মা বলেছিলো ঠিক চাঁদের মতো সুন্দর লাগছে ওকে। চাঁদের মতো লেগেছে বলেই আজ গিয়েছিলো রানার সাথে কথা বলতে। কিন্তু সে একটি বারও চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলো না ওকে!
রানা মাথা নিচু করে আড়চোখে অদ্রিতার চলে যাওয়া দেখে। মেয়েটাকে আজ এতো সুন্দর লাগছে কেনো? আজ এতো গুছিয়ে সুন্দর করে কথা বললো কেনো মেয়েটা?
রানা জানে এই মেয়েটিকে তার জন্যই পাঠানো হয়েছে পৃথিবীতে। এই মেয়ের মায়া থেকে বের হওয়ার ক্ষমতা তার নেই। প্রকৃতি তাড়াহুড়ো পছন্দ করে না, পছন্দ করে ধীরতা। আসুক না হয় ধীরে ধিরেই। ভালোবাসা আরও শক্ত করে আরও দৃঢ় করেই না হয় মাখুক সে তার গায়ে…!