খুনশুটি ভলোবাসা

খুনশুটি ভলোবাসা

.-কি করো তুমি (মিম)
-কিছু করিনা, বসে আছি,
তুমি কি করো (মেহেদী)
-আমিও বসে আছি।
ওই,
একটু দেখা করতে পারবে আজকে।(মিম)
> কেনো, কোন সমস্যা হয়েছে নাকি।
-না কোন সমস্যা হয়নি।
> তাহলে আজকে কেনো দেখা করতে হবে।
-দেখা করতে হলে আবার কোন কারন লাগে নাকি?দেখা করতে বলেছি, এখন দেখা করবে।
> আচ্ছা বলো কখন দেখা করতে হবে।
-সত্যি তুমি আসবে।
> হুম আসবো।
-তাহলে আজকে একটু নদীর পারে ঘুরতে যাবো। তুমি সকাল দশটার সময় চলে এসো। আমি বাসা থেকে বের হয়ে তোমাকে একটা মেসেজ পাঠিয়ে দেবো।
> আচ্ছা এখন তাহলে রাখলাম।
-আচ্ছা রাখো বাই।
.
.
মেহেদী ফোন কেটে ভাবে মেয়েটা কি পাগল নাকি। গতকাল দেখা করে আসলাম, আজকে আবার কেনো দেখা করতে হবে।
কিছু তো হয়েছে, নাহলে আজকে দেখা করতে বলতো না মিম।
.
.
মেহেদী মানিব্যাগে হাতদিয়ে দেখে মানিব্যাগে মাত্র একশো বিরাশি টাকা রয়েছে।এই টাকাগুলো দিয়ে তাকে আরো সাতদিন পার

করতে হবে। মাস শেষ হতে আরো সাতদিন বাকি আছে। কিন্তু মিমের জন্য সেটা আর হলো না। মিমের সাথে দেখা করতে গেলে

টাকা গুলো সব ফুরিয়ে যাবে। আর এই কয়েকটা টাকা নিয়ে দেখা করতে যাবো। নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগে মেহেদীর।

আজ পর্যন্ত তেমন কোন ভালো গিফট সে মিমকে দিতে পারেনি। তবুও মিমের কোন অভিযোগ নেই।
.
কিন্তু কিছুই করার নেই মেহেদীর। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেহেদী,সেইজন্য সবকিছু ভেবে চিন্তে করতে হয়। পকেটে একশো

বিরাশি টাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে মেহেদী। মোবাইলের ইনবক্সে একটা মেসেজ আসে। মেসেজটি মিম পাঠিয়েছে। মেহেদী

মেসেজটি দেখে সোজা চলে যায় মিমের দেওয়া ঠিকানাই।
.
.
মেহেদী গিয়ে দেখে মিম ওখানে আগে থেকেই চলে এসেছে। মিম এমনিতেই অনেক সুন্দর, আর দুরে থেকে দেখতে তাকে আরো

সুন্দর লাগে। মেহেদী দুর থেকে দেখে ভেবে,এতো সুন্দর মেয়ে কিভাবে তার মতন ছেলের প্রেমে পড়েছে। অনেক কিছু ভাবতে

ভাবতেই মিমের কাছে চলে যায় মেহেদী।
.
-কখন এসেছো (মেহেদী)
> কিছুক্ষন হলো। (মিম)
-গতকালকে তো দেখা করেছিলাম, তাহলে আজকে কেনো দেখা করতে হবে। (মেহেদী)
> আমার তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো,তাই তোমাকে দেখা করতে বলেছি।
-মোবাইলে তো আমার ছবি ছিলোই ওখানে দেখতে।
> তোমাকে অনেক কাছে থেকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো,সেইজন্য বলেছিলাম দেখা করতে।
তোমার কি দেখা করতে কোন সমস্যা ছিলো।
-তেমন কোন সমস্যা ছিলো না, তুমি তো জানো মাসের শেষ দিকে আমার কাছে কোন টাকা থাকেনা।
সেইজন্য মাসের শেষের দিকে আমি দেখা করতে চাইনা।
> পকেটে কত টাকা ছিলো।
-একশো বিরাশি টাকা।
> আমি তোমাকে দুইশো দিলাম, এই নাও।
-তুমি এমন কেনো মিম?
> কেমন।
-সবসময় আমাকে টাকা দাও,যেকোন সমস্যা হলে তুমিই সমাধান করে দাও।
> বোকার মতন কথা বলো কেনো?
– আচ্ছা আর বোকার মতন কথা বলবো না, এখন বলো কেনো ডেকেছো।
.
.
মিম কোন কথা বললো না।
কিছুক্ষন চুপ থেকে, মিম মেহেদীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো।
মিম কোন কথা বলছে না।
মেহেদীর বুকে মাথা রেখে শুধু কেঁদে চলেছে।
.
মেহেদী বুঝে উঠতে পারলো না, কেনো‌ মিম কাঁদছে।
কোন কথা না বলে এমন কেনো করছে মিম।
.
.
,-মিম তুমি কাঁদছো কেনো? (মেহেদী)
.
মিম কোন কথা বলছে না, শুধু কেঁদেই চলেছে।
-এই মিম কি হয়েছে,তুমি এমন করে কাঁদছো কেনো?
আমাকে বলো কেনো তুমি এমন করছো।
.
মিম কোন কথার উত্তর না দিয়ে মেহেদীর বুকে মাথা রেখে কেঁদেই চলেছে।
.
-আমাকে ছাড়ো, (মেহেদী)
> না আমি তোমাকে ছাড়বো না (মিম)
-এইবার মিম মুখ থেকে কথা বের হয়েছে।
তাহলে বলো এমন করে কাঁদছো কেনো?
> একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি।
-দিনে কেউ স্বপ্ন দেখে।
> দিনে না,রাতে স্বপ্ন দেখেছি।
-কি স্বপ্ন দেখেছো যার কারনে আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখে তুমি কাঁদতেছো।
>তুমি আমাকে ছেড়ে দিয়ে আরেকজনের সাথে প্রেম করছো,আর তোমার এই বুকে সে মাথা রেখে আছে।
আমি এটা দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছি না।
সেই কারনে তোমাকে দেখা করতে বলেছি।

.
মিমের কথা শুনে
মেহেদী একটু হাঁসে,
আর এই হাঁসা দেখে মিম মেহেদীর কাছে থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে আসতে থাকে বাড়িতে।
মেহেদীর হাসার জন্য মিম অনেক রেগে যায়।
মিম আর পেছনে না তাকিয়ে সোজা বাড়ির দিকে আসতে থাকে।
এমন সময় কেউ হাসে নাকি,
রাগে সাপের মতন ফুসতে থাকে মিম।
.
.
মেহেদী বুঝতে পারে মিম রাগ করেছে।
এই সময় মেহেদী না হাঁসলেও পারতো,কিন্তু সে নিজের হাসিটাকে আটকে রাখতে পারেনি ।
.
মেহেদী দৌড়ে চলে যায় মিমের কাছে।
কারন মিমের রাগ কমাতে হবে।
নইতো পরে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।
মিমের কাছে গিয়ে,
পেছন থেকে মিমের হাত চেপে ধরে মেহেদী।
.
.
-হাত ছাড়ো (মিম)
> না ছাড়বো না (মেহেদী)
-কেনো ছাড়বে না হাত।
> প্রিয় মানুষটির হাত কখনো ছাড়া যায় নাকি।
-তাহলে তখন আমার কথা শুনে হাঁসলে কেনো?
> আরে পাগলী,স্বপ্ন কখনো সত্যি হয় না।
আর আমাকে কি তোমার এমন মনে হয়।
-ছেলেদের বিশ্বাস নেই,ওরা সব করতে পারে।
>কিইইইই।
-হ্যাঁ।
> তাই বলে তুমি সবার সাথে আমাকে ভাববে।
থাকবো না এখানে,
কথাটি বলে মেহেদী রাগ করে চলে যেতে থাকে।
.
মিম পেছন থেকে মেহেদীকে জড়িয়ে ধরে।
কিন্তু মেহেদী থামেনা,মিম ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে থাকে।
.
.
-ওই থামো (মিম)
> না থামবো না। (মেহেদী)
-থামতে বলেছি এখন থামো।
> না থামবো না।
– আর এক ধাপ এগিয়ে গেলে তোমার পা আর থাকবে না।
> তুমি যতই বলো আমি থামছি না।
-তাহলে আমি চলে গেলাম।
> কোথাই।
-না ফেরার দেশে ।
> ওই না। এমন কথা বলবে না।
মেহেদী আবার দৌড়ে এসে মিমকে জড়িয়ে ধরে।
মিমও মেহেদীর বুকে মাথা লুকিয়ে ফেলে।
.
.
-আর এমন কথা কোনদিন মুখে আনবে না (মেহেদী)
> ওটা তো মজা করে বলেছি,তুমি জেনো ফিরে আসো তাই।
-ছাড়ো আমাকে আমি সত্যিই এবার চলে যাবো।
> ছাড়লে তো যাবে,তোমাকে আমি যেতে দিবো না, আমার ভালোবাসাতে তুমি আটকে গেছো।
এই ভালোবাসার বন্ধন ছেড়ে তুমি কখনো যেতে পারবে না।
-কেমন করে বুঝলে।
> তোমার বুকে মাথা রেখে বুঝতে পারছি।
কারন তোমার মনটা যে আমার কাছে।
-পাগলী একটা।
> তোমার পাগলী।
-চলো।
> কোথাই?
-নদীর পাড় ঘুরতে।
.
.
দুজনে দুজনার হাত ধরে নদীর পাড় ঘুরতেছে,আর মাঝে মাঝে ঝগড়া করছে। একটু হাঁসি,আনন্দ একটু কষ্ট ভালোবাসা গুলোকে অনেক সুন্দর করে তুলে।
চলুক না এমন ভাবে।মেহেদী মিমের মতো খুনশুটি ভালোবাসা..

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত