আনিলা আর স্বাধীনের মত না নিয়েই তাদের বাবা মা বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে নেন। স্বাধীন মা বাবার একমাত্র সন্তান।পড়াশুনা শেষ করে বাবার বিজনেস দেখা শুনা করছে।
আর আনিলা পরিবারের ৩য় মেয়ে।বাবা মা আর ৩বোন ২ভাই নিয়ে তাদের পরিবার।এক কথায় আনিলা মেয়েটা উড়নচন্ডী একটা মেয়ে।এবার অনার্স ১ম ইয়ারে পড়ছে।
বাধ্য হয়ে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় আনিলাকে।
.
.
ঘোমটা ফেলে ঠ্যাংয়ের উপর পা তুলে মুখ ফুলিয়ে বাসর ঘরে বসে আছে আনিলা।
স্বাধীন বাসর ঘরে ঢুকেই বলল–
-আমি তোমাকে কখনই স্ত্রীর অধিকার দিতে পারব না।আমি অন্য একটি মেয়েকে পছন্দ করি।আর বাবা আমাকে জোর করে তোমার সাথে বিয়ে দিয়েছে।
.
স্বাধীনের কথা শুনার পর আকাশের মাথায় আনিলা ঙেংগে পড়েনি সরি আনিলার মাথায় আকাশ ভেংগে পড়েনি সে বলে উঠল-
-কি ভেবেছ তুমি নিজেকে হুম।শুধু তুমিই কথা বলতে জানো আমি জানিনা।
-মানে কি বলতে চাইছো তুমি?(স্বাধীন)
-মানে হচ্ছে এই বিয়েতে আমারও মত ছিলনা।আমি একটি ছেলেকে পছন্দ করি।
-তাহলে তো দেখছি আমাদের দুজনের অবস্থাই সেইম।
-হুম।
-তাহলে এখন কি করবে।
-কি করব মানে।তুমি আমার সাথে মিথ্যা ঝগড়া করে একটা ঠাসসস করে থাপ্পর মারবে।তখন আমিও তোমার গালে আমার দু’হাতের দশটা আঙগুল বসিয়ে দেব।
-কি?কি?কি? আমি তোমাকে ১টা চড় মারবো আর তুমি আমাকে উল্টিয়ে আমার গালে ১০টা আঙগুল বসিয়ে দিবে।এ কেমন বিচার।
-হ্যা এটাই বিচার।
-কেমনে?
-আমি তোমাকে চড় মারার পর তুমি আমাকে ডিভোর্স দিবে।বুঝলে।
-বুঝলাম।কিন্তু তোমাকে ডিভোর্স দিলে আমার আব্বাজান আমাকে টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসাবে।
-তোমাকে টুকরো টুকরো করুক আর ছাই করুক তাতে আমার কি।আমি শুধু চাই ডিভোর্স।
-বাপ রে বাপ।এ কেমন মেয়ে।শুধু নিজের কথাই চিন্তা করে।
-আচ্ছা বাদ দাও এখন।যা হবার কাল হবে।এখন আমি ঘুমাবো।তুমি অন্য রুমে এখনি চলে যাও।
-কিহ? আমার রুমে বসে আবার আমাকে রুম হতে তাড়ানো হচ্ছে।
.
.আনিলা একটি বালিশ ছুড়ে দিল শোফায়। স্বাধীন তখন ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে আসলো।ফোন দিল পছন্দের মানুষ আনিসার কাছে।ইতোমধ্য আনিলাকেও ফোন দিল তার পছন্দেরর মানুষ রিফাত।
দুজনেই অনেক্ষণ কথা বলল।
.
.
স্বাধীন রুমে এসে শোফায় বসল।আনিলা খাটের উপর বসে আছে।
অনেক্ষণ পর স্বাধীন আনিলাকে বলল-
-চা নিয়ে আসি।
-না।আমি চা খাই না। কফি খাই।(আনিলা)
-চা/কফি খাওয়া যায় না।পান করতে হয় বুঝলে।
-আমাকে জ্ঞান দিতে আসবা না।
স্বাধীন কিছু না বলে কফি আর চা নিয়ে আসল।
আনিলাকে কফি দিয়ে বলল-
-আমার প্রিয় মানুষটাও কফি পছনন্দ করে।
-তাই নাকি।তুমি কি চা খাও সরি পান করো।
-হুম।
-আমার প্রিয় মানুষটাও চায়ের জন্য পাগল।প্রতিদিন চারপাচ বার চা না পান করলে হয় না। আর হ্যা তোমার মতই সে আমার ভুল ধরতে থাকে।
-কি ব্যাপার।আমাদের দেখছি অনেকটাই মিল আছে।
–ওর সাথে একটু আগেই কথা হয়েছে।সে বলেছে কালকের ভিতরেই একটা ব্যবস্থা করতে।
–কি বলছ? আচ্ছা তোমার সেই পছন্দের মানুষটার নাম কি?
-ওর নাম রিফাত শরীফ।
-কি? রিফাত শরীফ।আমার নাম ওতো রিফাত শরীফ।আচ্ছা তোমার আইডি কি?
-আনিসা ইবনাত।
স্বাধীন মোবাইল বের করে ফেসবুক লগইন করে বলল-
-এটাই তোমার আইডি।
-আরে হ্যা।
-তাহলে তুমিই আমার আনিসা।
-তুমিই সেই রিফাত।তাহলে প্রফাইলে কার পিক রেখেছ?
-এটা আমারই ছবি।
-মানে।কিভাবে?
-আমি আগুনে পুড়ে যাই একবার।ওটা আমারই আগের ছবি।সেটা তোমাকে বলিনি আগে।
-ও
.
.
দুজন দুজনের দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর স্বাধীন এসে আনিলার পাশে বসল।
-কি ভুলটাই না আমরা করতে যাচ্ছিলাম কালকে।(স্বাধীন)
-হুম।যাক শেষ পর্যন্ত তো আমাদের হ-য-ব-র-ল বিয়ে হলো।(আনিলা)
-হ্যা।হ-য-ব-র-ল বিবাহ যদি হতোনা তাহলে তোমাকে পাওয়া হতো না।
.
শুরু হলো নতুন জীবন
নতুন আশায়
আরো বেশি ভালোবাসায়।
…………………………………………..(সমাপ্ত)………………………………………..