আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে বার বার দেখছি আর কান্না করছি। একটু আগে আমার জিজু আমাকে রেপ করেছে। কিন্তু কথাটা আমি মুখ ফুটে কাউকে বলতে পারছি না। কেউ বিশ্বাস করবে না আমার কথা। আমার ফ্যামিলি যতটা আমার জিজুকে বিশ্বাস করে তার চেয়ে দ্বিগুণ আমাকে ঘৃনা করে। আমি একটি ছেলেকে ভালোবাসি নাম রাজিন। রাজিন ও আমায় খুব ভালোবাসে। কিন্তু আমার ফ্যামিলি রাজিন কে মেনে নিতে চায় না কজ রাজিন এতিম। ওর কোনো পরিচয় নাই। এই জন্য আমার পরিবার আমাকে বাসায় আটকিয়ে রেখেছে । আজ সবাই আমার আপুর বাসায় গিয়েছে কজ আপুর মেয়ের আজ বার্থডে। আমাকে একটা রুমে বন্ধ করে ওরা সবাই চলে গিয়েছে।
সাথে করে ফোন ও নিয়ে গেছে। কিছুক্ষণ আগে আমার জিজু আমার রুমের দরজা খুলে আমাকে বলে “আরিসা চলো আজ তোমাকে তোমার রাজিনের কাছে নিয়ে যাবো। বাবা মা সবাই আমাদের বাসায় তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে চলে আসো” জিজুর কথা শুনে খুশি হয়ে চোখ দিয়ে পানি বের হলো জিজুর হাতে ধরে বলেছিলাম” “জিজু সত্যিই আপনি আজ আমার বড় ভাইয়ের মতো একটি কাজ করে দিচ্ছেন কি বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ দিবো সত্যিই ভাইয়া আপনি খুব ভালো” জিজু তখন মুচকি একটা হাসি দিলো আর বললো যাও তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসো যখনি আমি বাথরুমে ফ্রেশ হতে যাচ্ছিলাম তখন জিজু বললো “আরু আমি আগে একটু যাই খুব জরুরি পেয়েছে” জিজুর কথা শুনে বললাম “আচ্ছা যান জিজু”জিজু প্রায় ৬ মিনিট পর বের হলো পরে আমি ঢুকলাম বাথরুমে বাথরুম থেকে আসার পর দেখলাম জিজু আমার বেডে শুয়ে শুয়ে ফোন টিপছে তখন আমি যেই বোরকাটা পড়তে যাবো জিজু অমনি আমার হাত ধরে বললো….
“এত তাড়া কিসের তোমার আরু” জিজুর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম তার চোখে অন্য এক নেশা ভয়ে জিজুকে বললাম….
“কি করছেন জিজু কি হয়েছে আপনার?”
“আরু তুমি কিন্তু তোমার বোনের থেকেও অনেক সুন্দর আর হট” জিজুর কথা তার মুখ আর চোখ দেখে জিজুর মতলব কিছুটা বুঝতে পারলাম। তখন বললাম….
“দেখুন আমি কিন্তু আপনার ছোটো বোনের মতো”
“ছোটো বোনের মতো বাট বোন না তো। আর আজ যখন তুমি বাথরুমে তোমার…..”
“ছিঃ ছিঃ জিজু কি বলছেন আপনি আর আপনি কি দেখেছেন (ভয় পেয়ে)”
“তুমি সত্যিও খুব বোকা আরু। তোমার মনে সন্দেহ হলো না বাসায় তো অন্য বাথরুম আছে বাট আমি কেনো তোমার বাথরুমে গেলাম। আর আমি এত দেরি ও করেছি তাও তোমার সন্দেহ হলো না।হাহাহা” “মা মানে” “মানে তোমার বাথরুমে আমি ছোটো একটা ক্যামেরা লাগিয়ে দিয়ে এসেছি যা আমার ফোনের সাথে অ্যাড করা আর তুমি বাথরুমে যা যা করেছো সব আমার ফোন দিয়ে উমমমম বুঝতে তো পারছো” “জিজু প্লিজ আপনি চলে যান এইখান থেকে আর আপনি যে এতটা খারাপ আমি কোনোদিন বুঝতেও পারি নাই।
আমি আজকেই আম্মু আব্বু বলে দিবো আপনার আসল রূপের কথা” “হাহাহা। তুমি কি ভাবছো ওরা তোমার কথা বিশ্বাস করবে। আমি যা বলবো ওরা তাই বিশ্বাস করবে” কথাটা বলেই জিজু আমাকে ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয় হাজার চেষ্টার পর ও নিজেকে বাঁচাতে পারলাম না এই মানুষ রুপি শয়তানের কাছ থেকে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের প্রতি খুব ঘৃনা হচ্ছে। মন চাচ্ছে নিজেকে শেষ করে দিতে বাট আমি পারবো না। রাজিন কে আমি কথা দিয়েছি যে আমি কোনোদিন এমন কোনো কাজ করবো না যাতে ওর কাছ থেকে দূরে চলে যেতে হয়। কিছুক্ষণ ভাবলাম কি করতে হবে আমাকে অনেক ভাবার পর কি করা উচিৎ তা আমি বুঝে গেলাম। তাই ফ্রেশ হয়ে নতুন জামা পরে বোরকাটা পরে বাসার গেইতের সামনে আসলাম। জিজু মনে হয় ভুল করে দরজা লক করার কথা ভুলে গেছে সেই সুযোগে আমি বের হয়ে গেলাম দাড়িয়ে আছি রাজিনের সামনে সব ঘটনা খুলে বললাম রাজিনকে।
“আমি জানি তুমি হয়তো এখন আর আমাকে ভালোবাসবে না ঘৃনার চোখে দেখবে তাই তোমার কাছে জানতে এসেছি এখন তো তুমিই আমাকে সত্যি সত্যিই দূরে টেলে দিবে” রাজিন কিছুক্ষণ চুপ থেকে কিছু না বলে আমার হাত ধরে কোথাও নিয়ে যেতে লাগলো রাজিন আমায় কাজী অফিসের সামনে এসে বললো “তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম রূপ দেখে নয় বরং তোমার গুন মমতা সুন্দর মন এইগুলো দেখে ভালোবেসেছি। এই ভালোবাসা এতটা সস্তা না যে কেউ একজন তোমার সাথে কিছু করবে আর আমি তার জন্য তোমার দূরে যেতে দিবো। তাই আজ তোমাকে চিরদিনের জন্য আমার করে নেওয়ার জন্য যা কিছু করা লাগে সব করবো আমি।” আরু রাজিনের কথা শুনে কান্না করে দেই আর ওইখানে ওকে জড়িয়ে ধরি……
ওইদিন আমাদের বিয়ে হয়ে যায় আর ও জিজু কে পুলিশে দেয় আর আমার বাবা মা বোন এখনও আমায় ভুল বুঝে আছে। ওরা ভেবেছে আমি আর রাজিন জিজুকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছি ওরা আমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিয়েছে। কিন্তু রাজিন ওর আমার প্রতি ভালোবাসা এখনও ক্ষুন্ন হয় নি বরং দিনদিন ভালোবাসা বেড়েই চলেছে। আমাকে এতটা কেয়ারিং ভালোবাসা দিচ্ছে যা আমি কোনোদিন পাই নি।এখন বুঝতে পারি সত্যি কারের ভালোবাসা বুঝি এমনি হয়……
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা