সাজগোজ শেষ হবার পর খুব তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলাম। হঠাৎ শাড়িতে পা জড়িয়ে গেলো। আসলে শাড়ি পরার তেমন অভ্যাস নেই কিনা! পড়েই যাচ্ছিলাম,কি জানি কিভাবে,একদম পড়ে যাবার আগমুহূর্তে একজোড়া শক্ত হাত আমার হাতদুটোকে আরো শক্ত করে ধরে সামলে নিলো। আমার বুঝতে খানিকটা সময় লাগলো যে আসলেই আমি পড়ে যাইনি। মুখ তুলে তাকাতেই একজোড়া চোখের সাথে আমার চোখাচোখি হলো। নিমিষের মাঝেই চোখ দুটো সরিয়ে আমার হাত দুটো ছেড়ে দিয়ে সে বললো,
-নিচে যাও, নিতু কে হলুদ দেবার সময় হয়ে গেছে। সবাই তোমাকে খুঁজছে।
আমি উত্তর না দিয়ে মাথা নেড়ে চলে আসছিলাম। সে হুট করে আবার বলে উঠলো,
-শাড়িটা গুছিয়ে নিয়ে নামো। ধীরে সুস্থে যাও।
আরেকবার চোখাচোখি হলো। আমি আর কিছু না বলে নেমে আসলাম।
তার সাথে আমি পারতপক্ষে খুবই কম কথা বলি। সে ও কম কথা বলে। আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় আটমাস হতে চললো। আজ পর্যন্ত এভাবেই চলছে।
হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে বেশ রাত হয়ে গেলো। সে আজ সারাদিন খুবই ব্যস্ত ছিলো। একমাত্র ছোটবোনের বিয়ে কিনা! সব কাজকর্ম গুছিয়ে ঘরে এসে দেখলাম সে ল্যাপটপ সামনে নিয়ে বিছানার একপাশে পা তুলে বসে আছে। আমি ড্রেসিংটেবিলের সামনে গেলাম। মেকআপ-আলতা সব তুলতে তো হবে ঘুমানোর আগে ।
খানিকটা অস্বস্তি কাজ করছিলো। কিন্তু একটু স্বাভাবিক হলাম যখন বুঝলাম সে একদমই আমার দিকে খেয়াল করছেনা। তার সব মনোযোগ ল্যাপটপেই নিবন্ধ!
আসলে এখন ননদের বিয়ে উপলক্ষ্যে গ্রামে আসাতে আমাদের একঘরে থাকতে হচ্ছে। বাসাতে তো আমরা দুজনই থাকি,তাই দু জন দু ঘরে থাকলেও অসুবিধে নেই। বলতে গেলে বিয়ের পর থেকে এবারই প্রথম আমাদের একঘরে থাকতে হচ্ছে। অস্বস্তিটা তাই স্বাভাবিক।
মেকআপ তুলতে ঝামেলা হয়নি,আলতা তুলতেই ঝামেলাটা হলো এখন। গাঢ় লাল রঙটা উঠে গিয়ে কেমন লালচে গোলাপি একটা রঙ হয়ে আছে পা আর নখ জুড়ে। অনেক চেষ্টা করেও ওটুকু আর তুলতে পারলাম না।
কি আর করা….ফ্রেশ হতে গেলাম। কালকে বিয়ে নিয়ে অনেক দৌঁড়ঝাপ বাকি!
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি, সে বিছানা ছেড়ে সোফাতে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে গেছে। কোলের পরে এখনো ল্যাপটপ। চশমাটা পর্যন্ত রয়েছে বন্ধ চোখের উপরে।
খুব সাবধানে চশমাটা তার চোখ থেকে খুলে, ল্যাপটপটা নামিয়ে নিয়ে টেবিলে রাখলাম। পাতলা চাদরটা ও গায়ে টেনে দিলাম। আমার জন্য বেচারাকে সোফায় ঘুমাতে হচ্ছে!
ননদের বিয়ের দিনগুলো দেখতে দেখতে চলে গেলো।
ফেরার দিন, পাশাপাশি সিটে যখন বসলাম, তখন থেকেই ভীষন ইচ্ছে হচ্ছিলো তার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমাতে। এরকম সুযোগ কি আর সহজে পাবো তার কাঁধে মাথা রাখবার!
কি জানি ! আমাকে কি নির্লজ্জ ভাববে? সহসা আর কারো বিয়ের সম্ভাবনা নেই, তাই এমন সুযোগ আর নেই।
ঘুম ভেঙে দেখলাম, তার কাঁধে মাথা রেখেই ঘুমিয়েছি। অদ্ভুত ব্যাপারটা হলো, জেগে দেখি, সে একহাতে আমার হাতটা জড়িয়ে রেখেছে, অন্যহাতে চুলগুলো গুছিয়ে ধরে রেখেছে। একমুহূর্তের জন্য মনে হলো সে বুঝি জেগে আছে! মাথা তুলে তাকাতেই হতাশ হলাম। সে ও ঘুম, আমারই মতো।
বাসায় ফিরেছি। আবার আগের সেই দমবন্ধ অবস্থা। সে আমার সাথে কথা বলেনা দরকার ছাড়া। আমি জানি আমাদের বিয়েটা স্বাভাবিক না, তারপরও আট টা মাসে কি এতোটুকু আপন করে নেয়া যায়না? হয়তো কোনোদিনই তার নিজের হয়ে উঠতে পারবোনা। সে যে কখনো আমার মুখের দিকেও তাকায়না! সে এখনো তার প্রথম স্ত্রী কেই ভালোবাসে, যিনি মারা গেছেন তাদের বিয়ের চারমাসের মাথায়, প্রায় বছর তিনেক আগে। শুধু আমার শাশুড়ির চাপে সে আমাকে বিয়ে করেছে, আর কিচ্ছুনা। আমার কোনো জায়গা নেই তার কাছে, বোধহয় হবেও না কখনো!
মাঝরাতে খুট করে কোনো আওয়াজ পেয়ে ঘুম ভেঙে গেলো। বেডসুইচ চেপে লাইট জ্বালাতেই একটুকরো কাগজ বালিশের পাশে চাপা দেওয়া দেখলাম। কাগজের ভাজটা খুলতেই লেখাটা চোখে পড়লো।
“একদিন লালপেঁড়ে সাদা শাড়ি পরবে? পায়ে আলতা দিও,পরদিন আলতাটা আমি নিজ হাতে উঠিয়ে দেবো। আলতা উঠানোর পরের লালচে গোলাপি রঙে তোমার পা দুটো যে কি সুন্দর লাগে!…আর চুলগুলো ছেড়ে দিও,সেদিন পুরো পথ তোমার চুলের ঘ্রাণে মাতালের মতো এসেছি!
ক্ষমা করে দিও,কেমন?
প্রতিবার আলতাটা কিন্তু তোমার পা থেকে আমিই তুলে দেবো!”
আমি তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম। লালপেঁড়ে সাদা শাড়িটা এক্ষুনি পরতে হবে।
শাড়িটা যেন আলমারির কোন পাশে?….
ছেলেটার কথা
========
সিড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ই ওকে দেখতে পেলাম । এমন তাড়াহুড়া করে এগোচ্ছে যেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে যাচ্ছে । মেয়েটা এতো চঞ্চল !
এতো ছটফট করলে কিভাবে চলে ! আমাকে যেন দেখতেই পেল না । কি জানি কি ভাবছে ! এক সাথে তার মনে কত কথা চলে !
নিতুর বিয়ে উপলক্ষ্য শাড়ি পরেছে যদিও ও কখনই শাড়ি পরে না, ঠিক মত পরতেও পারে না তবে শাড়িতে ওকে বেশ মানিয়েও গেছে । কিছু কিছু মেয়ের চেহারা বোধহয় এমনই হয় । যা পরে তাতেই মানিয়ে যায় ! তবে শাড়িটা যেন একটু নিচ করে পরেছে । পায়ে বেঁধে পড়ে যেতে পারে ।
আমার মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল । দেখলাম ওর শাড়ি পায়ে বেঁধে গেছে । ভাগ্য ভাল খুব কাছেই ছিলাম তাই শক্ত করে ওর হাত দুটো ধরে ফেলতে পারলাম । নয়তো আজকে কি হত কে জানে ! এই সিড়ি দিয়ে নিচে পড়লে আর রক্ষে ছিলো ?
যখন ও বুঝতে পারলো যে ও পড়ে যায় নি তখন চোখ মেলে তাকালো আমার দিকে । চোখে খানিকটা বিশ্ময় । যেন ঠিক মত বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি ওকে ধরে ফেলেছি । আমি চোখ সরিয়ে নিলাম । প্রতিবারই নিই । কেন জানি ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি না ।বললাম
-নিচে যাও নিতুকে হলুদ দেওয়ার সময় হয়ে গেছে । সবাই তোমাকে খুজছে !
ও কোন কথা বলল না । কেবল একটু মাথা নাড়ালো । আমি আবার বললাম
-শাড়িটা গুছিয়ে নিয়ে নামো ! ধীরে সুস্থে যাও ।
আরেকবার আমার চোখের দিকে তাকালো ও । কি গভীর চোখে মেয়েটা আমার দিকে তাকায় ! আমার পুরো হৃদয় শুদ্ধ নড়ে ওঠে ! আর কোন কথা বলল না । আবারও তাড়াহুড়া করেই নামতে লাগলো ! আমি জানি ও আমার কথা শুনবে না । আবারও তাড়াহুড়া করেই নামবে ! আমার কথা যদি একটু শুনে !
কথাটা মনে মনে বলেই আমার নিজের কাছেই কেমন যেন হাসি চলে এল । আমার কথা ও শুনবে কিভাবে ? ওর সাথে তো আমার কথাই হয় না ! দরকার না হলে একটা কথাও বলি না ।
কেন বলি না ?
এই প্রশ্নের উত্তর আমার নিজের কাছেও জানা নেই । তবে কি একটা সংকোচ একটা অস্বস্থি আমাদের মাঝে কাজ করে ! বিশেষ করে আমার নিজের মাঝে ! বিয়ের আট মাস পার হয়ে গেলেও সেই সংকোচটা এখনও কাটলো না ।
না দোষটা আমি ওকে কোন ভাবেই দেব না । দোষ টা আমার নিজেরই । আমি যদি চাইতাম তাহলে হয়তো আমাদের মাঝের দুরুত্ব কমে আসতো ! কিন্তু আসতো । অনেক আগেই কমে আসতো !
নিতুর গায়ে হলুদের ঝামেলা শেষ হতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেল । আমার বেশ ক্লান্ত লাগছিলো । আব্বার শরীর আর আগের মত নেই বড় ভাই হিসাবে সব দায়িত্ব আমার উপরে এসে পড়েছে । কালকের বিয়েতে যাতে কোন কিছু কমতি না হয় সেটাই বসে বসে ঠিক করছিলাম নিজের ল্যাপটপে । কোথায় কি হবে সব কিছু এখানেই হিসাব করা ছিল । সেই সময়ে ওকে ঘরে ঢুকতে দেখলাম ।
খানিকটা সংকোচ নিয়েই ও ঘরের ভেতরে ঢুকলো । সংকোচ যে আমার নিজের মাঝে হচ্ছিলো না, সে কথা আমি বলব না । আট মাসের মধ্যে প্রথম বারের মত আজকে আমরা একই ঘরে ঘুমাতে এসেছি ।
ঢাকার বাসাতে আমরা দুজন মানুষ । কে কোথায় ঘুমাই সেটা দেখার কেউ নেই কিন্তু এখানে অনেকেই আছে । দুজন যদি দুঘরে ঘুমাই তাহলে নানান মানুষ নানান কথা বলবে । আমি আড়চোখে তাকিয়ে দেখি ও মেকাপ তুলতে ব্যস্ত । আলতা তুলতে গিয়ে ওকে বেশ বেগ পেতে হল । শেষ পর্যন্ত সেটা ঠিক মত উঠলোও না সেটা । কেমন একটা লালচে গোলাপী রং হয়ে আছে ওর পা আর নখ জুড়ে । আমি ঠিক জানি না আমার মাঝে কি হল দৃশ্যটা দেখতে আমার কাছে কেমন অদ্ভুদ সুন্দর লাগলো । একবার মনে হল ওকে বলি যে ওকে সুন্দর লাগছে ।
কিন্তু সেই সংকোচ ! কিছুতেই বলা হল না । বলতে পারলাম না !
ও ফ্রেশ হওয়ার জন্য বাধরুমে যেতে আমি বিছানা ছেড়ে শোফার উপর গিয়ে আধ শোয়া হয়ে শুয়ে পড়লাম । মেয়েটাকে অস্বস্থিতে ফেলতা চাই না । আট মাসে কখনও আমরা এক খাটে ঘুমাই নি আজকে যদি ঘুমাতে যাই মেয়েটার মাঝে নিশ্চয়ই অস্বস্তি লাগবে । দরকার নেই । আধশোয়া অবস্থায় কখন যে চোখ লেগে এল টেরই পেলাম না । বিশেষ করে সারা দিন যে দৌড় ঝাপ গিয়েছে সেই জন্য ঘুম চলে এসেছে ।
মাঝে রাতে ঘুম ভেঙ্গে দেখি আমার চোখের চশমা আর ল্যাপটপটা টি-টেবিলের পাশে রাখা । গায়ে একটা পাতলা কাথা জড়ানো । ও দিয়ে গেছে সেটা জানি ! একটু উঠে তাকিয়ে দেখি বিছাতে বাচ্চাদের মত গুটি শুটি মেয়ে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা ! আমি উঠে গিয়ে ওর পাশে বসলাম । চাঁদের আলো জানলা দিয়ে এসে বিছানাতে পড়েছে । ওকে দেখতে অদ্ভুদ সুন্দর লাগছে । আমি চাইলেও চোখ সরাতে পারছি না । মনের ভেততে অদ্ভুদ একটা অনুভুতি হচ্ছে । এটা আমি কোন ভাবেই ভাষার প্রকাশ করতে পারবো না !
নীলু মারা যাওয়ার পর আমি কোন দিন ভাবিই নি আর কাউকে কোন দিন ভাল বাসতে পারবো । কিংবা অন্য কেউ আমার জীবনে আসবে । মা বলতে গেলে একেবারে জোর করে আমাকে এই মেয়েটার সাথে বিয়ে দিয়ে দিলো । মায়ের কোন বান্ধবীর মেয়ে নাকি ! একটু অবাক হয়েছিলাম মেয়েটা আমাকে বিয়ে করতে রাজী হয়েছে দেখে । প্রথম প্রথম কিছুতেই ব্যাপারটা আমি মেনে নিতে পারতাম না । নীলু জায়গাতে অন্য কেউ এসেছে সেটা আমাকে পীড়া দিতে লাগলো । মেয়েটাও নিশ্চয়ই ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিলো । তাই কোন দিন নিজ থেকে কিছু চাইতে আসে নি আমার কাছে ।
আমি দরকার ছাড়া ওর সাথে কথা বলতাম না । তবে আমি যত সময় বাসায় থাকতাম আমার আসে পাশেই ও ঘুরঘুর করতো ।
আমি নিজেকে জোর করে ওর কাছ থেকে দুরে রাখতে চাইতাম কিন্তু আস্তে আস্তে অনুভব করলাম মেয়েটাকে আমি দুরে রাখতে পারছি না । আমার মনের ভেতরে মেয়েটা ঠিকই চলে আসছে !
নিতুর বিয়ের ঝামেলা শেষ হয়ে গেল । কিভাবে দিন চলে গেল আমি টেরই পেলাম না । দুজনের এমন ব্যস্ততার মাঝে সময় কাটলো যে অন্য কিছু আর ভাবতে সময়ই পেলাম না । ফেরার দিন ও আমার পাশের সিটেই বসে ছিল । বাস চলতে শুরু করলো ও জানলার দিকে তাকিয়ে দেখি ও তাকিয়ে আছে । কি ভাবছে কে জানে ?
খোলা জানলা দিয়ে হু হু করে বাতাস আসছে । সেই সাথে ওর খোলা চুলে উড়ে এষে আমার মুখ নাক চোখ ঢেকে যাচ্ছে । কোথায় আমি বিরক্ত হবে কিন্তু অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে এক অদ্ভুদ ভাল লাগা আমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে । ওর চুল থেকে এক অদ্ভুদ সুগন্ধ আসছে । মনে হল এই সুগন্ধ এই পৃথিবীর নয় অন্য কোথাও থেকে আসছে । আমি সুগন্ধে সুগন্ধে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেই জানি না !
বাসায় ফিরে আবারও আগের জীবনে ফিরে গেলাম । সেই অস্বস্থি আর সংকোচ যে আগের মত ফিরে এসেছে । আমি দরকার ছাড়া ওর সাথে কথা বলি না ও নিজেও বলে না । তবে আমার কোন জিনিসটা কোন সময়ে দরকার সেটা খুব ভাল করেই জানে । ঠিক সময় মত সেটা হাজিরও হয়ে যায় !
তবে একদিন কেন জানি আমার নিজের মনটাই বিদ্রোহ করে উঠলো । মাঝ রাতে ঘুম থেকে উঠে লাইট জ্বালালাম । বিছানার পাশেই কলম আর প্যাড রাখা ছিল । সেটা হাতে নিয়ে বসে রইলাম কিছুটা সময় । কি লিখবো একটু আগেই মনে করেছি এখন আবার কেমন যে সংকোচ হচ্ছে !
ও কি ভাববে ?
লজ্জার সীমা থাকবে না যদি ….
গুল্লি মারি সব কিছুর । যা ভাবার ভাববে ! কয়েকটা লাইন লিখলাম মাত্র ! তারপর সেটা ভাজ করে পা টিপে টিপে ওর ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম । ডিম লাইটের মৃদু আলো ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না । আমি চিরকুট টা আমি ওর বালিশের পাশেই চাপা দিয়ে দ্রুত বের হয়ে এলাম । তবে তাড়াহুড়া করতে গিয়ে দরজার সাথে ধাক্কা লেগে একটু আওয়াজ হল । আমি আর পেছনে ফিরে তাকালাম না । দ্রুত নিজের রুমে চলে এলাম ।
কেমন জানি বুকের ভেতরে ধড়ফড় করছিলো ।
ও কি দেখবে সকাল বেলা লেখাটা ?
কি ভাববে ?
আমি আর কিছু ভাবতে চাইনা । নিজের বিছানাতে শুয়ে পড়লাম । চোখ বন্ধ করেও কোন লাভ হল না । জানি আজকে রাতে আর ঘুম হবে না !
কত সময় কেটেছে আমি জানি না একটা সময় মনে কেউ আমার ঘরের লাইট জ্বলালো ! আমি চোখ খুলে দেখি ও দাড়িয়ে আছে !
লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পরে আছে । পায়ে আলতা দেওয়া ! এই মাঝে রাতে ও এতো কিছু কখন করলো ?
আমি কেবল অপলক চোখে তাকিয়ে আছি ওর দিকে । আজকে কেন জানি চোখ সরাতে ইচ্ছে করছে না । চোখে ভর্তি টলমল পানি নিয়ে ও আমার দিকে ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে ! সেখানে কোন দ্বিধা কিংবা সংকোচ নেই !