আংটি: একটি ভালবাসার গল্প

আংটি: একটি ভালবাসার গল্প

মার্স্টাস পরীক্ষা শেষ করেই মাহমুদ ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে এ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার হিসাবে চাকুরী পেয়ে গেল। অনেক চিন্তা ভাবনা শেষে পরিবারের আপনজন ও প্রিয় শহর চট্টগ্রাম ছেড়ে সে ঢাকায় চাকুরীতে জয়েন করলো। কিছুদিনের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে পরিচয় হওয়া বয়সে বড় মাসুদ ভাইয়ের সাথে বন্ধুত্বের বন্ধনটি পারিবারিক ভাবেও বেশ পোক্ত হয়ে উঠলো। কথায় কথায় একদিন মাসুদ ভাই বলল বিয়ে করছ না কেন, বয়সতো আর কম হয়নি?

– বিয়ে..? মনের মতো এখনো কাউকে পাওয়া হয়নি তাই বিয়েও করা হচ্ছে না।
কেমন পাত্রী চাও বলো?

আমার পছন্দের পাত্রীর বণর্না শুনতে চান, শুনেন… আমার পাত্রীতে হতে হবে মধুবালা, সূচিত্রা অথবা ঐশ্বরিয়ার চেহারায় যে মাধূর্য্যতা বা কমনীয়তা তেমন চেহারার অধিকারীনি, ফিগার জানতে চান? ফিগারটা …শিল্পা শেঠি অথবা সুস্মিতার মতো হলেও চলবে…হা–হা—হা। কি, টাশকি খেলেন?
আঙ্গুল দেখিয়ে–আর এই যে দেখছেন, আমার আঙ্গুলের এই আংটিটি আমি তার জন্য এক যুগ ধরে আগলে রেখেছি। যখনই তাকে খুঁজে পাবো সঙ্গে সঙ্গে আঙ্গুলে পরিয়ে আমার করে নিবো। আবারও হাসি হা..হা..হা। পাবেন কি আমার জন্য এমন পাত্রী?

ছোট ভাই, এটাতো তুমি বিয়ে না করার কথা বললে। কারণ এমন মেয়ে বাস্তবে কখনোই পাওয়া যাবে না, তবে কম্পিউটারে ফটোশপ দিয়ে বানিয়ে নিতে পারো। বুঝেছি অনবরত হিন্দি সিনেমা দেখতে দেখতে সুন্দরী সব নায়িকাদের মূখশ্রীর ভুত এখন তোমার মাথায় ছেপে বসে আছে। ছোট ভাই, এই সব চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিয়ে বাস্তবে ফিরে আসো, নইলে কপালে দুঃখ আছে।

প্রায় এক সপ্তাহ পর হঠাৎ মাসুদ ভাইয়ের ফোন, খুব উল্লেসিত মনে হচ্ছে তাকে। টেলিফোনের ও প্রান্ত থেকে হাসতে হাসতে বলল ছোট ভাই তোমার স্বপ্নের রাজকন্যাকে মনে হয় আমি পেয়ে গেলাম।
কোন রাজকন্যার কথা বলছো?

কেন, ঐ যে, যার ছবি তোমার হৃদয়ে আঁকা আছে তার। শুন, গতরাতে একটি পার্টিতে গিয়েছিলাম ঐ পার্টিতে আমার এক দুরর্সম্পকীয় আত্নীয়র মেয়েকে দেখলাম, ঠিক তুমি যেমনটি চাও। ওদের সাথে কথা বলেছি, ওরাও মেয়ের জন্য ভালো একটি পাত্রের সন্ধানে আছে। তোমার একটি সিভি দিও।

পার্টিতে তোলা একটি ছবি মাসুদ ভাই মাহামুদকে দেখালেন, মেয়েটির নাম ”অপ্সরা” এবং অতি আগ্রহে অপ্সরার ভার্সিটি কোচিং ক্লাসের ঠিকানা জোগাড় করে দিলেন। একদিন সকালবেলা গ্রীনরোডে কোচিং ক্লাসের সামনে মাহমুদ অপ্সরাকে দেখার জন্য সময় মত উপস্থিত হলো। অপ্সরাকে প্রথম দেখায় মাহমুদ মুগ্ধ হয়ে গেলো। অসাধারন! মায়াবী এক চেহারা। এতদিন মনে মনে ওকেইতো খুঁজছে মাহমুদ। না আর দেরী নয়, পরদিন অপ্সরাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হলো। অপ্সরার বাবা আবিদ সাহেব পাত্র পছন্দ করেছেন ঠিকেই, তবে একটি শর্তে তিনি তার একমাত্র মেয়েকে এই ছেলের সাথে বিয়ে দিবেন যদি ছেলে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। মাহমুদ এমন শর্ত শুনে বোকা বনে গেল। এ কেমন শর্ত? বিয়ে করার জন্য নিজ জন্মস্থান, বাবা-মা পরিবার সব ছাড়তে হবে? এমন অযৌক্তিক শর্ত মাহমুদ কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না। পুনরায় মাসুদ ভাই অপ্সরার বাবাকে বুঝালেন, তিনি কিছুতেই এই শর্ত ছাড়া মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি নয়। অগত্যা মাসুদ ভাই হাল ছেড়ে দিলেন এবং মাহমুদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন। কিন্তু মাহমুদ এক পলকের জন্য দেখা অপ্সরাকে কিছুতেই ভুলতে পারছেনা। মাহমুদের কেন জানি মনে হতে লাগলো অপ্সরা শুধু মাহমুদের জন্যই এই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেছে, সে এখন অপ্সরাকে ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছেনা। তার সমস্ত চিন্তা চেতনায় এখন শুধু অপ্সরার উপস্থিতি।

মাহমুদ অনেক চিন্তা ও প্ল্যান করে মাসুদ ভাইয়ের স্ত্রী শীলা ভাবীকে পটালেন যেন ভাবী অপ্সরার সাথে মাহমুদকে পরিচয় করিয়ে দেন, অবশ্য এই প্ল্যানের কথা মাসুদ ভাইকেও জানানো হলো না। প্ল্যান অনুসারে গ্রীনরোডের কোচিং সেন্টারে প্রবেশের আগেই ভাবী অপ্সরাকে মাহমুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। কথা বলার ফাঁকে হঠাৎ দমকা হাওয়া ও সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়া শুরু হলো। বৃষ্টির ঝাপটা সবার গায়ে এসে লাগছে আর এভাবে এখানে বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাও সম্ভব না। পাশেই একটি ফাষ্টফুডের দোকান ছিল, মাহমুদ ভাবীকেসহ অপ্সরা ও তার বান্ধবী লিসাকে ওখানে বসার আমন্ত্রণ জানালো। অপ্সরা প্রথমে কিছুটা আপত্তি করলেও বান্ধবী লিসার সম্মতি পেয়ে রেষ্টুরেন্টে বসতে রাজি হলো। কিছু খাবারের অর্ডার দিয়ে টেবিলের একপাশে ভাবী আর মাহমুদ অন্যপাশে অপ্সরা ও লিসা বসলো। টেবিলে মুখোমুখি বসেছে আছে মাহমুদ আর অপ্সরা। মাহমুদ প্রথমে নিজের ও পরিবার সর্ম্পকে ছোট্ট একটি ধারণা দিলো অপ্সরা ও লিসাকে। তারপর কোন ভুমিকা না করেই অপ্সরাকে তার ভাললাগার বিষয়টি জানালো, সাথে ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বললো আশা করি আপনি আগামী ২/১ দিনের মধ্যে ফোনে আমাকে আপনার মতামত জানাবেন। অবশ্য এর আগেই অপ্সরা বাসায় মায়ের কাছে মাহমুদের ছবিসহ সিভি দেখেছে এবং দেখে কিছুটা পছন্দও করেছিল। তবে যেহেতু বিয়ের ব্যাপরটি সর্ম্পূণ বাবার ইচ্ছের উপরই র্নিভর করছে সেখানে পাত্রের ছবি দেখে অপ্সরার সম্মতি দেওয়া বা না দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। মাহমুদের ছবি দেখে আগেই অপ্সরা বিয়েতে সম্মতি দিয়েছিল শুধু বাবার দেওয়া শর্ত র্পূণ না হওয়াতে বিষয়টি ওখানেই চাপা পড়ে যায়। বিদায় বেলায় মাহমুদ আর অপ্সরার চার চোখের মিলন হয়, সে মিলনে মাহমুদ অপ্সরার চোখের ও মনের ভাষা পড়ে ফেলে।

সারারাত মাহমুদের ঘুম হয়নি, অপ্সরার চোখে মাহমুদের জন্য ইতিমধ্যে একটি জায়গা তৈরী হয়ে গেছে তা সে বুঝতে পারছে, তবে তার চিন্তা অপ্সরা কি পারবে তার বাবার বিরুদ্ধে কদম তুলতে? অন্যদিকে অপ্সরারও একই অবস্থা। কেন জানি মাহমুদকে অপ্সরার খুব ভালো লেগেছে, অচেনা লোকটিকে দেখে খুবই আপন মনে হয়েছে। এক সপ্তাহ পর সকালবেলায় অপ্সরার ফোন পেল মাহমুদ। অপ্সরা মাহমুদকে বেলা ১১টায় চন্দ্রিমা উদ্দ্যানে আসতে বললো। মাহমুদ সময় মতো হাজির। একটু পরেই বান্ধবী লিসাকে নিয়ে অপ্সরা আসলো। তারপর অনেক কথা, ভবিষৎ-র অনেক পরিকল্পনা, সব কিছু আপন মনে দুজন দুজনের সাথে শেয়ার করলো। অপ্সরা, মাহমুদকে কথা দিলো সে তার বাবাকে যে ভাবেই হোক এই বিয়েতে রাজি করাবে। তারপর নিয়মিত দুজনের মধ্যে টেলিফোনে আলাপচারিতা হয়। একদিন আবিদ সাহেব টেলিফোনে দুজনের আলাপচারিতার বিষয়টি সরাসরি জেনে গেলেন। কোন কারনে তিনি সে দিন অফিসে যাননি, মাহমুদের টেলিফোন রিসিভ করলো অপ্সরার বাবা, মাহমুদ ভুল করে অপ্সরাকে চেয়ে বসলো। তারপর যা হওয়ার তাই.. অপ্সরাকে চাপ দিতেই সে সব কিছু গর গর করে বলে দিলো, কি ভাবে পরিচয় হলো, কে পরিচয় করিয়ে দিলো সব, সব কিছু। এই কারনে মাসুদভাইয়ের পরিবারের সাথে তাদের সর্ম্পকটাও নষ্ট হয়ে গেল। মাহমুদের পক্ষে হয়ে অপ্সরা অনেক পজেটিভ দিক তুলে ধরলো এবং আর কোন উপায় না দেখে মাহমুদের প্রতি তার ভালবাসার কথাটিও জানালো বাবাকে। কিন্তু তিনি এতে আরও তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। তিনি বিশ্বাস করলেন অপ্সরা ও মাহমুদের মধ্যে ভালবাসার সর্ম্পক অনেক দিনের পুরানো। অপ্সরাই প্ল্যান করে আত্নীয় মাসুদকে দিয়ে আবিদ সাহেবের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন তাদের এই ভালবাসাটা জায়েজ করে নেওয়ার জন্য। তারপর থেকে অপ্সরার কোচিং-এ যাওয়া, বাইরে বের হওয়া ও ফোন ধরা সর্ম্পূণ নিষিদ্ধ করা হলো। ঘরের ফোনসেটটি আবিদ সাহেব লক করে দিলেন। বলা যায় এক প্রকার ঘরের মধ্যেই বন্ধি করে রাখা হলো অপ্সরাকে।

আরো কিছু দিন এভাবে কাটলো। এরি মধ্যে দুজন দুজনকে দেখার জন্য পাগলপ্রায়। ২০০১ সাল ১৪ই ফেব্রুয়ারী, কোন কারনে দিনব্যাপি হরতাল। আজ আর প্রাণ মানে না, মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে অপ্সরা বের হয়ে পড়লো, বাসার কাছেই টেলিফোন বুথ থেকে মাহমুদকে ফোন করে বাসায় আসার জন্য বললো। মাহমুদ অপ্সরার ডাকে ছুটে আসে। অপ্সরা তার মাকে বলে, মা কোন সিনক্রিয়েট করবেনা, আমি মাহমুদের সাথে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আজ বাইরে থাকবো। আব্বু অফিস থেকে বাসায় ফিরে আসার আগেই আমি ফিরে আসবো। অপ্সরার মা অপ্সরার চলে যাওয়ার দিকে শুধুই ফ্যাল ফ্যাল করে থাকিয়ে রইল, কিছুই বলতে পারলো না মেয়ের এমন পাগলপন ভালবাসা দেখে।

একটি রিক্সা নিয়ে দুজনে ভালবাসা দিবসে আজ অনেক ঘুরা ঘুরি করলো, অনেক না বলা কথা বলা হলো, অনেক ভালবাসায় সিক্ত হলো দুজনে। এবার বাসায় ফেরার পালা, মিরপুর রোড ধরে রিক্সা চলছে। মাঝপথে একটি দোকান থেকে মাহমুদ ১৪টি টকটকে লাল গোলাপ কিনে নিলো। রিক্সায় দুজনে গা ঘেষে বসা, মাহমুদ অপ্সরার হাতটি তার নিজের হাতের মধ্যে টেনে নিলো তারপর ১২ বৎসর আগলে রাখা হাতের আংটিটি খুলে অপ্সরার আঙ্গুলে পরিয়ে দিলো। এবং আদর করে অপ্সরাকে বললো এই চৌদ্দটি লাল গোলাপকে সাক্ষী রেখে এই ভালবাসা দিবসে অপ্সরা, তোমাকে সারা জীবনের জন্য আমার করে নিলাম। আজ থেকে পৃথিবীর এমন কারো শক্তি নেই, যে তোমাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে। এখন থেকে তুমি আমার, শুধুই আমার অপ্সরা। অপ্সরার চোখে তখন আনন্দ অশ্রু বয়ে যাচ্ছে। পরের ঘটনা গুলো খুব তাড়াতাড়িই ঘটতে লাগলো। একদিকে অপ্সরার মায়ের চাপ ও অন্যদিকে মেয়ের আংটি হাতে নেওয়ার ঘটনা শুনে আবিদ সাহেবের মনে এক ধরনরে জেদ চেপে গেল। হঠাৎ তিনি অপ্সরাকে মাহমুদের কাছে বিয়ে দিতে রাজি হয়ে গেলেন এবং সাথে নতুন একটি শর্ত জুড়ে দিলেন। এই নতুন শর্ত দিয়ে তিনি মাহমুদকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করলেন।

সকাল বেলা মাহমুদ অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হবেন, ঠিক ঐ মুর্হুতে একজন বৃদ্ধ ভদ্রলোক এসে দরজার কড়া নাড়লেন। তিনি সোজা রুমের ভিতরে ঢুকে বললেন, আমাকে অপ্সরার বাবা পাঠিয়েছেন। আপনি অপ্সরাকে “আংটি” পরিয়ে আপনার বউ বলে মনে মনে কবুল করে নিয়েছেন, বিষয়টি অপ্সরার বাবা আজ জেনে গেছেন। সুতরাং আংটি গ্রহনের দিন থেকে অপ্সরা আপনারই বৌ, এখন শুধু কলেমা পড়া বাকী। এবং এই কলেমা পড়ে আজ সূর্যাস্তের আগেই অপ্সরাকে ঐ বাড়ী থেকে আপনাকে নিয়ে আসতে হবে, কারণ আবিদ সাহেব আর একদিনের জন্যও আপনার বউকে উনার ঘরে রাখবেন না এটা উনার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আরো শুনেন, আপনি আজ যদি অপ্সরাকে কলেমা পড়ে নিজের বউ করে ঘরে আনতে না পারেন, তবে চিরদিনের জন্য অপ্সরাকে ভুলে যেতে হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অপ্সরার অন্যত্র বিয়ে দেয়া হবে, পাত্রও রেডি আছে।

মাহমুদ এ মুহুর্তে কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা। আকাশটা যেন তার মাথার উপর ভেঙ্গে পড়লো। বিয়ের প্রস্তুতির জন্য মাত্র ২ দিনের সময় চেয়েছিল মাহমুদ কিন্তু তাও মেলেনি। আনুষ্ঠানিকতা, আত্নীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব বাদ দিয়ে কি ভাবে সে একা একা বিয়ে করবে? মাহমুদ চট্টগ্রামে তার বাবা-মার সাথে এ বিষয়ে কথা বললো এবং আলোচনায় উঠে আসলো এত অল্প সময়ে চট্টগ্রাম থেকে কারো ঢাকায় আসা সম্ভব না। বাবা-মা ছেলের ভালবাসার কথা চিন্তা করে বিয়েতে অনুমতি দিয়ে দিলো। বললো, তুই যে কাউকে সাথে নিয়ে বউ মাকে নিয়ে আয়। বিয়ের আনুসাঙ্গীক কিছু কেনাকাটা এবং সাক্ষী হিসাবে মাসুদ ভাই ও এক বন্ধুকে নিয়ে বিকেলে মাহমুদ অপ্সরাদের বাসায় গিয়ে হাজির। বাসায় ১০/১২ জন খুব কাছের আত্নীয় স্বজনকে দাওয়াত দিয়েছিলেন আবিদ সাহেব অন্য কোন অনুষ্টানের কথা বলে। আবিদ সাহেব ঘুন্নাক্ষরেও চিন্তা করেনি মাহমুদ তার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সব আনুষ্ঠানিকতা, আত্নীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব বাদ দিয়ে এভাবে বিয়ে করতে চলে আসবে। ততক্ষণে বিষয়টি ঘরে আসা অন্যান্য মেহমানরা জেনে গেল। বাধ্য হয়ে আবিদ সাহেব কাজী ও মৌলবী ডেকে বিয়ের ব্যবস্থা করলেন। অপ্সরার বিদায় বেলায় আবিদ সাহেব মাহমুদকে বুকে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলেন। বাবা আমি তোমার ভালবাসার কাছে হেরে গেলাম। আমার একমাত্র মেয়েকে আমি চোখের আড়াল করে এতদুরে বিয়ে দিতে চাইনি। তুমি আমার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সব আনন্দ উৎসবকে বির্সজন দিয়ে প্রমান করলে, আমি অপ্সরাকে যতটুকু ভালবাসি তার চেয়েও তুমি অপ্সরাকে বেশী ভালবাসো। আমার বিশ্বাস আমার অপ্সরা তোমার কাছে সুখেই থাকবে। তোমরা সুখি হও বাবা, সুখি হও.. পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। ভালবাসা দিবসের ঠিক ১৭ দিন পরে মাহমুদ আর অপ্সরা সারা জীবনের জন্য একে অপরের কাছে চলে আসলো। আরো একবার জয় হলো ভালবাসার।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত