মেইন রোডে সিগারেট দোকানটার সামনে দাড়িয়ে রাজা। অফিস থেকে সুমিতের বাড়ি ফেরতের সময় হয়ে এসেছে। সেই কারণেই অপেক্ষা করছে রাজা। বাড়ি ঢোকার আগে একটা করে সিগারেট টেনে কিছুক্ষনের জন্য আড্ডা মারবে দুজন। সুমিত ফোন করে বলেই রেখেছিল অফিস থেকে বেরোনোর সময়ে, যে রাজা যেনো অপেক্ষা করে ওর জন্য। অফিসের গাড়িটা এখন তারাতলা পেরিয়েছে, আর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সুমিত চলে আসবে। সিগারেটটা সবে ধরাতেই যাচ্ছিল রাজা, এমন সময় ওর মোবাইলটা বেজে উঠলো। সুমিতের কল, ‘ বেহালা থানার সামনে জলদি আয়, বাজে অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে একটা indigo desire গাড়ির, একটু আগেই। লোকটা আর বেঁচে নেই ভাই।’ কলের শুরুতেই এরকম একটা কথা শুনে রাজা চমকে গেলো, জিজ্ঞেস করলো, ‘ কে বেঁচে নেই? কার হলো অ্যাকসিডেন্ট?’ সুমিত,’ জলদি আয়। রাস্তায় ভীড় জমে গেছে। এত আওয়াজে কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে।’
ফোন লাইন কেটে নিজের বাইক টা স্টার্ট করলো রাজা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে সুমিত অ্যাক্সিডেন্টের গাড়ির পাশে দাড়িয়ে রয়েছে। গাড়ির পেছনের বেশ অনেকটা অংশ তুবরে গেছে একটা ট্রাকের ধাক্কায়। যা অবস্থা গাড়ির, ব্যাক সিটে বসে থাকা প্যাসেঞ্জার এর বাঁচার সুযোগ না থাকাটাই স্বাভাবিক। ভিড়ের মধ্যে দিয়ে সুমিত হাতের ইশারাতে রাজাকে গাড়িটার দিকে যেতে বললো। রাজা তাই করলো। এত ভিড়ের মধ্যে ওর ডেড বডি দেখার কোনো ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু সেই ভিড়ের ফাঁক দিয়ে যখন ও গাড়ির ভেতরে মৃত ব্যক্তির রক্তাত্ব মুখ অর্ধেকটা দেখতে পেলো, রাজা লোকজনদের ঠেলে গাড়ির গেটের দিকে পৌঁছালো। এরপরের দৃশ্যটা দেখে রাজা নিজের মাথায় হাত দিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো,’ নাহহহ…নাহহহহ !’ গাড়ির মধ্যে সুমিত – রক্ত মাখা শরীর নিয়ে মৃত।
আতঙ্কে, ভয়ে, দুঃখে , কাঁপতে কাঁপতে রাজা নিজের ডান দিকে তাকালো, যেখানে সুমিত একটু আগেই দাড়িয়েছিল। এখন আর ওখানে দাড়িয়ে নেই সুমিত।