ভালোবাসা

ভালোবাসা
মেয়েটাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছিল। মেয়েটা প্রথম রাতেই বলেছিল, তুমি আমার দেহ পাবে মন পাবেনা। ছেলেটা বলেছিল, সময় হলেই মন পাবো। যা ভাবছো তা না! ক্রমে ক্রমে ওদের সংসার কাটতে থাকে। মেয়েটা যথা সম্ভব কম কথা বলতো। ছেলেটা বাইরে যাওয়ার সময় মেয়েটি খাবার বেড়ে দিতো। যা দরকার সব-ই দিতো। ছেলেটা চিৎকার করে ডাকতো, আমার ঘড়ি কই? মেয়েটা এসে বের করে দিতো। বড্ড অপরিষ্কার ছেলেটা।
কাপড়-চোপড় ময়লা হয়ে থাকে পরিষ্কার করে না। মেয়েটা পরিষ্কার করে তুলে রাখতো। ছেলেটা এখানের জিনিস এখানে ওখানে রাখতো , মেয়েটা তুলে রাখতো। কয়েকমাস পর বাপের বাড়ী এসে মেয়েটার আর সময় কাটে না। না জানি ও কি করছে! নিশ্চয়ই চা বানিয়ে গ্যাস বন্ধ করেনি, একটা ভয়ংকর কিছু হয়ে যাবে। মনের মাঝে নানা কল্পনা,,আর ভাবনা । মেয়েটা ফোন দেয়, গ্যাস চেক করোতো। ছেলেটা গ্যাস চেক করে জানায় বন্ধই আছে। এরপর মায়ের সাথে গল্প করতে করতে খেয়াল করে, অজান্তেই ছেলেটার কথা বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছে, তোমার জামাই এটা খেতে পছন্দ করে, তোমার জামাই এটা একদমই পছন্দ করে না ইত্যাদি ইত্যাদি ।
ছেলেটা কি খাবার গরম করেছে? সবটা একবারে নিশ্চয়ই গরম করেছে, বাটিতে তুলে খানিকটা করতে বলতে হবে। মেয়েটা আবার ফোন দেয়। ছেলেটা রিসিভ করে না। মেয়েটার চিন্তা হয়। মিনিট খানেক বাদে আবার দেয়। আবার দেয়। মেয়েটার চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে। মাকে গিয়ে বলে, তোমার জামাই ফোন ধরছে না। আবার ছুটে এসে ওর পাশের বাসার ভাবীকে ফোন দেয়। ভাবী চেক করে আসেনতো ওর কিছু হলো কিনা? ভাবী গিয়ে জানায়, গেটে তালা দেয়া। মেয়েটার চিন্তা আরো বাড়ে। খানিক বাদে ছেলেটা ব্যাক করে। মেয়েটা ধমক দিয়ে বলে, কই ছিলে?
ছেলেটা বলে, তুমি কি আমাকে একটু সিঙ্গেল লাইফ এনজয় করতে দিবা? ফ্রেন্ডদের সাথে ঘুরছি। এরমধ্যে ফোন দিয়েই যাচ্ছ!! সেই প্রথম মেয়েটা রিয়ালাইজ করে। আমি তো ওকে ভালোবাসতাম না! তাহলে এমন কেন হচ্ছে? আমিতো ওকে কখনো মন দিতে চাইনি! অথচ ওকে ছেড়ে একটা দিন কেন কাটছে না! বাবা-মাকে গভীরভাবে লক্ষ্য করে ও। আসলেই তো! ভালোবাসা-সেটাতো একটা অভ্যাসের নাম! সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছি আমি।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত