ফেসবুকে ঢুঁ মারতেই চোখে পড়লো Akash Mahbub আপডেটেড হিজ কাভার ফটো ছেলেটার পাশে অপরূপ সুন্দরী এক মেয়ে। আকাশের পাশে মেয়েটাকে দেখে আমার ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে খান খান হয়ে গেল।
গতকাল রাতেই আকাশ আমার প্রেম নিবেদনে সাড়া দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ওর সাথে আমার কুুুতুকুতু প্রেম চলছে। “তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না সাদিয়া” আকাশের এই মেসেজটা এখনো আমার মেসেন্জারে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। অথচ এরই মাঝে আকাশ আবার একটা রিলেশনে জড়ালো। শুধু রিলেশনেই জড়ালো না এর মধ্যে আবার কাভার ফটোও আপলোড দিল। আমি কিছুতেই সূত্র মেলাতে পারলাম না। রাগে-ক্ষোভে-দুঃখে আকশকে ফোন দিলাম ফোন দিয়ে এক বস্তা সমপরিমাণ রাগ ঝাড়লাম। অগ্নি শর্মা কন্ঠে বললাম, “ছিহ আকাশ, ছিহ! তুমি এত নীচ এত নিকৃষ্ট মন তোমার রিলেশনের একদিন যেতে না যেতেই তুমি আরেকজনের সাথে ছিহ!”
আমার এমন কথা শুনে ও যেন আকাশ থেকে পড়লো। একদম বাচ্চা শিশুর মতো কিছুই জানেনা এমন ভান ধরে বললো, “মানে কী সাদিয়া? কী করেছি আমি?” আমি তখন রেগে-মেগে তিন হাজার ডিগ্রীর জ্বলন্ত অগ্নিপিন্ড। প্রচন্ড চিৎকার করে বললাম, “নাহ! তুমি কিচ্ছু করো নি তো আমার সাথে রিলেশন থাকা অবস্থায় তুমি আরেকটা জিএফের সাথে ঢং করে কাভার ফটো আপলোড দিলা আর কী করতে চাও বলো?” আকাশ এবার আশ্চর্য নরম সুরে বললো, “সাদিয়া, ওটা আমার আপন বোন। তোমার মানসিকতা দেখে আমি মুগ্ধ। আর হ্যাঁ, তোমার মত সন্দেহবাঝকে এভাবেই টাস্কি খাওয়ানো উচিৎ।” আমি যেন মগ সাইজের একটা ভ্যাবাচ্যাকা খেলাম। কিছুক্ষণের জন্য আমার দেহ নীরব নিথর হয়ে স্টাচুর মত দাড়িয়ে গেল। কেডি পাঠকের মত সত্য উদঘাটনে আকাশের আইডিতে ঢুকে পড়লাম।
আকাশের রিলেশনশিপ স্টাটাস এখনও সিঙ্গেল। Oh no! উপর-নীচ করে করে আমার চোখ দুটা কয়েকবার কেঁপে উঠলো। আমি আকাশ কে আরেকবার ফোন দিলাম, “এই তোমার রিলেশনশিপ এখনো সিঙ্গেল যে চেঞ্জ করোনি কেন?” আকাশের উত্তর, “না, বেবি। ওটা চেঞ্জ করা যাবে না।” খানিকটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “কেন? কেন চেঞ্জ করা যাবে না? আমরা তো রিলেশনেই আছি।” আকাশ আরেকটু নরম সুরে বললো, “উফ! সাদিয়া , আগামীকাল রিয়ার সাথে আমার বিয়ে। পারিবারিক আয়োজনেই আমাদের বিয়ে। এখন রিলেশনশিপ স্টাটাস দিলে তো রিয়া আর আমাকে বিয়ে করবে না।” কিহ???
আকাশের এমন কথা শুনে আমি যেন রীতিমত ৬৭০ভোল্ডের শক খেলাম।উরাধুড়া ঘাম ছুটতে লাগলো আমার দেহ থেকে। প্্্প্রচন্ড ব্যথিত হৃদয়ে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে ফোন দিলাম বান্ধবী কালকে আমার বয়ফ্রেন্ডের বিয়ে। আমি ওকে ছাড়া বাঁচবো না বান্ধবী। ওকে না পেলে সুইসাইড করবো একদম। তুই প্লিজ কিছু একটা কর।” কিছুক্ষণ পর দেখলাম আমার সেই ফ্রেন্ড আমাকে ট্যাগ করে আমার একটা ছবি আপলোড করে ক্যাপশন দিয়েছে, ” সরি মাই ডিয়ার বেষ্টি আল্লাহ তোকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক বেষ্টি। ভালোবাসার মূল্য এভাবেই দিতে হয়, স্যালুট তোকে।”
ওকে জিজ্ঞেস করলাম, “হোয়াট, এসবের মানে কী?” ও বেশ নরম সুরে উত্তর দিলো, “কেন বান্ধবী তুমি যখন আমার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড নিয়ে আমার এক্স ক্রাশ সজলের সঙ্গে আমার সঙ্গে বেইমানি ,করে আমাকে না জানিয়ে পুতুপুুুতু ডেটিং করতে তখন কেমন লেগেছিল মাই ডিয়ার বেষ্টি? কিিহ??? তাঁর মানে তুই হ্যাাঁ আমি। সেদিন তোর এক্স তপু না আমি তোমার ফেবু হ্যাক করে ছিলাম।আর তারপর আকাশের আইডি নিয়ে আমার আরেকটি আইডি দিয়ে রোজ আকাশের সাথে চ্যাাটিং এভাবেই আমাদের প্রথম প্রেম। যাজ্ঞে এক সপ্তাহের মধ্যে আমার বিয়ে তোর দাওয়াত রইল। এন্ড সরি তোকে এভাবে ইট মারার জন্য এরপর টুুসটুস করে ফোনের লাইনটা কেটে দিল আমার বেইমান গুন্ডা বেষ্টি রিয়া।
কিন্তু একটা জিনিস বুঝতে পারলাম না, আকাশ বললো ওর কালকে বিিয়ে আর রিয়া বললো একসপ্তাহের মধ্যে!
মনে প্রচন্ড দুুঃখ নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলাম এটা কি কিছু হইলো? কিছুক্ষণ পর মনে হলো- আল্লাহ যা করে তা ভালোর জন্যই করেন।তা না হলে এক দিন প্রেম করতে না করতেই এ অবস্থা! বাকি দিনগুলো কি হতো? প্রায় আধঘণ্টা পর আমার এক ফ্রেন্ডের মেসেজ পেলাম। মেসেজটা দেখা মাত্র যেন একটা দমকা হাওয়া বয়ে গেল আমার মাথার উপর দিয়ে। দুই ঘণ্টা পর নিিজেকে স্থির করলাম কোনো রকম।
এরপর রিয়া একটা ছোট্ট মেসেজ দিলাম। “ধন্যবাদ বান্ধবী খুব জোর বাঁচা বেঁচে গেলাম.. আল্লাহ তোকে হেদায়েত দান করুক।বিয়েতে বিরিয়ানী খাওয়ালেই হবে।এ বলে রিয়ার নাম্বাার টা দিলাম ব্লকলিষ্টে ফেলে কারণ আকাশ আমার গুন্ডা বেষ্টিি রিয়া কে না রিয়ার আরেক বান্ধবী রিয়া কে বিয়ে করছে। এ খবর জানিয়েছে সেকেন্ড রিয়ার ছোট ভাই। নিজেকে প্রফেশনাল সুখি মনে হচ্ছে এখন। বেচারি রিয়া আমাকে ঠপ দিয়ে গিয়ে এখন নিজেই ডপে! সত্যিি ছেলেদের মন মেয়েদের চেয়েও পেঁচানো।তা না হলে এক ডিলে দুই পাখি কেমনে সম্ভব??
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা