ক্রিংক্রিং। কলিং বেলের এই আওয়াজটা যে আমার জীবনে এত বড় অশুভ বার্তা বয়ে আনবে কে ভেবেছিল। আমি আর আমার স্ত্রী শোভা বসে বসে গল্প করছিলাম। সময়টা দুপুর।অলস এসময়টা সবসময়ই রহস্যময়। কলিং বেল বেজে উঠতে শোভা, “আমি দেখছি ” বলে উঠে গেল। যখন ফিরে এল তখন যেন ও নিজেই একটা সাক্ষাৎ বিস্ময়। ওর এই চেহারা দেখার দুর্ভাগ্য আমার এর আগে কখনো হয়নি৷ যদিও ওর সাথে আমার বিয়ের বয়সটা প্রায় তিনবছর। বরাবর ওর হাসিমুখটা দেখেই আমি অভ্যস্ত। তাই ওর থমথমে মুখ দেখেই বুঝলাম, কোথাও বড় ধরনের একটা ব্যত্যয় ঘটে গিয়েছে। “কি হয়েছে? “জানতে চাইলাম। এবং এই প্রথম লক্ষ্য করলাম, শোভার হাতে একটা খাম ধরা। মুখটা ছেড়া।অর্থাৎ ভেতরে যে অশুভ বার্তাই থাকুক না কেন এতক্ষণে সেটা শোভার জানা হয়ে গেছে। আমার কথায় শোভা যেন সংবিত ফিরে পেল। তাড়াহুড়ো করে হাতের খামটা লুকানোর একটা ব্যার্থ প্রয়াস চালাল। আমি উঠে গিয়ে একরকম জোর করেই খামটা নিয়ে নিলাম।রাখতে পারবেনা ভেবে তেমন বাধা দিলনা শোভা। কেমন একটা আচ্ছন্নতা গ্রাস করেছে ওকে। খামে হাত ঢুকাতে প্রথমে একটা চিরকুটের অস্তিত্ব অনুভব করলাম। বের করে দেখি লেখা আছে, “এটা তোমার স্বামীকে দেখালে কেমন হয়? ” লেখাটা স্বাভাবিকভাবেই কৌতুহলের জন্ম দিল আমার। খামের আরো গভীরে হাত ভরে দিতেই পোস্টকার্ড আকারের একটা জিনিস হাতে ঠেকল। বের করলাম ওটা। একটা ফটোগ্রাফ। কিসের ছবি দেখতে গিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মত অবস্থা হল আমার। ছবিটাতে একজোড়া মানব মানবীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মূহুর্তের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। ভয়ঙ্কর ব্যাপারটা হল ছবির মেয়েটা শোভা। আরো ভয়ঙ্কর যেটা, শোভার সাথের পুরুষটা অপরিচিত। অর্থাৎ আলো আঁধারি এবং ছেলেটার শুধু পিঠ দেখা যাওয়ায় তার পরিচয়টা জানা যাচ্ছেনা। তবে আমি যে নই এটা স্পষ্ট। ছবি থেকে মুখ তুলে শোভার দিকে তাকিয়ে দেখি, মাথা নিচু করে আছে ও।টপ টপ করে পানি পড়ছে মেয়েটার চোখ থেকে। আস্তে করে মুখটা তুলে ধরলাম। চোখ বন্ধ করে ফেলল শোভা। “পাগল নাকি তুমি? “যথাসম্ভব নরম গলায় বললাম। কে না কে ফালতু একটা ছবি পাঠিয়েছে আর তুমি একেবারে কেঁদে কেটে সারা। জানোনা আজকাল ফটাশপের মাধ্যমে ক্লাস টু ‘র একটা বাচ্চাও এসব রাবিশ বানাতে পারবে। আর অন্তরের কথা যদি শুনতে চাও, তাহলে বলব, তোমার অতীত আমার কাছে এতটুকু গুরুত্বপুর্ণ না।তুমি যদি আমাকে একবার কথা দাও, এখন, এইমূহুর্ত থেকে তুমি আমার,তাহলে তোমার পেছনের ভুলগুলো আমি ভুলে যাব। ” একটু থামলাম। এখনও বন্ধ হয়নি শোভার কান্না। “শোনো, ছবিটা সত্যি না মিথ্যা তা নিয়ে আমি একটুও মাথা ঘামাচ্ছিনা। সুতরাং তোমার এত মন খারাপ করার কিছু নেই “,বলে চোখ থেকে পানির ফোঁটাগুলো মুছে দিলাম শোভার। যেন কয়েকটা মুক্তার দানা। “এখন ঝটপট এককাপ চা বানিয়ে আনতো,”পরিবেশ হাল্কা করার জন্য বললাম। শোভাও বরাবরের মত কথা না বলে চলে গেল রান্নাঘরের দিকে। আমি এতক্ষণ যে কথাগুলো শোভাকে বললাম, সেগুলো আসলেও আমার মনের কথা। প্রতিটা মানুষই দ্বৈত জীবন যাপন করে।সাদামাটা জীবনের একজন স্নেহশীল বাবাই হয়ত গোপন কোন এক জীবনে জাত খুনি।তেমনি একজন প্রেমময়ী স্ত্রীর অতিতগুলো হয়ত গোপনীয়তার চাদরে মুড়ি দিয়ে থাকতে পারে।যারা সেই চাদর সরাতে চায় তারা জীবনে সুখের দেখা খুব কম পায়। একজন যদি তার ভুলগুলোকে না ভুলে সংশোধনের সুযোগ চায় তাকে সেটা দেয়া উচিত। তারমানে এই না, আমি শোভাকে অবিশ্বাস করছি। ছবির ব্যাপারটা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হলেও আমার কথাগুলোর পরিবর্তন হতনা। শোভা চা নিয়ে এল। এখনো ওর মুখে প্রচুর মেঘের ঘোরাফেরা। বর্ষণ হতে পারে যখন তখন। আমি একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করি। প্রতিদিনের মত আজও দুপুরের খাবার খেতে এসেছিলাম বাসায়। বাসায় শোভা একা থাকে। একা একা নাকি ও খেতে পারেনা। যেজন্য প্রতিদিন আসতে হয় আমাকে। আজ এসে এই ফ্যাসাদে পরলাম। আমার চাকরিটা খুব কড়া। জবাবদিহিতার একটা ব্যাপার আছে। তারওপর প্রচুর কাজ জমে আছে অফিসে। তবুও ঠিক করলাম ঝুঁকিটা নেব। শোভাকে বললাম, “আজ আর অফিসে যাবনা, চলো কোথাও ঘুরে আসি। ” “আজ না গেলে হয়না? “শোভা ইতস্তত করে বলল। “উহুঁ, হয়না। ” একরকম জোর করেই ওকে নিয়ে বের হয়ে পড়লাম। তবে সন্ধ্যা মিলাতে না মিলাতেই ফিরে আসতে হল। শোভার নাকি মাথাব্যথা করছে। ইতোমধ্যে ছবিটা আমি কিভাবে নিয়েছি সেটা বোঝাবার যথেষ্ট চেষ্টা করছি ওকে। বোঝাতে পেরেছি বলে মনে হয়না। রাতে কিছু না খেয়েই শুয়ে পড়ল শোভা, সঙ্গে আমিও। পরদিন সকাল সকাল উঠে পড়লাম, গতকাল একবেলা অফিস কামাই করেছি, আজ তাড়াতাড়ি পৌছে যথাসম্ভব সেটাকে পুষিয়ে নিতে হবে। তবে যত সকালেই জাগি না কেন, শোভার আগে জাগা আমার হয়ে ওঠেনি কখনো। আজও হলনা। বাথরুমে যাবার আগে একবার উঁকি দিলাম রান্নাঘরে। নাশতা রেডি করছে শোভা। আমি বাথরুমে চলে গেলাম। বের হয়ে দেখি নাশতা টেবিলে নিয়ে শোভা বসে আছে। লক্ষী বউ আমার! “মন ভাল হয়েছে? “জিজ্ঞেস করলাম আমি। শোভা কথা না বলে হ্যাঁসূচক মাথা নাড়াল। আসলেও ওকে কালকের তুলনায় যথেষ্ট ভাল দেখাচ্ছে। সময় সব দুঃখই ভুলিয়ে দেয়। নাশতা করে বের হবার আগে ওকে বললাম,” আজ দুপুরে তিল ভর্তা করো। জানোই তো তোমার হাতের তিল ভর্তা আমার কত পছন্দের।” “আচ্ছা। ” ছোট্ট করে জবাব দিল শোভা। আমি বের হবার জন্য পেছনে ফিরেছি, এমনসময় শোভা ডাক দিল, “শোনো? ” “কী? “ঘুরে জানতে চাইলাম। শোভা কেমন যেন ইতস্তত করছে, কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছেনা। “কিছু আনতে হবে? ” “না, না “তাড়াতাড়ি করে বলল শোভা। “তাহলে? ” “না কিছুনা। ” “আর ইউ শিওর? ” “হুম”। আমি কথা না বাড়িয়ে অফিসে চলে এলাম।আজ এক একটা ফাইলকে হিমালয় মনে হচ্ছে।মাথায় শুধু শোভার জল মাখা চোখদুটো ভাসছে। কাল অফিস কামাইয়ের ব্যাপারটা কেউ খেয়াল করেনি। তাই আজ লান্চ টাইমের কিছুটা আগেই বাসার পথ ধরলাম। শোভা বাসায় একা থাকলে দরজা লক করে রাখে। আমার কাছে চাবি আছে, নিজেই দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলাম। বাথরুমের দরজা লাগানো দেখে বুঝলাম শোভা ভেতরে। আমি ফ্রেশ হবার জন্য অন্য বাথরুমের দিকে এগোচ্ছি এমন সময়ে শোভার বাথরুমের দরজার হাতলে একটা বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করলাম। হাতলের ফাঁকে একটা কাগজ গোঁজা দেখতে পাচ্ছি। আরেকটা অভিশপ্ত ছবি নয়তো? কাছে গিয়ে দেখি ,একটা চিঠি। হাতে নিয়ে ওটা পড়তে শুরু করলাম।হাতের লেখায় বুঝলাম, শোভার চিঠি। “প্রিয় আরিফ, আল্লাহ মানুষের পাপের কিছু শাস্তি দুনিয়াতেই দিয়ে দেন। তুমি বোধহয় বড় কোনো পাপ করেছিলে কখনো, নইলে আমার মত খারাপ একটা মেয়েই কেন তোমার বউ হবে। আমি কেমন খারাপ সেটা নিশ্চয়ই আর ব্যাখ্যা করতে হবেনা। তবে ছবিটার প্রেক্ষাপটটা একটু বলি।কলেজে থাকতে একটা ছেলের প্রেমে পড়ি। খুব যে ভেবেচিন্তে, এমন না।সবাই প্রেমে পড়তে চায় ওই সময়টাতে। আমিও চেয়েছিলাম। একসময় আমাদের প্রেম ঘনিষ্ঠতায় পরিণত হল। যে ঘনিষ্ঠতার কদর্য রুপ তোমার দেখা হয়ে গেছে গতকাল। তবে আমাদের এই প্রেম কিংবা ঘনিষ্ঠতা স্থায়ী হলনা। কলেজ জীবন শেষ করতে না করতেই তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেল। বিয়েতে আমার মত না থাকলেও অমত ছিলনা। কারণ মারুফ ছিল একেবারেই বেকার। সহসা কিছু একটা করতে পারবে এমন সম্ভবনাও ছিলনা। ওর পরিবার ছিল নিম্নমধ্যবিত্ত। আর আমিও ততদিনে বুঝে গিয়েছিলাম, জীবনটা উপন্যাসের কোনো অধ্যায় না। প্রেম ভালবাসা এখানে অতি অপাংক্তেয়। সেটা দিয়ে আর যাই হোক পেট ভরে না। আমার বিয়েতে মারুফও তেমন আপত্তি করেনি। কঠিন বাস্তবতা মারুফও দেখে ফেলেছিল। তোমার সাথে আমার বিয়ের পর আশ্চর্য হয়ে উপলব্ধি করলাম, একটু একটু করে তোমায় ভালবেসে ফেলছি। তোমার সরলতার প্রেমে পড়ে যাচ্ছি। ঠিক তখনই কালো একটা ছায়া হয়ে আবির্ভাব ঘটল মারুফের।এই তিন বছরে পৃথিবীটার অনেক পরিবর্তন হয়েছে, সেই সাথে মারুফেরও। কিভাবে যেন বিদেশে গিয়ে একটা ভাল চাকরি যোগার করে ফেলেছে ও। প্রচুর টাকা পয়সা হয়েছে। মাত্র একসপ্তাহ আগে দেশে এসেছে ও।সেদিনই আমার ঠিকানা যোগার করে দেখা করল। বলল, ফিরে যেতে ওর জীবনে। কিছুক্ষণের জন্য যে দ্বিধায় ভুগিনি, এমনটা দাবী করবনা। কিন্তু সেটা বেশিক্ষনের জন্য নয়। দৃঢ় গলায় সেদিন মারুফকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। দৃঢ়তাটা আমি কোথায় পেয়েছিলাম জানো? তোমার প্রতি আমার ভালবাসা থেকে। হ্যাঁ, এতদিনে আমি তোমাকে সত্যিই ভালবেসে ফেলেছি। কাঁচা বয়সের ঠুনকো প্রেম নয়, সত্যিকারের প্রেম। যে প্রেমের শক্তি এতটাই, যেটা জীবনের প্রথম প্রেমকেও ফিরিয়ে দেবার সামর্থ্য রাখে। সেদিন মারুফকে বলেছিলাম, তুমি যদি আমাকে সত্যিই কোনোদিন ভালবেসে থাক, তাহলে আমার জীবনে আর কখনো এসো না। মারুফ সেদিন চলে গিয়েছিল। অন্তত আমি তাই ভেবেছিলাম ।কিন্তু সে যে এমন বিভীষিকা হয়ে ফিরে আসবে,ওর জীবনে ফিরতে অস্বীকৃতি জানানোয় এভাবে আমার ওপর প্রতিশোধ নেবে বুঝতে পারিনি। ছবিটা মারুফ কবে কোথা থেকে তুলেছে জানিনা। তবে ওটা যে মারুফই সেটা নিশ্চিত।কারণ তুমি ছাড়া ওই একটা পুরুষই এসেছে আমার জীবনে। আমি জানি, ছবিটা দেখার পর কাল যে কথাগুলো বলেছিলে সেগুলো আসলেই তোমার অন্তরের কথা। আমার কুৎসিত অতীত তোমার আকাশের মত মনটার জন্য কোনো কালো মেঘ নয়। কিন্তু আমি কিভাবে তোমার সামনে মুখ দেখাব বলতে পার? প্রতিটা মূহুর্ত মনে হবেনা যে, আমি তোমাকে ধোকা দিচ্ছি? এই অনূভুতি নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকব? কারণ আমি যে তোমাকে সত্যিই ভালবেসে ফেলেছি। তাই আমি চলে যাচ্ছি, দুরে। এতটাই দুরে, যেখান থেকে আমার কালোছায়া তোমাকে ছোঁবার সাহসটুকুও দেখাবে না। তুমি আবার নিজেকে মজনু প্রমাণ করার জন্য সারাজীবন একা থেকোনা! সুন্দর দেখে একটা মেয়েকে বিয়ে কোরো। এবং অবশ্যই ভাল মেয়ে। ভালবাসার প্রমাণ তোমার দেবার প্রয়োজন নেই। আমি সেটার গভীরতা মেপে ফেলেছি। শুধু দুঃখ আমার ভালবাসা তোমাকে বোঝাতে পারলাম না। ইতি, শোভা পুনশ্চঃ এক, অফিসে যাবার আগে তোমাকে ডেকেছিলাম কেন, জানো? চেয়েছিলাম শেষবারের মত আমায় একটু আদর করো, হলোনা পুনশ্চঃ দুই, তোমার প্রিয় তিল ভর্তা বানিয়েছি অনেক ভালবাসা নিয়ে। যাই ঘটুক না কেন ওটা খেও তুমি। ” *** চিঠিটা পড়ার পর মনে হল জীবনের সব বিস্ময় আমি দেখে ফেলেছি।একইসঙ্গে কাউকে ভালবাসবার অধিকারও আমি হারিয়েছি।শোভার চলে যাওয়ার পেছনে প্রত্যক্ষভাবে আমিই দায়ী। হ্যাঁ, ছবিগুলো আমিই পাঠিয়েছিলাম। এবং ছবির চিনতে না পারা ছেলেটাও আমি। মারুফ নামের কারো অস্ত্বিত্ব এই চিঠিটা পড়ার আগে জানতামও না আমি। ছবিটা পাঠিয়ে শোভাকে ৰোঝাতে চেয়েছিলাম ওর প্রতি আমার বিশ্বাসের প্রগাঢ়তা। প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম , কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঝড়ো হাওয়াও ওর প্রতি আমার বিশ্বাসের ভিত্তিকে টলাতে পারবেনা। কিন্তু বুঝতে পারিনি, ওই ছবিটা নিছক ঝড়ো হাওয়া ছিলোনা, ছিল প্রলয়ংকরী সাইক্লোন। যেটা আমার জীবনটাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে অজানায়। ভেবেছিলাম আজ শোভাকে সব খুলে বলব। প্রচন্ড মানসিক চাপ দেয়ার জন্য ক্ষমাও চাইব। কিন্তু ও কোনো সুযোগই দিলোনা আমাকে। কাকতালীয় একটা ঘটনায় ভুল বুঝে চলে গেল।চিরতরে। আসলে আমিই শোভার যোগ্য নই, ছিলাম না কখোনো। মারুফই হয়ত শোভাকে সত্যিকারের ভালবেসেছিল। যেকারনে ওর সুখের দিকে তাকিয়ে সরেও যেতে পেরেছিল ওর জীবন থেকে। আর আমি স্বামী হয়ে নিজহাতে ওকে. . . .। না, কাঁদবোনা আমি। অনেক কাজ আমার। বাথরুমের দরজা ভেঙে শোভার লাশটা বের করতে হবে।এরপর শোভার হাতের তিল ভর্তা খেতে হবে। অনেক ভালবাসা নিয়ে বানিয়েছে অবুঝ মেয়েটা।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা