কি চাও তুমি চার দেয়ালে বন্দি হয়ে থাকবো আমি। আমার ইচ্ছের কি কোনো দাম নেই তোমার কাছে। নাকি পুতুল বানাতে চাও । আমার ও তো শখ আল্হাদ পুরন করার অধিকার আছে তাই না। হুমম ফাহাদের সাথে দেখা করা টা তোমার ভালো লাগে না, সেই জন্য ওর সাথে দেখা করা টাও কমিয়ে দিছি। এর থেকে বেশি কি করতে বলো।
জান্নাত এত গুলো কথা এক নিশ্বাসে বলে ফেললো। রাগ আর অভিমান তাকে রুক্ষ করে তুলেছে। ফাহাদ নামক যে ছেলেটার কথা বলা হয়েছে, সে গাজিপুরের কোনো এক গ্রামের বাসিন্দা। আমি বাসায় না থাকলে জান্নাত মাঝে মাঝেই যায় তার সাথে দেখা করতে। কখনো এটা জিজ্ঞেস করা হয় নি, কেন সেখানে যাও। নিজের ভিতরে দোটানা, যুদ্ধের দামামা থাকলেও তা কখনো প্রকাশ করি নি। আজ নিজেকে সংযত রাখতে পারি নি। শান্ত হলাম। শান্ত গলায় বললাম, কি করো তুমি মাঝে মাঝে ফাহাদের সাথে দেখা করে।
জান্নাত হাতের কাজ ফেলে তাকালো আমার দিকে, রাগ নেই তার চোখে। কিন্তু ভয় কাজ করছে হয়তো। এই ভয় নিজেকে নিয়ে। সে বুঝতে পারছে আমি তাকে সন্দেহ করছি। তেমন কিছু না বেশির ভাগ সময় চুপচাপ থাকি , কথা বলি, কথার বলার মুড না থাকলে অচেনা রাস্তায় হাটাহাটি করি, তবে গল্প করেই বেশির ভাগ সময় পার হয়ে যায়। আমি চুপচাপ তার কথা শুনছিলাম। নগ্নতা আর মুগ্ধতা দুটোই মায়াময়। জান্নাত সুন্দরীদের তালিকা ভুক্ত না তবে তার ভিতরে একটা মায়া আছে। জান্নাত কি কখনো বুঝতে পারে না, আমি সব সময় তাকে পাশে চাই। অন্য কোনো ছেলের সাথে সময় কাটাক এটা মোটেও পছন্দ না আমার। কিন্তু যাকে ভালবাসি তার জন্য এত টুকু ছাড় যদি না দিতে পারি তো সেখানে ভালবাসার কি থাকলো।
চা খাবে মাসালা চা। বানিয়ে দেই মাথা ঠান্ডা করো। ফাহাদের সাথে এমন কোনো সম্পর্ক নেই যা নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে। তুমি আমাকে প্লিজ চার দেয়ালে বন্দি হয়ে থাকতে বলো না। এটা আমার পক্ষে সম্ভব না। জান্নাত চা বানাতে রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালো। সে জানে আমি তাকে ভালবাসি। কিন্তু এটা জানে না ঠিক কতটুকু। ৬ মাসের সংসার আমাদের। জান্নাতের এর আগেও একটা বিয়ে হয়েছিল। রোড় এক্সিডেন্ট এ তার স্বামী মারা যায়। এক দুসম্পর্কের মামার দ্বাড়া পরিচয় জান্নাতের সাথে। প্রথম দেখাতে তাকে বিযের প্রস্তাব দেই। জান্নাত নিচু গলায় বললো,করুনা করছেন। একটা বিধবা মেয়ে আমি। জান্নাত কে দরকার সেটার হোক আবেগ হোক অন্য কোনো টান।
তুমি কি একটু করুনা করবে আমার প্রতি। তোমার অতিত আমি কখনো টানবো না। বিশ্বাস করতে পারো আমাকে। তার ঠিক এক মাস পরে জান্নাত কে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আছি। জান্নাতের মাঝে এত টুকু ইগোও নেই, সে ভনিতা করতে জানে না। জান্নাত চায়ের কাপ এগিয়ে দিলো। হাত বাড়িয়ে নিলাম। একটু বসবে আমার পাশে। চোখ বড় করে তাকালো সে আমার দিকে তারপর পাশে ফিরে তাকিয়ে বসলো আমার পাশে। হুমম বলো, কি বলবে। জান্নাত আবদারের সুরে বললো। টিভির রিমোট হাতে নিলো। সে জানে তাকে তেমন কিছু বলবো না। শুধু কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকবো নিজের ভিতরের যুদ্ধ টাকে শান্ত করবো এত টুকুই।
চায়ের কাপে চুমুক দিলাম। গরমের আভায় ভিতরে কোনো অনুভুতি হচ্ছে না। জান্নাত ঘরের কাজ শেষ করতে রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালো। প্রতি সোম আর বৃহস্পতি বার সে রুম টা কে নতুন করে সাজাই। ব্যতিক্রম আজও না। চায়ের কাপ নিয়ে বারান্দায় এলাম। চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছি আর ভাবছি, আমি মনে হয় খুব একটা আধুনিক না। হয়তো জান্নাতের যোগ্য না। নিজের কাছে নিজে পরাজিত হচ্ছি আবার নিজেই জিতছি। বিবেক আর আবেগ দুটোই মাথা চাড়া দিয়ে উকি দিচ্ছে। বিবেক বলছে যা পাবার নয় তা কি করে ধরে রাখা যায়। চলে যাওয়া মানুষ টাকে কে আটকাতে পেরেছে। আর মন বলছে, আমিও তো ভালবাসি, আমার ও পাবার হক আছে। আবেগের কাছে হার মেনে সত্য টাকে ভুলে গেলে চলবে না। জান্নাত পাশে এসে বসলো। আমাকে চিন্তিত দেখে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। জান্নাত কে পাবার আশা সব সময় বেশি।
এখন আর ও বেশি মনে হচ্ছে। ভাবলাম একদিন দেখা করি না ফাহাদের সাথে দেখি কত টা সুন্দর সে, কত স্মার্ট। কত খুদ আছে আমার মাঝে। বন্ধুত্তের যে বেড়াজালে বন্দি হয়ে জান্নাত আমার অনুপস্থিতিতে তার কাছে ছুটে যায় সে কি খুবই সুন্দর নাকি আমিই কুৎসিত। জান্নাত একটা কথা বলি শোনো৷ ছোট বিরতি নিলাম। জান্নাত আগ্রহ নিয়ে তাকালো আমার দিকে। ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস তার পর বললাম, তোমার ফাহাদ কে একদিন বাসায় নিয়ে আসো দেখা করি কথা বলি। জান্নাত শান্ত গলায় না করে দিলো। এখানে না করার কি আছে দেখা করতে চেয়েছি এমন তো আর না যে মানা করে দেবো যে আর কোনো দিন যদি দেখা করিস জান্নাতের সাথে তো তোর হাত পা ভেঙ্গে গাজিপুরের গভির অরন্যে ফেলে দিয়ে আসবো। মনের কথা মনে রাখলাম।
কেন সমস্যা কি দেখা করতে। নাকি সে ভয় পাই আমার সাথে দেখা করতে। জান্নাত ভিত গলায় বললো, সে পারবে না এখানে এসে দেখা করতে। ঠিক আছে আমি গিয়ে না হয় দেখা করে আসবো দাও ঠিকানা দাও৷ জান্নাতকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই বলে ফেললাম। সে কোনো উত্তর দিলো না। আমার দিকে তাকিয়ে আছে। জান্নাক কে দেখলে মনে হয় না সে কখনো চিন্তিত থাকে । আহত পাখির মত নিশ্চুপ। কিন্তু এই শান্ত চেহারার পিছনে আছে এক ভয়ার্থ মানুষের প্রতিচ্ছবি । সে চিন্তিত স্বাভাবিক ভাবে ফাহাদ কে নিয়ে, তার নিজের সংসার নিয়ে। হয়তো সে আমাকে নিয়ে চিন্তিত।
আমার নিজের চিন্তা শক্তি লোপ পাচ্ছে। জিবনের পাওয়া কোনো জিনিস সহজতর ছিলো না। পাপ্তির সমীকরন টাও ছোট। অনেক কিছুই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। যদি বিবেকের কথা ভাবি তবে সে জান্নাকে ছেড়ে দিতে বলছে। আর যদি মনের কথা ভাবি তো সে জান্নাত কে ধরে রাখতে চাইছে। দ্বিধা দন্দ, ইচ্ছা আফসোস সব যেনো চারদিক থেকে ঘিরে ধরছে আমাকে। বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম। সব থেকে কাছের বন্ধুর সংসার এক বছর টিকে নি। তার স্ত্রী একটা ছেলেকে ভালবাসতো তার সাথে চলে গেছে।
ভেবে চিন্তে একটা বিধবা মেয়েকে বিয়ে করলাম, সেখানে আমার স্ত্রী ফাহাদ নামে কার সাথে যেন দেখা করতে যায়। জান্নাত এখন অভ্যাসে মিশে আছে। চাইলেও তাকে দুরে সরানো সম্ভব না। তবুও নিজের কাছে মাঝে মাঝে পরাজিত হতে হচ্ছে। জান্নাত যদি পারে আমি কেন পারবো না। জান্নাত অন্য একজন কে নিয়ে খুশি আমি না হয় অন্য কাউকে নিয়ে খুশি থাকার চেষ্টা করবো। মাথার মধ্যে আজে বাঝে চিন্তা বাসা বাধছে। দোকানে বসে আছি। হঠাৎ হঠাৎ আলো ছায়ার খেলা হচ্ছে। এই মেঘের নিচে রোদ আবার মেঘ ভেদ করে ঠিকই উকি দিচ্ছে। দুনিয়া একটা মায়ার আতুরঘর। প্রতিটা মুহুর্ত সে তোমাকে ডাকবে। কিছু মায়া ধোকা দেয়ার জন্য তৈরী যেমন মেয়েদের সৌন্দর্য।
প্রায় এক সপ্তাহ পর আমি বেলকনিতে বসে আছি, জান্নাত চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সামনে এসে দাড়ালো, কাপ বাড়িয়ে বললো,চা খাও। চায়ের কাপ হাতে নিলাম। জান্নাত পাশে বসলো। জান্নাত কখনো মুখ ফুটে বলে নি, আমি তোমাকে না ফাহাদ কে ভালবাসি। এটা এমন কোনো দৈরথ না, যে নিজের স্বার্থের জন্য জান্নাত কে কষ্ট দেব। যদি সে সুখে থাকে তবে আমি রাজি৷ হয়তো বিষয় টা বলতে সে ভয় পাচ্ছে। যদি আমি তুলি বিষয় টা তবে কেমন হবে। ভাবছি আর চায়ে চুমুক দিচ্ছি। মন্দ হয়তো না। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস নিলাম। জান্নাত কাজ বাদ দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কোনো কারনবশত হয়তো বুঝতে পেরেছে,আমি তাকে কিছু বলবো। চোখ বুঝে বলেই ফেললাম, জান্নাত যাও তোমাকে মুক্ত করে দিলাম। তুমি নিজের মত করে বাচবে। চার দেয়ালের প্রশ্ন কখনো আসবে না। আমি শুধু ছোট একটা অতিত হয়ে থাকবো।
আমার কথায় জান্নাতের চোখে পানি চলে আসলো, নির্বাক চোখে তাকালো আমার দিকে। যে চোখে মিথ্যা বলতে কিছু নেই, সে চোখ কিভাবে আমাকে ধোকা দেই। জান্নাত কান্না জড়িত কন্ঠে বললো, তুমি তো ঠিকই আমাকে সন্দেহ করলে,ঠিক আছে আমি চলে যাবো। হয়তো স্বাভাবিকের থেকের অনেক দুরে। আমি কিছু বললাম না। জান্নাত কান্না করতে করতে রুম থেকে বের হয়ে গেল। আমার ভিতর টা ঠুকরে কাদছে। জান্নাতের সামনে কান্না করতে পারবো না। পরের দিন অফিস থেকে এসে দেখি জান্নাত বাসায় নেই। টেবিলে পরে আসে লাল খামে একটা চিঠি৷ কাপা হাতে চিঠি টা হাতে নিলাম, সন্দেহ আর বিশ্বাসের মাঝে তুমি সন্দেহ কে বেছে নিলে। এটা বিশ্বাসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হবে হয়তো।
চোখের কোনে পানি, নিজেকে সামলাতে কষ্ট হচ্ছে। জান্নাত কে ছেড়ে এক মুহুর্ত থাকতে হবে এটা গতকাল ও ভাবনার বাইরে ছিলো। ভাবলাম সংসারের কথা মাথায় রেখে সে ফাহাদের বিষয় টা আমাকে খোলাসা করবে, হয়তো ফাহাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেবে। কিন্তু আমি ব্যর্থ। কষ্টের ছোট একটা পাহাড় বুকে নিয়ে সারা রাত জেগে থাকলাম। ঘুমের কোনো প্রশ্ন নেই চোখে। চোখ তো আর ভাবছে না জান্নাতের কথা তবে সে ব্যস্ত আমিকে রেখে। ভোর সকালে গাড়ি নিয়ে বের হলাম, মেইন রোডে উঠলাম, উদ্দেশ্য গাজিপুরের অচিনপুর নামক গ্রাম। যেখানে জান্নাত যেত ফাহাদের সাথে দেখা করতে। গ্রামের ঢুকতেই ছোট একটা চায়ের দোকান। গাড়ি থামিয়ে দোকানে গিয়ে বসলাম। সে নিশ্চয় জানবে ফাহাদের কথা। চায়ের কাপে দুটো বিস্কুট ভিজিয়ে মুখে দিলাম।
ভাই ফাহাদ নামে কাউতে চিনেন কি, দোকানদার ইনিয়ে বিনিয়ে না বললো, দু এক জনকে সেও জিজ্ঞাসা করলো কিন্তু কেউ কোনো তথ্য দিতে পারলো না। সকাল পেরিয়ে বিকাল হলো, পুরো গ্রামের প্রত্যেক টা রাস্তায় কয়েক বারের মত চক্কর দিলাম, বেশ কিছু মানুষ কে জিজ্ঞাসা করলাম, কিন্তু ফলাফল শুন্য। এক জন বুড়ো আঙ্কেল চেনে ফাহাদ নামে কাউকে। কিন্তু তার বাবার নাম বলতে না পারায় সে কোনো তথ্য দিতে পারলো না। ক্লান্ত হয়ে বিকালের দিকে মন মড়া করে গ্রামের শেষ দিকে একটা নদি আছে সেখানে গিয়ে বসলাম। বিস্তর না হলেও বাতাসের পরিমান টা ভালোই। ক্লান্ত হয়ে বসে আছি। শেষ ভরসা হিসেবে জান্নাতের ঘুড়তে বের হওয়া চিন্তা করছি। নিজেকে শুন্য মনে হচ্ছে, সব থেকে বড় ভুল কেন চালাকি করে ফাহাদের নাম ঠিকানা নিলাম না। তবে এত কিছুর ভিড়ে এখন আফসোস হচ্ছে কেন জান্নাত কে যেতে দিলাম।
নিজের সাথে যুদ্ধ টাই ভালে ছিলো তবুও দিন শেষে জান্নাত কে এক নজর দেখতে পারতাম। মনের শান্তি দুনিয়ার সব শান্তির থেকে বড়। একটা ৫ বছরের বাচ্চার হাত ধরে একজন মেয়ে হেটে আসছে। ছোট ফুটপুটে ছেলে দেখতে জান্নাতের মত । কেন জানি মনে হচ্ছে প্রশান্তির এক বাতাস তাদের স্পর্শ করে এসে আমাকে ছুয়ে যাচ্ছে। সারাদিনের ক্লান্তি মুহুর্তে শেষ৷ কিন্তু ছেলেটার উপর চোখ পরতেই চিন্তার এক রেশ মাথায় চাপা পড়লো। কে এই ছেলে। নিশ্চয় ফাহাদ নয়, নাকি ফাহাদ। আমি তখনো দিধাদন্দে।
জান্নাত নরম সুরে বললো, আমাকে একবার ফোন দিলেই পারতে। ফোন দিতে তো মানা ছিলো না। আমি তাকিয়ে আছি ছেলেটার দিকে। আপন মনে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তার হয়তো ভাবার বয়স না কিন্তু সে আমার মাঝে কিছু খুজছে। ফাহাদ নামে যার অনুসন্ধানে বের হয়েছো তুমি সে আর কেউ নয় আমার ছেলে। সত্যি কথা তোমাকে অনেক বার বলতে চেয়েছি কিন্তু বিশ্বাস ঘাতকার ছাপ পরে থাকবে তাই বলা হয় নি। তোমাকে ঠকানোর কোনো ইচ্ছে আমার ছিলো না। আমি নির্বাক চোখে জান্নাতের দিকে তাকিয়ে আছি, কখনো কোনো মায়ার বাধনে আটকা পরি নি তবে জান্নাতের চোখের মায়াতে আমি আটকা। মনে হচ্ছে সে আমাকে হিপনোটাইজ করেছে। জানা জিনিস গুলে ভুলে যাচ্ছি। জান্নাত কে একটি বারের জন্য জিজ্ঞাসা করা উচিত আমার তো ফাহাদে কোন সমস্যা ছিলো না তবে কেন বললে না ওর কথা। কিন্তু মুখ ফুটে কোনো কথা বের হচ্ছে না। কি ব্যাপার কিছু তো বলো। একদিনে নিশ্চয় খুব একটা কষ্ট হয় নি যে নিশ্চুপ হয়ে যাবে। জান্নাত আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমাকে কষ্ট দিতে খুব বেশি ভাল লাগে দেখি। জানো শেষ চার মাস কত কষ্ট হয়েছে। আমার তো ফাহাদে কোনো সমস্যা ছিলো না। বিশ্বাসঘাতকতার কোনো প্রশ্ন এখানে আসে নি। তোমার একটা ছেলে আছে, সেটা কি এমন সমস্যা তুমি বলো। তোমাকে মেনে নিতে যখন পেরেছি, তখন তোমার অতিত বর্তমান ভবিষ্যৎ, তোমার যে কোনো সমস্যা, তোমার সন্তানেও কোনো কিছু যায় আসে না আমার। যাস্ট এত টুকু ওয়াদা করো পাশ ছেড়ে দিবে না। অনুরোধের সুরে কথা টা বললাম। জান্নাতের চোখের কোনে পানি। সে হয়তো ভাবতে পারে নি, আমি এত তাড়াতাড়ি বিষয় টা মেনে নেব।
কষ্ট হয়, এত টুকু যদি বুঝতে তাহলে হয়তো এক মুহুর্তের জন্য আমাকে ছেড়ে অন্য কোথাও থাকার ইচ্ছা হতো না। জান্নাত আমাকে জড়িয়ে কান্না মুরু করে দিলো৷ শান্ত মনে সব টুকু সামলে নিলাম। দ্বিধা ভুলে তাকালাম ফাহাদের দিকে, সে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। জান্নাত তোমার ছেলে দেখছে, ছাড়ো কি ভাববে । জান্নাত আমাকে ছেড়ে দিলো।
বাবা যখন কেউ কাউকে ভালবাসে তখন সে তাকে এমন করে জড়িয়ে ধরে। ফাহাদ বেশ কিছুক্ষন স্তব্ধ হয়ে থেকে বললো,আমি তো তোমাকে ভালবাসি মা আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরতে চাই। জান্নাত ফাহাদ কে জড়িয়ে ধরলো। আমি আক্ষেপ আর আশা নিয়ে তাকিয়ে তাদের দিকে, যদি একটি বার ফাহাদ বলে তোমাকেও জড়িয়ে ধরি, কিন্তু তা কি আদৌ হবে…
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা