আমি:-প্রিয়া মুই তুমারে অনেক ভালাবাসি। মুই তোমারে বিয়া করতে চাই।তোমার সাথে সংসার করতে চাই।তোমারে মুই মোর পোলা মাইয়া আম্মা বানাতে চাই।আই লাভ ইউ মায়া। (হাটু গেড়ে বসে)
প্রিয়া:-ঠাস্ ঠাস্। (থাপ্পড় দিলো)
আমি:-উহ্ রিয়া গাল ফুলে গেলো। কি হলো জয়া মারলা কেন সোনা।(গালে হাত দিয়ে)
প্রিয়া:-শোন রাজ আমি ফাজলামি পছন্দ করিনা জানিস তো। আর আমার নাম প্রিয়া। আমার নাম জয়া মায়া রিয়া না।যা ভাগ।
আমি:-ওকে লাভ ইউ প্রিয়া।
প্রিয়া:-ঠাস্ ঠাস্।,(এবার আরো জোড়ে দিলো)
আমি:-এবার তো সিরিয়াসলি বলেছি।(কান্না করার মতো)
প্রিয়া:-চুপ যাবি নাকি এই লাঠি দিয়ে তোর মথা ফাটাবো।(একটা লাঠি হাতে নিলো)
আমি:-ওরে বাপরে মুই শেষ।
দৌড় দিলাম।মনে মনে আব্বুকে গালি দিচ্ছি।যায়হোক পরিচয়টা দিয়ে দেই পরিচয় আমি আরিয়ান মাহাবুব রাজ।বাবা মায়ের বড় ছেলে।এবার ইন্টার ২য় বর্ষে পড়ি।আর ওই মেয়েটি না না মেয়ে নয় একটা আস্ত ডাইনি দেখলেন না কেমন মারলো।ওর নাম প্রিয়া। আমার বান্ধবী একই সাথে পড়ি আমরা।প্রিয়া আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমি ওকে ভালোবাসি অনেকবার বলেছি কিন্তু রাজি হয়না। বাসায় চলে আসলাম এসে কলিংবেল দিলাম।আম্মু দরজা খুলে দিলো।আর বললো……
আম্মু:-কিরে তোর গালে হাত কেন বাবা।আর গালটা এমন লাল কেন?
আব্বু:-কে আসছে আমার রাজ বাবা। আরে ভেতরে আসতে দাও ছেলে আমার যুদ্ধ করে আসলো।আসো বাবা পানি খাও। আমি ভেতরে এসে চুপ করে পানি খেলাম এক গ্লাস। তারপর গালে হাত দিয়ে চুপ করে বসে পড়লাম সোফায়।
আব্বু:-কিরে বাবা তুই চুপ কেন।আর গালটা কমলা লেবুর মতো টস টসে হয়ে গেছে কেন।
আমি:-আব্বাহ।
আব্বু:-বাজান।
আমি:-আব্বাহ আব্বাহ।(ল্যাকা শস্টি সেজে)
আব্বু:-কি হয়ছে বাজান।
আমি:-আব্বাহ।
আব্বু:-বলো বাজান কি হয়েছে।
আমি:-তোমার দেওয়া প্লান ও ফেইল আব্বাহ।
আব্বু:-ওরে আমার বাজান আবার যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে।কেও ওর মাথায় বরফ ঢালো।
আমি:-লাগবোনা ভাত খামু।
আব্বু:-চলো বাজান আমিও খায় নি তোমার যুদ্ধে জয়ের জন্যে আমি উফোস করেছিলাম।
আমি:-এই জন্যেই পরাজিত হয়ছি।যদি নামাজ পড়ে দোআ করতা আর রোযা রাখতা তাহলে জয়ী হতাম। হুহ যাও।
আব্বু:-রাগ করেনা বাজান।আর এমন হবেনা। চলো এরপর থেকে ঠিক করে নিবো।
আম্মু:-এই যে হয়ছে দুজনের গরুর মতো চিল্লানো এবার আসেন খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।
আব্বু:-চলো খেয়ে নেই।
আমি:-চলো। খেতে বসলাম আব্বু আম্মু আমি আর শিমুল।
আব্বু:-তা বাবা কিভাবে শুরু করেছিলি।
আমি:-তোমার কথা মতো সব বলে হাটু গেড়ে বসে ফুল হাতে নিয়ে বলেছিলাম লাভ ইউ।আর সাথে সাথে ২ টা থাপ্পড় দিলো।
আব্বু:-মাশাআল্লাহ তুই এগিয়ে আছিস আমার থেকেও।
আমি:-কিহ্ আমি থাপ্পড় খেয়েছি আর তুমি মাশাআল্লাহ বললা।
আব্বু:-হুম বাবা।আমি যখন তোর মাকে হাটু গেড়ে বসে প্রোপোজ করি তখন তোর মা আমাই লাথি মেরে ফেলে দিয়েছিলো। আমি আর শিমুল:-হাহাহাহা।
শিমুল:-যেমন বাপ তোমন ছেলে।
আমি:-ওই তুই চুপ থাক নইলে তোর আর মিম এর কথা ফ্লাস করে দিবো।
শিমুল:-নাহ ভাইয়া তুই না আমার ভাই।
আমি:-হুম মনে থাকে যেন।
শিমুল:-হ্যা ভাইয়া।
আমি:-তা আব্বু আম্মুও কি তোমার বান্ধবী ছিলো।আমার আর প্রিয়ার মতো।
আব্বু:-হুম বাবা।
আমি:-তাহলে তো থাপ্পড় অনেক খাইছো আর চুটিয়ে প্রেম করেছো।হিহিহি। (আমি আর আব্বু দুজনে হাতে হাত মিলিয়ে হাসছি)
আম্মু:-ওই বান্দর তোর লজ্জা করেনা নিজের মা বাবার নামে এমন কথা বলছিস। (আমার কান ধরে)
আমি:-উহ আম্মু লাগছে কানে।
আম্মু:-লাগুক তোর কান ছিড়ে ফেলবো।
আমি:-আরে নানু কেমন আছো? মিথ্যা বললাম আর আম্মু কান ছেড়ে দিলো।
আমি:-হিহিহি।টাটা মেরে মা।(দৌড়ে রুমে চলে আসলাম) রাতে ভাবলাম আর আব্বুর কথা মতো প্রোপোস করে মার খাবোনা। নিজের বুদ্ধিতে ফকির হবো।তারপর ঘুমালাম।পরেরদিন উঠে কলেজে গিয়ে আবার প্রিয়াকে ডাকলাম আর বললাম……
আমি:-প্রিয়া আমি তোকে সত্যিই ভালোবাসি।যেদিন তোকে প্রথম দেখি সেদিন থেকেই তোর কাজল কালো চোখের প্রেমে পড়ে গেছি।তোর মুখপর মায়াবী হাসির প্রেমে পড়ে গেছি।আমি তোকে ভালোবাসি প্রিয়া।
প্রিয়া:-শোন রাজ তুই আমাকে ভালোবাসলেও আমি তোকে কখনও ভালোবাসিনি।আমি তোকে শুধুই বন্ধু ভাবি।আর হ্যা তুই যে ফাজিল তোকে আমি কেন এই কলেজের আর এই শহরের কেও ভালোবাসবেনা।
আমি:-সত্যি সব ছেড়ে দিবো আমি প্লিজ প্রিয়া লাভ ইউ।(হাত ধরে)
প্রিয়া:-তোকে আমি ভালোবাসিনা ব্যাস।শুনে রাখ তোকে কেও ভালোবাসবে না।
আমি:-অনেক বলেছিস যা ৭ দিনের মধ্যে আমি দেখিয়ে দিতে পারলে কি হবে।(রেগে বললাম)
প্রিয়া:-তিন দিনের মধ্যে যদি কোনো মেয়েকে দেখাতে পারিস তাহলে আমি তোকে ভালোবাসবো।
আমি:-ওকে ডিল পাক্কা।
সেদিন চলে আসলাম বাসায়।কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা।হঠাৎ মনে হলো ফেসবুকে যায়।ফেসবুকে অনেক দিন পর ঢুকলাম। অনেক গুলো রিকুয়েস্ট আর ম্যাসেজ রিকুয়েস্ট আসছে।তার মধ্যে অচেনা রাজকুমারী নামের একটা আইডি থেকে অনেক এসএমএস দেখে এক্সেপ্ট করলাম।এক্সেপ্ট করার সাথে সাথে এসএমএস আসলো অচেনা রাজকুমারী:-আচ্ছা আপনি এতোদিন কোথায় ছিলেন।জানেন আমি আপনার গল্প পড়ি।এতোদিন গল্প দেননি কেন?আমার টেনশন হচ্ছিলো আপনার কিছু হয়ে যায়নি তো?
আমি:-জ্বি না আমার কিছুই হয়নি আমি এমনি আসি নি।
অচেনা রাজকুমারী:-তা আপনার আসল নাম কি আর আপনি কি সত্যিই ফাজিল?
আমি:-আমার নাম আরিয়ান মাহাবুব রাজ।আর সবাই তাই বলে আমি নাকি ফাজিল।তা আপনার নাম কি?
অচেনা রাজকুমারী:-জ্বি আমার নাম আইরিন।আপনি আইরিন বলে ডাকবেন।
আমি:-খুব সুন্দর নাম।
আইরিন:-তা কিসে পড়েন?
আমি:- আমি ইন্টার ২য় বর্ষে।আপনি?
আইরিন:-জ্বি আমিও।আজ থেকে তাহলে তুমি করে বলবেন।
আমি:-আচ্ছা।
আইরিন:-তা তোমার প্রিয় রং কি?
আমি:-সাদা তোমার।
আইরিন:-কালো আর নীল। এভাবে আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব।তারপর ওই। যে কথাই আছেনা একটা ছেলে আর মেয়ে কখনও বন্ধুত্বের সম্পর্কে থাকতে পারেনা।দুজন দুজনের প্রেমে পরে গেলাম।তারপর আইরিনকে বললাম……
আমি:-আইরিন একটা কথা বলি।
আইরিন:-বলো।
আমি:-আসলে আইরিন একজনের সাথে রাগ করে বাজি ধরেছিলাম যে ৭ দিনের মধ্যে আমি প্রেম করে ওর সামনে নিয়ে যাবো।
আইরিন:-হাহাহাহা।
আমি:-হাসছো কেন?
আইরিন:-বললেই তো হয় দেখা করবো।
আমি:-রাগ করছো ওকে লাগবেনা।
আইরিন:-ওরে আমার পাগল ভুত আমি তো রাজি।কখন কোথায় যেতে হবে বলো?যাকে এতো ভালোবাসি তার সাথে দেখা করতে দ্বিধা কিসের।একটা কথা মনে রেখো তোমার বাবা মায়ের পরে আমার মতো ভালো তোমাই কেও বাসতে পারবেনা।
আমি:-ধন্যবাদ পেত্নী।তাহলে কাল দুপুর ৩:৩০ এ চলে আসো বাইপাস এর ওভার ব্রিজ এ।
আইরিন:-ওকে বুদ্ধুরাম তাহলে ৩ টায় যাবো কলেজ শেষ করে।
আমি:-ওকে গো।
আইরিন:-হুম টা টা আমার পিচ্চি পাগল।
আমি:-হুম বাই আমার বুইরা পাগলি।
ফোন রেখে ভাবতে লাগলাম।আইরিন আমার জীবনে আসার পর আমার সব পাল্টে গেছে।জীবন কি তা ওর সাথে সম্পর্কের পর বুঝেছি।ও সত্যিই বলেছে ওর মতো ভালো আমাকে কেও বাসতে পারবেনা।ওকে কখনও কষ্ট দিবোনা খুব ভালোবাসবো।কালকে প্রিয়াকে দেখাবো। আগে নীল শাড়িটা বের করি আইরিনকে দিতে হবে।নীল শাড়ীটা বের করে রাখলাম। পরেরদিন কলেজ থেকে প্রিয়াকে নিয়ে চলে আসলাম বাইপাস্ এর ওভার ব্রিজে।আইরিনকে কল দিলাম……
আমি:-হ্যালো কোই তুমি?
আইরিন:-এইতো কলেজ থেকে বের হলাম একটু অপেক্ষা করো।
আমি:-ওকে আসো।টা টা। কল রেখে প্রিয়াকে বললাম…
আমি:-দাঁড়া ও আসছে।
প্রিয়া:-শোন মজা করিসনা অনেক রৌদ্র। কেও নাই তার থেকে বাসায় চল।
আমি:-মজা করছিনা।ও আসবে অপেক্ষা কর। অপেক্ষা করছি ৩০ মিনিট হয়ে গেলো। কিন্তু আইরিন আসছেনা।
প্রিয়া:-বললাম না রাজ মজা করবিনা ছাতা।তুই থাক আমি গেলাম।(রেগে বললো)
আমি:-প্লিজ দাঁড়া আমি কল দেই। কল দিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ।২-৩ বার দিলাম তাও বন্ধ।
প্রিয়া:-কি হলো?
আমি:-ফোন বন্ধ।
প্রিয়া:-আমি জানি এরকমটাই বলবি। আচ্ছা তুই থাক আমি যায়।
আমি:-প্রিয়া বিশ্বাস কর ও নিজে বলেছে আসবে।মনে হয় ওর ফোনে চার্জ নাই।আর ১০ মিনিট থাক।
প্রিয়া:-ওকে। ১০ মিনিট পর আর কোনো অযুহাত শুনবোনা।
আমি:-আচ্ছা। ১০ মিনিট হয়ে গেলো তবুও ফোন বন্ধ। প্রিয়া আমাকে বললো……
প্রিয়া:-বলেছিলাম তো কেও তোর সাথে মজা করেছে।মিথ্যা বলেছে ও আসবেনা।
আমি:-হুম চল।(মন খারাপ করে বললাম) চলে যাচ্ছি আর মনে মনে ভাবছি আইরিন আমার ইমোশোন নিয়ে খেললো।আমাকে অপমান করলো। ওকে সব বলেওছিলাম।
প্রিয়া:-কিরে এতোটা আনমনা হয়ে হাঁটছিস কেন না ধরলে তো এখনি গাড়ি চাপা পরতি।(টান দিয়ে রাস্তার পাশে আনলো)
আমি:-আমার সাথে এমন হয় কেন রে।আমি তো কারো ক্ষতি করিনি।
প্রিয়া:-এই একদম চুপ। মন খারাপ করবিনা।চল আমার সাথে ফুসকা খাবো।
আমি:-চল।
প্রিয়া:-মামা দুই প্লেট ফুসকা দিন তো কড়া ঝাল দিয়ে।
আমি:-না আমি আজ খাবোনা তুই খা।
প্রিয়া:-ওকে এক প্লেট দিন।দুজনে একসাথে খাবো। ফুসকা নিয়ে প্রিয়া খেতে লাগলো।আমার মুখে একটা দিতে গেলো আর সেটা পরে গেলো।
আমি:-প্রিয়া আমার মনটা কেমন কেমন করছে।আমার মনে হয় ওর কিছু হয়েছে।
প্রিয়া:-আহ কি ভালোবাসা রে।এই নে টিস্যু। মুছে নে। ট্যিসু দিয়ে মুছে টাকা দিতে গেলাম। টাকাও হাত থেকে পরে গেলো।
প্রিয়া:-কিরে এমন করছিস কেন?
আমি:-প্রিয়া কোনো খারাপ কিছু হয়েছে নইলে আমার এতো অস্থিরতা আর সবকিছু হাত থেকে পরে যাচ্ছে কেন।
প্রিয়া:-কিছু হয়নি চল।
আমি:-হুম।
হোঁচট খেয়ে পরে যেতে লাগলাম।তখনি আমার ফোনটা বেঁজে উঠলো।আমি ফোন বের করে দেখি আইরিনের ফোন।
আমি:-হ্যালো আইরিন কোই তুমি।
একজন লোক:-আমি ইনাকে রাস্তার পাশে পেয়েছি।প্লিজ আপনি বি আর বি হাসপাতালে চলে আসুন।(ওপাশ থেকে একজন লোক)
আমি:-ওকে আমি এখনি আসছি।
প্রিয়া:-কিরে কি হলো?
আমি:-তুই দাঁড়া আমি পার্কিং থেকে বাইকটা নিয়ে আসি।
প্রিয়া:-কেন?
আমি:-আইরিন হাসপাতালে।
দৌরে পার্কিং এ গিয়ে বাইক নিয়ে চলে আসলাম প্রিয়ার কাছে।ওকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে আসলাম।তারপর রিসিপশনে গিয়ে বললাম……
আমি:-ম্যাম আইরিন নামের একটা মেয়েকে একজন অচেনা মানুষ হাসপাতালে নিয়ে আসছেন।
রিসিপশনিষ্ট:-দেখুন এমন নামে কেও নাই।তবে একজন অপরিচিত মানুষ একটি মেয়েকে নিয়ে আসছে।গুরতর আহত মেয়েটি এখন ৩ তলার ১৬ নাম্বার কেবিনে।
আমি:-ওকে। দৌড়ে উঠে আসলাম তিন তলায়।এসে ১৬ নাম্বার কেবিনে ঢুকতে যাবো তখনি কয়েকজন ডাক্তার আমাকে ধরে ফেললো………
আমি:-আমাকে ছাড়ুন আমি আমার আইরিনের কাছে যাবো।(ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছি)
ডাক্তার:-প্লিজ শান্ত হন।পেসেন্ট এর অবস্থা সিরিয়াস এখন তাকে অপারেশন করতে হবে প্লিজ এখন তার কাছে যাওয়া যাবেনা।
আমি:-আমি একটিবার ওকে দেখবো।
ডাক্তার:-না প্লিজ।
আইরিন:-রাজ থাম।আমি আছি তো।ওর কিচ্ছু হবেনা তুই বোস অপারেশন হয়ে গেলে দেখবো।(আমার ঘারে হাত দিয়ে)
ডাক্তার:-জ্বি। আপনারা অপেক্ষা করুন। হঠাৎ একজন লোক আমার ঘার্ে হাত দিলো।
আমি:-কে আপনি?
লোকটি:-আমিই মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে লোকটি:-আমিই মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসছি।
আমি:-ধন্যবাদ আপনাকে।আচ্ছা ওর কি হয়েছিলো?
লোকটি:-উনাকে একটা ঝোপের পাশে আমি পাই।আমি যখন কাজে যাচ্ছিলাম তখন দেখি কয়েকজন ছেলে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।আমি ওখানে কি হয়ছে দেখার জন্য গিয়ে দেখি মেয়েটি ওখানে পরে আছে আর একটা লাঠি দিয়ে ওর মাথায় আঘাত করেছিলো তাই ঙ্গ্যান ছিলোনা।ওনার সাথে খারাপ কিছু হয়েছে।
আমি:-দেখলি প্রিয়া বললাম না আমার কেমন কেমন করছে।দেখলি আমার সব শেষ হয়ে গেলো।(কান্না করতে করতে)
প্রিয়া:-তুই চিন্তা করিসনা সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি:-হুম।আব্বুকে কল দেই দাঁড়া। আব্বুকে কল দিয়ে বললাম……..
আমি:-হ্যালো আব্বু একটা কথা আছে।(কান্না করতে করতে)
আব্বু:-বলো বাবা।আর কান্না করছিস কেন?
আমি:-আব্বু তোমরা আমার সুখের জন্যে আমার সবচেয়ে বড় ভুলকে ক্ষমা করতে পারবে?
আব্বু:-কি রকম ভুল আর কান্না করছো কেন?
আমি:-ধরো আমি একজনকে ভালোবাসি তার একটা খারাপ অতীত আছে।আমি জেনেও তার সাথে সারাজীবন থাকতে চাই।তোমরাকি তা মানবে।
আব্বু:-আমার ফাজিল ছেলেটা অনেক বড় হয়ে গেছে।তোর সুখের জন্য আমরা সব পারি।
আমি:-তাহলে এখনি আম্মুকে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসো আর হ্যা সঙ্গে কাজী নিয়ে আসো আমি বিয়ে করবো।
আব্বু:-তুই কি ফাজলামি করছিস।
আমি:-আমাকে বাঁচাতে চাইলে চলে আসো।
আব্বু:-আচ্ছা আসছি। ফোন রেখে দিয়ে লোকটির থেকে আইরিনের ফোন নিয়ে ওর বাবা মাকে জানালাম।তারা চলে আসলো।
আইরিনের আব্বু:-আমার মেয়ে কোথায় ওর কি হয়েছে?(কান্না করতে করতে)
আমি:-আঙ্কেল কান্না করবেন না ওর অপারেশন চলছে।
আইরিনের আম্মু:-আল্লাহ আমার মেয়েটাকে ফিরিয়ে দাও।
আঙ্কেল:-কারা আমার এতো বড় সর্বনাশ করলো আল্লাহ তাদের শাস্তি দিন।(কান্না করতে করতে)
আমি:-আপনারা থামুন কিছু হবেনা। ডাক্তার অপারেশন করে বের হলো।আমি বললাম….
আমি:-ডাক্তার এখন কি অবস্থা?
ডাক্তার:-অবস্থা ভালো।
আইরিনের আব্বু:-ডাক্তার আমরা এখন দেখতে পারবো ওকে?
ডাক্তার:-দেখুন আমি ওর কেবিনে আছি ওর ঙ্গ্যান ফিরলে আপনাদের ডাকবো।২ ঘন্টার মধ্যে ওর ঙ্গ্যান ফিরবে।
ডাক্তার চলে গেলো কেবিনে।আমার বাবা মা ও আসলো।
আব্বু:-কি রে বাবা কি হয়ছে?
আমি:-আব্বু একটি মেয়েকে ভালোবাসি। মেয়েটি আমাকে অনেক পাল্টে দিয়েছে। ওকে ছাড়া বাঁচবোনা।ও এখন অপারেশন থিয়েটারে।
আব্বু:-কি হয়েছে ওর।
আমি:-বললামতো ওর সাথে খারাপ কিছু ঘটেছে তবুও ওকে আমার চায়।
আম্মু:-রাজ বাবা এতোদিন তোকে কতো বকেছি। আজ বলছি তুই আমার ছেলে আমার কলিজা।
ডাক্তার:-আপনাদের মধ্যে রাজ কে?(বাইরে এসে বললো)
আমি:-জ্বি আমি।
ডাক্তার:-রুগী আপনার নাম ধরে ডাকছে।আপনি ওর সাথে কথা বলুন নইলে ওনার সমস্যা হবে।
আমি:-ওকে। ভেতরে গিয়ে দেখলাম আইরিন শুয়ে আছে।কি নিষ্পাপ মেয়েটি।মেয়েটিকে অনেক সুন্দর লাগছে।বিধাতা যেন অনেক যত্নে মেয়েটিকে বানিয়েছে।
আমি:-ওই পেত্নী এইতো আমি।(ওর হাত ধরে)
আইরিন:-রাজ।(চিৎকার করে উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরলো)
আমি:-ওই পাগলি কি হয়েছে এইতো দেখো আমি আছি তো।
আইরিন:-রাজ ওরা আমসকে।(কান্না করে দিলো)
আমি:-কারা ছিলো ওরা।কান্না করোনা পাগলি।
আইরিন:-আমি ওদের চিনিনা।তোমার সাথে দেখা করতে আসছিলাম।আর ওরা আমাকে ধরে।
আমি:-ওকে পাগলি।কিচ্ছু হবেনা আমি আছি তো।
আইরিনের আব্বু:-মা তোর কি হয়েছে।(কান্না করতে করতে)
আইরিন:-বাবা।(কান্না করতে করতে)
আমি:-আব্বু আমি এই মেয়েটিকে বিয়ে করবো এখনি।
আব্বু:-আপনাদের কি কোনো আপত্তি আছে বিয়েতে।
আইরিনের আব্বু:-না। আপনারা সব জেনে যখন আমার মেয়েকে নিতে চান।তখন আমার কোনো আপত্তি নেই।
আমি:-তাহলে এখনি বিয়ে হবে।কাজী সাহেব বিয়ে পড়ান।
আইরিন:-এই বিয়ে হবেনা।
আমি:-কেন?
আইরিন:-আমি কাওকে বিয়ে করতে পারবোনা।
আমি:-আমি তোমাকে ভালোবাসি আর তুমিও।
আইরিন:-আমি আর তোমাকে ভালোবাসিনা।
আইরিনের আব্বু:-মা তুই এসব কি বলছিস।
আইরিন:-আমাকে কেও কিছু বলতে এসোনা তাহলে আমি একদম।
আমি:-থাক তোমার আর কিচ্ছু করতে হবেনা আমিই নিজেকে শেষ করে ফেলবো। আমার ব্যাগ থেকে একটি ব্লেড বের করে গলায় ধরলাম।আর বললাম…..
আমি:-বিয়ে করবি নাকি আমি নিজেকে শেষ করে ফেলবো।
আইরন:-রাজ প্লিজ পাগলামি করোনা।
আমি:-কি ভাবছো আমি ভীতু না দেখো তাহলে। হাতে একটা টান মারলাম।
আইরিন:-রাজ প্লিজ এমন করোনা। তোমাকে দেওয়ার মতো কিছুই নেই আমার।(আমার হাত ধরে)
আমি:-আমি কিছু জানিনা আগে কবুল বলে রাজি হও নইলে দিলাম টান।(ব্লেইড দিয়ে)
আইরিন:-না না আমি রাজি।
আমি:-কাজী সাহেব বিয়ে পড়ান। বিয়ে হয়ে গেলো হাসপাতালেই।ডাক্তার বললো…..
ডাক্তার:-এতোদিন জানতাম হাসপাতালে রুগী দেখা হয় আর এখন দেখছি বিয়েও হয়।
আমি:-ডিজিটাল যুগ তো তাই।তাহলে এখন আমরা আসি।
প্রিয়া:-সুখী হ রাজ।
আমি:-ধন্যবাদ তোকে। তুই না থাকলে ওকে পেতাম না।চল বাসায় আর সবাইকে ডাক খুব মজা করবো।
প্রিয়া:-হুম চল।
সবাই বাসায় চলে গেলাম।আইরিনের বাবা মাকেও সাথে আনলাম।আসার সময় ডাক্তারের থেকে ঔষধ লিখে নিলাম।আর সবকিছু জেনে নিলাম।তারপর আইরিনকে দুই হাত দিয়ে পাজাকোলে তুলে নিলাম।আইরিন লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকালো। হাসপাতালের সবাই তাকিয়ে আছে। আইরিনকে আব্বুর গাড়িতে তুলে দিলাম। আর বললাম…….
আমি:-আব্বু তোমরা যাও আমি প্রিয়াকে নিয়ে বাইকে আসছি।
আব্বু:-কিন্তু আইরিন।
আমি:-ও তো অসুস্থ তাই গাড়িতে যাক ও বাইকে বসতে পারবেনা।তোমরা সাবধানে চালাবা গাড়ি। আর আমি প্রিয়াকে নিয়ে আসি।
আব্বু:-আচ্ছা। বাসায় চলে আসলাম।এসে আইরিনকে পাজাকোলে করে রুমে নিয়ে গেলাম। তারপর বললাম…
আমি:-এই কথা বলবানা আমার সাথে।
আইরিন:-মুখ ফিরিয়ে নিলো।
আমি:-উম্মাহ।টা টা ময়না পাখি পরে আসছি। দৌড়ে নিচে আসলাম।দেখলাম প্রিয়া আর ইমন কথা বলছে।তাই আমি ছাদে গেলাম।হঠাৎ কারো হাতের স্পর্শে পেছনে ঘুরলাম।
আমি:-আরে মেহেদী তুমি।
মেহেদী:-জানো রাজ। তোমাকে আমি আর ইমন এতো ভালোবাসি কেন।কারন আমরা জাননতাম যে ফাজিলটার মধ্যে মনুষ্যত্ব আছে।তোমাকে একটা কাজ করতে হবে।
আমি:-কি কাজ বলো।
মেহেদী:-ইমনের কষ্টটা দূর করতে হবে।
আমি:-ওর কষ্ট আমি কিভাবে দূর করবো?
মেহেদী:-প্রিয়া তোমাকে খুব ভালোবাসে।
ও তোমার ফাজলামী দূর করার জন্য তোমাকে অমন করতো।কিন্তু তুমি হঠাৎ এই মেয়েটির প্রেমে পড়ে গেলে।প্রিয়া আজ তোমাকে নিজেই বলতে চেয়েছিলো।কিন্তু ও তো আর জানতোনা যে সময়ের মূল্য অপরিসীম।
আমি:-ও আমাকে যদি সেদিন বলতো তাহলে এমন হতোনা।
মেহেদী:-হ্যা।আর শোনো ইমন প্রিয়াকে সেই ক্লাস ৮ থেকেই পছন্দ করে।আর ভালোবাসে।ও প্রিয়ার জন্য কান্না করে।আমি জানি ও বলতে পারবেনা কোনোদিনও তাই প্লিজ ওকে আর প্রিয়াকে এক করে দাও নইলে সময় এর নিষ্ঠুরতা ও বুঝবে।
আমি:-এখন কি করা যায়।
মেহেদী:-তুমি বললে প্রিয়া তোমার কথা শুনবে।
আমি:-চলো। মেহেদী আর আমি নিচে গেলাম। দেখলাম আমার আরো অনেক বন্ধুরা আছে আর আমার বাবা মা আইরিন ও ওর বাবা মা।
আমি:-প্রিয়া তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।
প্রিয়া:-বল।
আমি:-তুই আমাকে ভালোবাসিস?
প্রিয়া:-হঠাৎ এই কথা।
আমি:-বল নইলে আমার।
প্রিয়া:-চুপ ওরকম কথা বলতে নেই।হ্যা বাসি।(বলতে দিলোনা)
আমি:-শোন প্রিয়া তুই প্রথমে রাজি হলে এই মেয়েটির সাথে আমার পরিচয় হতোনা।আর আজ তোর কষ্ট পেতে হতোনা।আমি এই মেয়েটিকে খুব ভালোবাসি।এর জন্য আমি আমার জীবনটাও দিতে পারি।
প্রিয়া:-তা তো আমি জানিই হঠাৎ এমন। বলছিস কেন?
আমি:-প্রিয়া জানিস সময়ের মূল্য অপরিসীম। সময় খুব ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর।তুই যেমন আমাকে পেলিনা।একটা জিনিস মনে রাখবি।তুই যাকে চাস তাকে যদি না পাস ভাববি তার থেকেও বেশি অন্য কেও তোকে চায়।
প্রিয়া:-মানে?
আমি:-মানে ইমন তোকে খুব ভালোবাসে। ক্লাস ৮ থেকে।আমি ওর হয়ে বলে দিলাম।আর প্লিজ ওকে মেনে নে।
প্রিয়া:-ইমন রাজ যা বলছে তা কি ঠিক?(ইমনের কাছে গিয়ে বললো)
আমি:-ইমন মাথা নিচু না করে বলে দে।
ইমন:-হ্যা প্রিয়া।
প্রিয়া:-নিজে এসে বললেই পারতে।
আমি:-ইয়াহু।(মেহেদীকে জড়িয়ে ধরে)
মেহেদী:-যাও তোমাদের বাসর ঘর রেডি আমরা এখন ঘুমাবো।
আমি:-ওকে। আইরিনকে কোলে নিয়ে চলে গেলাম রুমে।
আমি:-আইরিন একটু কথা বলো প্লিজ।
আইরিন:-তুমি প্রিয়ার মতো সুন্দরী মেয়েকে রেখে আমাকে কেন বিয়ে করলা?
আমি:-আমার চোখে আমার পেত্নী বউটা সবচেয়ে বেশি সুন্দর।
আইরিন:-রাজ আমার তো তোমার জন্যে কিছুই নাই।
আমি:-আমার কিছুই লাগবেনা মরনের আগ পর্যন্ত তোমার সাথে থাকতে চায়।
আইরিন:-রাজ।(কান্না করতে করতে জড়িয়ে ধরলো)
আমি:-ইশ্ কান্না করোনা।আজ ইতিহাস রচনা করবো।
আইরিন:-চুপ আমার লজ্জা করেনা বুঝি।
আমি:-আজকে সব লজ্জার গুল্লি মারি হিহিহি।
১০ বছর পর বসে আছি স্কুলের এক অনুষ্ঠানে।একটি পিচ্চি মেয়ে গান গাইতেছে। পিচ্চির গান আম্মু একবার কই কেন পড়তে বসিস না আব্বু একবার কই কেন লিখতে বসিস না কি করে বলি আমি পড়ালেখা ভালো লাগেনা ভালো লাগে না।
আমি:-এই দেখোনা পিচ্চিটা ওর মায়ের মতো শয়তানি হয়েছে।
আইরিন:-ওই একদম ওর মাকে শয়তানি বলবানা।ও ওর বাবার মতো বাঁদড় আর ফাজিল হয়েছে।
আমি:-কিহ্ আমি বাঁদড় আর ফাজিল।
আইরিন:-তাহলে কি আমি নাকি।
আমি:-হতেও পারে।
আইরিন:-তুই একটা তুই একটা ইহহ ভুলে গেছি।
আমি:-আমি একটা শয়তানি পেত্নীর স্বামী।
আইরিন:-তোর ঘাড় মটকামু।
পিচ্চি মেয়েটি:-এই আমার আব্বুর ঘাড় ছাড়ুন।নইলে হাতে কামড় দিবো।(দৌড়ে এসে বললো)
আইরিন:-আইছে যেমন বাপ তেমন মেয়ে।
আমি:-হুম তেমন মেয়ের মা।চলো নূর মামনী আমারা ফসুকা খাবো।
কি ভাবছেন? আরে ওই পিচ্চিটা কে বুঝলেন না।গান শুনেই তো বুঝে নিবেন কত্তো ফাজিল। পিচ্চিটা আমার আর আইরিনের ভালোবাসার প্রতীক। আমাদের মেয়ে মেহেজাবীন মুমতাহা নূর।খুব সুখে আছি আমি আর আইরিন এই পিচ্চিট
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা