“ওড়না ছাড়ো কিন্তু, না হলে আমি খালাকে ডাক দেবো” একটা বলতেই নিশু ভাইয়া আমার ওড়না ছেড়ে দিল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল ” আর একবার যদি দেখেছি ওড়না এক পাশে ফেলে হেঁটেছিস তো দেখিস করি কি”। এই বলেই হনহন করে নিচে চলে গেল। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি তখন হঠাৎ টের পেলাম পায়ের পাতার উপর গরম জলের আভাস। তার মানে আমার চোখের পানি পায়ের উপরে পড়ছে।
আমি নিলু। পড়াশোনা করছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে। বাড়ি পটুয়াখালী পড়াশোনা সুবাদে ঢাকা চলে এসেছি খালার বাসায়। বাবা মা গ্রামেই থাকেন। প্রথম ঢাকায় আসা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য। আব্বুর খুব বেশি কাজ ছিল তাই আর আসতে পারে নাই। মামার সাথেই ঢাকায় আসা। এক গাট্টি বই আর চোখে বিশাল চশমা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য করে দুরুদুরু বুকে যাত্রা করা। কতটুকু ভালো লাগা কতটুকু আগ্রহ আর একরাশ ভয় নিয়ে ঢাকার বুকে পাড়া দিলাম আমি। মামার হাত খুব শক্ত করে চেপে ধরেছিলাম। আম্মু বারবার বলে দিয়েছে ঢাকায় নাকি মানুষ হারিয়ে যায়। আর হারালে কখনও খুঁজে পাওয়া যায় না। মামা খানিকটা বিরক্ত হয়েই বলেছিল ” নিলুরে হাতটা কেটে তোর কাছে দিয়ে দেই”। লজ্জায় মাথা নামিয়ে বলেছিলাম ” ধুর মামা, তুমি যে কি কি বলো না”।
রিক্সায় করে খালার বাসায় আসা।এসেই এই এত উঁচু ভবন দেখে আমার খোলা মুখ খোলাই রয়ে গেল। মামার ডাকে সম্বিত ফিরে পেলাম। খালার বাসায় ঢুকেতেই খালা বুকে জড়িয়ে ধরল। বললেন ” ইসস, কতটুকু দেখেছিলাম এই পুচকি মেয়েটা তো অনেক বড় হয়ে গিয়েছে”। একটা রুম দেখিয়ে দিলেন আর বললেন আজ থেকে এটাই আমার রুম। আমার দুইটা খালাতো ভাই বোন ছিল। ভাইয়া বড় নাম নিশু উনি পড়াশোনা শেষ করে এখন মাল্টিন্যাশলান একটা ফার্মে কাজ করছেন। আর ছোট ছিল বোনটা মিলি।
ও ইন্টারে সবে ভর্তি হয়েছিল। ফ্রেশ হয়ে বের হলাম কাঁচা হলুদ কামিজ আর কচি কলাপাতা কালারের পাজামা আর ওড়না পরে। মাথায় ভেজা চুল কি করব না করব ভেবে ছেড়ে দিলাম। তখনই খালা ডাক দিলের সকালের নাস্তা খাওয়ার জন্য। আস্তে আস্তে ডাইনিং রুমে যেয়ে দেখি মামা খালা বসে আছে। সাথে অন্য এক চেয়ারে এলোমেলো চুল খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে উদাস চোখে একজন বসে পাউরুটি চাবাচ্ছে। চিনতে না পেরে মামার পাশে চুপ করে বসে পড়লাম। তখন খালা বলে উঠলো ” নিশু, এই হল নিলু। তোর সেজ খালার মেয়ে। ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেবে৷ তুই পারলে মাঝে মাঝে একটু হেল্প করিস ওর পড়ায়”।
খালার কথা শেষ হতেই আমার দিকে তাকালো সে৷ আমি তো তার চোখ দেখেই অবাক। এত উদাসী চোখ হয় কারো? এই চোখের উদাসীনতায় ডুব দেওয়া যায় বারবার। সে যাই হোক আমার দিকে তাকিয়ে তার প্রথম কথাই ছিল, ” এই মেয়ে কমনসেন্সে বলতে কিছু নেই নাকি হ্যাঁ?? খাবার টেবিলে চুল ছেড়ে দিয়ে এসেছ কেন? আর চোখে মুজিব চশমা দিলেই আতেঁল টাইপের পড়াকু হওয়া যায় না বুঝেছ? পড়তে হবে মন লাগিয়ে। তাহলেই চান্স পাবে পাব্লিকে বুঝেছ,?” অপমানে কান লাল হয়ে গিয়েছিল আমার। চুপ করে খাবার ছেড়ে উঠে এসেছিলাম। খালা মামা বারবার ডাকছিল খেতে কিন্তু খাওয়ার ইচ্ছাটাই কেন জানি না মরে গিয়েছিল। খালা মামা যখন ডাকছিল তখন শুনছিলাম নিশু ভাই বলতেছিল” ক্ষিদে পেলে এমনিতেই আসবে তেল আর মারা লাগবে না”।
এই ছিল আমার ঢাকার প্রথম সকাল। ভয়ংকর ভাবে শুরু করা প্রথম সকাল। রুমে এসে ব্যাগ এর জিনিসপত্র বের করে গুছিয়ে রাখলাম। এর পরে আম্মুকে কল দিলাম। কথা বলা শেষে রুমের সাথে লাগোয়া বারান্দায় গেলাম। যে দেখি একটা চেয়ার পাতা বারান্দায়। আর অন্য এককোনে বেশ কিছু ফুলের গাছ। একরাশ ভাললাগায় মনটা ভরে উঠলো। বারান্দা দিয়ে নিচে উঁকি দিয়েই দেখি নিশু ভাইয়া তারই এক সমবয়সী ছেলের সাথে গল্প করছে। এলোমেলো চুল, সেই উদাস চোখ, অফ হোয়াইট শার্টের স্লিভটা কনুই পর্যন্ত ভাঁজ করে উঠানো। সাথে ব্লাক গ্যাবাডিনের প্যান্টের পকেটে দুই হাত। মুচকি হেসে কি যেন বলছে। অপলক কতক্ষন চেয়ে ছিলাম নিজেও জানি না। খালার ডাকে হুঁশ ফিরল। বলল লং জার্নি করে এসেছি। এখন যেন একটু ঘুমিয়ে নেই।চোখ বন্ধ করতে কখন যে নিদ্রাদেবী চোখের পাতায় ভর করেছিল আমি নিজেও জানি না। ঘুমের অতল গহব্বরে হারিয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎই মনে হল কেউ যেন চেয়ে আছে আমার দিকে।
তাড়াতাড়ি চোখ খুলে দেখলাম বড় বড় মায়াবি দুটো চোখ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। ভাল করে চোখ খুলতেই দেখি খুব কিউট একটা মেয়ে। কিছু বলে উঠার আগেই আমাকে জড়িয়ে ধরে। ” আচ্ছা তুমি কি আমার আপুই? তোমার তো আরো আগে আসার কথা ছিল! এতদিন পর আসলে কেন? তুমি কি জানো আমি কতদিন অপেক্ষা করেছি তোমার জন্য। আর তুমি এত লেট করলে কেন আপুই?” এক নিশ্বাসে এর গুলো প্রশ্ন করে সে থামলো। আমি আস্তে করে উঠে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম ” তুই মিলি তাই না”। অপর পাশে এক বিমল হাসি দিয়ে বলল ” আপুই আমি জানতাম তুমি আমাকে চিনবেইই”। এভাবেই প্রথম দিন থেকেই মিলি আর আমার সখ্যতা গড়ে ওঠে।
পরের দিন থেকে শুরু হল ব্যস্ত নগরীর ব্যস্ততার সাথে তাল মিলিয়ে চলার শুরু। নাস্তা খেয়েই মামার সাথে গেলাম ফার্মগেট। ভর্তি হলাম উদ্ভাসে ভর্তি কোচিং করার জন্য। নানান ফরম ফিল আপ আর ফর্মালিটি পালন করে যখন বাসার পথে পা বাড়ালাম সকাল গড়িয়ে তখন দুপুর। আসার পথে মামা বলল ” শোন নিলু সব কিছু ভালো করে দেখে রাখ। কাল থেকে একাই আসতে হবে কোচিং করার জন্য”। মামার কথা শুনে বড় বড় কয়েকটা ঢোঁক গিললাম। কপাল বেঁয়ে বেশ কয়েক ফোঁটা ঘাম ঝরে পড়ল। ভাবলাম যাত্রাবাড়ী থেকে ফার্মগেট আসতে আসতে কয়বার আমি হারাবো। আচ্ছা আমি হারালে মাইকিং করবে? পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেবে? আচ্ছা আমি হারালে আব্বু বেশি কাঁদবে নাকি আম্মু বেশি কাঁদবে???
খালা আর মিলি কি পরিমাণ চিন্তা করবে। সব কিছুর একটা গ্রাফ মোটামুটি চোখের সামনে দাঁড় করিয়ে ফেললাম। ” কি রে কি এত ভাবছিস? ভয় পাস না আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যাবে ” মামার কথায় সম্বিত ফিরে পেলাম।
বাসায় যেয়ে কিছু খেয়ে শুয়ে পড়লাম। উঠে দেখি মামা রেডি হচ্ছে বাড়ি যাওয়ার জন্য। বললাম আর কিছু দিন থেকে যাওয়ার জন্য মামাকে। মামি আর মামাতো ভাই গুলো কে রেখে এসেছে। তাই আর জোরাজোরি বেশি করলাম না মামাকে। এর পর থেকে শুরু হল আমার প্রাত্যহিক জীবনের বাঁধাধরা রুটিন। সকালে নাস্তা খেয়ে যাই। তিনটার দিকে ফিরে খেয়েই শুয়ে পড়ি। আর সন্ধ্যায় পড়তে বসি। এর মাঝে মিলি তো আছেই। ওর সব মজা দুষ্টমি সব কিছু ছিল আমার কাছে। খালা রাগ হত মাঝে মাঝে ওর উপর। বলত আমি যেন এত লাই না দেই। কিন্তু আমার খুব ভালো লাগত ওর দুষ্টুমিগুলো।
মনে হত বাঁধা ধরা ছককাটা জীবনে ও হল বৃষ্টির সিন্ধ পরশ। আর নিশু ভাইয়ের সাথে তো কালক্ষেপে দেখা হল। আসতো অনেক রাতে। খালা মাঝে মাঝে রাম বকা দিত এই বলে এত রাত পর্যন্ত তার বাইরে কি। আর আমি শুধু রুমে বসে চুপচাপ শুনতাম। এমনই যাচ্ছিল দিন। আর নিশু ভাই আমাকে সামনে পেলেই পচাঁতেন। কেন জানি না আমাকে সে সহ্যই করতে পারতেন না। সবচেয়ে বেশি রেগে যেতেন আমার খোলা চুল দেখলে। আর আমি কিনা তার উপরেই ক্রাশ খেয়ে বসে আছি। সব কিছুই ঠিক চলছিল। একদিনের ঘটনায় সব এলোমেলো হয়ে গেল। ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। আমি জগন্নাথে চান্স পেয়েছি হিসাববিজ্ঞান বিভাগে। তাই আর দেরি না করেই ভর্তি হয়ে গেলাম। একদিন ক্লাস শেষ করে আসার সময় বান্ধবীরা মজা করে বোতল ভরা পানি ঢেলে দিল মাথায়। উপায় না পেয়ে চুল খুলেই বাসায় আসলাম।
এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে রুমে যেয়ে মিলির সাথে গল্প করছিলাম। তখনই দেখি ঝড়ের বেগে আমার রুমে নিশু ভাইয়ের আগমন। এসেই টেনেহিঁচড়ে আমাকে খাট থেকে নামিয়ে ফ্লোরে দাঁড় করালো। আমার চুলের মুঠি চেপে হিসহিসিয়ে বলতে লাগল ” চুলের বড় বাহার বেড়েছে তাই না? চুল খুলে রাস্তা থেকে দেখিয়ে দেখিয়ে আসিস তাই না? একদম জানে মেরে ফেলবো আরেক দিন যদি শুনি তুই চুল খুলে এলো কেশে ভার্সিটিতে গেছিস!!” এই বলেই আমাকে ছুঁড়ে ফেলে চলে গেল সে। মিলি আর আমি দুজনেই ঘটনার আকস্মিকতায় চুপ হয়ে গিয়েছিলাম। পরে সম্বিত ফিরে পেতেই চোখে অঝোর শ্রাবনের আগমন। মিলি বার বার বলতে লাগল ভাইয়া তো কখনও এমন করে না। আজ কেন যে এমন করল কে জানে৷ ওই দিন রাতে পড়ছিলাম হঠাৎই গিটারের শব্দে উঠে দাঁড়ালাম। ভাবছিলাম এত রাতে কে গিটার বাজাচ্ছে? আস্তে আস্তে উঠে এসে দেখি নিশু ভাইয়ের রুম থেকে শব্দ আসছে গিটারের।
দরজা হালকা ভেজানো ছিল। আমি ফাঁকা করে উঁকি দিতেই দেখি খালি গায়ে একটা থ্রিকোয়াটার প্যান্ট পরে ঘরের ঠিক মাঝে যেখানে চাঁদের আলো এসে পড়েছে সেখানে মোড়া দিয়ে লাইট অফ করে গিটার এর সুর তুলছে নিশু ভাই। চাঁদের আলো যেন তাকে দেখে মনে হচ্ছি এযেন মানুষ নয় গ্রীক কোন এক দেবতা যে কি না অলিম্পাসের কাছ থেকে বর্দান পেয়েছে সুরের মায়াজাল সৃষ্টি করার। কখন যে ভাই এসে পাশে দাঁড়িয়েছে টেরই পাই নি। ” কি রে এত রাতে এখানে কি? বিকালের ডোজে কাজ করে নাই? নাকি আরো কিছু ডোজ বাকি আছে” বলেই নিশু ভাই দরজা মুখের উপর লাগিয়ে দিয়েছিল। ফিরে এসেছিলাম একরাশ অপমান আর প্রচন্ড জিদ নিয়ে। পুরোটা মনোযোগ ঢেলে দিয়েছিলাম পড়াশোনার পিছনে।
দাওয়াত এলো খালার দেবরের বাসা থেকে। মিলির চাচাতো বোনের বিয়ে। সবাইকে যেতে হবে। গায়ে হলুদে যেতে পারি না নিজের ক্লাসের আর প্রাইভেটের জন্য। বিয়েতে কি পরব কি পরব ভাবতে ভাবতে একটা ফ্লোর টাচ ড্রেস সিলেক্ট করলাম। সেজেগুজে খালা আমি আর মিলি চললাম বিয়ে বাড়িতে। নিশু ভাই আগেই চলে গিয়েছিল। পরে যখন আমরা যেয়ে হাজির হলাম। আমাকে দেখেই ভাইয়া চোখ মটকে তাকালো। আমিও ইগনোর করলাম। ভাবলাম এ আর নতুন কি। সবসময়ই তো এমনই করে। বিয়ে বাড়িতে সবাই যার যার মত ঘুরছে আমিও এক কোণে দাঁড়িয়ে বিয়ের বর কনে কে দেখছিলাম। এমন সময় আবারও নিশু ভাইয়ের আগমন। ” নিলু এক্ষুনি তুই আমার সাথে আসবি” এই বলে সোজা উপরের সিঁড়ি ধরল। আমি তখনও চুপ করে দাঁড়ানো। নিশু ভাই এবার কোন কথা না বলে আমার হাত ধরে টানতে টানতে উপরের তালায় নিয়ে আসল এসেই ওড়না ধরে হেঁচকা টান। বারবার প্রশ্নের পরে এই উওর দিয়েই চলে গেল।
রাগে দুঃখে ক্ষোভে তখন আমি পাগল প্রায়। বাসায় আসার পরে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। আব্বুকে বলে শেয়ারিং ফ্লাটে থাকার ব্যবস্থা করে ফেললাম। আম্মুকে দিয়ে খালাকে বলালাম। মিলি আর খালা জোর আপত্তি করেছিল কিন্তু নিশু ভাই বলেছি যেতে চাইলে যাক। আটকানোর কোন দরকার নেই। চলে আসলাম পরের মাসেই। খালা বার বার ফোন দেওয়া স্বত্তেও এড়িয়ে যেতাম। ওই বাসায় যেতাম না। এর মাঝে একদিন রাতে ভিষণ বৃষ্টি তখন আনুমানিক রাত ১২ টা বাজে। পড়ছিলাম বৃষ্টির শব্দে মনে পড়ল জানালা খোলা। ছুটে গেলাম জানালা আটকাতে হঠাৎ চোখ আটকালো সামনের রাস্তার অপর পাশের ল্যাম্পপোস্ট এ কে যে৷ হেলান দিয়ে দাঁড়ানো। ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম নিশু ভাই। এত রাতে এই বৃষ্টিতে আমার বাসার সামনে কেন ভিজতে। কিছু না ভেবেই ছুটে গেলাম নিচে একটা ছাতা যে সাথে করে নিয়ে যাবো সে খেয়ালও ছিল না।
সোজা যেয়ে তার সামনে দাঁড়ালাম। আমাকে দেখে সেই মাতাল করা হাসি দিয়ে বলল ” নিলু আমার সাথে হাঁটতে যাবি?” কোন কথা না বলে শুধু চোখের দিকে চেয়ে ছিলাম। পরে নিশু ভাই হাত ধরে বলল ” চল তোকে নিয়ে আজ হাঁটবো “। পাশাপাশি হাত ধরে এই প্রথম চলা। নিশু ভাই হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ল বলল, ” আচ্ছা নিলু, আমাকে তোর এলোচুলের ভিজা পরশ দিবি?? তোর শাড়ির কুঁচি ঠিক করার সুযোগ দিবি? তুই জানিস তোকে ছাড়া আমি একা হয়ে গেছি। আমার গিটারের সুর শোনার কেউ নেই রে!! আমার এলোমেলো জীবনটাকে গুছিয়ে দিবি তুই। প্লীজ আমাকে ছেড়ে যাস না “।
আমি কিছুই বলি নি। শুধু তার ভিজে বুকে মুখ লুকিয়ে বলেছিলাম ভালবাসি অনেক। তোর বুকের উপরের তিলটা কি অরিজিনাল? নাকি আমাকে দেখাতে একেঁছিস আইব্রু দিয়ে?” নিশুভাইয়ের প্রশ্নতে আমি কুঁকড়ে গেলাম। শাড়িটা বুকে উপরে আরো টেনে দিলাম। ” শোন আমার এসব দেখানো ভালো লাগে না” আবার বলে উঠলো নিশু ভাই। তখন আমি মিনমিন করে বললাম এটা তো আমার অরিজিনাল তিল। নিশু ভাই বলল ” কই আগে তো কখনও দেখি নাই, রাতারাতি তিল গজাইল কি করে?” তখন মনে মনে বললাম আমি কি বুক উদলা করে দেখিয়ে বেড়াবো নাকি তাকে যে দেখো আমার বুকে তিল আছে।
আমি নিলু আজ আমার বাসর রাত। পেয়েছি তাকেই স্বামী হিসাবে যে আমার প্রথম ক্রাশ ছিল। বাসর রাতে এসেই প্রথমেই এই কথা উনার৷ কই একটু ঘোমটা খুলে দেখবে তা না উনি এসে পড়েছে আমার তিল নিয়ে। সেদিন রাতেই আমার হাত ধরে নিয়ে এসেছিল খালার সামনে। খালা ঘুম থেকে উঠে এসে আমাকে আর নিশু ভাইকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেছিল। নিশু ভাই কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বলেছিল ” আম্মু এই আতেঁলকে আমি বিয়ে করব।তোমার কোন আপত্তি থাকলে বলো “। খালা মনে হয় ঠিক করতে পারছিলেন না উনি হাসবেন কি কাঁদবেন। পুরো পাঁচ মিনিট লাগিয়েছিলেন কি বলবেন এটা ভাবতে৷ পরে শুধু এটা বলেছিলেন ” দুটোই কাক ভেজা হয়ে গেছিস, যা যার যার রুমে যেয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে ঘুমা”।
পরের দিন সকালেই খালা আম্মু আব্বুকে ফোন দিয়ে ঢাকা আসতে বললেন। আব্বু আসার বারবার জিজ্ঞেস করা স্বত্তেও খালা বলে দিলেন জরুরি কথা সামনাসামনি না বসে বললে হবে না। ওইদিন বিকালেই আব্বু আম্মু এসে হাজির৷ চেহারায় একরাশ চিন্তা নিয়ে যখনই বাসায় ঢুকল আমি যেয়ে মিলির রুমের দরজায় খিল দিয়ে বসলাম। এত এত ডাকার পরেও লজ্জা আর ভয়ের জন্য মন চাইলেই সাহসে কুলায় নাই তাদের সামনে যাওয়ার। তারা ফ্রেশ হয়ে আসার পরে খালা বলা শুরু করল ” দেখ আফরোজা আমি তো তোর বড় তাই না? কখন তো কিছু চাই নাই তোর কাছে।
আজকে একটা জিনিস চাইবো তোর কাছে দিবি আমারে?” খালার কথা শুনে আম্মু তো আকাশ থেকে মাটিতে পড়ার মত অবস্থা। বলল ” আপা তুমি একটা জিনিস চাওয়ার জন্য এত জরুরি তলব করে এনেছ আমাকে? এটা কোন কথা৷ ফোন করে বলে দিলেই তো হত”। আব্বুও আম্মুর সুরে সুর মেলালো। খালা তখন আম্মুর হাত ধরে বলল ” তোর নিলুকে আমারে দিবি? আমার নিশুর জন্য!! আমার ছেলেটার মন যে বড় ভালো। তোর মেয়েকে আমি আমার মেয়ের মত করে রাখবো”। আম্মু আব্বুর দিকে তাকালো। আব্বু মুচকি হেসে খালাকে বলল ” এখন আপা বলে ডাকবো নাকি বিয়াইন সাহেব বলে ডাকব”।
আমার খুব প্রিয় তিনজন মানুষের মুখে বিমল হাসি দরজার ওপাশে থেকে তো দেখতে পারি নি শুনেছিলাম। পরে নিশু ভাইকে খালা ঘুম থেকে টেনে উঠালেন। বললেন ” বিয়ের জন্য রাত দুইটায় আমাকে টেনে তুলেছে এখন বিকেল বাজে ছয়টা লাটসাহেব আজ অফিসেও যায় নাই। পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে। দেখ কে এসেছে”। উনি আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলেন। আব্বু আম্মু তখন খালার রুমে বসে লিষ্ট করতে ব্যস্ত বিয়ের কেনাকাটার। ঘরোয়া ভাবে বিয়ের আয়োজন। আগামী কালই ওলীমা আমার পরীক্ষার পরে বড় করে অনুষ্ঠান করা হবে। আর সাহেব মাত্র উঠল ঘুম থেকে। আমাদের বিয়েতে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিল মিলি। বারবার বলছি ” আপুই এত দিনের অন্যায়ের শোধ তুলবো দুই বোন মিলে। আচ্ছা তোমাকে কি ভাবি বলে ডাকতে হবে? আমি কিন্তু তোমাকে আপুই বলেই ডাকবো “।
আজকে আমার ওলীমা হয়ে গেছে একটু আগে আর আমি মাথায় ঘোমটা দিয়ে চুপ করে বসে আছি। আর এই ভদ্রলোক এসেই আমার তিল এর জাত উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে৷ কি যে এক লোকের উপরে ক্রাশ খেয়েছিলাম তাই ভাবছি। এমন সময় সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল ” এই নিলু উঠে দাঁড়া “। ভয়ে ভয়ে আমি সত্যিই খাট থেকে নেমে উঠে দাঁড়ালাম। আবার কখন না কখন হেঁচকা টানে নামিয়ে আনে। এর পূর্বাভিজ্ঞতা তো আগেই আছে। তাই সাতপাঁচ না ভেবে সোজা মিলিটারীদের মত দাঁড়িয়ে গেলাম।
নিশু ভাই বুক টান টান করে দাঁড়িয়ে বলল ” বাসর রাতের প্রথমেই স্ত্রী স্বামীকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। তুই করেছিস? না করে সোজা বাঙলা পাঁচ এর মত মুখ করে বসে আছিস আর আমাকে বুকের তিল দেখাচ্ছিস”। আমি তাড়াতাড়ি নুয়ে সালাম করতে যেয়ে পা বাধালাম শাড়ির সাথে। আমার মাথা সোজা যেয়ে লাগল তার পেট বরাবর। হুক করে মুখ দিয়ে বাতাস বের করে বলল ” আমি না হয় সালাম করতে বলেছিলাম তাই বলে ষাঁড়ের মত গুতোতে আসবি নাকি তুই”। লজ্জায় তখন মরে যেতে ইচ্ছা করছিল। পেটে হাত দিলে কি না কি ভাবে তাই বার বার প্রশ্ন করছিলাম কেমন লাগছে। বেশি ব্যাথা করছে কি না। আবালের মত বলেই ফেলেছিলাম পেট কি টিপে দেবো একটু? মানুষটা আমার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে বলল ” পারলে আমার গলা টিপে দে। এ কারে বউ করে এনেছি যে কি না বলে পেট টিপে দেবে কি না। যা তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে। অনেক রাত হয়েছে”
আমিও কথা না বাড়িয়ে হালকা গোলাপি একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখি নীল একটা পাঞ্জাবি আর সাদা পাজামা পরে জানলা দিয়ে আকাশ দেখছে সেই উদাসী চোখে। মনে মনে বললাম এত সুন্দর কেন তোমার ওই চোখ। আমি যে হারিয়ে যাই বারবার ওই চোখে৷ আমাকে বের হতে দেখেই ধীর পায়ে আমার সামনে আসলো মানুষটা। কোন কথা না বলে কপালে ছোট্ট একটা চুমু খেয়ে নিল। আমি তো লজ্জায় তার বুকেই মুখ লুকোলাম। পাঁজকোলে করে বিছানায় নিয়ে আসলো আমার৷ ” তুই ঘুমিয়ে যা। অনেক রাত হয়েছে” এই বলেই লাইট অফ করার জন্য উঠতে যাচ্ছিল। আমি হাত টেনে ধরে বললাম মরে যাবো তোমাকে ছাড়া। ঘুরে আমাকে জড়িয়ে ধরল তার উষ্ণ নিশ্বাস আমি ঘাড় পিঠে পড়ছে। ” মরতে দিলে তো” এই বলেই নিজের বাহুর আলিঙ্গনে আমাকে জড়িয়ে নিল। শুধু বলতে পেরেছিলাম লাইট তো অফ করো। উওর এসেছিল ” এত্ত কিউট তিল গজিয়ে এনেছিস আমার জন্য লাইট অফ করলে দেখবো কি করে। টর্চ কোথায় খুঁজতে পারব না এখন”।
এভাবেই শুরু হয় আমার সংসার জীবন। পরে উঠিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও আমাকে নিশু ভাই একদিনের জন্যও আলাদা করে নি নিজের কাছে থেকে। প্রতিদিন অফিস থেকে এসেই প্রথম ডাক দিত আমাকে। একদিন মিলির সাথে দুষ্টামি করতে করতে ওর কাছেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরের দিন সকালের আগে টেরই পাই নি যে সকাল হয়েছে। উঠে দেখি আমার পাশে উনি অঘোরে ঘুমাচ্ছে। আর মিলি আমাদের রুমে। কিছুই না বুঝে নাস্তার পরে উনি যখন অফিসে চলে গেলে তখন মিলিকে প্রশ্ন করলাম কি রে মিলি তুই আমাদের রুমে গেলি কখন আর তোর ভাইয়া তোর রুমে ঘুমালোই বা কখন।
মিলি ঠোঁট উলটে বলল আপুই ” তুমি আর আমার রুমে ঘুমাবে না। ভাইয়া কালকে চ্যাংদোলা করে আমাকে তোমাদের রুমে রেখে এসে নিজে আমার রুমে তোমার পাশে ঘুমিয়েছে। তোমার যাতে ঘুম না ভাঙে তাই আমার মুখে হাত চাপা দিয়ে রেখেছিল “। সব শুনে আমার তো মাথায় হাত। এমন করেই যাচ্ছিল আমাদের ছোট্ট সুখের সংসার। মানুষটা খুব ভালবাসতো আমাকে। আমার চেয়েও বেশি ভালবাসত আমাকে। কিন্তু কখনও যদি কোন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে বা আমার আব্বু আম্মুর কাছে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলতাম তাহলেই হইছে কাজ সারা। হুতুম পেঁচার মত মুখ হয়ে যেত আর দাঁতে দাঁত পিষে পিষে বলত যেখানে মন চায় যাও আমার কি। এই দুষ্টু মিষ্টি পাগলামীতেই যাচ্ছিল দিন কেটে। এর মধ্যে আমার এবিএ পরীক্ষাও চলে আসল। হঠাৎ করেই একদিন বুঝলাম অন্য এক প্রাণের অস্তিত্ব আমার ভেতরে।
খুশিতে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম। কি করব কি না করব ভাবতে ভাবতে মিলিকে কল দিলাম। দিয়েই বললাম তোর না নিম্মু হওয়ার খুব শখ যা তোকে নিম্মু করেই দিলাম। মিলির ততদিনে বিয়ে হয়ে গেছে তখন সে সুইডেন প্রবাসী। আমার কথা শুনে ও এমন এক চিতকার দিল আমার মনে হল সুইডেন থেকে সেই শব্দ বিনা ফোনেই বাংলাদেশ এসে পৌছেছে। সে জিজ্ঞেস করল তার ভাই জানে কি না। আমি মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললাম কি যে বলব তাই তো বুঝে উঠতে পারছি না। এই কথা শোনার পরে সে কোন কথা নেই ধপ করে লাইন কেটে দিল।
ও মা একটু পরেই দেখি আমার শাশুড়ী মা কোথা থেকে যেন দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে অঝোরে কান্না। কান্নার মধ্যে কি যে বলছে কিছুই বুঝতেছিলাম না। পরে বুঝলাম সে যে দাদি হবে এই খবর মিলি তাকে দিয়েছে আর এই খবর শুনে সে বিশাল খুশি যা তার চোখ দিয়ে অশ্রু হয়ে পড়ছে। রাতে আসলেন সাহেব। খালা অনেক চেষ্টা করে ছিল খুশির খবরটা দিতে কিন্তু কি করে ও যেন এড়িয়ে যাচ্ছিল ব্যাপারটা। পরে আমিও ভাবলাম যাক ভালই হইছে মিলি মনে হয় বলে নাই উনাকে। রুমে ঢুকেই দেখি লাইট অফ। আমি ভেবেছিলাম উনি বিছানায় শুয়ে পড়েছে পা টিপে টিপে যেতে লাগলাম যাতে আমার আওয়াজে ওর ঘুম না ভেঙ্গে যায়। ঠিক তখনই পিছন থেকে কে যেন খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমাকে। একটু পরেই বুঝলাম নিশু ভাই ছাড়া এই আকাম আর কেই বা করবে। বললাম যে ছাড়বে তো ঘুমাতে হবে তো নাকি!! আস্তে করে আমার পেটে হাত বুলিয়ে বলল ” শোন নিলু, বাবুকে কখনও ব্যাথা দিবি না বাবুকে কখনও বকা দিবি না।
তাহলে কিন্তু জানে মেরে ফেলব”। বাবার হবার খবর সে ঠিকই পেয়ে গিয়েছিল। নতুন মানুষের আগমন উপলক্ষে ফ্যামিলির সবাই খুশিতে আটখানা হয়ে গিয়েছিল।মিলি ঘন্টায় ঘন্টায় ভিডিও কল দিয়ে দেখত আমাকে দেখতে কেমন দেখায়। পেট কত বড় হল আরো কতো পাগলামি। আর উনি উনার তো কোন কথাই নাই মিনিটের আগা মাথায় কল দিয়ে দিয়ে খোঁজ খবর নিত। মাঝে মাঝে খালা রাগ করে বলত ” দেখ নিশু তোর বউ তুই অফিসে নিয়ে যা। মেয়েটা আর আমি তোর আর তোর বোনের ফোনের জ্বালায় অস্থির। কবে জানি বাসার সব ফোন ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো করে ফেলি আমি নিজেও জানি না”। এমন করে দেখতে দেখতে ডেলিভারি ডেট এগিয়ে আসছিল। জেনেছিলাম যে ছেলে বাবু হবে। নিশু ভাই সব সময় বলত ” শোন নিলু আমার ছেলের নাম মেঘ রাখবি।ও ঠিক মেঘের মতই তোর আমার জীবনে ছায়া দেবে”।
ডেলিভারি ডেটের ঠিক চারদিন আগে সে বাসায় আসল মুখ গোমড়া করে। আমি পাশে বসে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে। উওর না দিয়ে অফিস ড্রেস পরেই আমার পেটের উপরে আলতো করে মাথা দিয়ে বলল ” শোন আমাকে একটু অস্ট্রেলিয়ায় যেতে হবে অফিসিয়াল ট্যুরে অনেক চেষ্টা করেছি পারি নি পিছাতে। না গেলে হয়ত চাকরিটাই খোয়াবো “।। প্রচুর ভয় করছিল কিন্তু মুখে হাসি ফুটিয়ে বললাম যাও তো তুমি আম্মু আব্বু খালা সবাই আছে। তুমি অঅস্ট্রেলিয়ার ঘুরে আসো আমি তোমার মেঘকে নিয়ে তোমার অপেক্ষা থাকব। সেই মাতাল করা মুচকি হাসি দিয়ে বলল ” আমি আসার আগে কিন্তু আমার ছেলেকে আমার কথা বলবি না। আমি এসেই বলল তার কানে কানে আমি যে তার বাবাই হই” লম্বা নাক টেনে বলেছিল জো হুকুম জাহাপানা।
আজ ত্রিশ বছর পর আমি এসেছি জার্মানি থেকে। সাথে আমার মেঘ। প্লেন থেকে নেমেই পটুয়াখালী চলে এসেছি ছেলেকে নিয়ে। ব্যাগ রেখেই চলে গেলাম পারিবারিক কবর স্থানে। নিশু ভাইয়ের কবরের সামনে। ওর পরের দিন এয়ারপোর্টে যেতে যেয়ে নিশু ভাইদের গাড়িকে ট্রাকে ধাক্কা দিয়েছিল। ওখানেই মারা যায় তিন জন যার মধ্যে উনিও ছিলেন। আর তখন আমি অটিতে সিজারিয়ানের জন্য। যখন হুশ আসে দেখি সবার মুখ থমথমে খালা নেই কোথাও। বারবার বলা স্বত্তেও কেউ আমাকে বলে নি কি হয়েছে। পরে যখন জেনেছিলাম আমি পাগল প্রায় হয়ে গিয়েছিলাম। মেঘের পাঁচ বছর বয়সের সময় ওকে নিয়ে চলে যাই জার্মানিতে।
আজ ফিরলাম। কবরের পাশে দাঁড়িয়ে ফিস ফিস করে বললাম দেখো নিশু ভাই আমি কিন্তু কিচ্ছু বলি নাই মেঘকে তোমার কথা। সোজা তোমার কাছে নিয়ে এসেছি। তুমি তো এখন বলবে। এখন মেঘ বোঝে বাবা কি। আচ্ছা আমাকে ছেড়ে একা একা কি করে আছো। আমার কথা কি মনে পড়্ব না একবারও। আমি যে এখনও চুল খুলে কোথাও যাই না। এখন ওড়না একপাশে নেই না। আমি যে তোমার স্পর্শ গুলো এখনও অনুভব করি। তুমি থাকবে তুমি আছো। তুমি আজ পাশে নেই তবুও যে তোমাকেই ভালবাসি।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা