একগুচ্ছ ভালোবাসা

একগুচ্ছ ভালোবাসা
আমিঃ-হাই আই লাভ ইউ।
আইরিনঃ-মার খাবি নাকি?
আমিঃ-কে দিবে?
আইরিনঃ-কেন আমি দিব।
আমিঃ-কত টাকা কেজি?
আইরিনঃ-বেশি না কাল কলেজে এসো বুঝিয়ে দিব কত টাকা কেজি।
আমিঃ-কাল তো শুক্রবার কলেজ যাব কেন?
আইরিনঃ-তো কি কাল একটা ফাঙ্কশন আছে কলেজে।
আমিঃ-না ওই সব দেখার টাইম নাই আমার।
আইরিনঃ-আসবি নাকি বল?
আমিঃ-উমম কিছু দিলে যাব ।
আইরিনঃ-ওকে দিব
আমিঃ-ওকে ।
ওহহ আমি আরিয়ান মাহাবুব রাজ। আর এতো সময় ম্যাসেন্জারে কথা হলো আমার এক মাত্র ক্রাশ আইরিনের সাথে। যদিও এক বছরের সিনিয়র, তাতে কি অনেক কষ্টে ফেসবুকে সিনিয়র আপুর সাথে কেমনে প্রেম করা যায় তার টিপ্স পেয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আর অনেক গল্প পরেও কিছু টা উন্নতি হয়ছে। আজ শুক্রবার ভাবছিলাম ঘুমাবো। কিন্তু ক্রাশ যেতে বলছে তাই রেডি হয়ে ১০ টায় কলেজে হাজির।
দারোয়ান চাচা আমায় দেখে বলল……..
চাচাঃ-কি আরিয়ান রাজ যে।অন্য দিন তো খুজেও পাওয়া যায় না কলেজে আজ শুক্রবার তাও কলেজে।
আমিঃ-আরে চাচা সিনিয়র ক্রাশ আসতে বলছে না এসে কি পারা যায়।
চাচাঃ-হুম তবে ভেতরে তো শুধু মেয়েদের যেতে দেয়ার অনুমতি আজ কারণ মেয়েদের ফাংশন ওটা।
আমিঃ-একথা বলো না চাচা।,চাচা ব্যানছন নাকি গোল্ডলিফ কোনটা?
চাচাঃ-নরম জায়গায় হিট করে দিছো গো রাজ বাবা। আগের টা নিয়ে আসো আর ডুকে সোজা ছাদে চলে যাও।
আমিঃ-এই নাও,ওকে। কলেজে ঢুকে সোজা ছাদে এলাম,এখান থেকে সব ক্লিয়ার দেখা যায় । ওই তো আমার ক্রাশ।কথা বলে আসি।
আমিঃ-হাই লক্ষিটি।
আইরিনঃ-তুই কি করে আসলি?
আমিঃ-আমাকে কে আটকাবে ।
আইরিনঃ-রাতের গিফ্ট নিবি না
আমিঃ-হুম কয় দাও।
আইরিনঃ-তাহলে নে।
পিছন থেকে পায়ে লাঠি দিয়ে মারল কয়েকটা। এরপর হাতে, বুকে ও মাথায়।রুল দিয়ে হাতে কয়েক টা মারল মনে হল হাত ভেঙে গেল।
আইরিনঃ-কেমন লাগলো,আরো বলবি আই লাভ ইউ।বেহায়া ছোট লোক,অভদ্র ছেলে দুর হ চোখের সামনে থেকে।কোন রকমে ওঠে নিচে নেমে হেটে আসলাম,চাচা কে ডাক দিলাম।
আমিঃ-চাচা।
চাচাঃ-আরে রাজ কি হয়ছে কে করছে এসব,কি করে হল। (চাচা কেদেই দিয়েছে একদম)
আমিঃ-চাচা আমাকে একটু হাসপাতালে পৌছে দিবেন।
চাচাঃ-রাজ বাবা কি বলো দিবে না মানে হাজার বার দিব।
আমিঃ-চাচা শুধু রিকশা ডেকে দিলেই হবে আর কিছু লাগবে না।
চাচাঃ-তা হয় না।
চাচা হাসপাতালে এনে,নানা কে ফোন করে আনল,আব্বুকে নানা ফোন করে জানিয়ে দিল।(আইরিন কে ১৭৯ বার আই লাভ ইউ বলছি অনেক চড় খেয়েছি অনেক থ্রেড ও শুনছি কোন কিছু হয় নি তবে আজ কেন এরকম করলো এসব ভাবছি) কলেজের ভিতরে বাহিরে সব জায়গায় ছরিয়ে গেছে রাজকে আইরিন মেরেছে। মোটা মোটি অনেক উপরে ওঠে গেছে আইরিন।
****২ মাস পর***কোন রকম চলতে পারি আর হাত এখনো ঠিক হয়নি। তাই কলেজ জিনিস টা মাথায় নেই। যেহেতু আমি ১ম বর্ষে তেমন চিন্তা নেয় তবে আইরিন ২য় বর্ষের পরে। আর ডিগ্রি কলেজ তেমন চিন্তাও নেই। ,,,,,,,,,১,,,,,,,মাস,,,,„„„„পর„„„„ হাতের অবস্থা মোটামুটি। কলেজে পা রাখলাম, পা না চাকা রাখছি । মানে বাইকের চাকা ।
আমিঃ-চাচা কেমন আছেন আপনি ।
চাচাঃ-এইতো ভালো রাজ। এখন কেমন আছো তুমি বাবা?
আমিঃ-আছি আপনার দোয়ায় ভাল। তো চাচা ব্যেনসন নাকি স্টার ।
চাচাঃ-আজ কোনটাই না আজ কে দিলে কিছু টাকা দিতে যদি(চাচা মাথা নিচু করে)
আমিঃ-আরে চাচা মাথা নিচু করে কেন কত লাগবে চাচা,আমার কাছে ১৯৬৪টাকা আছে আর নাই এখন।
চাচাঃ-না বাবা থাক লাগবে না।
আমিঃ-চাচা কি সমস্যা বলবেন তো??
চাচাঃ-বাবা কি বলব আল্লাহ গরিব বানিয়েছেন,যার জন্য মেয়ের বিয়েও দিতে পারছি না টাকার জন্য।
আমিঃ-চাচা কত টাকা বাকি আর??
চাচাঃ-২২০০০ টাকা আছে তিন মাসের বেতন আর কিছু টাকা ফসল বিক্রির আরো ১৮০০০ টাকা লাগবে.
আমিঃ-চাচা মনে করো তোমার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। আর গরিব তো কি হয়ছে আল্লাহ সবাই কে রক্ত মাংশ দিয়েই বানিয়েছেন।আমাদে র যা আছে কোটি টাকার মালিকদের শরীরেও ওগুলোই আছে। চাচা কাল কে টাকা পেয়ে যাবেন আর দাওয়াত কিন্তু চায় আমার ।
চাচাঃ-আচ্ছা বাবা।
সেখান থেকেই বাসায় আসলাম,আমার বড় আব্বু আমাকে আদর বেশি করে,তার কাছে সব কিছু বললাম তিনি ১৮০০০ এর জায়গায় ৪০০০০ দিয়ে বললেন বাকি টাকা দিয়ে ভাল সব রান্না করবে আর ভাল করে সাজাবে। পরের দিন চাচার সাথে দেখা করে ১৮০০০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা দিয়ে সুন্দর করে সাজালাম সব কিছু। আগের থেকে বেশি কিছু রান্না করা হল।চাচা কে আমার বড় আব্বুর কথা বললে তিনি তাকে আসতে বললেন। বড় আব্বু বিকেলে আসল। এসেই বললো……
বড় আব্বুঃ-রাজ তুমি কি করেছ এগুলা?
আমিঃ-কেনো বড় আব্বু??
বড় আব্বুঃ-আরে বিয়ে আসল মজা তো গান বাজনাই তাড়াতাড়ি তার ব্যাবস্থা করো। অনেক মজা করে চাচার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিলাম। বিয়ের পর চাচা তো একদম পায়ে পরে যাচ্ছে ।
আমিঃ-চাচা আপনি আমার পায়ে পরেন কেন ।
চাচাঃ-তুমি যা করলে নিজের ছেলেও করে না।
আমিঃ-আরে চাচা আপনার জন্যই আমি নতুন জীবন পেয়েছি তাই কোন কথা না আর কোন দরকার হলে জানাবেন চাচা। ১মাস ৭ দিন পর কলেজে গেলাম…….
চাচাঃ-আজ কি খাবে রাজ বাবা।
আমিঃ-চাচা আপু সুখে আছে তো?
চাচাঃ-হুম অনেক সুখে আছে তবে…
আমিঃ-তবে কি চাচা??
চাচাঃ-তবে হলো আমি নানা হতে চলেছি।
আমিঃ-বলেন কি চাচা মিষ্টি হবে নাকি এই খুশিতে, আমিতো মামা হবো।দাঁড়ান মিষ্টি আনছি।
মিষ্টি এনে চাচা স্যার ও ম্যামদের দিলাম আর আমি আমার জন্য রস মালাই এনেছি তা ক্লাসে বসে বসে খাচ্ছি।
রসমালাই খেতে যা মজা হঠাৎ সেই মুখ টা দেখলাম,এতো দিনে আইরিনের কথা ভুলেই গেছিলাম। আইরিন আমার সামনে এসে বসল। আমাকে বলছিলো আর কোনদিন মুখ দেখাবিনা কথাটা মনে আসতেই আমি উঠে চলে আসলাম। আইরিন তাকিয়ে ছিল তাতে আমার কি এখন ওর থেকে রস মালাই বেশি ইমপর্টেন্ট । কলেজ থেকে বের হয়ে দেখি একটা বাচ্ছা মাটিতে পরা রুটি উঠিয়ে খাচ্ছে । আমি সামনে গিয়ে দাড়ালাম,বাচ্চা টা আমার হাতে দিকে তাকিয়ে রইলো বাচ্চাটার মুখ শুকনো মনে হয় অনেক দিন কিছু খায় না।আমার প্রিয় মিষ্টিটা তার হাতে দিলাম,বাচ্ছা টা নিবে না পুরো টা, তাই তাকে কলেজের ভেতর নিয়ে আসলাম,ক্লাস রুমে বসে বললাম–
আমিঃ-আচ্ছা চলো দুজনে একসাথে খায়।
বাচ্চা ছেলেটাঃ-আপনে আমার লগে খাইবেন আপনারে মানুষে কি কয়বো?
আমিঃ-আরে কে কি বললো তা দেখতে হবেনা খাওতো।
আমি আর বাচ্চা ছেলেটি একসাথে খাচ্ছি।ছেলেটির গায়ে নোংরা একটা ছেরা জামা আর পরনে নোংরা একটা প্যান্ট। লাঞ্চ টাইম শেষ হয়ে গেলো।হঠাৎ সবাই ক্লাসে আসছে।আর আমাদের দেখে সবাই মুখ বাকা করে বের হয়ে যাচ্ছে।হঠাৎ নাহিদ স্যার সহো সকল শিক্ষার্থীরা আসলো ক্লাসে…..
নাহিদ স্যারঃ-এই তোকে কে ঢুকিয়েছে রুমে যা বের হ।
বাচ্চা ছেলেটিঃ-ভাইয়া। (ভয়ে জড়ো সরো হয়ে আমার পেছনে গেলো)
আমিঃ-আমি এনেছি ওকে।
নাহিদ স্যারঃ-হুম নিজের ড্রেস-আপ দেখেছো।যেমন তুমি তেমন তোমার কাজ।ক্ষ্যাত একটা। সকল শিক্ষার্থীরা হাসতে শুরু করলো।
নীলয়ঃ-গাইয়া আবার আইরিনকে প্রোপজ করে মাইর ও খাইছে। শালা ছোটলোক ওর জন্যে আমাদের ক্লাসটা মিস হলো আজ আইসিটি এর ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস ছিলো।
জয়ঃ-হুম গাইয়া ভুত এর মতো দেখতে পোশাক দেখছিস মনে হচ্ছি টোকাই। সে আবার আইরিনকে প্রোপজ করে।রাস্তার টোকাই একটা।হাহাহা। সবাই হাসছে আমার রাগ মাথায় উঠে গেলো।জয়কে একটা থাপ্পড় দিয়ে নীলয় এর কলার ধরে রুমের বাইরে নিয়ে আসলাম।সবাই অবাক হয়ে আমার পেছন পেছন আসলো। প্রিন্সিপাল স্যার সহো বাকি স্যাররা চলে আসলো কলেজ মাঠে।
প্রিন্সিপালঃ-কি হচ্ছে রাজ। ওকে ছারো।
নীলয়ঃ-স্যার ওই গাইয়াটা ক্লাসরুমে ওই পিচ্চি টোকাইকে নিয়ে খাচ্ছিলো নোংরা খাবার যার গন্ধে আমরা আইসিটি ক্লাস করতে পারিনি।সবার থেকে শুনুন না হলে।
সবাইঃ-জ্বি স্যার ঠিকই বলেছে।
নাহিদ স্যারঃ-হুম স্যার আমার সাথেও রাপ আচরণ করেছে।
প্রিন্সিপাল স্যারঃ-চুপ একদম চুপ।
নাহিদঃ-স্যার ওই গাইয়াটার জন্যে আমাকে সহো সকল ছাত্রছাত্রীদের ধমক দিচ্ছেন কেন?
প্রিন্সিপাল স্যারঃ-ওই কাকে গাইয়া বললি তোরা জানিস ও কে।আর ও যে কি খাবার খাই তা তোরাও কোনোদিন খাসনি বুঝলি। ও গাইয়া নই ও এই কলেজের সভাপতি আসাদ চৌধুরী এর ছেলে ।ইমন আবির মেহেদী ওদেরকে তো চিনিস।যাদের নাম শুনলে তোদের এই কলেজের সবাই ভয় পাস। তাদের লিডার ও।আর ওর নাম শুধু রাজ নয় ওর নাম আরিয়ান মাহাবুব রাজ। সবাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।নীলয় আর জয় মাথা নিচু করে আছে।
আমিঃ-স্যার বাদ দিন।
পিন্সিপাল স্যারঃ-রাজ এদের আমার কিছু বলার নাই যা বলার তুমি বলো। পিন্সিপাল স্যার চলে গেলো।আমি বলতে শুরু করলাম
আমিঃ-আচ্ছা তোমরা সবাই কি বললে আমি টোকাই। এই টোকাইদের যোগ্যও তোমরা নও।ওরা কাজ করে খাই আর তোমরা বাপের কাধে বসে খাও। কৃষকদের কাজ ফসল ফলানো তারা ফসল ফলায় তারপর তা থেকে যে শস্যদানা হয় তা খেয়ে আমরা বেঁচে থাকি। তাই তাদের সম্মান করা উচিৎ। আর তোমরা সেই কৃষকদের মানুষ বলে গন্য করো না।তোমরা তাদেরকে গাইয়া বলো। তোমরা এক কাজ করো তোমাদের বাবা মাকে জিঙ্গাসা করো দেখো তারা বলবে তোমাদের দাদা বা তোমার বাবার দাদা কৃষক ছিলো বলবে তারমানে তোমরা ওই গাইয়া কৃষকদের বংশের একজন মানুষ। তাহলে কেন এমন বলো ভাই।
চাচাঃ-রাজ বাদ দাও চলো।
আমিঃ-হুম যাবো চাচা আপনি গেট এ যান আমি আসছি। চাচা চলে গেলো।
আমিঃ-এই যে স্যার আমার পোশাক দেখে এমন করলেন না একটা কথা শুনুন আমার ওই যে বাইরে গাড়ি রাখা আছে আর ওই যে দেখুন ৬ টা বডিগার্ড রাখা আছে ওদের গায়ে যে পোশাক আছে তা জীবনে পরেন নি। আপনার স্যালারির থেকে ওদের স্যালারি মিনিমাম দশ হাজার টাকা বেশি। আর নীলয় সাহেব নিজের যেই ভাব না সব হারায় যাবে আপনার বাবা রফিক চৌধুরীকে আমার নামটা বলবেন দেখবেন কি বলে আর জয় তোর বাবা রাশেদ চৌধুরী আমার বাবার বন্ধু না হলে তোকে আজ একদম শেষ করে ফেলতাম। কখনও পোশাক দেখে মানুষকে যাচাই না করে নিজের অবস্থানটা ভাবুন সবাই।কাজী নজরুলের কবিতাটা পড়েন নি ওই যে বলে “দেখিনু সেদিন রেলে কুলি বলে এক বাবুসাব তারে ঠেলে দিলো নিচে ফেলে” হুম সেই মানুষ কবিতাটা পড়লেই বোঝা যায় আপনারা কেমন মানুষ।আপনারা সেই বাবুসাহেব এর মতো। “বিড়াল”প্রবন্ধ পড়েন নি? ওই যে বলে…..”না দিলে চুড়ি করে খাবো”।হুম কৃপন ধনীরা খেতে না দিলে ওদের চোর হওয়া লাগে আর না হলে হওয়া লাগে টোকাই।
আর আপনাদের মতো কতোজন মানুষের জন্য আজ এই ছেলেটি রাস্তার ছেলে। আপনাদের মতো মানুষেরা প্রেম ভালোবাসার নামে শরীরের চাহিদা পূরন করেন। চলে যান রুম ডেট এ।তারপর যখন পাপের ফসলটা আসে তখন তাকে ডাস্টবিনে ফেলেন আর সেই শিশুটিকে হয়তো কুকুর ছিড়ে খাই না হলে বড় হলে হয় টোকাই। তাহলে এবার বলুন ওর দোষ কোথায়।দোষ আপনাদের। পোশাক না দেখে মনটা দেখুন। এখনও সময় আছে নিজেকে পাল্টান সবাই।আর মানুষকে তার প্রাপ্য অধিকার দিন।আর এতোকিছু বললাম কেউ কষ্ট পেলে আমি দুঃখিত।
সবাইঃ-রাজ আমাদের ভুল হয়ে গেছে আমাদের ক্ষমা করে দাও।
আমিঃ-ওকে।সবাই ভালো থেকো। পেছনে ঘুরে চলে আসবো হঠাৎ আইরিন দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমিঃ-আরে কি করছেন আপনি ছাড়ুন।
আইরিনঃ-না ছাড়বোনা আমি তোমাকে ভালোবাসি।
আমিঃ-ছাড়ুন আমাকে।
আইরিনঃ-আমি তোমাকে ভালোবাসি আর ছাড়বোনা।
সেদিনের পর তুমি আর কলেজে আসোনি আর কেও আমাকে জ্বালাইনি কেও আমাকে নিয়ে এতোটা ভাবেওনি। আমি খুব মিস করছিলাম তোমাকে। তুমি না থাকায় আমি তোমার শূন্যতা অনুভব করেছি। আমি সত্যি তোমাকে ছাড়া বাঁচবোনা রাজ।
আমিঃ-ঠাস্ ঠাস্।আজ আমার টাকা পয়সা আছে শুনে আমাকে জড়িয়ে ধরতে আসছেন তাইনা।আপনাকে অনেকবার প্রোপোজ করেছি ১৭৯ বার থাপ্পড় খাইছি আর কতো অপমান করেছেন ছোটলোক বলে।আর সেদিন আমাকে মেরে পা ভেঙে দিলেন আর কতো কথা বললেন।আর আজ যেই শুনলেন আমি আসাদ চৌধুরী এর ছেলে অমনি আমাকে ভালোবেসে ফেললেন। আর আপনারতো খুশি হওয়ার কথা আপনার নাম ফুটে গেছে রাজকে মেরে। শুনুন আমি আপনাকে ভালোবাসি না আর আমি আপনকে ঘৃণা করি।আপনার জন্যে আজ এই এদের মতো ন্যারো মাইন্ডের মানুষগুলো আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে আমাকে ক্ষ্যাত গাইয়া আরো গায়ে পর্যন্ত হাত দেওয়ার সাহস পাইছে।আমি আপনাকে ঘৃণা করি। ….. I hate U. আমি কথাগুলো বলে চলে আসলাম ওই বাচ্চাটিকে নিয়ে। তারপর কিছু শপিং করে আমার বাসায় নিয়ে গেলাম।
বাচ্চাটিঃ-ওরে বাবা এতো বড় বাড়ি আপনার।
আমিঃ-আরে না পাগলা আমার না আমি তো রাজা তবে আরো একজন আছে বাদশা শিমুল।
বাচ্চাটিঃ-মানে?
আমিঃ-আমার ছোটভাই। আর ওর ক্ষমতা বেশি।ওর সাথে আমার হিটলার বাবা আর সুপার ওম্যান আম্মু আছে।
বাচ্চাটিঃ-হাহাহা আপনার থেকে পাওয়ার ফুল হাহাহা।
শিমুলঃ-এই কে রে হাসে এতো জোড়ে।বাইরের কেউ কিভাবে ঢুকলো এখানে তো কারো হাসি এমন না।
আমিঃ-সরি বড়োভাই আমি একজনকে এনেছি আর সে জানতোনা তাই এমন হেসেছে।
শিমুলঃ-আপনার আনার আগে ওনাকে সব রুলস্ বলা উচিৎ ছিলো। ভুলটা আপনার তাই আপনি ১০০০ টাকা জরিমানা দিন।
আমিঃ-স্যার আমার কাছে এখন টাকা নেই আর ও এমন জোরে হাসি বা কথা কিছুই বলবেনা এরপর থেকে।
শিমুলঃ-চুপ যা বলছি তাই করুন।(ধমক দিয়ে)
বাচ্চা ছেলেটিঃ-আচ্ছা ভাইয়া জোরে কথা বললে বা হাসলে এখানে শাস্তি হয়?
আমিঃ-হুম রে পিচ্চি।
বাচ্চা ছেলেটিঃ-এই যে বাদশা ভাই আপনি একটু আগেও জোড়ে কথা বললেন তাড়াতারি ২০০০ টাকা জরিমানা দিন।
শিমুলঃ-কি বললি তুই এই বাইর কর একে।(রেগে জোরে বললো)
বাচ্চারিঃ-ভাইয়া দেখলেন এখনও জোড়ে বললো।
আমিঃ-এই চিৎকার বেশি সময় ধরে করলি তোর ১০০০০ টাকা জরিমানা টাকা ফেল।
শিমুলঃ-কোনো প্রমান নাই।
আমিঃ-রেকর্ড টা শোন। রেকর্ড শোনালাম। ও জরিমানা দিলো। আব্বু আম্মু হাসতে হাসতে আসলো।
আব্বুঃ-এই পিচ্চিটা কে রে আজ শিমুলকে শায়েস্তা করলো।
আমিঃ-আব্বু ও একটা রাস্তার খোলা খাবার খাচ্ছিলো পরে থাকা।কেউ নাই ওর। ও খুব ভালো আর বুদ্ধিমান তাই ওকে এনেছি।ওকে আমার সাথে রাখতে চাই আব্বু ওকে পড়ালেখা করিয়ে অনেক বড় করবো আমি। আমার তো কিছুর অভাব নাই ওকে রাখলে কি সমস্যা হবে কোনো।
আব্বুঃ-হুম ওকে বাসায় না ওকে শিমুলের স্কুলে ভর্তি করে দিবো ও পড়ালেখা করবে আর হোস্টেলে থাকবে আর ও আজ থেকে আমার আরেক ছেলে।
আমিঃ-ধন্যবাদ আব্বু।
আম্মুঃ-তা ওর নামটা কি বললোনা?
বাচ্চাটিঃ-আমার নাম স্বাধীন।
আমিঃ-হুম খুব সুন্দর নাম তোর ভর্তির ব্যবস্থা হয়ে যাবে কাল তোর আর শিমুলের চলে যেতে হবে স্কুলে।
শিমুলঃ-ওর জন্য জরিমানা হয়ছে ওকে নিবোনা আমি।
আমিঃ-এই নে তোর টাকা এবার তো নিবি।
শিমুলঃ-ওকে চল ভাই তুই আমার সাথে থাকবি।
ওদের ভর্তি করিয়ে দিলো আব্বু।ওরা পড়ালেখা শুরু করলো ঠিকমতো। শিমুল আর স্বাধীন দুজন খুব মিলেমিশে থাকে।মনে হয় দুজনের আত্মা একটায়। আমিও আজকাল কলেজে যায় সাথে ইমন মেহেদী আর আবির থাকে।এখন আর ক্ষ্যাত গাইয়া বলেনা কেউ পুরো কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই কিন্তু আমরা কাওকে সাথে নিই নাই। আইরিন কলেজে কম আসে।আসলেও আর আগের মতো কারো সাথে ফাজলামি করেনা চুপচাপ হয়ে গেছে। চোখের নিচে কালি পরেছে আর শুকিয়ে গেছে।মনে হয় ঠিক মতো খাইনা আর ঘুমায় ও না। একদিন কলেজ মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছি হঠাৎ আইরিন আর ওর বান্ধবী প্রিয়া আসলো।
আইরিনঃ-রাজ একটু এদিকে আসবা?
আমিঃ-যা বলার এখানেই বলো।(মাটির দিকে তাকিয়ে)
আইরিনঃ-রাজ প্লিজ আসো না।
আমিঃ-ওখান থেকেই বলুন।
আইরিনঃ-রাজ একবার আমার দিকে তাকাও।
আমিঃ-কেউ একজন বলেছিলো আমার মুখ দেখাও পাপ।কোনোদিন যেন তাকে এই মুখটা না দেখায় তাই আপনার দিকে তাকাবোনা যা বলার বলুন।
আইরিনঃ-রাজ প্লিজ একটু সাইডে আসো না।(অনুনয় করে)
আমিঃ-এই আপনি যাবেন এখান থেকে ছাতা আর ভালো লাগেনা যানতো যত্তোসব আইছে। আইরিন কান্না করতে করতে চলে গেলো ক্লাসে।আর আমি বসে আছি।হঠাৎ প্রিয়া বললো….
প্রিয়াঃ-রাজ তুই নিজেকে কি ভাবিস জানিনা। হয়তো তুই আসাদ চৌধুরী এর ছেলে তাই হয়তো তোর এতো অহংকার। তোর যা নিয়ে অহংকার তা তোর তৈরি না তোর বাবার তৈরি বুঝলি। তিনি জানেন কষ্ট কি? কিন্ত তুই বুঝবিনা কষ্ট কি কারন তুই ভালেবাসায় বুঝিসনা।
একটা জিনিস মনে রাখিস ভালোবাসা টাকা না মন দেখে হয়।ভালোবাসার মানে টা তুই বুঝিস না। আজ আইরিন কেন এসেছিলো তা কি তুই জানিস? না জানিসনা। আইরিনের বাবা তার বন্ধুর ছেলে জয় এর সাথে আইরিনের বিয়ে ঠিক করছে।ছেলে জার্মানিতে ছিলো দুদিন হলো দেশে এসেছে বিয়ের জন্যে। আইরিন তোকে ভালোবাসে তাই আজ তোকে বলতে আসছিলো আর তুই এমন করলি। তোর খালাতো বোন সম্পা আমায় বলতো যে দোস্ত রাজ আমার আপন ভাই এর চেয়েও বেশি আর ও খুব ভালো।কিন্তু না তুই ততো ভালোওনা আজ থেকে তোর বোনকেও আমার বন্ধুর তালিকা থেকে বাদ দিলাম।বলে দিস তোর বোনকে গুড বাই। মাথা নিচু করে বসে আছি।
আবিরঃ-ছিঃ বন্ধু তুই এমনটা করবি ভাবতেই পারিনি। থাক তুই তোর সাথে আমি নাই।(মুখ পেছনে করে নিলো)
মেহেদীঃ-রাজ আমিও যাবো।
ইমনঃ-দোস্ত আইরিন মেয়েটা খুব ভালো তোকে সত্যিই ভালোবাসে। দোস্ত আজকাল সত্যিকারের ভালোবাসা পাওয়া
যায়না। আর তুই পেয়েও হাত ছেড়ে দিলি।এখনও সময় আছে ওকে আপন করে নে।
মেহেদীঃ-হুম দোস্ত যাও আমরা তো আছি।
আবিরঃ-হুম দোস্ত আমিও আছি যাও।
ইমনঃ-রাজ যা তারাতারি। আমি উঠে দৌড়ে চলে গেলাম আইরিনের ক্লাসরুমে। গিয়ে দেখি রুমে প্রিয়া বসে বলতাছে…..
প্রিয়াঃ-আইরিন মাথা নিচু করে না থেকে উচু করে থাক।বেঞ্চে মুখ লুকিয়ে বসে থাকলেই কি কষ্ট দূর হবে পাগলি।
আর দেখিস একদিন ওই রাজ তোর জন্যে কাঁদবে।
আমিঃ-পাগলিটা আপনি বলবেন না দয়া করে ওকে পাগলি বলার অধিকার শুধু আমার।
প্রিয়াঃ-আপনি এখানে কেন।
আমিঃ-প্রিয়া আপু তুমি যাও আমি আমার বউটাকে নিয়ে আসছি।
প্রিয়াঃ-ওকে। প্রিয়া বাইরে বের হলো আমি বললাম…..
আমিঃ-আইরিন আমি জানিনা ভালোবাসা কি? শুধু মাঝে মাঝে শুনতাম যে ভালোবাসা মুখে নয় অনুভবে হয় যা দুটি মনের মিলন।দুজনে কাছাকাছি আসলেই হার্টে এক ধরনের কম্পন সৃষ্টি হয় এটাই নাকি ভালোবাসা। যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি সেদিন আমার বুকে ওরকম ধাক ধাক আওয়াজ শুরু হয়। মাঝে মাঝে মনে হতো সবসময় তোমাকেই দেখি।রাতে তোমার ছবি দেখতে দেখতে আমি ঘুমিয়ে যায়। তোমায় না দেখলে আমার ঘুম আসেনা। আমি তোমাকে ভালোবাসি আইরিন। আমি তোমাকে ভালোবাসি।কি হলো এখনও মাথা নিচু করে কেন? এখনও আমার ওপর থেকে রাগ যায়নি। ওই পাগলি কথা বলবানা আমার সাথে? ওকে আমি কান ধরছি সরি তো।কি গো ওঠো।(হালকা ধাক্কা) আইরিন উঠছেনা দেখে আমি হালকা ধেক্কা দিলাম সাথে সাথে আইরিন পরে গেলো আর ওর হাতে একটা বিষের বোতল। আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না চিৎকার করে বললাম…..
আমিঃ-আইরিন।(চিৎকার করে) চিৎকার শুনে প্রিয়া আবির ইমন আর মেহেদী আসলো। তাড়াতাড়ি আইরিনকে হাসপাতালে নিয়ে আসলাম।
আমিঃ-ডাক্তার আমার আইরিনকে দেখুন ডাক্তার।(চিৎকার করে)
ডাক্তার মিতাঃ-আরে রাজ তুমি এখানে আর চিৎকার কেন করছো।
আমিঃ-মিতা আমার আইরিনকে বাঁচাও তুমি আমি ওকে ছাড়া বাঁচবোনা।
মিতাঃ-কি হয়ছে?
আমিঃ-এই নাও এটা। (বিষের বোতল দিলাম)
মিতাঃ-ও মাই গড । নার্স ওকে নিয়ে আসো ভেতরে ফাস্ট।
মিতা আইরিনকে নিয়ে ভেতরে গেলো। আমিও পেছন পেছন গেলাম তাই মিতা বললো…..
মিতাঃ-রাজ তুমি এখানে থাকলে সহ্য করতে পারবানা। তুমি বাইরে যাও।
আমিঃ-মিতা আমার আইরিন।
মিতাঃ-আরে যাওতো কিছু হবেনা ওর।
আমি চলে আসলাম বাইরে।মিতা আর বাকি নার্সরা মিলে ওর বিষ তুলছে।আমি বাইরে কাঁচ দিয়ে দেখছি আর কান্না করছি। খুব কষ্ট হচ্ছে পাগলিটার।ইমন মেহেদী আবির আর প্রিয়া আমাকে নানান কথা বলে শান্তনা দিচ্ছে।
আইরিনের বাবা মা ও চলে এসেছে।প্রিয়া বলেছিলো ওর বাবা মাকে। ৩০ মিনিট পর ডাক্তার মিতা বের হলো….
আইরিনের আব্বুঃ-ডাক্তার আমার মেয়ের কি অবস্থা?
ডাক্তার মিতাঃ-দেখুন আমরা বিষ তুলেছি এখন ওনাকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া আছে বেড এ আনা হচ্ছে ওনাকে। ৪ ঘন্টা পর ঙ্গ্যান ফিরবে।ভয়ের কোনো কারন নেই ।
আমিঃ-মিতা আমার আইরিনের কিছু হয়নি তো?
ডাক্তার মিতাঃ-রাজ পাগলামী করোনা যাও হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো আর খাবার রাখা আছে খেয়ে নাও আংকেল আন্টি এখনি চলে আসবে আর তোমাকে এমন দেখলে আমাকে বকবে।
আমিঃ-মিতা তুমি বাবা মাকে বললে কেন? আর আমি আমার আইরিনকে ছাড়া খাবোনা।
ডাক্তার মিতাঃ-কেন পাগলামি করছো?
আমিঃ-মিতা আমি আইরিনকে ছাড়া বাঁচবোনা। ওকে ছাড়া খাওয়াতো দূরের কথা বাঁচাও সম্ভব না।আমার জন্যে আজ ওই পাগলিটা মরতে গেছিলো।
আইরিনের আব্বুঃ- প্রিয়া এ কে আর এসব কি শুনছি আমি।
প্রিয়াঃ-আঙ্কেল ও রাজ আইরিন ওকে খুব ভালোবাসে।
আইরিনের আব্বুঃ-কিন্তু এ সম্পর্কে কোনো ভবিষ্যৎ নেই আমি আমার বন্ধুকে কথা দিয়েছি আর ওর ছেলে জয়ের সাথেই আইরিনের বিয়ে দিবো।
প্রিয়াঃ-আঙ্কেল এটা আপনি ভুল করবেন। আইরিনের আব্বুঃ-আর বাদ দে ঠিক ভুল আমি তোর থেকে শুনবোনা।আমার মেয়ের ভবিষ্যতের চিন্তা আমার করতে হবে আর জয় জার্মানিতে থাকে ওর সাথে এর তুলনা হয়না।
আমিঃ-আংকেল আমার হয়তো ওনার সাথে তুলনা হয়না তবে এটা বলতে পারি আইরিনকে জয়ের সাথে বিয়ে দিলে জয়ের আমার আর আইরিনের তিনটা জীবন নষ্ট হবে আপনার আইরিন কখনও সুখী হবেনা।
আইরিনের আব্বুঃ-এই তোর কি আছে হ্যা তুই জানিস আমার মেয়ের প্রতি দিনের হাত খরচ কতো।
ডাক্তার মিতাঃ-আপনি কাকে কি বলছেন?আপনি জানেন…..
আমিঃ-মিতা চুপ একটা কথা বলোনা তুমি।(মিতাকে বলতে দিলাম না)
মিতাঃ-ধুর।(রাগ করে কেবিনে চলে গেলো)
ইমনঃ-রাজ চুপ করতে কেন বলছিস ওকে। বলে দিক ও আর কতো শুনবি।
আমিঃ-একটা কথা বলবিনা আর কেও।(রেগে চোখ লাল করে তাকালাম ওদের দিকে)
আবিরঃ-ইমন চুপ করো মেহেদী কেও আর কিছু বলবোনা আমরা।
আমিঃ-আঙ্কেল আইরিন আমাকে খুব ভালোবাসে আর আমিও আইরিনকে ভালোবাসি। আইরিনের আব্বুঃ-ওই থামবি তোর মতো ছেলে আমার আইরিনের বডিগার্ড এর চাকরী করে বুঝলি ছোটলোক
হঠাৎ আমার আব্বু আর আম্মু কোথা থেকে আসলো….
আব্বুঃ-কাকে আপনি চাকুরী দিবেন আর কাকে ছোটলোক বলছেন মিস্টার আরিফ চৌধুরী।
আইরিনের আব্বুঃ- আরে ভাই আপনি এখানে এই ছোট হাসপাতালে আপনি এসেছেন।
আব্বুঃ-হ্যা এই ছোট হাসপাতালে আমি এসেছি আর এই যে ছোটলোকটা এই ছোটলোকটার পিতা আম।(আমার কাধে হাত দিয়ে)
আইরিনের আব্বুঃ-ইনি আপনার ছেলে।
আমিঃ-আরে আপনি করে কেন বলছেন আমি আপনার ছেলের বয়সী।আর আমি ছোটলোক সো তুই করেই বলুন।
মেহেদীঃ-আপনি রাজকে যে অপমানটা করলেন না আপনি জানেন জয় কে?ওই জয়কে যদি রাজ একবার বলে তাহলে জয় এখনি চলে আসে।আর ওরকম হাজারো জয় রাজের কাছে কিছুই না। আর রাজের হাত খরচ দিতে আপনি পারবেন না।
আমিঃ-উফ মেহেদী থামবি। উনি আমার বাবার বয়সী ওনার কোনো দোষ নাই।
আব্বুঃ-দেখুন আমার এই ছোটলোক ছেলেটা ছোটলোক হলেও মনটা বড়লোক হয়ে গেছে।
আইরিনের আব্বুঃ-আমি দুঃখীত।
আমিঃ-আব্বু আমি ইনার মেয়েকে ভালোবাসি।
আব্বুঃ-তা ভাই আপনার মেয়েটাকে আমার ছেলের জন্যে আমরা ভিক্ষা চাই।
আইরিনের আম্মুঃ-ভিক্ষা চাওয়া লাগবেনা উনি না দিলেও আমি দিবো মেয়ের ওপর আমারও অধিকার আছে।
হঠাৎ একটা নার্স এসে বললো…..
নার্সঃ-এখানে রাজ কে?
আমিঃ-জ্বি আমি।
নার্সঃ-রোগী বারবার রাজ রাজ করছে আপনি প্লিজ ভেতরে আসুন নইলে সমস্যা হবে। আমি ভেতরে গেলাম।আইরিনের ঙ্গ্যান ফিরেছে। আমি ওকে দেখে কান্না করে দিলাম।
মিতাঃ-এই সবাই বাইরে চলো শুধু এরা দুজন একটু থাকুক। সবাই বাইরে চলে গেলো।
আমিঃ-এই মেয়ে কি ভাবিস তুই নিজেকে হুম নিজেকে কি ভাবিস তুই।এই তুই এরকম করে কি প্রমান করতে গেছিলি।এই তুই নিজেই শুধু ভালোবাসতে পারিস আর কেউ পারেনা।মরে গেলে সবকিছুর সমাধান হয়নস এটা বুঝিসনা তুই।(কান্না করতে লাগলাম ওর হাতের কাছে মাথা রেখে)
আইরিনঃ-কান্না কেন করছো।আমিতো তোমাকে ভালোবাসিনা তোমাকে মেরেছি কতো অপমান করেছি। তুমি তো আমাকে ঘৃনা করো। আমি মরে গেলে তো ভালো হবে তোমার আর আমাকে দেখা লাগবেনা। (আস্তে আস্তে কথা বলছে কথা বেঁধে যাচ্ছে ফুপিয়ে কান্না করছে)
আমিঃ-চুপ পাগলি একদম চুপ।আমি বললাম তাই মুখ দেখাবেনা।মুখে যতোই বলি দূরে যা মন তো বলে থেকে যা।তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবোনা পাগলি আর তুমি তোমার পাগলটাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিলে।একবারও ভাবলেনা আমি একা হয়ে যাবো।তোমাকে ভালোবাসি আমি পাগলি খুব ভালোবাসি।
আইরিনঃ-ছাই বাসো মরে গেলে ভালো হতো।
আমিঃ-চুপ একদম চুপ।(মুখে হাত দিয়ে)
আইরিনঃ-হুম হাতটা খুব সুন্দর তোমার আর হাতে কি মধু লাগানো নাকি যে ঠোঁটে হাত দিলা তো মিষ্টি হয়ে গেলো।
আমিঃ-তবে রে পাগলি। জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে ওভাবেই।হঠাৎ কারো কাশির আওয়াজে হুঁশ হলো।
আব্বুঃ-এই তুই কিসে পড়িস হুম এখনি এতো শিখেছিস।(আমার কান ধরে)
আমিঃ-উফ লাগছে তো।
আইরিনঃ-ছাড়ুন লাগছে আমার স্বামীর।
আব্বুঃ-ওরে বাবা এখনই স্বামী ভক্ত।
আমিঃ-আব্বু আম্মুও এরকম ছিলো তাইনা।
আম্মুঃ-দাঁড়া তোর ফাজলামো ছুটাচ্ছি ফাজিল।
আমিঃ-আম্মু এই আইরিন।
আম্মুঃ-খুব মিষ্টি মেয়ে।
আমিঃ-হুম তাইতো।
আব্বুঃ-তা আরিফ সাহেব আপনার মেয়ে আর আমার ছেলেকে তো দেখলামি। আপনার মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়েতে কি আপনা কোনো আপত্তি আছে?
আরিফ খানঃ-না আমার কোনো আপত্তি নেই।
আব্বুঃ-তাহলে আগামী শুক্রবার বিয়ে।
আরিফ খানঃ-ওকে।
আইরিনকে দুদিন পর হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হলো। আমি দুদিন ওর সাথেই ছিলাম। জয়কে আর ওর বাবাকে আমার আব্বু আর আইরিনের আব্বু বুঝিয়ে বলেছে।তাই কোনো ঝামেলা হয়নি। আজ আমার আর আইরিনের বিয়ে হলো। আইরিনকে নিয়ে আমার বাসায় এসে আমি ছাদে চলে এলাম। ছাদে দাঁড়িয়ে ভাবছি এটা লাভ ম্যারেজ নাকি এরেন্জড্ ম্যারেজ।হঠাৎ প্রিয়া মিতা আর ওই তিন হারামি সজারু আসলো….
ইমনঃ-আহারে বউ রেখে এখানে এসে কি ভাবছো জানু।
আবিরঃ-ভাবছে টিনা মিনা রিতার কি হবে এখন আমারতো কেল্লা ফতে।
মেহেদীঃ-আরে না ভাবছে স্বাধীন জীবনটা পরাধীন হয়ে গেলো।
প্রিয়াঃ-আহারে বেচারার কি কষ্ট।
মিতাঃ-ইশ্ আমার জানু টা আজ অন্য কাওকে বুকে নিয়ে ঘুমাবে আমার কি হবে। হঠাৎ আইরিন কোথা থেকে এসে বললো…..
আইরিনঃ-এই কে তোর জানু হুম একদম নজর দিবিনা চোখ তুলে নিবো।
মিতাঃ-ওরে বাবারে বম ব্লাস্ট আমি পালাই।(দৌড়ে পালালো)
আইরিনঃ-এই তুই মেয়েদের সাথে কথা বলছিস কেন?(আমার কলার ধরে)
আমিঃ-আমিতো তোমার বান্ধবীর সাথে কথা বলছি।
আইরিনঃ-ওর সাথেও কথা বলবিনা আর আমাকে দেখবি আর আমার সাথে বলবি।
প্রিয়াঃ-বাব্বাহ এতো কিছু করলাম আর আমার ওপরও হিংসা।
আমিঃ-প্রিয়া সোনা উম্মাহ।(ফাজলামি করে)
প্রিয়াঃ-হিহি উম্মাহ।(বুঝতে পেরে)
আইরিনঃ-আমাকে নিয়ে হচ্ছেনা।চল আজ তোর উম্মাহ কতো লাগে দেখাবো।(কলার ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো) সবাই হাসছে।আইরিন আমাকে নিয়ে ঘরে আসলো।ঘর না ঘর না বাসর ঘরে হিহিহি।
আইরিনঃ-আজ তোর কতো উম্মাহ লাগে দেখবো দাঁড়া্(খাটে ফেলে দিলো)
আমিঃ-এই এদিকে এসোনা আমার ভয় করছে।আমি ছোট মানুষ নিষ্পাপ শিশুকে এতোটা নির্যাতন করোনা গো।
আইরিনঃ-তোর শিশুগিরি বের করছি।
আমিঃ-না ইয়া মাবুদ।উ…..ম
আর কথা বলতে পারলাম না।বাকিটা পাতিহাঁস ও না ইতিহাস। এই এই কি দেখেন আপনারা অন্যের বাসর দেখতে লজ্জা করেনা আপনাদের। এতোই যখন শখ যান যান বিয়া করেন গা।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত