আমার সপ্ন ছিলো শুধুই তুমি

আমার সপ্ন ছিলো শুধুই তুমি

বসে আছি একা নদীর পাড়ে।ভাবছি সেই ৩বছর আগের কথা। আজ আমি এমন কেনো হলাম। এতটা কেনো বদলে গেলাম।কেনো হলো আমার সাথে এমন।
আমি আবির।
আমি তখন সবে মাত্র ইন্টার ২য় বর্ষের ছাত্র।একদিন বসে আছি কলেজে হঠাৎ বাইরেএকটা মেয়েকে দেখে আমার চোখ আটকে গেলো।তার টানা টানা চোখ, ঠোটের কোনায় ছোট্ট একটা তিল,আর মায়াবী মুখ।সত্যিই যেন প্রথম দেখায় আমাকে পাগল করে দিয়েছে।আমি যেন হারিয়ে গেছি কল্পনায়,,
কে তুমি সপ্নপরী,,
হঠাৎ এলে সামনে আমার,
তোমার ওই চোখের মায়ায় কেনো বাধলে আমায়,
তুমি কি বুঝেছো প্রিয়া আমি যে ভালোবেসে ফেলোছি তোমায়।

এক বন্ধুর ধাক্কায় আমি কল্পনা জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরলাম।এরপর থেকে তাকে আমি প্রতিদিন ফলো করতাম কলেজ ছুটির পর।
এভাবে কেটে গেলো অনেক দিন।একদিন কলেজ ছুটির ওর পিছু যাচ্ছিলাম। কিছুদুর গিয়েই মেয়েটা থেমে গেল আর পিছনে ফিরে আমার দিকে আসতে লাগলো।আমি কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম।আমার কছে এসেই,,,

মেয়েটাঃনাম কি আপনার?
আমিঃআবির।(মাথা নিচু করে)
মেয়েটাঃপ্রত্যকদিন কলেজ ছুটির পর আমার পিছু নেন কেনো?
আমিঃএমনি(আর কিছু বলতে পারলাম না)
মেয়েটাঃকাল থেকেযেনো আপনাকে আর না দেখি আমার পিছে।
আমিঃআচ্ছা আসবনা আপনার পিছে।(কিছুক্ষন চুপ থেকে)আপনাকে একটা কথা বলব?
মেয়েটাঃ কি কথা?
আমিঃআপনার নামটা একটু বলা যাবে?
মেয়েটাঃ( একটা মন ভুলানো হাসি দিলো।আমি যেন আবার তার প্রেমে পড়ে গেলাম)
আমিঃ হাসছেন কেনো? ( কিচুটা অবাক হয়ে)
মেয়েটাঃহসবা নাত কি করব। এতদিন যার পিছনে ঘুরছেন তার নামটাও জানেনা?
আমিঃআসলে অন্যদের কাছে শুনলে হয়ত তারা বলে দিত।কিন্তু আমিত আপনার মুখ থেকেই শুনতে চাই?
মেয়েটাঃও তাই?
আমিঃহ্যা।
মেয়েটাঃ আমার নাম ইশিতা?.
আমিঃআপনার মত আপনার নামটাও অনেক সুন্দর।আচ্ছা আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
ইশিতাঃহ্যা অবশ্যই।
আমিঃধন্যবাদ।
এরপর থেকে আমাদের সম্পর্কটা আরো কাছাকাছি চলে আসলো।কলেজে সবসময় দুজন একসাথে থাকতাম।ও আমার খুব কেয়ার করত আর আমিও।কিন্তু আমি যে ওকে ভালোবাসি ওকি বুঝতে পারেনা না কি বুঝতে চায়না।একদিন আমি আর ইশিতা বসে আছি কলেজ মাঠে।আমি ইশিতাকে বললাম,,
আমিঃ আমি না এক জনকে ভালোবাসি কিন্তু তাকে বলতে পারছিনা।তুমি কি আমাকে একটু হেল্প করবে?
ইশিতাঃকি বললে আমি শুনতে পাইনি।( ও ভাবতে পারিনি আমি এই কথা বলব।)
আমিঃআমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি কিন্তু তাকে বলতে পারছিনা,তুমি যদি আমাকে একটু হেল্প করতে?
ইশিতাঃএতে ভয় পাবার কি আছে। তুমি তাকে বলে দাও। ( দুচোখ ভিজে উঠেছে ওর)
আমিঃ যদি না করে দেয় আমাকে।তাহলেত আমি বাচব না।
ইশিতাঃ তুমি এতভালোবাস তাকে।তা কে সেই ভাগ্যবতী?
আমিঃআমি তোমাকে কাল বলব কে সে।আর কালকেই আমি তাকে প্রপোজ করব।
ইশিতাঃওকে।
বলেেই উঠে হাটতে শুরু করল আমি ডাকলাম তাও পিছু ফিরল না।আজ হয়ত অনেক কান্না কররবে মেয়েটা।কিন্তু আমিত আজ ওকে বলতে পারব না আমার ভালোবাসার কথা।কালকে ওকে চমকে দেওয়া যাবে।
পরেরদিন সকালে রেডি হয়ে ফোন দিলাম ইশিতাকে,,,
আমিঃ হ্যালো,,
ইশিতাঃ বলো কি বলবে?
আমিঃ কোথায় তুমি এখন?
ইশিতাঃ বাড়িতে। কেনো কি হয়েছে?
আমিঃ কলেজে আসোতো একটু।
ইশিতাঃ না আমি আজকে কলেজে আসব না?
আমিঃআরে তুমি না আসলে আজকে আমি তাকে আমার ভালোবাসার কথা বলতে পারবনা।
ইশিতাঃ না আমি আসব না।
অনেক চেষ্টা করে রাজি করালাম পেত্নীটাকে।ও যদি না আসে তাহলে ভালোবাসার কথা বলব কাকে আমি।
ইশিতাকে আগে থেকেই বলে রেখেছি কোথায় থাকবে ও।
আমি যাওয়ার সময় একটা গোলাপ নিয়ে গেলাম হাতে করে।
গিয়ে দেখি আমার আগেই ইশিতা এসে দাড়িয়ে আছে।আমি গিয়েই ওর সামনে বসে পড়লাম হাটুগেড়ে,,
ফুলটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে
আমিঃ প্রথম যেদিন দেখেছি তোমায়,
তোমাকেই বসিয়েছি আমার হৃদয় আঙিনায়।
তোমাকে নিয়ে সাজিয়েছি অনেক সপ্ন হৃদয় মাজে,
তুমি কি বাসবে প্রিয়া আমাকে একটু ভালো,
আমি যে তোমাকে নিয়ে দেখেছি ভবিষ্যতের আলো।
ইশিতা কিছু বললনা শুধু আমার হাত থেকে ফুলটা নিয়ে আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়ল।
আমিঃ এই পাগলী কাদছো কেনো?
ইশিতাঃতুমি খুব পচা। আমাকে শুধু কষ্ট দাও?( আমার বুকে কিল মারছে আর বলছে)
আমিঃআচ্ছা সরি আজ থেকে আর কষ্ট দেবোনা কথা দিলাম।
ইশিতাঃ(চুপ) কিছু বলছেনা শুধু মুখ লুকিয়ে আছে আমার বুকে।আর চোখের জলে শার্ট ভিজিয়ে দিলো।
আমিঃ হয়েছে আপনার আর কান্না কররতে হবেনা এবার উঠুন আমার জামাটাত পুরো ভিজিয়ে দিয়েছেন।
ইশিতাঃ রাগে চোখ লাল করে আবার আমাকে কিল মারতে লাগল।
এরপর থেকে আমাদের সম্পর্কটা খুব সুন্দর ভাবে চলতে থাকে। রাগ, অভিমান, মিষ্টি ঝগড়া।
কিন্তু কত দিন আর এভাবে চলবে। বিধাতার যে আর সহ্য হলোনা।আমাদের সম্পর্কের কথা ইশিতার বাবা জেনে যায়।উনি ছিলেন একজন ব্যাবসায়ী যা আমি জানতাম না। আর আমি একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। কি করে ওর বাবা আমার হাতে তার মেয়েকে তুলে দেবে।
একদিন রাতে ইশিতা আমাকে ফোন দেয়,,
আমিঃ হ্যালো,,
ইশিতাঃশুধু কান্নার আওয়াজ ওপাস থেকে,,
একটু পর ফোনের ওপাস থেকে একটা শব্দ হলো আর ফোনটা কেটে গেলো।মনে হল ফোনটা কেউ আছাড় মেরেছে।
আর কখনো কথা হয়নি ইশিতার সাথে আমার।জানিনা কোথায় সে। কেমন আছে।
আজ ৩টি বছর ধরে খুজে চলেছি তাকে আজও পায়নি তার দেখা।দুজনের সাজানো সপ্নগুলো সপ্নই থেকে গেলো।হলোনা আর পুরন।
আজও আসে প্রতি রাতে সে কাছে,
ঘুুম ভাঙতেই দেখি হারিয়ে গেছে।
মনের জানালা খুলে শুধু তাকেই ডাকি
তবু কেনো বোঝেনা সে,
তাকে ছাড়া আমি যে একাকি।
ছিলো কত সাজানো সপ্ন তাকে ঘিরে,
তা যেন আজও কেদে মরে আমার বুক চিরে।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত