সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে হেটে চলছি আনমনে।উদ্দেশ্য কোন একটা চায়ের দোকান।হঠাৎ রাস্তার পাশে কিছু বাচ্চাদের চেচামেচি শুনতে পেলাম।তারা পাগল পাগল বলে চিৎকার করছে। আমি কিছুটা কৌতুহল নিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখি ২৫-২৬ বছরের একটা লোক। মুখে লম্বা দাড়ি, চুলগুলোও অনেক লম্বা, ছেড়া ময়লা জামাকাপড় পরা। মনে হচ্ছে অনেকদিন ধরে গোসল করেনি। আমি বাচ্চাদের একটু ধমক দিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলাম।তারপর লোকটার দিকে তাকালাম। দেখি ওনার কাধে একটা পুরনো ব্যাগ। আমার মনে হচ্ছে লোকটা পাগল নয়। আমি তার কাছে এগিয়ে গিয়ে,,
আমিঃআপনার নামকি?
পাগলঃআবির।
আমি কিছুটা অবাক হলাম,এই লোকটা আমার নাম কিভাবে জানল।আমি একটু রাগ ভাব দেখিয়ে আবার প্রশ্ন করলাম,,
আমিঃআপনাকে আমার নাম বলতে বলিনি। আপনি নিজের নাম বলুন!
পাগলঃআমার নাম আবির,
আমিঃ ও আচ্ছা আপনার নামও আবির।
পাগলঃহ্যা।
আমি অবাক হয়ে লোকটাকে দেখছিলাম,দেখতে অনেকটা পাগলের মত,পাগলের মত বলতে একে যেই দেখবে সেই পাগল বলবে।আমি তাকে আবার প্রশ্ন করলাম,,
আমিঃ আপনার ব্যাগের ভীতর কি আছে,,?
পাগলঃ একটা ডায়রী আর কিছু গিফট যা আমার প্রিয়া আমাকে দিয়েছিল।
আমি আরও অবাক হয়ে গেলাম লোকটার কথা শুনে। তারপর তাকে বললাম চলুন ওইখানে বসি। দেখলাম লোকটা আমার পিছন পিছন এসে পাশে বসল।
আমিঃ আমি কি আপনার ডায়রীটা পরতে পারি?
কিছু না বলে লোকটা ব্যাগ থেকে ডায়রীটা বের করে আমার হাতে দিল।
আমি আবার সিগারেট ছাড়া এক মুহুর্ত থাকতে পারিনা। তাই ভাবলাম সিগারেট টানতে টানতে ডায়রীটা পড়ব। পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা বের করলাম। দেখি মাত্র দুটো সিগারেট আছে। একটা আমি নিজে ধরালাম। তার পর লোকটাকে বললাম খাবেন।বলা মাত্রই লোকটার মুখে কিছুটা হাসি ফুটে উঠল। আমি অন্য সিগারেটটা তার দিকে এগিয়ে দিলাম। সে সিগারেটটা ধরিয়ে টানতে শুরু করল।আর আমি ডায়রীর দিকে নজর দিলাম।
ডায়রীটা হচ্ছে ৩ বছর আগের২০১৪ সালের। ডায়রীটা খুলেই দেখলাম প্রথম পাতায় লেখা,
আজ আমি অনেক খুশি।কারন আজ আমি চাকরি পেয়েছি।অবশ্য চাকরিটার বেতন বেশি না। তবে আমাদের ছোট পরিবারটা ভালোভাবেই চলবে। আজ থেকে মা বাবার কষ্টটা একটু কমাতে পারব। অফিসে বসে এসব কথা ভাবছি। হঠাৎ পিয়ন এসে বলল স্যার বাসায় যাবেননা ডিউটি টাইম শেষ হয়ে গেছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৫ টা বেজে গেছে। আমি অফিস থেকে বের হয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রাস্তার পাশে দাড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম একটু পর পেয়েও গেলাম।আসলে অফিস থেকে আমার বাসায় যেতে বাসে করে ২ঘন্টা সময় লাগে।বাসে বসে বসে কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছি।হঠাৎ কেউ হাল্কা করে আমায় ধাক্কা দিল।তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে। কালো ড্রেস পরা খোলা চুল। আমি তার দিকে চেয়ে কল্পনায় হারিয়ে গেছিলাম। আবার ধাক্কা। আমি হকচকিয়ে তাকালাম তার দিকে। দেখি রাগে চোখলাল হয়ে আছে। আমি কান থেকে হেডফোন খুলে তার কথা শোনার চেষ্টা করলাম।
মেয়েটাঃআমি কি আপনার পাশের সিটে একটু বসতে পারি?
আমিঃ এখানে কি অন্য কেউ বসে আছে?
মেয়েটাঃজি না।
আমিঃ তাহলে বসতে কে মানা করল আপনাকে?
মেয়েটাঃধন্যবাদ।(একটু মুসকি হেসে)
আমিঃইটস ওকে।
তারপর আমি আবার কানে হেডফোন লাগিয়ে গানে মন দিলাম। হঠাৎ আমার কাধে কারো মাথা অনুভব করলাম। চেয়েদেখি মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়েছে। কি তার মায়াবী মুখখানা। মনে হচ্ছে যেন আমার পুরো পৃথীবি থেমে গেছে। আমি যেন হারিয়ে গেছি তার নিষ্পাপ মুখের মায়ায়।আমি আনমনে জানালা দিকে তাকিয়ে তাকে নিয়ে ভাবছি,
কে তুমি মায়বিনী
কেন হঠাৎ এলে আমার কাছে?
ছুয়ে দিলে হৃদয় আমার
তোমার ওই চোখের মায়ায়।
কেড়ে নিলে আমার এ মনটা
দেখিয়ে তোমার ওই মায়াবিনী মুখটা।
হঠাৎ কারো হাতের স্পর্শ পেলাম। চেয়েদেখি কন্টাকটর ডাকছে। ভাইজান নামেন আপনার ঠিকানায় আইসা পড়ছি।আমি চেয়ে দেখি পাশের সেই মেয়েটা নেই। এক নিমেষেই আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল। আমি কন্টাকটারকে বললাম ভাই আমার পাশে যে মেয়েটা বসেছিল সে কোথায়। কন্টাকটার বলল ভাইজান ও আপাত অনেক আগেই নেমে গেছেবাস থেকে।আমি মন খারাপ করে বাস থেকে নামতে যাবো ঠিক তখনি দেখলাম মেয়েটার সিটে একটা মোবাইল পড়ে আছে। আমি মোবাইলটা নিয়ে বাস থেকে নেমে গেলাম। বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে খাওয়াদাওয়া করলাম। তারপর রুমে এসে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি ফোনটা বন্ধ হয়ে গেছে,চার্জ শেষ। কি আর করার ফোনটা চার্জে লাগিয়ে সুয়ে আছি। কিন্তু ঘুম আসছে না।শুধু বাসের ওই মেয়েটার মুখটা ভেসে উঠছে চোখের সামনে। তাহলে আমি কি প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছি তাকে।
হয়ত তাই। কিন্তু আমিত তার নাম জানিনা, কোথায় থাকে তাও জানিনা। তাহলে তাকে কিভাবে খুজব। তাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে,
ওগো অপরিচিতা কেন মনে পড়ছে তোমায়,
তুমি কি বুঝেছো, আমি ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়।
তোমার ভাবনাায় ডুবে আছি আমি,
বেধেছ মায়ার বাধনে, ছেড়ে যেওনা কখন তুমি।
ভাবিনি এভাবে দেখা পাব তোমার,
হৃদয় মাঝে তুলেছ এ কোন ঘুর্নি ঝড়।
তোমার ওই খোলা চুলের ছোয়া,
আমার মন পুড়ে উঠেছিল সে কোন প্রেমের ধোয়া।
এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম জানিনা। সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙে,
,,,,,,
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে চলে গেলাম অফিসে। কিন্তু কোন কাজেও মন বসছে না।আমার মনযে শুধু সেই মায়াবতীর কাছে ছুটে যেতে চাচ্ছে।যাই হোক অফিস শেষ করে বাড়িতে ফিরলাম। ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে গেলাম ঘুমাতে।হঠাৎ মনে পরল ওই ফোনটার কথা। দেখি টেবিলের উপর রাখা। ফোনটা ওন করলাম। ভাবলাম চেক করা যাক ফোনটা আসলে ওই মেয়েটার কিনা। তাই ফোনটার একটু ঘাটাঘাটি করে দেখছিলাম। তার পর গ্যালারিতে গিয়ে আমার চোখ আটকে গেল। এখন কনফর্ম হলাম ফোনটা ওই মায়াবতীরই।তার ছবি গুলো দেখছি আর আমি যেন কল্পনায় হারিয়ে যাচ্ছি,,
কি অপরুপ সে লাজুক মুখখানি
আমার হৃদয়ে এনেছে প্রেমের বানী।
সরাতে পারছিনা আমার দু আখী
কত কথা যে তার সাথে বলা আছে বাকি।
ওগো প্রিয়া তুমি কি হবে এ হৃদয়ের রাণী?
আমার কল্পনার জগতে বাধা পড়ল হঠাৎ।দেখি কেউ কল করেছে। আমি কলটা রিছিব করার সাথে সাথে একটা মেয়েলী কন্ঠ ভেসে আসল ওপাশ থেকে,
মেয়েটাঃ দয়া করে আমার ফোনটা ফিরিয়ে দিন।ওটা আমার বাবা আমার জন্মদিনে আমায় উপহার দিয়ে ছিল। আপনি ফোনটা যে কয়টাকায় বিক্রি করবেন সে টাকা আমি আপনাকে দিব। তবুও ফোনটা আমায় ফিরিয়ে দিন।(কাঁদতে কাঁদতে)
আমিঃ আরে আপনি যা ভাবছেন তা নয়। আসলে ফোনটা আমি চুরি করিনি। আমি কাল ফোনটা বাসের সিটে পেয়েছি। আর দুর্ভাগ্য বশত ফোনটা বন্ধ ছিল তাই কাউকে কল করতে পারিনি।
মেয়েটাঃআসলে আমি দুঃখিত আমাকে ক্ষনা করে দেন।আমি বুঝতে পারিনি।
আমিঃ আমি আপনাকে একটা ঠিকানা দিচ্ছি আপনি এসে ফোনটা নিয়ে যান।
মেয়েটাঃ আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেব বুঝতে পারছিনা।
আমিঃআমাকে আপনার বন্ধু মনে করতে পারেন। তাই ধন্যবাদ দেওয়ার দরকার নেই।আপনি কাল বিকাল ৪টায় এসে আপনার ফোন নিয়ে যাবেন।
মেয়েটাঃআচ্ছা ঠিক আছে।
এইরে কলটাত কেটে গেল অথচ তার নামটা জানা হলনা। ঠিক আছে কাল দেখা হবে ওই সময় না হয় জেনে নিলাম।
পরের দিন যথা সময়ে গিয়ে হাজির হলাম নির্দিষ্ট জায়গায়।একটু পর দেখলাম সেই মেয়েটা আসছে। সাথে আরেকজন কেউ। হয়ত ওর বান্ধবী হবে।
মেয়টা আমার একটু কাছে এসে ফোন করল। আমি হাত ইশারা করে তাকে ডাক দিলাম।
ফোনটা মেয়েটার হাতে দিয়ে দিলাম। তার পর আমি পিছন ফিরে হাটা শুরু করলাম।কিন্তু থামতে হল কারন পেছন থেকে কেউ ডাকল মনে হয়।
আমিঃআমাকে ডাকছেন?(মেয়েটার দিকে তাকিয়ে)
মেয়েটাঃ হ্যা আপনাকেই ডাকছি।আচ্ছা আপনারর নামটাত বললেন না।
আমিঃ আমি আবির।আপনি?
মেয়েটাঃ খুব সুন্দর নাম। আমি রিয়া।
আমিঃ আপনার নামটাও খুব সুন্দর।
রিয়াঃ আচ্ছা আপনার নাম্বারটা দেওয়া যাবে?
আমিঃ হ্যা দেওয়া যাবে। কিন্তু অফিস টাইমে ফোন করলে আমি কথা বলতে পারব না।
রিয়াঃআচ্ছা ঠিক আছে আমি আপনার অফিস টাইমে ফোন করব না।
আমিঃ ওকে লিখুৃন(,,,,,,,,,,,) আচ্ছা আজ যাই তাহলে ভালো থাকবেন।
রিয়াঃ আপনিও ভালো থাকবেন।
এর পর থেকেই রিয়া আমাকে মাঝে মধ্য ফোন দেয়। আস্তে আস্তে আমাদের সম্পর্কটা ভালো বন্ধুত্তে পরিনত হয়।আমি রিয়াকে অনেক বার বুঝাতে চেয়েছি আমি তাকে ভালো বাসি।কিন্তু ও বুঝেও না বোঝার ভান করত। একদিন রাতে ওর আর আমার মধ্যে কথা হচ্ছে
রিয়াঃকেমন আছেন?
আমিঃ ভালো। আপনি কেমন আছেন?
রিয়াঃ আমিও ভালো আছি। তা কি করছেন এখন?
আমিঃ অফিসের কাজ করছিলাম।আপনি কি করছেন?
রিয়াঃকিছুনা বসে আছি। আমি আপনার কাজে বাধা দিলাম নাত ফোন করে?
আমিঃ না না কাজ শেষ হয়ে গেছে। আচ্ছা আপনি কি পড়েন সেটাত জানা হল না।
রিয়াঃ আমি এবার ইনটার পরিক্ষা দিয়েছি।
আমিঃ তাহলেত খুবই ভালো।
রিয়াঃহুম।আচ্ছা আপনি বিয়ে করেছেন?
আমিঃ না। হঠাৎ এ প্রশ্ন?
রিয়াঃ কেন করতে পারিনা?
আমিঃ হ্যা অবশ্যই। বলেন আর কি জানতে চান?
রিয়াঃ কাউকে ভালোবাসেন?
আমিঃ হ্যা ভালোবাসি একজনকে। কিন্তু বলতে পারিনা ভয় হয়।সে যদি আমাকে ফিরিয়ে দেয়?
রিয়াঃও। এতে ভয়ের কি আছে আপনার মনের কথা আপনি তাকে বলদিন?(কিছুটা নরম সুরে।ওভেবেছে আমি অন্য কাউকে ভালো বাসি)
আমিঃ আচ্ছা সে না হয় দেখা যাবে। আপনি কি কাল আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবেন?
রিয়াঃ পারব। কিন্তু কোথায় আসতে হবে।?
আমিঃ আমরা যেখানে প্রথম দেখা করছিলাম সেখানে।
রিয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে ।এখন ঘুমিয়ে পড়ুন অনেক রাত হয়েছে।
আমিঃ ওকে শুভ রাত্রি।
রিয়ার সাথে কথা বলার পর আমি কিছুটা সিওর হলাম যে ও আমাকে ভালো বাসে। কারন আমার মুখে যখন অন্য কার কথা শোনে তখন ওর কন্ঠসর যেন নরম হয়ে যায়। অনেকটা কাদো কাদো ভাব।
যাইহোক কালত ওকে আমি দেখা করতে বললাম। কিন্তু ওকে আমার ভালো বাসার কথা জানাব কিভাবে। আমিত আগে কখনও কাউকে প্রপোজ করিনি।যা হয় দেখা যাবে। কিন্তু কাল আমি আমার মনের কথা রিয়াকে বলবই। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরদিন আমি একটু দেরি করেই গেলাম ওখানে। আমি একটু দূর থেকে দেখলাম রিয়া বসে আছে একা। আজ একটা গোলাপী শাড়ি পড়ে এসেছে সে।মনে হচ্ছ যেন আমি সপ্ন দেখছি আমার সেই স্বপ্নের রাজপরীকে। আমি আস্তে আস্তে রিয়ার পিছনে গিয়ে দাড়ালাম। হাতে রাখা গোলাপ ফুল গুলো পেছনে লুকিয়ে। রিয়া আমার দিকে যেই ফিরে দাড়ল।আমি হাটু গেড়ে বসে ফুল গুলো তার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,,
আমি বেসেছি তোমায় মনে মনে অনেক ভালো,
প্রথম যেদিন দেখেছিলাম তোমায়,
সেদিন থেকে শুধু তুমিই ছিলে এমনের আঙিনায়।
এত দিন আমি বলতে পারিনি ভয়ে তোমায়,
যদি তুমি ফিরিয়ে দাও আমায়?
কেন যেন মনটা আজ হল ব্যাকুল
তাইত মনের কথা বলব বলে তোমায়,
সাথে নিয়ে এসেছি গোলাপ ফুল।
ওগো প্রিয়া তুৃমি ফিরিয়ে দিওনা আমায়,
বেধেনাও তোমার ওই নিশ্পাপ মুখের মায়ায়।
আমি ধরে বাচতে চাই তোমার ওই দুটি হাত
তুমি কি দেবে আমায় একটি সুযোগ তোমার পাশে থাকার।
কথা গুলো বলেই আমি রিয়ার মুখের দিকে তাকালাম। কিন্তু ও কাদছে।
আমিঃ এই পাগলী কাঁদছো কেন?আমি কি কোন অন্যায় আবদার করে ফেলেছি তোমার কাছে?
রিয়াঃ আমিওত তোমায় আমার জীবনের থেকে বেশি ভালো বাসি। (এই বলে ও আমাকে জড়িয়ে ধরল)আমাকে ছেড়ে কখন চলে যাবে নাত?
আমিঃতোমাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাব না। আর আমার জীবনে শুধু তুমিই থাকবে আর কেউ নয়।
রিয়াঃ আর যদি আমি নাথাকতে পারি?
আমিঃ তাহলে আমার জীবন আমি একাই কাটিয়ে দেব তবুও তোমার জায়গা কাউকে দিতে পারব না।
এর পর থেকে আর পাচটা সুন্দর সম্পর্কের মত আমাদের সম্পর্কটাও চলতে থাকে। কিন্তু কথায় আছে বিধির লিখন না যায় খন্ডান।
আমি ভাবিনি এমন হবে। একদিন রাত্রে রিয়ার নাম্বার থেকে ফোন আসল।আমি ফোনটা রিছিব করতেই কে যেন বলে উঠল ইনি এক্সিডেন্ট করেছেন আমরা এনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি আপনি তাড়াতাড়ি আসুন।আমি যেন মুহুর্তেই পাথর হয়ে গেলাম। নিজেকে কোন রকম সামলে নিয়ে ছুটলাম হাসপাতালের দিকে। কিন্তু গিয়ে যা দেখলাম সেটা দেখার জন্য তৈরি ছিলাম না।
আমার রিয়া যে আর নেই। পড়ে আছে তার প্রানহীন রক্তাক্ত শরীরটা। আমি যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না। আমি অনেক বার বলছি এটা আমার রিয়া না।আমার রিয়া আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারেনা। আমি পারলাম না রিয়া তোমার সাথে আমার দুটি হাত ধরে হাটতে। হলনা দুজনে মিলে গল্প করা ওই চাদের সাথে।
ডায়রীটার শেষ পাতায় লেখা একটা কবিতা
ওগো প্রিয়া আমারে করে দিও ক্ষমা,
পারনি তোমাকে করতে আপন
দিয়েছি শুধুই বেদনা।
হয়ত হবেনা দেখা তোমার সাথে আর
বলবেনা কথা হাসবেনা তুমি আর।
ওগো প্রিয়া কেন রেখে গেলে আমায় একলা
তুমি কি জাননা তুমি হীনা এ হৃদয় হয়ে ওঠে উতলা।
তবে কেন আমার সাথে করলে ছলনা
আমি কি করে ভুলব তোমায়, তুমি বলনা?
এপারে না হয় হলেনা তুমি আমার
পরপারে থেকো বসে আমার অপেক্ষায়,
আমি আসব তোমার কাছে
করব তোমায় আপন।
বাধব সেখানে ছোট্ট প্রেমের ঘর
তুমি আমি দুজন মিলে করব সুখের সংসার।
ডায়রীটা পড়ে আমি নিজের চোখের জলকে ধরে রাখতে পারিনি। একটা মানুষ কাউকে কি কররে এতটা ভালো বাসতে পারে।
আমি ডায়রীটা ওই লোকটার কাছে দিয়ে চলে আসি ওখান থেকে। খুব মায়া হচ্ছিল ওই পাগল লোকটাকে দেখে।কিন্তু কিছুই করার নেই বিধাতার নিয়মকে মেনে নিতেই হবে।