আজ আমাদের ভালবাসার সম্পর্কের ১ বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু নবাবজাদা তো ভুলে গিয়েছে। আর নাহলে ঘুমচ্ছে। আজ সত্যি সত্যি কিছু একটা হয়ে যাবে যদি শুনি ঘুমচ্ছে। তা ভেবে মেঘ কল দেয় হৃদয়ের ফোনে। কিন্তু কল বেজেই যাচ্ছে কিন্তু নবাবজাদা তো ফোন উঠাচ্ছেই না। একটা সময় মেঘ বিরক্ত হয়ে শেষ বারের মতো কল দেয় হৃদয়কে। ঠিক ৩৬ টা কল দেওয়ার পর ফোন উঠায় হৃদয়।
– হ্যালো। < ঘুম ঘুম কন্ঠে >
মেঘ এই দিকে রেগে আগুন হয়ে গিয়েছে। হৃদয় আবারো ‘হ্যালো বলতেই মেঘ তার রাগান্বিত কন্ঠে কথার উত্তর দেয়।
– কি হইছে তোমার? কই ছিলা এতক্ষণ?
– আমি তো স্বপ্নের রাজ্যে ছিলাম গো। <দুষ্টুমি করে বলে কথাটি>
– মানে? ঘুমচ্ছিলে তাই তো? আচ্ছা এত ঘুম আসে কোথা থেকে তোমার?
– আমি না আসলে জানি না। আচ্ছা একটা কথা বলো তো। কী বলবা?
– বলো কি কথা?
– আমি না ঘুমালে চোখে কিছু দেখতে পাইনা। তুমি কি দেখতে পাও?
– আরে বোকারাম কোথাকার।
– কি হলো? বলো না।
– ঘুমালে কেউ দেখতে পারে না। বোকা একটা।
– হইছে। আমাকে বোকা বলতে আসছে। নিজে কী হুম?
– আচ্ছা অনেক হয়েছে। এইবার বলো কখন আসছো আজ?
– কোথায় আসছি মানে? কোথায় যাবো আমি? বুঝলাম না।
– কী? ঘুমাও তুমি বেশি করে ঘুমাও। < রেগে কলটা কেটে দেয় >
হৃদয় বিছানা থেকে ফ্রেশ হতে যায়। দাঁত ব্রাশ করতে করতে ভাবে যে আজ হঠাৎ মেঘ সকাল বেলায় ফোন দিয়ে এই কথা গুলো কেনো বললো। আজ কি এমন দিন? এটা তো ফেব্রুয়ারি মাস ও না যে ‘এই ডে’ ‘সেই ডে’ তাই দেখা করতে হবে। আর সেটা তো আরো এক মাস আগেই চলে গেছে। আল্লাহ্ পকেটটাও আমার পুরো খালি করে দিয়েছিলো। এই ফেব্রুয়ারি মাস আসলে আমার খুব কাঁদতে ইচ্ছে করে। কেননা এত এত ডে আর সেসব ডে গুলো পালন করা তার জন্য বাধ্যতামূলক। এত ভাবা-ভাবী বাদ দিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হয় নাস্তা করার জন্য।
হৃদয় হোস্টেলে থেকে পড়া-লেখা করে। এইবার অনার্স তৃতীয় বর্ষে। পড়ালেখার পাশা-পাশি কয়েকটা টিউশুনি করতো। তাতে তার হাত খরচটা হয়ে যেতো। হোটেলে গিয়ে বসে নাস্তা করার জন্য।
– কি খাবেন?
– দেখ রোহান প্রতিদিনই তো আসি আমি এইখানেই। আর তোর প্রতিদিনই জিজ্ঞাসা করতে হবে কি খাবো? সকালে তো নাস্তা করতেই আসি। রুটি আর ডাল-বাজি নিয়ে আয়।
– ভাই ভাবির সাথে কি ঝগড়া হইছে? এত রাগ হয়ে আছেন কেনো?
– না তো ঝগড়া হয় নাই। আর হইলেই কী তুই তাড়া-তাড়ি নাস্তা নিয়ে আয়। আমার ক্ষুধা লাগছে।
– যাচ্ছি। আর এটাও জানি যে ভাবির সাথে ঝগড়া করছেন। আর সেই রাগ আমার উপর দেখাচ্ছেন।
– উফফফ রোহান। তুই কিন্তু এখন আমার কাছে মার খাবি। যা তাড়া-তাড়ি।
দৌঁড়ে পালালো। আসলে প্রায় ২-৩ বছর ধরেই ওদের সাথে আমার পরিচয়। ছোট ভাইদের মতই দেখি ওদের। রোহান এবং ওর আর একটা ছোট ভাই রাহাত ওরা দু’জন খুব ভাল। এই হোটেল টাও ওদের নিজেদেরই। কিন্তু ওরা খুব সম্মান করে।
– এই নাও তোমার খাবার।
– তুই? তোর বড়টায় কই? ও আসলো না কেনো?
– আমি একাই একশো। বুঝছো ভাইয়া?
– আচ্ছা রাহাত শোন। আমাকে একটা হেল্প করতো।
– সিগারেট আনবো? এটা ছাড়া তো আর কিছু বলবা না সেটা জানি।
– আরে পিচ্ছি শোন আগে।
– হুমম বলো।
– আচ্ছা যা আগে একটা সিগারেট নিয়ে আয়। এই নে টাকা।
– বলছিলাম না আমি। তুমি আমাকে এটাই বলবা।
– না। সিগারেট খেতে খেতে তোকে বলবো নে।
এই দিকে নাস্তা করে চায়ের কাঁপে চুমুক দেওয়ার সাথে সাথে হৃদয়ের মোবাইলটা বেজে উঠলো। পকেট থেকে মোবাইলটি উঠিয়ে দেখে তার বাবার ফোন। এই দিকে পিচ্ছিটাও সিগারেট নিয়ে আমার সামনে হাজির। তাই আগেই সিগারেটটা হাতে নিলাম। কে জানে বাবার সাথে কথা বলার সময় বলে ফেলবে “সিগারেট নাও” পরে বাশটা তো আমারই খেতে হবে।
– আসসালামু ওয়ালাইকুম আব্বা। কেমন আছেন?
– হ্যা ভালো আছি। তুই কেমন আছিস?
– আমিও ভাল আছি। আম্মা কেমন আছে।
– তোর আম্মাও ভাল আছে। আচ্ছা শোন কেমন চলছে তোর পড়া-লেখা?
– এইতো আলহামদুলিল্লাহ্ ভাল।
– ভাল হলেই ভাল বাবা। আচ্ছা আমি কিছুক্ষণ পর রাসেলের দোকানে গিয়ে বিকাশে কিছু টাকা পাঠিয়ে দিবো। এই মাসে একটু কষ্ট করে চলিস। এই মাসে কিন্তু আর পাঠাতে পারবো না।
– আচ্ছা ঠিক আছে আব্বা। সমস্যা নাই।
– আচ্ছা তাহলে ভাল থাকিস। রাখলাম ফোন।
যাইহোক ভালই হলো। এখনো তো মাস শেষ হয়নি যে টিউশন থেকে বেতন পাবো। ৬ তারিখ চলছে মাত্র শেষ হতে আরো দেড়ি আছে। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে সিগারেটটা ধরায় হৃদয়। দুই টান দিতেই কেন জানি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
– রোহান। ঐ রোহান।
– বলেন ভাই।
– এটা কি মাস চলছে রে?
– এটা তো দাঁড়ান দেইখা নেই। ভাই এটা তো এপ্রিল মাস।
– এপ্রিল মাসের ৬ তারিখ?
– হুম।
– বিল কত টাকা হইছে লেখে রাখ। আমার যেতে হবে।
– কই যাবেন ভাই? কোনো সমস্যা হয়েছে।
– পরে বলবো নে।
রিক্সায় উঠে যায় হৃদয়। মেঘের সাথে পরিচয় ফেসবুক থেকে। আর পরিচয়টা হয়েছে ঝগড়ার মাধ্যমে। এইখান থেকে মেঘদের বাসার সামনে যেতে প্রায় ২০ মিনিটের মত লাগে। তবে কয়েকবার কল করে মেঘকে। কিন্তু মোবাইল সুইচ অফ। রেগে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে। তাই হৃদয় ভাবলো একেবারে তাদের বাসার সামনে গিয়েই কল দিবে। হৃদয় ভাবছিলো কত তাড়া-তাড়িই দিন গুলো কেটে গেলো। কিভাবে এক বছর হয়ে গেলো টের ও পেলাম না। অবশেষে তাদের বাসার সামনে গিয়ে পৌঁছে। উপরে তাকিয়েই দেখতে পেলো বেলকোনিতে দাঁড়িয়ে আছে। হৃদয় ইজ্ঞিত করে মেঘকে বুঝালো মোবাইলটা অন করতে। মেঘ বেলকোনি থেকে রুমে চলে যায়। কয়েক মিনিট পর মেঘ কল দেয়।
– সরি গো। সত্যি আমার মনে ছিলো না। মাফ করে দেও। কথা তো বলো।
– আচ্ছা ঠিক আছে। তো আমাকে উইশ করো।
– বার্থডে হলে মানুষ উইশ করে সেটা শুনেছি। কিন্তু এটা কিভাবে করবো? এইখানে তো আমিও জড়িত রয়েছি। নিজেকে নিজে কিভাবে উইশ করবো?
– এত কথা কেনো বলো? বেশি পেক পেক করো তুমি। উইশ করো তাড়া-তাড়ি।
– আমি করলে আমাকেও করতে হবে তাহলে।
– আচ্ছা করবো নে। আগে তুমি করো।
– কি বলবো গো? আমার না লজ্জ্বা লাগছে।
– ধুরর। কিভাবে শুনতে হয় সেটাও আমার জানা আছে। ২০ মিনিট অপেক্ষা করো আমি রেডি হয়ে আসছি।
– ২০ মিনিট নাকি ২ ঘন্টা?
– ৩ ঘন্টাও লাগতে পারে। কোনো সমস্যা?
– না না। কোনো সমস্যা নেই। ২-৩ ঘন্টা কোনো ব্যাপার হলো নাকি। তোমার জন্য ৪ ঘন্টাও অপেক্ষা করতে পারবো।
– আচ্ছা তাহলে অপেক্ষা করো। আসছি।
– এই শুনো না। একটু তাড়া-তাড়ি এসো হ্যা?
– আচ্ছা রে বাবা।
হৃদয় খুব ভাল করেই জানে যে মেঘের রেডি হতে কতক্ষণ লাগবে। সে যদি বলে ২০ মিনিট তাহলে সেটা ২ ঘন্টা হবে। মেঘদের বাসার একটু সামনেই একটা চায়ের দোকান আছে। সেইখানে গিয়েই বসে হৃদয়।
– মামা রং চা হবে?
– হবে।
– একটা কড়া লিগারে রং চা দিয়েন তো। সাথে একটা বেন্সন দিয়েন।
– দিতাছি মামা। বহেন একটু।
টিভিতে একটা বাংলা ছবি চলছিলো। কি আর করার টাইম পাস করার জন্য হৃদয় ও দেখতে শুরু করে। একটা সময় খুব বোরিং হয়ে যায় হৃদয়। ১১ টা বেজে ১২ টা এখন দুপুর ২ টা। তারপরও সে আসছে না। চায়ের দোকানের মামাটা কি যেনো বলতে শুরু করে।
– কী মামা কারো জন্য অপেক্ষা করছেন নাকি?
– হ্যাঁ মামা। অপেক্ষা করতে করতে শেষ আমি।
– আর বইলেন না মামা। আপনার মামী মানে আমার বউ। আমাদের বিয়ের আগে আমাকে কত যে অপেক্ষা করাতো। আচ্ছা মামা কন তো এত সময় লাগে কেনো তাদের? মামা প্রেম যে কি প্যারা সেটা আমি বুঝি। টেনসন লইয়েন না। চলে আসবে।
– মনের কথা গুলো বলছেন মামা। আসলেই অনেক প্যারা। আচ্ছা বিল কত হইছে?
– ১৮৫ টাকা হইছে।
– আর একটা সিগারেট দেন এবং সেন্টার ফ্রুট দেন। ২০০ টাকা মিল হউক।
– আচ্ছা মামা। এই লন।
সিগারেট অর্ধেক শেষ হতেই মোবাইলটা বেজে উঠলো। কলটা উঠায় হৃদয়।
– কোথায় তুমি? আমি কতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি।
– আর আমি যে কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি সেটা কিছু না?
– তুমি চলে গেছো?
– আরে না। সামনে আছি। তুমি কোথায়?
– আমি রিক্সা নিয়ে স্কুলের গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।
– আচ্ছা ১ মিনিট দাঁড়াও। আসছি।
– মামা এই নেন আপনার বিল। আবার দেখা হবে মামা।
– আচ্ছা মামা যান। শোনেন ভাল কইরা কুলি কইরা যান। সিগারেটের গন্ধ পাইলে কিন্তু আবার চিল্লাবে।
– আরে মামা আপনি তো অনেক বড় একটা উপকার করছেন বলে। ধন্যবাদ মামা।
– মোস্ট ওয়েলকাম মামা।
সেন্টার ফ্রুট মুখে নিয়ে তাড়া-তাড়ি করে গেলো। গিয়ে রিক্সায় উঠে।
– কোথায় ছিলে?
– এইতো একটু সামনে ছিলাম।
– কেমন লাগছে বললে না তো।
– অনেক গরম লাগছে গো। অনেক রৌদ পরেছে আজ।
– আমি এটা জিজ্ঞাসা করেছি? ধ্যাত।
– তাহলে?
– কিছুনা। চুপ চাপ বসে থাকো।
– আচ্ছা। কিন্তু কোথায় যাচ্ছি এখন?
– জাহান্নামে যাচ্ছি।
– এমন করো না। এমনিতেই ক্ষুধায় শেষ।
– আমারও তো লাগছে। তো? এটা কি পড়ে আসছো? বলেছিলাম না নীল পাঞ্জাবি পরে আসতে। আমি যে কেনো তোমার কথা ফেলতে পারিনা। শাড়ি না পরলেই ভাল হইতো।
– সময় পাইনি। কিন্তু নীল পাঞ্জাবি পরিনি তো কি হয়েছে নীল রং টি শার্ট তো পরেছি।
– টি শার্ট আর পাঞ্জাবি অনেক তফাৎ।
রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসে তারা। হৃদয় তো ঝাড়ি খেতে খেতেই শেষ। দুইজন দুপাশে বসে আছে। হৃদয় মাঝে মাঝে লুকিয়ে দেখার চেষ্টা করে। কিন্তু মেঘ পুরো-পুরিই সিরিয়াস হয়ে রয়েছে। রাগ করারই কথা। সব কাঁপলরাই তো চায় সুন্দর ভাবে একটা সময় কাটাতে। কিন্তু তাদের দুইজনের মধ্যে শুধু ঝগড়া। হৃদয় খুব ভাল করেই মেঘের দিকে তাকিয়ে মেঘকে দেখছে। এবং ভাবছে আসলেই শাড়িতে মেঘকে কত সুন্দরী লাগছে। তবে কিছু একটা মিসিং। আর সেটা হলো মেঘের হাসি। মেঘ এর হাসিটা অনেক সুন্দর। ওর হাসিটা কোনো ভাবে মিস করা যাবেনা। কি করা যায় তাই ভাবছে হৃদয়।
– ফোনই টিপবে সারাক্ষণ? কথা বলবে না?
– কি হয়েছে? < ডেব ডেব করে তাকিয়ে বললো >
– কিছুনা। আচ্ছা একটা কথা বলি?
– না। চুপ করে বসে থাকো।
– তুমি সব সময় এরকম করো আমার সাথে। বসো তুমি আমি একটু ওয়াশরুমে গেলাম।
– না কোথাও যাবা না। আমি একা বসে থাকবো এইখানে?
– একাই তো বসে আছো। একা থাকলে মানুষ যেভাবে থাকে সেভাবেই তো রয়েছো।
– ঠিকই আছে। এটা তোমার শাস্তি।
– আচ্ছা আমাকে শাস্তি দিচ্ছো ভাল কথা আমার পেটকে কেনো শাস্তি দিচ্ছো? ক্ষুধায় শেষ হয়ে যাচ্ছি।
– আহালে। < একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে >
১৫ মিনিট পর অর্ডার দেয়। আমি যতবারই দেখা করেছি তার ইচ্ছামত খেতে হবে। আমার ইচ্ছে মত কোনো কিছু খেয়ে পারিনা। কথাটি মনে মনে বলে হৃদয়। আর সেইদিন তার ব্যতিক্রম হয়নি। মেঘ তার পছন্দ মতো অর্ডার করে। এবং মেঘ বিপরীত পাশ থেকে এসে হৃদয়ের পাশে এসে বসে। হৃদয়ের কাধে মাথা রেখে বসে আছে।
– কী মাথা ব্যথা করছে নাকি?
– না তো কেনো?
– হঠাত মাথা রাখলে যে।
– এই মনে করো খুশির ঠেলায় ঘুরতে। তাই মাথা রাখছি।
দুপুরের খাওয়া শেষ করে বের হয় রেস্টুরেন্ট থেকে। তখন প্রায় ৩ টা বাজে। রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে সোজা শপিংমলে চলে যায়। কিছুক্ষণ ঘুরা-ঘুরি করলো তারা। এবং মেঘ হৃদয়ের জন্য একটা নীল রংয়ের পাঞ্জাবি পছন্দ করে। এবং সেটা পরতে বলে। হৃদয় ও পরলো পাঞ্জাবিটা।
– দেখি তো। হুম এখন মনে হচ্ছে আমরা দুইজন কাঁপল।
– কেনো তাহলে এতক্ষণ কী মনে হয়েছে।
– সত্যি বলতে এতক্ষণ মনে হয়েছিলো তুমি আমার বডিগার্ড। < হেসে দিলো কথাটি বলে >
– বডিগার্ড যারা তারাও এত দায়িত্ব পালন করে না। আমি যেভাবে পালন করি।
– তুমি তো আমার স্পেশাল বডিগার্ড।
– হইছে এখন চলো বের হই।
– বিল দিয়েছো।
– আমি কেনো দিবো?
– তো আমি দিবো? তোমার পাঞ্জাবি তুমি বিল দিবে।
– আমার কাছে টাকা নেই।
– টাকা না থাকলে তারা বেধে রাখবেনি। আমি চলে যাই। তুমি থাকো।
– এই কই যাও শুনো শুনো।
এটা কিছু হইলো। চলে গেলো সে। কোনো প্রিপারেশন না নিয়েই তো চলে আসতে হয়। টাকাও নিয়ে আসেনি তেমন। একটু পর মনে হলো তার আব্বার তো টাকা পাঠানোর কথা। বিকাশ চেক করে দেখলো টাকা এসেছে। এবং সেইখান থেকেও পেমেন্ট করতে যায় হৃদয়। কিন্তু গিয়ে শোনে মেঘ আগেই পাঞ্জাবির দাম পেমেন্ট করেছে। দোকান থেকে বের হয় হৃদয়। এবং সামনেই দেখতে পায় মেঘকে।
– খুব মেরেছে গো? আহালে কত কষ্ট লাগছে।
– পাগল আমি সকালে নাস্তা করতে বের হয়েছিলাম। হোটেলে বসে মনে পরেছিলো। তাই সে অবস্থাতেই চলে এসেছি। টাকাও নিয়ে আসনি। মানিব্যাগে অল্প টাকা ছিলো।
– আমি কি জানি নাকি? আমাকে বলতা।
– সমস্যা নাই। আচ্ছা তোমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি তাহলে।
– হুমম চলো।
বাসায় নামিয়ে দিয়ে হৃদয় চলে হোস্টেলে চলে আসে। এভাবেই কেটে যাচ্ছে তাদের দিনকাল। আজ তাদের সম্পর্কের ১ বছর হয়েছে। এবং হৃদয় ভাবলো কিছু গিফট দেওয়া দরকার। তাই মেঘের পছন্দের কিছু চকলেট এবং এক গুচ্ছ গোলাপ নিয়ে তাদের বাসার সামনে যায়। এবং মেঘকে বলে নিচে নামার জন্য। মেঘ নিচে আসে। এবং হৃদয় হাটুগিরে বসে মেঘ এর হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ দিয়ে বলে ‘আই লভ ইউ’। মেঘ খুব খুশি হয়। কিন্তু মেঘ তার আব্বুর কথার আওয়াজ শুনতে পেয়ে পিছনে তাকে দেখে তার আব্বু আসছে। এবং সেটা হৃদয়কে বলে। হৃদয় সেটা শোনে দৌঁড়ে পালালো। মেঘ লুকিয়ে ফেললো গিফট গুলো। এবং বাসায় চলে গেলো।
– ভীতুর আন্ডা কি দৌঁড়টাই না দিলে।
– তোমার আব্বু বুঝেনি তো?
– না বুঝেনি কিছু। বুঝলে তো তোমার সাথেই চলে যেতে হতো।
– আল্লাহ্ বাঁচাইছে গো। আই লভ ইউ।
– হুমম। আই লভ ইউ টু।