-তমিম অনলাইনে আছো?
– হুম।
– চ্যাট অফ কেন?
– তুমি যেন ম্যাসেজ না দাও তাই
– তাহলে ব্লক করে দাও
– দিব একদিন।যেদিন খুব বিরক্ত করবা সেদিন। এত বিরক্ত করো কেন ! হুম??
– তোমার সাথে কথা বলতে আমার ভালো লাগে। শুধুই ভালোলাগা নাকি অন্য কিছু??
– বলছো না যে?
– একটা গল্প শুনবা !
আমার খুব পছন্দের একটা গল্প। ক্লাস ৯ এ পড়ছিলাম। গল্পের নাম, লেখকের নাম কিছু মনে নেই। তবে গল্প টা মনে আছে।শুনবা????
– না,শুনব না।
– তুমি কি খুব ব্যস্ত???
– হুম,একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেছি।
– শুনো না, ৫ মিনিট সময় দাও প্লিজ।
– গল্প আমার তেমন একটা ভালো লাগে না।
– ৫ মিনিট। শুধু ৫ মিনিট।
– আচ্ছা বলো।
– একটা ছেলে নাম রূপাই।
– হুম, তুমি বলতে থাকো , আমি সিন করতেছি।
– মনোযোগ দাও।
– হুম।
– রূপাই গ্রামে থাকতো। সারাদিন খেলাধুলা করত।
গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াত। যখন যা মনে হত তখন তাই করত। রূপাইয়ের মাথার চুল গুলো ছিল কোঁকড়ানো।তবে বেশ লম্বা। চেহারা অতটা সুন্দর নয়, তবে মায়াবী। বয়স ও বেশি না।এই ধরো,এস.এস.সি. পরীক্ষা দিছে।এত বড় হবার পর ও রূপাইয়ের ছেলে মানুষি গেল না। রূপাই বলত সে কখনো বিয়ে করবে না।
মায়ের কোলে শুয়ে থেকে মাকে প্রশ্ন করে- “মা বিয়ে কেন করে?” রূপাইয়ের মা রূপাইয়ের কথা শোনে আর হাসে। ছেলের মুখে এমন কথা শুনে যে কোন মায়ের ই হাসার কথা। রূপাই এখন আর ও কিছু টা বড় হয়ে গেল। কলেজ এ ভর্তি হল। কলেজ থেকে ভার্সিটি। লেখাপড়ায় ভালো এবং মনযোগী। গ্রাম থেকে শহরে এসেছে। শহরের মানুষের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে। নতুন পরিবেশ, নতুন মুখ, বেশ ভালো কাটছিল রূপাইয়ের। ভার্সিটিতে খুব তাড়াতাড়িই বেশ কিছু বন্ধু আর বান্ধবী হয়ে গেল তার। এদের মধ্যে একজনের নাম ছিল সেজাই। সেজাইয়ের একটা ছোট বোন ছিল। নাম কুহু। তুমি শুনতেছো????
– হুম, বলতে থাকো।
– কুহু এস.এস.সি. পরীক্ষা দিয়ে সেজাইয়ের হোস্টেলে বেড়াতে এসেছে।
পরদিন সেজাইয়ের সাথে ভার্সিটি গেল। পরিচয় হল রূপাইয়ের সাথে। ক্লাস ১০ টায়। রূপাই, কুহু,সেজাই অনেক আগেই ভার্সিটি তে আসত। ক্যাম্পাসে একটা ঘন সবুজ পাতার গাছ ছিল। তার নিচে তিনজন বসে বাদাম খেত আর গল্প করত। কুহুর পরীক্ষা শেষ বলে লম্বা একটা ছুটি পেয়েছিল।তাই বেশ কিছু দিন থাকবে সেজাইয়ের সাথে। কুহুর রূপাইয়ের প্রতি ভালো লাগা তৈরি হচ্ছিল। আড্ডা দেওয়ার সময় রূপাই যখন কথা বলত কুহু রূপাইয়ের দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থাকত। রূপাইয়ের প্রতিটি কথা কুহুর মনের মধ্যে গেঁথে যেত।
রূপাইয়ের কথা বার্তা, হাঁটাচলা, লম্বা চুল, মায়াবী মুখ কুহুর হৃদস্পন্দন হঠাৎ থামিয়ে দিত। আবার হঠাৎ বৃদ্ধি করে দিত। কুহু নিজের মধ্যে নতুনত্ব খুঁজে পেত।রূপাইয়ের কাছে নিজের সৌন্দর্য তুলে ধরার চেষ্টা করত। ভুল করে ও যদি রূপাই বলে যে “তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে কুহু” কুহু তো লজ্জায় লাল হয়ে যেত। খুব খুশি হত সে।এর আগেও অনেক ছেলে তাকে সুন্দরী বলেছিল কিন্তু কুহু এত খুশি কখনোই হয় নি। এভাবেই দিন যাচ্ছিল। কিন্তু কুহু রূপাইকে নিজের মনের কথা বলতে পারছিল না। অনেক বাধা ছিল।আর সবচেয়ে বড় বাধা হলো রূপাই সেজাইয়ের বন্ধু।সেজাই কি ভাববে??? অনেক প্রশ্ন ছিল কুহুর মনে।যার উত্তর ছিল রূপাইয়ের কাছে। কিন্তু প্রশ্নই তো করতে পারছে না!! উত্তর পাবে কিভাবে???
রূপাই খাইছে কি না!! গোসল করছে কি না!! কেমন আছে? কি করছে ? এগুলো খোঁজ খবর করতে থাকে কুহু। রূপাই আর কুহু অনেক কাছাকাছি চলে এসেছিল। রূপাই বুঝতে পারে যে কুহু তাকে পছন্দ করে, ভালোবাসে। রূপাই ভাবে যে কুহুর কাছে জানতে চাইবে! সমস্যা সেজাই। সেজাই কি ভাববে? কুহু যদি সেজাইকে বলে দেয়!! খুবই লজ্জা জনক হবে বিষয়টা। বন্ধুত্ব ও নষ্ট হয়ে যাবে। কুহুও একই জায়গায় আটকে ছিল। তিন মাস কেটে গেল। কিন্তু কেউ কাউকে বলতে পারল না। কুহু আরো কিছুদিন থাকতে চাইল। অনেক জোরাজুরি করেও কোন লাভ হল না। কুহুকে যেতে হবে। মন খারাপ কুহুর। প্রচন্ড মন খারাপ।মন খারাপ নিয়েই চলে যায় কুহু।
– তারপর!!! তারপর কি হল????
– আমার ৫ মিনিট শেষ ছানারুল।
– কিসের ৫ মিনিট? কোন শর্ত টর্ত নাই।
– কেন?????
– কেন টেন জানি না,তারপর কি হলো বলো???
– যদি না বলি !!!
– তাহলে এই নীল কাঁচের চুড়ি গুলো ভেঙ্গে ফেলব।
– নীল কাঁচের চুড়ি!!! সত্যি!! তুমি সত্যি বলছো??
– Oi !!
– Tomim Sanarul sent a photo
– ওয়াও !! বলব,বলব। পুরোটা বলব। কোথায় পাইলা??? আমার জন্য কিনছো??? বলো!! আমার জন্য কিনছো??? কালকে দিলে না কেন??? কত্ত সুন্দর!!!
– আল্লাদ কমাও। আমার বোনের জন্য কিনছি।ওর আসতে আরও কয়েক দিন লাগবে।তাই তোমায় দিব ভাবছি।
– তাও তো দিবা!! অনেক খুশি আমি।।
– গল্প বলো। তারপর কি হলো?
– কুহু বাসায় যায়।
ধীরে ধীরে নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারায়। কত সুন্দর ঘরটা সে এলোমেলো করে ফেলে। পড়ালেখায় মনোযোগী হতে পারে না। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না। নিজের প্রতি যত্ন নেয় না। নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে রাখে। এক জামা ৫ দিন পর্যন্ত পড়ে থাকে। ঘর থেকে বের হয় না। কুহুর বাবা মা ও ব্যাপারটা নিতে পারছিল না। কুহুর ছিল ঘন কালো চুল। অনেক সুন্দর লাগত ঐ চুলের সাথে গোলগাল চেহারাটা। প্রতিদিন কত যত্ন নিত চুলের শ্যাম্পূ,কন্ডিশনার কত কি দিত!! আর এখন সেই চুল এলোমেলো, শুষ্ক, অপরিষ্কার।যেন কুহুর শরীর থেকে সমস্ত রক্ত কেউ নিংড়ে বের করে নিয়েছে।
মাত্র ১৮ দিনেই এই অবস্থা। কুহুর চোখ কেবল রূপাইকে দেখতে চায়। কুহুর মুখ কেবল রূপাইয়ের সাথে কথা বলতে চায়। কুহুর হাত কেবল রূপাইকে ছুঁতে চায়। কুহু পুড়ছে। মনের না বলা কথা গুলো কুহুকে জ্বলে পুড়ে ছারখার করে দিচ্ছে। সহ্য করতে পারছে না সে। রূপাইকে তার দেখাই লাগবে।রূপাইয়ের কাছে তাকে যেতেই হবে।বাবা মাকে বলে যে সেজাইয়ের কাছে যাব। মেয়ের মুখের দিকে দেখে না করতে পারল না তারা। ২ দিনের জন্য যাচ্ছে কুহু। এবার রূপাইকে সব বলবে।না বলা সব কথা।যেগুলো তাকে পোড়াচ্ছিল।আজ কুহুর কলিজায় পানি আসছে। নতুন জীবন ফিরে পাচ্ছে সে। মুখে হাসি ফুটেছে। ভালভাবে কথা বলছে। কুহু ভাবতে থাকে-
*কি হবে রূপাইকে বললে ?
*রূপাই কি খুব রাগ করবে?
*সেজাইকে বলবে নাকি যে তার বোন অভদ্র। হোক !!! বললে বলুক। আমি এবার রূপাইকে বলবই “”আমি তোমাকে ভালবাসি””
– ছানারুল !! সেহেরির সময় হচ্ছে!!
– এখনও ৩০ মিনিট আছে। তুমি বলো…
– তুমি তো গল্প খুব একটা পছন্দ করো না!! তোমার ভাল লাগছে???
– এই গল্পটা আমার জানতে খুব ইচ্ছে করছে। তুমি সময় নষ্ট না করে বলো তো…
– কুহু অনেক খুশি। কতদিন পর রূপাই কে দেখবে!! আজকের দিনটার সমস্ত খুশি আল্লাহ যেন কুহুর জন্য রাখছিল।এই খুশি টা তাঁকে প্রান ভরে শ্বাস নিতে বাধ্য করছিল। সেজাইয়ের কাছে আসার পর থেকেই সেজাইকে বলতেছিল যে “চলো না আপু, মাঠে যাই, গল্প করি।চলো না” বার বার বলতেছিল। ৫ মিনিট পর পর বলতেছিল।সেজাই বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল।ওকে ৫ টায় যাব যা।এখন পড়তে দে। ঘড়িতে সময় ৪ টা।১ ঘন্টা বাকি আছে। কিন্তু এই ১ ঘন্টা যে কতটা বিরক্তিকর সময় সেটা কুহু হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারল। মনে মনে ঘড়ি আবিষ্কারকের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছে।
কুহু অপেক্ষা করছে। “”ভালোবাসায় সবচেয়ে কষ্টের সময় হলো অপেক্ষা আবার সবচেয়ে মধুর সময় ও হলো অপেক্ষা”” । ২ টা রেশই কুহুর মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। খুশিতে আজ তার চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে।সে মুখে হাসি রেখেই চোখের পানি মুছে ফেলে। নিজেকে তার কেমন জানি লাগছে। কুহু আজ সাজবে। খুব সুন্দর করে সাজবে। কোন কমতি রাখবে না। চোখের কাজল দিল, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিল, হালকা মেকআপ করল, নীল জামা পড়ল। রাস্তায় একটা বেলী ফুলের মালা নিয়ে চুলের মধ্যে গেঁথে নিল। এখন তার সাজ সম্পূর্ণ লাগছে।
কুহু,সেজাই বসে আছে মাঠে। সবাই আসতে লাগল। কিন্তু কুহু যাকে খুঁজছে সে আসছে না। ৫:৩০ রূপাই নেই.. ৬:০০ রূপাই নেই… সব খুশি যেন এক মুহুর্তে উধাও। কুহুর কথা আটকে গেল। সে নিঃশব্দ। অনেক কষ্ট লাগছে। এমন কষ্ট যেন জীবনে কখনো পায় নি।চোখ ভিজে যাচ্ছে। মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে। কি হলো এটা ? রূপাই কেন আসছে না? সবার কাছেই জানতে চাইল রূপাই কেন আসছে না? কেউই কিছু বলতে পারল না। আগামীকাল কুহুকে চলে যেতে হবে।এখন কি করবে ??? একজন বলল রূপাই মেসে আছে। আজকে আসবে না। কিন্তু কুহু তো কালকে চলে যাবে।যা বলার তা আজকেই বলতে হবে। কুহু সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, রূপাইয়ের মেসে যাবে। কিন্তু সেজাইয়ের আবার রাতে ক্লাস আছে। বার বার বাধা যেন ইচ্ছা করেই কুহুর পিছনে লেগে আছে। কুহু যদি না যায় তাহলে তাকে পুরনো কষ্ট আবার পেতে হবে। এবার হয়ত আর বাচবেই না। কুহু রূপাইয়ের মেসে যাবেই। সময় ৭ টা। রূপাইয়ের মেসে চলে গেল কুহু।এক ভাইয়ের কাছে থেকে জেনে নিল রূপাইয়ের রুম ১০৭ নাম্বার। কুহু ঠিক রূপাইয়ের রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
> “রূপাই ”
> “কে”???
> আমি “কুহু”
> “ভিতরে আসো”।
> কুহু তবুও দাঁড়িয়ে আছে।ভয় পাচ্ছে না।
লজ্জা পাচ্ছে। রুমে কেউ নেই।একা এসেছে।লাল হয়ে যাচ্ছে কুহু। রুমে ড্রীম লাইট জ্বলছিল।জানালা দিয়ে হালকা মৃদু বাতাস আসছিল। ভালোবাসার মানুষদের জন্য এটা অনেক কঠিন একটা সময়।কুহু ধীরে ধীরে পা ফেলছে। এমন মনে হচ্ছে যে রূপাই তার থেকে কতটা দূরে তা মাপার চেষ্টা করছে। নুপূরের শব্দ শোনা যাচ্ছে। রূপাই কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে। পাশের সুইচ চেপে লাইট অন করল।কুহুকে অনেক সুন্দর লাগছে। রূপাই কিছু বলার আগেই কুহু বলে উঠলো-
> “তোমায় একটা কথা বলার জন্য এত দূর আসা”।
> “একটু দেরি হয়ে গেল না কুহু”??
> “এই গরমে তুমি কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছো কেন”?
> “কিছু না এমনি”।
কুহু রূপাইয়ে গায়ে হাত দিয়ে দেখে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। কিভাবে জ্বর আসল ??কেন আসল ??এই নিয়ে অনেক বকা দিল রূপাইকে।রূপাই শুধু হাসল। কুহু মাথায় পানি দিতে চাইলে রূপাই না করে দেয়। রূপাইয়ের কথা না শুনে কুহু পানি আনে। পানি দিলে কম্বল টা ভিজে যাবে। রূপাইকে কম্বল টা সরাতে বলে। রূপাই কম্বল সরাতে দেয় না।কুহু অনেক জোর করে। তবু ও রূপাই কম্বল সরাতে দেয় না।কুহুর মন খারাপ হল। অনেক অনেক মন খারাপ হলো।রূপাইকে ও অনেক কথা শোনাল। বকাবকি করল। ভুল বুঝল। কুহু চলে যেতে ধরলে রূপাই দাড়াতে বলে।
– কি যেন বলতে আসছিলা!!
– বলব না।আমি দেখব কম্বলের নিচে কি লুকাচ্ছ !!
– তুমি বলার পর আমি কম্বল সরাচ্ছি।
– না তুমি আগে সরাও।
– তুমি আগে বলো
– না। আগে কম্বল সরাও।
– কম্বল সরালে তোমার না বলা কথা গুলো বলতে পারবা না!!!
– আমি পারবো। তুমি সরাও!!
রূপাই কম্বল সরাল।কুহু চোখ বন্ধ করে ছিল। চোখ খুলল।চোখ খুলেই চিৎকার দিয়ে মেঝেতে পড়ে গেল। রুমে আর কোন শব্দ নেই। পিন পতন নীরবতা। দুজনই চুপ। শুধু চোখের পানি অঝোরে পড়ছে। রূপাইয়ের বুকের প্রতিটা জায়গায় সেলাই করা। রক্তের মত লাল হয়ে আছে বুকটা।একদম মর্গের লাশের মত লাগছে রূপাইকে। জীবিত কিন্তু মৃত। কেউ যেন বুক থেকে কাটা চামচ দিয়ে মাংস গুলো তুলে নিয়ে তার উপর সেলাই দিয়ে রাখছে। কুহুর মুখে কোন শব্দ আসছে না।
কুহু যেদিন তুমি চলে যাচ্ছিলে সেদিন তোমার জন্য একটা গিফট কিনতে গেছিলাম। ঠিক তোমার সমান একটা টেডি কিনেছিলাম। তোমার আপুর হোস্টেলের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম। রাস্তায় এক্সিডেন্ট হয়। আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।১৩ দিন পর জ্ঞান ফিরে পাই। আমার দুইটা কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।ডাক্তার বলছে “লাস্ট স্টেজ”। এখন আমি কিডনি ছাড়াই বেঁচে আছি। আজকে রাত ১০ টা পর্যন্ত আমার সময়।এরপর কি হবে আল্লাহ জানেন। এবার কুহু উঠে দাঁড়ালো। চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল চলো আমার সাথে। হাসপাতালে চলো।৮ টা বাজে তাড়াতাড়ি চলো। আমি তোমাকে আমার একটা কিডনি দিব। কিন্তু রূপাই কারো করুনা নেবে না।সে কুহুকে বলে দেয় সে কারো করুনা নেবে না।কুহু বলে এটা করুনা নয়।রূপাই কুহুর কথা শোনে না। কুহু রেগে গিয়ে বলে “তুমি আমাকে অনেক বড় করুনা করছো”।
আমি আজ তার প্রতিদান দিতে চাই। রূপাই বলে,আমি তোমাকে কখন করুনা করলাম। কুহু বলে তোমার করুনার কাছে এটা কিছুই নয়।জেদ করেই এমবুলেন্স ডাকে। রূপাইকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কুহু কিডনি দেয়।৭ দিন পর রূপাই সুস্থ হয়ে ওঠে।কুহু পাশেই বসে আছে।রূপাই জিজ্ঞেস করে- “আমি তোমাকে কখন আর কি করুনা করছি???” কুহু রূপাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে “”আল্লাহ প্রথমে তোমাকে সৃষ্টি করেছে,তারপর তোমার বুকের বাম পাশের একটা হাড় দিয়ে আমাকে সৃষ্টি করেছে”” তখন রূপাই কুহুকে কাছে টেনে নিয়ে বলে “”এটা করুনা নয়, ভালোবাসা”” তুমি আমার ইহকাল ও পরকাল কুহু। তুমি আমার কুহু। শুধু আমার। একান্তই আমার।
– গল্প শেষ।
– কথা বলছো না কেন????
– কাঁদছ নাকি? প্রথম বার গল্প টা পড়ে আমিও খুব কাঁদছিলাম। ভালোবাসা গুলো এমনই হয়।
– কল দিই একবার?
– আম্মু পাশের রুমে।
– তুমি শুধু শুনো।
– ওকে,কল দাও।
– হ্যালো “কুহু”
আমি জানি,ওপাশ থেকে আর কোন শব্দ শোনা যাবে না। মেয়েটা বড্ড ভালোবাসে আমাকে। আমি নিশ্চিত সে এখন কান্না করবে। কাদুক না !! কিছু কান্না মন ভালো করে দেয়।