চাড্ডাবাজ ও আমার বোকা প্রেমিকা

চাড্ডাবাজ ও আমার বোকা প্রেমিকা

আমি আর আমার একমাত্র প্রেমিকা মিতু চাড্ডাবাজে বসে চা খাচ্ছিলাম, আমি চায়ের কাপে একবার করে চুমুক দিচ্ছি আর বলছি,

“” আহা চাটা সেই ট্যাস, তাই না জান। মিতুও তখন বললো,

“” হুম জান। আসলে চাড্ডাবাজে চাটা খুব ভালো বানায়। কম দামের মধ্যে এতো ভালোমানের চা আপনি আর কোথাও পাবেন না। মিতু তখন আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো;

“” জান চলো কাল আমরা কফি হাউসে যাই, কথাটা শুনে আমার গলায় চা আটকে যায়। আমি তখন কাশতে কাশতে বলি,
“” কফি হাউসে যাওয়া যাবে না তো জান! মিতু তখন ভ্রু কুঁচকে বললো,

“” কেন যাওয়া যাবে না? তখন আমি মনে মনে বলি, আমারে কি ফাগল কুত্তায় কামরাইছেনি যে কফি হাউসে যামু। কফি হাউসে গেলে সর্বনিম্ন কফির দাম দুইশ টাকা। মুই তো টাকার গুডাউন উনারে নিয়ে কপি থুরি কফি হাউসে যামু। আমার চুপ করে থাকা দেখে মিতু তখন আবার জিজ্ঞেস করলো,

“” কি জান চুপ করে আছো কেন। আমি তখন বললাম,
“” জান শুনো তুমি যে বার বার কফি হাউসে গিয়ে কফি খাইতে চাও, তুমি কি জানো এই কফির কতো অপকারীতা।
মিতু তখন কিছুটা অবাক হয়ে বললো, “”কফির আবার কিসের অপকারীতা।

“” হ্যাঁ কফির অপকারীতা, কফি খাইলে কি হয় জানো, কফি খাইলে এই গরমে হার্ট এর সমস্যা হয়,। তার পর কফি খাইলে পাকস্থলীর সমস্যা হয়, তার পর কফি খাইলে তোমার ঘুম কম হবে , এতে তোমার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। তোমার ওজন বেড়ে গিয়ে তুমি মোটা হয়ে যাবে। আরো অনেক অপকারীতা আছে ঠিক এই মূহুর্তে মনে পড়তেছে না। আমার কথাগুলো শুনতে মিতু তখন মুখে হাত দিয়ে অবাক সুরে বললো,

“”তাই জান কফির এতো অপকারীতা, আমি তাহলে আর কখনো তোমাকে কফি হাউসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলবো না। আমি তখন বির বির করে বলি, ওরে বোকা ছেমরি, তুই এতো বোকা ক্যারে কয়টা ঢপ মাইরা দিলাম আর তুই তা বিশ্বাস করে নিলি, এর জন্যেই তো তোরে আমার এতো ভালো লাগে।

“” কি হলো জান তুমি বির বির করে কি বলছো,
“” বির বির করে কি বলছি, কি যেন বলছি? ও হ্যাঁ এই না হলে তুমি আমার কিউটি গফ, শরীরের প্রতি তোমার কতো কেয়ার। মিতু তখন মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো,

“” তোমার কাছ থেকেই তো শরীরের উপর এতো কেয়ার নিতে শিখেছি। আমি তখন মনে মনে বলি, ওরে ছেমরি তোরে যদি শরীরের প্রতি কেয়ার নেয়া না শিখাইতাম। তাইলে আজ আমি ফতুর হয়ে চান্দে চইলা যাইতাম। মিতু তখন আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বললো,

“” এই তুমি এতো কি ভাবছো বার বার?
“” কোই কি ভাববো, ভাবছিলাম তোমার শরীরে প্রতি কেয়ার নেয়া আমি শিখাবো না তো কে শেখাবে।

এই হলো মিতুকে ঢপ মেরে টাকা বাঁচানোর কিছু উপায়, আরও উপায় আছে যেগুলো বলতে গেলে রাত দিন কাবার হয়ে যাবে তবুও বলা শেষ হবে না। তো যাই হোক চাটা খুব মজাই লেগেছে, চায়ের প্রতিটা চুমুকে আপনি যে প্রশান্তি খুঁজে পাবেন তা আর অন্য কিছুতেই পাবেন না। আর সাথে যদি থাকে মিতুর মতো বোকা একটা সুন্দরী গফ তাহলে তো কোন কথায় হবে না। আমি তখন চা খাওয়া শেষ করে মিতুর দিকে তাকিয়ে বললাম,

“” জান তোমার খাওয়া শেষ? মিতু তখন মুচকি একটা হাসি বলল,

“” হুম জান শেষ, আমি তখন ওয়েটার কে ডাক দিয়ে বললাম, ভাই বিলটা নিয়ে জান। ওয়েটার তখন আমার কাছে আসলে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কতো হইছে। ওয়েটার তখন বললো, স্যার অনলি 60 টাকা। চায়ের বিল ষাট টাকা শুনে তো যেন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। আমি তখন কিছুটা চিল্লানি দিয়ে বললাম,

“” ওই মিয়া ফাইজলামি পাইছেন, প্রতিদিন দশ টাকা কাপ চা খাই আর আপনি কি না সেখানে তিরিশ টাকা করে চাচ্ছেন, ভাবতে পাচ্ছেন আপনি, এ তো দেখি দিনে দুপুরে দুর্নীতি। ওয়েটার তখন একটু নরম সুরে বলল,

“” স্যার আপনি প্লিজ এভাবে হট্টগোল করবেন না। আপনি তখন যেই চাটা অর্ডার করেছেন সেটা তিরিশ টাকা কাপ।
মিতু তখন আমার হাতটা ধরে বললো,

“”এই থাকনা অযথা ওনাদের সাথে হট্টগোল করে কি লাভ, দেখ সবাই কি ভাবে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি তখন আশে পাশে তাকিয়ে দেখি সবাই আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
আমি তখন বললাম,

“” তা মিয়া সেটা আগে বললেই হতো। আমি তখন পকেট থেকে টাকাটা বের করে বললাম,
“” এই ধরেন বিল, সামান্য কিছু টাকার জন্য এতো হট্টগোল আপনারা করতে পারেন। আগে জানলে এখানে কখনো আসতাম না। তখন বিলটা পরিশোধ করে চাড্ডাবাজ থেকে বের হয়ে আসলাম। আর বের হয়ে মনে মনে বললাম,

“” নেক্সট টাইম আর এখানে আসা যাবে না। কোন ভাবেই না, কোন মতেই না। দরকার পড়লে এখন থেকে রাস্তার পাশে বসে চা খাবো তবুও এখানে আসবো না,,,

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত