– মা, আমার কি বিয়ের বয়স হয়েছে?
– সোনার কপাল তোর যে এমন প্রস্তাব এসেছে। তোর বর অনেক শিক্ষিত। শহরে ভালো চাকুরি করেন। টাকা পয়সাও ভালো আছে। তুই সুখে শান্তিতে থাকবি।
– পয়সা দিয়ে কি হবে, মা? সবাই বলে টাকা ছাড়া দাম নেই।
মিনার কথা শুনে আমেনা বিবি হেসে দিলেন। সত্যিই মিনার বিয়ের বয়স হয়নি। যে মেয়ে টাকা-পয়সা কি জিনিস তা বুঝে না তার বিয়ের বয়স হয় নাকি? গ্রামের অন্যান্য মেয়েদের তুলনায় মিনা অনেক বোকা ও সহজ সরল। এই জগত্ সংসারের মারপ্যাঁচ সে বুঝে না।
– এই নিন ভাই আপনার বিয়ের কার্ড।
– এই নিন আপনার টাকা।
কার্ড নিয়ে নিজাম নেমে পড়ল তা বিলি করতে। এক হাজার কার্ড ছাপিয়েছে সে। সব পথশিশুদের মাঝে বিলি করা শুরু করল। এতিমখানায় মানুষ হওয়া নিজামের বন্ধুবান্ধব ব্যতীত আপন বলতে আর কেউ নেই। এই বন্ধুবান্ধবের সাহায্য সহযোগিতায় নিজের লেখাপড়া শেষ করতে পেরেছে সে। তারপর কপালের জোরে ব্যাংকে চাকরি পেয়ে যায়। দীর্ঘ সাত বছর সততা ও নিষ্ঠার সাথে চাকরি করার পর ম্যানেজার পদ পেয়েছে। অর্থের প্রতি নিজামের এক দারুণ নেশা। তবে সেটা অন্যায়ভাবে নয়, ন্যায় ভাবে জমানোর। বন্ধুবান্ধব প্রায়শই বলত যে চাকরি তো পেয়েছিস এবার বিয়ে করে ফেল। নিজাম শুধু বলত পরে।
– যাক অবশেষে বিয়েটা করছিস।
– তোদের কথা রাখলাম আর কি!
– মেয়েটা কি তোর পূর্ব পরিচিত?
– না। হাইস্কুলের স্যারদের সাথে দেখা করার সময় ওকে সেখানেই দেখেছিলাম।
– বাহ! বাহ! এ তো দেখি লাভ এট ফার্স্ট সাইট।
– হা হা হা।
সবেমাত্র মেট্রিক দেওয়া মিনা বাকিদের তুলনায় বুদ্ধির দিকে অনেক পিছিয়ে। স্বামী কি, বিয়ে কি এসব সে বাকিদের মতো বুঝে না। তার বুদ্ধিমত্তার উদাহরণ শুরুতেই দেওয়া আছে। বিয়েটা হয়ে গেল। নিজামের অনুষ্ঠানে অজস্র পথশিশু এসেছে। তবে এতে কেউ অবাক হয়নি। কেননা সে সবাইকে পূর্বেই বলে রেখেছে। ম্যানেজমেন্টকে খুব কড়াভাবেই বলে রেখেছে যাতে পথশিশু বলে কারও সাথে দুর্ব্যবহার করা না হয়। সবকিছু ভালোভাবেই হলো। মিনাকে ঘরে নিয়ে আসা হলো। পুরো ঘর সে নিজের মতো করে সাজালো। তার মা-ই বলেছে। কিছুদিন যেতে না যেতেই মিনার বুদ্ধিমত্তার ব্যাপারে নিজামও ধারণা পেল। বিয়ে উপলক্ষে এতদিন ছুটিতে ছিল। তাই নিজের কাপড় নিজেই ধুতো। কিন্তু আজ অফিসে যাওয়ায় তা বাথরুমে রেখে গেছে। সন্ধ্যায় অফিস থেকে এসে দেখতে পেল কাপড়গুলো যথাস্থানেই আছে।
– মিনা, আমার কাপড়গুলো ধোওনি কেন?
– ওটা তো আপনার ব্যক্তিগত জিনিস।
যা করার আপনিই করুন। মা বলেছে, স্বামীর ব্যক্তিগত জিনিসে হাত না দিতে। নিজাম তটস্থ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। বলে কি এই মেয়ে! বিয়ের পরেও কি নিজের কাপড়চোপড় নিজেকেই ধুতে হবে? রান্নাবান্না করেছ তো? নাকি এখন করতে হবে? নিজাম জিজ্ঞেস করল, “আমার জন্য রান্নাবান্না করেছ?” মিনা মাথা দুলালো। ইতিবাচক জবাব পেয়ে নিজাম স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। তারপর চুপচাপ প্রস্থান করলো। মিনার মাঝে দুটা গুণ নিজাম লক্ষ্য করেছে। প্রথম গুণ হলো মিনা খুব ভালো রান্না পারে।
বিয়ের কিছু মাস যেতে না যেতেই নিজামের স্বাস্থ্যে বেশ পরিবর্তন এসেছে। এযাবৎ হোটেল-রেষ্টুরেন্টের খাবার খেতে খেতে স্বাস্থ্যের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল। মিনার নিপুণ হাতের সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে এখন নিজামের স্বাস্থ্য ফুলেফেঁপে উঠেছে। এই নিয়ে সবাই বেশ মশকরা করে। বউয়ের হাতের রান্না খেয়ে দিনদিন মোটা হচ্ছিস। নিজামও স্বাচ্ছন্দ্য স্ত্রীর হাতের রান্নার প্রসংশা করে। এখন সে তৃপ্তি সহকারে পেটপুরেই খায়। মাঝেমাঝে নিজাম প্রশ্ন করে, “তুমি এতো সুন্দর করে রাঁধো কিভাবে?” নিষ্পলক হাসি দিয়ে মিনা জবাব দেয়, “মায়ের কাছে শিখেছি। মা আরও ভালো রাঁধতে পারেন। মা বলেছেন স্বামীর মন জয় করতে হলে পেট জয় করতে হয়। হা হা হা।”
মিনার দ্বিতীয় গুণ হলো যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজামের কথা পালন করে। নিজামের কোনো কথাকেই সে ফেলে দেয় না। নিজাম যা যা বলে তা সে অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। মিনার সুস্বাদু রান্নার কথা ইতোমধ্যে নিজামের কলিগদের মাঝে ছড়িয়ে গেছে। তারা পিড়াপিড়ি শুরু করেছে মিনার হাতের রান্না খেতে। তাই একদিন সুযোগ বুঝে নিজাম তাদেরকে ঘরে দাওয়াত দিলো। মিনাকে ফোন করে ব্যাপারটা জানালো। ভালো কিছু রান্না করতে বলল। এদিকে সেদিন মিনার খুব জ্বর উঠেছে।
তবুও সে ভাত, মাংস, মাছ ও ফিন্নী রান্না করেছে। সবকিছু ঠিকঠাক পরিবেশনও করেছে। সবাই খেয়ে বেশ প্রসংশাও করলো। বহু কষ্টে মিনা নিজেকে সামলিয়ে রেখেছে। কিন্তু মেহমান যাওয়ার পর আর পারেনি। সোফাউ ঝিম মেরে বসে রইলো। নিজামে এসে দুয়েকবার ডাক দিলো। কিন্তু মিনা কোনো সাড়া দিলো না। কাছে এসে মিনার গায়ে হাত দিতেই নিজাম অনুভব করলো তার ভীষণ জ্বর এবং কাঁপছে। অতঃপর সে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার কিছু ওষুধ দিয়ে বিশ্রাম নিতে বলল। মিনাকে বাসায় এলো। ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলো। পরের সকালে চোখ খোলার পর নিজাম প্রশ্ন করলো, “তোমার জ্বর সেটা আগে বলোনি কেন? এই জ্বরের মধ্যে এতসব করার কোনো প্রয়োজন ছিল?”
– আপনিই তো বলেছেন আপনার বন্ধুরা আসবে। তাই রান্না করতে। মা বলেছেন স্বামীর কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে। নিজাম হ্যাবলার মতো তাকিয়ে রইলো। কিছুদিন পরেই মিনাকে নিয়ে গ্রামে এলো নিজাম। তারপর শ্বাশুড়ীকে সব বলল।
– আমার মেয়েটা একটু বোকা। তবে ওর মনটা খুব ভালো।
– বোকা তো বুঝলাম। কিন্তু তাই বলে নিজের যত্ন নিতেও কি বুঝবে না? ওকে একটু বুঝিয়ে দিন যাতে ভবিষ্যতে এমন না করে।
– আচ্ছা বাবাজি। আমি বুঝিয়ে বলবো।
মিনাকে তার মা বেশ শাসালেন। স্বামীর দায়িত্ব কর্তব্য অনেক কিছুই বুঝিয়ে দিলেন। কিছুদিন বেড়ানোর পর নিজাম-মিনা আবার শহরে চলে এলো। অফিস শেষে নিজাম বাসায় এসে দেখলো তার সব কাপড়চোপড় সুন্দর মতোন ইস্ত্রি করে রাখা হয়েছে। রাতে খাবারের সময় নিজাম বলল, “কাপড়চোপড় কেন ধুয়েছে?”
– মা বলেছেন স্বামীর কাপড়চোপড় প্রতিদিন ধুয়ে দিতে।
– তাই বলে ধোয়া কাপড়চোপড় তুমি আবার ধুবে?
মিনা চুপ হয়ে গেল। নিজাম বুঝে উঠতে পারছে না মিনাকে নিয়ে কি করবে। খাওয়া শেষে মিনাকে নিয়ে বিছানায় বসলো। বলল, “তোমার মা তো বলেছেন স্বামীর সব কথা শুনতে তাই না?” মিনা মাথা ঝাকালো। “তবে শুনো। আজ থেকে আমি যা বলব তাই করবে। আর হ্যাঁ, আমাদের কোনো ব্যক্তিগত কথা কাউকে বলবে না। মাকেও না।” মিনা আবার মাথা ঝাকালো।
ফুরফুরে বাতাসের মতো তাদের জীবনের দিনগুলো যেতে লাগল। দিন যতোই যায় নিজাম ততই অবাক হয়। মিনাকে দেখে সে বারংবার বিস্মিত হয়। মেয়েটার মাঝে কোনো আবদার-দাবি নেই। মুখ ফুটে সে কিছুই চায় না। কখনো আবদার করে বলে না চলো আজ একটু ঘুরতে যাবো। কখনো দাবি করে বলে না আমার এটা লাগবে। এসব অনুভূতি যেন মিনার মাঝে নেই। সে যেন এক রোবট। বেশ কিছুদিন ধরে মিনাকে চিন্তিত দেখাচ্ছে। সারাক্ষণ কেমন যেন বিচলিত থাকে। যা দেখে নিজাম বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করেছিল খারাপ লাগছে কিনা। মিনা নেতিবাচক উত্তর দেয়। মিনার এমন পরিবর্তন দেখে নিজামও ভাবনায় পড়ে যায়। একদিন রাতে ঘুমানোর সময় মিনা বলল, “আমি মায়ের কাছে যাবো।” কোনো বাচ্চা মেয়ে তার মায়ের কাছে যাবার জন্য যেমন আবদার করে। মিনা ঠিক তেমনই বলল। কিছুদিন পরেই মিনাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসে নিজাম। কিছু ঘণ্টার ব্যবধানে নিজাম জানতে পারে সে বাবা হতে চলেছে। এবার নিজাম বুঝতে পারে কেন এই কয়েকদিন মিনাকে বিচলিত দেখাচ্ছিল। মিনা বিছানা ঠিক করছে। এমন সময় নিজাম ঘরে এলো। জড়িয়ে ধরলো। মিনা আঁতকে উঠে চেচামেচি শুরু করলো।
– আরে আমি আমি।
– তো এভাবে চোরের মতো কাজ করলেন কেন? আমি তো ভয় পেয়েছিলাম।
– হা হা। তবে তুমিও কাজটা ঠিক করনি। এই খুশির খবর আমাকে আগে বলোনি কেন?
– কোন খবর?
– আমি বাবা হতে চলেছি।
মিনা লজ্জা পেল। সে ছুটতে চাইলো কিন্তু পারলো না। এই প্রথম মিনার লাজুক ভরা মুখ দেখে নিজাম বেশ খুশি হলো। এই মুহূর্তে মিনার প্রয়োজন সেবা ও পরিচর্যা। ওদিকে নিজামের অফিসের ছুটি শেষ হয়ে আসছে। তাই নিজাম সিদ্ধান্ত নিলো মিনাকে রেখে যাবে। তবে বিপত্তি বাধালো মিনা। সে নিজামকে ছাড়া থাকবে না। তাই শেষমেষ পুরো পরিবারকে নিয়েই শহরে এলো নিজাম। আমেনা বিবি তার মেয়ের দেখাশোনা করেন। ঘরের কাজকর্ম তিনিই করেন। সেবা যত্নের মাঝে মিনার দিন যেতে লাগল।
তবে এর মাঝে নিজাম একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলো। মিনার মধ্যে নতুন এক পরিবর্তন এসেছে। যেই মিনা রাতে নিজামের ডাক ছাড়া তার কাছে আসতো না। সেই মিনা এখন নিজামের বুকের মধ্যে নিজেকে আষ্টেপৃষ্ঠে সমার্পন করে রাখে। নিজামের বুকের মধ্যখানে নিজেকে গুটিয়ে রাখে আর কাঁপতে থাকে। মাঝরাতে এই কাঁপুনি নিজাম অনুভব করে। তখন মিনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিজাম। সে নিজেও বুঝে না মিনার হয়েছে। জিজ্ঞেস করলেও কোনো সঠিক উত্তর পাওয়া যায় না। ইনিয়ে বিনিয়ে উত্তর দেয়। তবে মিনার এই পরিবর্তনের কারণ নিজাম খুব শীঘ্রই জেনে যায়।
এক মাঝরাতে মিনার গুনগুন কান্নার শব্দে নিজাম জেগে উঠলো। উদ্বিগ্ন হয়ে জানতে চাইলো, “কি হলো, তুমি কাঁদছো কেন?” গুনগুন কান্নার মাঝে মিনা বলল, “আমার খুব ভয় করছে। যদি আমার কিছু হয়ে যায়? আমার ভীষণ ভয় করছে। আমি এখন মরতে চাই না। আমি তোমার সাথে আরও কিছু সময় কাটাতে চাই। তোমার বুকে এভাবে শুয়ে থাকতে চাই। তোমার ভালোবাসা পেতে চাই। আমি এখন মরতে চাই না।” নিজাম অবাক হয়ে গেল। যেই মেয়েকে সে রোবট ভাবতো, তার মনের মাঝে এত অনুভূতি লুকিয়ে ছিল? ভালোবাসার মানুষটির সাথে দীর্ঘদিন বাঁচার, সময় কাটানোর তীব্র আকাংখা মিনার মাঝে সুপ্ত ভাবে লুকিয়ে ছিল। যা আজ বেরিয়ে এসেছে। নিজাম তাকে শান্ত্বনা দিয়ে ঘুম পাড়ালো। সেই রাতের পর নিজামের মনের মধ্যেও অজানা ভয় জমে উঠেছে। মিনার বয়স সত্যিই খুব কম।
শুরুতে সেও চায়নি এই মুহূর্তে সন্তান নিতে। অনাগত এই সন্তানের ব্যাপারে ডাক্তারের সাথে আলাপ করলে ডাক্তার তাকে জানায় যে চিন্তার কারণ নেই। বাচ্চা ও মিনা দুজনই সুস্থ আছে। এতে দুশ্চিন্তা সরলেও ভয় ভয় ভাবটা মনের গভীরে থেকেই গেল। সবকিছু ঠিকঠাক যাওয়ার মধ্যে হঠাৎ একদিন অফিসে থাকাবস্থায় নিজাম জানতে পারলো মিনাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। নিজাম ছুটে আসে হাসপাতালে। ডাক্তার জানায় ডেলিভারীর সময় এসেছে। লিভার পেইনে কাতরাতে থাকে মিনা। করিডোরে বসে সেই শব্দ না পেলেও নিজামের বুকটা ধুকপুক করতে থাকে।
প্রায় দুই ঘণ্টা পর ডাক্তার এসে নিজামকে জানালো তার ছেলে হয়েছে। নিজাম তাতক্ষণিক মিনার কথা জানতে চাইলো। তারপর ডাক্তার যা বলল তাতে নিজামের কপাল থেকে সমস্ত চিন্তা দূর হলো। “মা ছেলে দুজনই ভালো আছে।” মিনার কাছে এসে তার হাত ধরে নিজাম কান্না শুরু করলো। মিনা হাসি দিয়ে বলল, “বাচ্চাদের মতো কাঁদছো কেন? আমি তো সুস্থই আছি। তোমার ছেলেও সুস্থ আছে।” নিজাম কিছু বলে না। সে এক নজর ছেলের দিকে তাকিয়ে মিনার কপালে ভালোবাসার স্পর্শ দিলো। মিনা নিজামকে কাছে আসার ইশারা দিলো।
নিজাম কাছে আসতেই মিনা আস্তে করে বলল, “বাবুর জন্য একটা খেলার সাথী লাগবে। মেয়ে হলে ভালো হবে। ভাইবোন মিলে সারাক্ষণ খেলবে। হে হে হে।” মিনা হাসি দিলো। নিজাম মাথা ঝাকিয়ে বলল, “আর লাগবে না। করিডোরে কতটা চিন্তার মাঝে ছিলাম তা তুমি বুঝবে না। আমার আর কিছু লাগবে না। তুমি পাশে থাকলেই হবে।” নিজামের চোখ বেয়ে আবারও পানি পড়তে লাগল। মিনা তা মুছে দিলো। এরমধ্যে নবাগত শিশুটি কেঁদে নিজের অস্তিত্বের জানান দিলো। এই কান্নার সাথে তাদের দুজনেরই বাম পাশ নড়ে উঠলো। এ তল নাড়ীর টান। এ তো রক্তের বাধন।