Mayar Badhon

Mayar Badhon

–আয়াতঃ আ‌মি তো তোমায় বি‌য়ে কর‌বোই তাহলে সমস্যা কোথায়?

তনয়াঃ বি‌য়ে কর‌বে এখ‌নো ক‌রো‌নি! সমস্যাটা সেখা‌নে! বি‌য়ের আগে ছে‌লে মে‌য়ে মি‌লিত হওয়াটা‌কে অবৈধ ব‌লে! আর আমি এমন কোন অবৈধ কাজ কর‌তে পার‌বো না!

আয়াতঃ তু‌মি কি আমায় ভা‌লোবা‌সো না তনয়া? বিশ্বাস ক‌রো না তু‌মি আমায়?

তনয়াঃ আমি তোমায় খুব ভা‌লোবা‌সি। আর বিশ্বাসও ক‌রি। কিন্তু আজ‌কে তোমার কথা শু‌নে এই আয়াতটা‌কে আমি চিন‌তে পার‌ছি না। তিন বছ‌রের সম্প‌র্কে আজ প্রথমবার তোমায় অচেনা লাগ‌ছে। তিন বছ‌রে তু‌মি আমার হাত ধরার জন্যও পার‌মিশন নি‌তে। আর সেই তু‌মি আজ ক‌দিন ধ‌রে আমা‌কে বি‌ভিন্নভা‌বে বু‌ঝি‌য়ে যা‌চ্ছো ফি‌জিক্যাল রি‌লেশ‌নের জন্য। তাহ‌লে তোমার প্র‌তি বিশ্বাসটা নড়ব‌ড়ে হওয়াটা কি স্বাভা‌বিক না?

আয়াতঃ তনয়া তু‌মি এগু‌লো কি বল‌ছো? এখন কি আমা‌কে আমার ভা‌লোবাসার প্রমান দি‌তে হ‌বে?

তনয়াঃ নাহ আয়াত প্রমান আমি চাই‌নি প্রমান তু‌মি চে‌য়ে‌ছো। সে জন্যই তো তোমার ভা‌লোবাসার প্রমা‌নের জন্য আমার সা‌থে——

আয়াতঃ আমি যা‌কে ভা‌লোবা‌সি তা‌কে নিজের ক‌রে চাওয়াটা কি পাঁপ ব‌লো?

তনয়াঃ পাঁপ না কিন্তু অবৈধ ভা‌বে চাওয়াটা পাঁপ ।

আয়াতঃ আমি পাঁপ পূন্য বু‌ঝি না আমি শুধু তোমায় নিজের ক‌রে ভা‌লোবাস‌তে চাই।

তনয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে দ্যান ম্যারি ‌মি। আমা‌কে বি‌য়ে ক‌রে ফে‌লো। তখন বৈধ ভা‌বে আমি তোমার হ‌বো।

আয়াতঃ হোয়াট! বি‌য়ে! কি বল‌ছো তনয়া? এত তারাতা‌রি বি‌য়ে! তনয়া তু‌মি কেবল ইন্টার পরীক্ষা দি‌য়ে‌ছো আর আমি কেবল অনার্স ৩য় ব‌র্ষে। আমরা দুজ‌নেই বি‌য়ের জন্য অপ্রাপ্ত বয়স্ক। এত তারাতা‌রি বি‌য়ে কি করে সম্ভব? আর আমি আমার বা‌ড়ির লোক‌কে কি বল‌বো তু‌মিই বা তোমার ফ্যা‌মি‌লি‌কে কি বল‌বে?

তনয়াঃ কেন এত তারাতারি তু‌মি ফি‌জিক্যাল রি‌লেশ‌নের জন্য তৈরী হ‌তে পার‌লে বি‌য়ের জন্য তৈরী হ‌তে কেন পার‌বে না? আর আমার প‌রিবা‌রের কথা তোমার ভাব‌তে হ‌বে না। তা‌দের আমি ম্যা‌নেজ ক‌রে নি‌বো। তু‌মি চাই‌লে তোমার প‌রিবা‌রের সা‌থেও আমি আমা‌দের বিষ‌য়ে বু‌ঝি‌য়ে কথা বল‌তে পা‌রি। আর তু‌মি এটা ভে‌বো না আমি আমার প‌রিবা‌রের লোক‌কে না জা‌নি‌য়ে চো‌রের মত কা‌জী অফি‌সে বি‌য়ে ক‌রে তোমার কোন বন্ধুর হো‌টে‌লের রু‌মে তোমার সা‌থে বাসর কর‌বো! কারন ইসলা‌মে বাবা মা‌ বা অবিভাবক‌রে অনু‌মো‌তি ছাড়া বি‌য়ে স্বীকৃত নয়। বি‌য়ে কর‌লে প‌রিবা‌রের সবাই‌কে জা‌নি‌য়ে সবাই‌কে সা‌থে নি‌য়ে বি‌য়ে কর‌বো। তখন তু‌মি বৈধ ভা‌বে আমার সা‌থে যা খু‌শি তা কর‌তে পার‌বে।

আয়াতঃ আর ইউ ক্রে‌জি তনয়া? এখন এ বয়সে বি‌য়ে করা আমার প‌ক্ষে সম্ভব না। সাম‌নে আমার আর তোমার ভ‌বিষ্যৎ আছে। আমা‌দের নি‌জে‌দের ক্যা‌রিয়ার আছে।

তনয়াঃ তাহ‌লে এ বয়‌সে আবে‌গের ব‌সে এসে ফি‌জিক্যাল রি‌লেসন করাও আমার প‌ক্ষে সম্ভব না।

আয়াতঃ আমি অতসত বু‌ঝি না হয়‌তো তু‌মি আমার প্রাপ্য বু‌ঝি‌য়ে দি‌বে নয়‌তো এ সম্প‌র্কের এখা‌নেই ইতি টান‌বে।

তনয়াঃ কি‌সের প্রাপ্য রে? তু‌ই কি আমার স্বামী না‌কি যে আমার উপর তোর অধিকার আছে! তো‌কে তিন বছর ধ‌রে পাগ‌লের মত ভা‌লোবা‌সি ভাবছি তুইও হয়‌তো বা‌সিস কিন্তু ইদা‌নিং তুই‌তো বদ‌লে গে‌লি। তুই, তোর সম্পর্ক আর তোর ভা‌লোবাসা গোল্লায় যাক। গো টু হেল উইথ ইউ এন্ড ইউর লাভ। তো‌কে সব ছে‌লে‌দের থে‌কে আলাদা ভে‌বে‌ছিলাম। কিন্তু তুই তো তাদের মত। শালা লুইচ খান। তোর সা‌থে সব সম্পর্ক শেষ। কথা গু‌লো ব‌লে হনহন ক‌রে তনয়া চ‌লে গে‌লো।

তনয়ার যাবার পা‌নে আয়াত হা হ‌য়ে কতক্ষন তা‌কি‌য়ে থে‌কে রহস্যময় একটা হা‌সি দি‌য়ে ‌চো‌খের কো‌নের জলটা মু‌ছে বা‌ড়ির পা‌নে হাটা শুরু কর‌লো।

ছয় বছর পর—–

আজ তনয়ার বি‌য়ে। কিছু‌দিন আগে বি‌দেশ থে‌কে বড় ডাক্তার হ‌য়ে ফি‌রে‌ছে তনয়া। তনয়া জা‌নে না কার সা‌থে বি‌য়ে। বাবা মা‌য়ের কথা মত সব মে‌নে নি‌য়ে‌ছে। ছে‌লের ছ‌বি দেখা বা নাম শোনারও চেষ্টা ক‌রে‌নি। কারন মনটা যে এখ‌নো আয়াত‌কে পাগ‌লের মত ভা‌লোবা‌সে। সে‌দি‌নের ঘটনার কিছু‌দিন পর তনয়ার ডাক্তারি পড়ার জন্য বি‌দে‌শে চ‌লে যায়। আয়া‌তের সা‌থে আর কোন যোগা‌যোগ হয় না। না তনয়া যোগা‌যো‌গের চেষ্টা কর‌ছে না আয়াত।

তনয়ার বি‌য়ে হ‌য়ে গে‌লো। বাসর ঘ‌রে একটা অচেনা অজানা লো‌কের জন্য অপেক্ষা কর‌তে খুব বিরক্ত লাগ‌ছে তনয়ার। গা ঘিন ঘিন কর‌ছে। দরজা বন্ধ করার শ‌ব্দে বুঝ‌তে পার‌লো লোকটা আস‌ছে। লোকটা এসে তনয়া ঘোমটা না তুলেই তনয়ার হাতটা আল‌তো ক‌রে ধ‌রে বল‌লো একটু বারান্দায় এসো। আওয়াজটা শু‌নে চম‌কে উঠ‌লো তনয়া। কারন এ যে——-। তনয়া বারান্দায় গে‌লো। সেখা‌নে ফুল দি‌য়ে বড় ক‌রে লেখা স্য‌রি। আর তনয়ার হা‌তে এতটা কার্ড ধ‌রি‌য়ে দিলো। কা‌র্ডে লেখা ছি‌লো

তনয়া

প্রথ‌মে তোমা‌কে এত্তগুলা স্য‌রি। আর আমি জা‌নি লেখাটা পড়ার পর তু‌মি আমা‌কে উত্তম মধ্যম দি‌তে একটুও ভুল কর‌বে না। ঠিক ছয় বছর আগে আমার তনয়া লন্ডনে এক‌টি ভা‌লো মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জে চান্স পায়। কিন্তু সে তার আয়া‌তের থে‌কে দূ‌রে থাক‌তে পার‌বে না ব‌লে লন্ডন যে‌তে চায় না। কিন্তু তনয়ার আয়াত সবসময় চায় তনয়া যা‌তে উন্ন‌তির আকাশ ছোয়। কিন্তু যখন তনয়া‌কে কোন ভা‌বে বুঝা‌নো সম্ভব হ‌লো না তখন আয়াত তনয়ার সা‌থে ফি‌জিক্যাল রি‌লেশ‌নের কথা ব‌লে। আয়াত জান‌তো তনয়া রাগ ক‌রে সম্পর্ক শেষ ক‌রে দি‌য়ে লন্ডন চ‌লে যা‌বে। আয়া‌তের অভিনয় স্বার্থক হ‌লো। কিন্তু এই ছয় বছ‌রে আয়াত একটা মুহূ‌র্তের জন্যও ভুল‌তে পা‌রে‌নি তনয়া‌কে। কোন মে‌য়ের দি‌কে বদ নজ‌ড়ে তাকায়‌নি। কারন আয়াত শুধুমাত্র তনয়া‌কে আর তনয়া‌কেই ভা‌লোবে‌সে‌ছে আর সারা জীবন বাস‌বে।তনয়া ছাড়া সে কোন মে‌য়ে‌কে স্পর্শ করার কথা চিন্তাও ক‌রে‌নি। কারন আয়া‌তের ম‌নে #শুধু_তু‌মি তনয়া। এখন তনয়া কি আয়া‌তের সে‌দিন সামান্য অভিনয় ক‌রে করা ভুলটা‌কে ক্ষমা ক‌রে নি‌জের স্বামী হিসা‌বে গ্রহন কর‌তে পার‌বে?

ইতি

তনয়ার উত্ত‌রের আশায় তনয়ার বাদর আয়াত কার্ডটা প‌ড়ে তনয়া কোন কথা না ব‌লে আয়া‌তের দি‌কে তাকা‌লো। দেখ‌লো আয়া‌তের চোখ দু‌টো ভি‌জে আছে। আর সে চো‌খে আছে অপ‌রিসীম বিশ্বাস আর ভা‌লোবাসা। তনয়া কোন কথা না ব‌লে আয়াত‌কে শক্ত ক‌রে জ‌ড়ি‌য়ে ধর‌লো।

আয়াতঃ এই তু‌মি অন্য একটা ছে‌লে‌কে জ‌ড়ি‌য়ে কেন ধ‌রে‌ছো?

তনয়াঃ বাদর! তোমা‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধরার বৈধ অধিকার আমার আছে। তু‌মি শুধু আমার । কি আর করা আয়াতও তার বৈধ স্ত্রী‌কে শক্ত ক‌রে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বল‌লো

আয়াতঃ হুমমম  শুধু তু‌মি,,,,

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত