মায়ার টান

মায়ার টান

প্রথম দিন কলেজ গিয়েই এক জায়গায় চোখ আটকে যায় শোভনের। এ কি দেখছে ও! এ যেন এক অপ্সরী। আল্লাহ নিজ হাতে সকল সুন্দরতা দিয়ে তৈরি করেছে মেয়েটিকে। কাজল কালো হরিনী চোখের অধিকারিনী, উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ গায়ের মিষ্টি মেয়ে টার থেকে চোখ ফেরাতেই পারছেনা শোভন। প্রকৃতির হালকা বাতাসে মেয়েটার মাথায় থাকা অরনা টি সামান্য উড়ে গাল ছুয়ে যাচ্ছে আর তা দেখে শোভনের হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। শোভন জানতে পারলো মেয়ে টির নাম লুনা।

কলেজ থেকে ফিরে সারাটিক্ষন শোভন শুধু লুনার কথায় ভেবে যাচ্ছে। কোনো কাজেই মন বসছে না। যেদিকে চোখ যাচ্ছে সেদিকে শুধু সে লুনা কেই দেখতে পাচ্ছে। ও এভাবে থাকলে মরেই যাবে। কিছু একটা করতেই হবে।

পরের দিন কলেজে গিয়ে লুনার নাম্বার জোগাড় করলো শোভন। বাসায় গিয়ে নাম্বার টিতে মেসেজ দিলো
” পৃথিবীর সমস্ত মায়া যেন তোমার ওই কাজল কালো চোখ দুটি জুড়েই আছে। তোমার ওই মিষ্টি হাসি, মুগ্ধ করা কথার ভঙ্গি সব কিছুরই প্রেমে পড়ে গেছি। একটু জায়গা হবে কি তোমার মনে আমার জন্য?”
মেসেজের রিপ্লায় না পেয়ে শোভনের কিছুটা খারাপ লাগোলো। কিন্তু কলেজে গিয়ে আবার ওকে দেখে বুকের মধ্যে জেগে থাকা প্রেমের চারাগাছ টি বৃক্ষে পরিণত হলো। তাই বাসায় গয়ে আবার মেসেজ দিলো।

” তোমাকে দেখলে আমার বুকের ভেতর কাপুনি শুরু হয়ে যায়। মনে হয় সব সময় তোমার দিকেই তাকিয়ে থাকি। জানি আমি সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পারিনা। তবুও বলোনা প্লিজ কি আছে তোমার ওই চোখে? কেন বার বার মায়াতে জোড়িয়ে যায় আমি তোমাকে দেখলে?”
এবারও কোনো রিপ্লায় পেলোনা। চার মাস ধরে চেষ্টা করেই যাচ্ছে ওর মনে একটু জায়গা পাওয়ার জন্য। বিভিন্ন বার বিভিন্ন ভাবে প্রপোজ করেছে শোভন লুনাকে। কত বার প্রপোজ করেছে তা হিসেব করতে গেলে যে কারোর গুলিয়ে যাবে। তবুও লুনার কাছ থেকে ” না” সূচক উত্তরই পেয়ে গেছে বার বার। চার মাস পর শোভনের প্রপোজাল এক্সেপ্ট করে লুনা।

কলেজে, প্রাইভেটে একসাথেই থাকে শোভন – লুনা। লুনার হাত ধরলেও বুকের কাপুনি বেড়ে যায় শোভনের। দিনের মধ্যে প্রায় সময়ই ঝগড়া হয় দুজনের। কিন্তু মায়ার টানে আবার এক হয়। একদিন শোভন দেখে লুনার ফেবু আইডিতে জান বলে মেসেজ দিয়েছে। এটা দেখে মনের মধ্যে হাজার রকমের চিন্তা উকি দেয় শোভনের। লুনার সাথে তুমুল ঝগড়া শুরু হয় ওর। লুনা ওকে বার বার বলছে যে ওটা ওর মামাতো ভাই। ওর বিয়েও হয়ে গেছে। ফান করে ছোট বেলা থেকেই এসব বলে। তবুও শোভন মানতেই চাইছে না। অনেক ঝগড়ার পর লুনা ওকে আগের মেসেজ গুলো দেখতে বলে শোভন কে ব্লক দিয়ে দেয়। প্রাইভেটে, কলেজেও এড়িয়ে চলতে লাগে। শোভন আগের মেসেজ গুলো দেখে নিজের ভুল বুঝতে পারে। ঝগড়া হওয়ার কারনে লুনা কেদে কেদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে। আর শোভন ও থাকতে পারছেনা কথা না বলে।

কলেজে গিয়ে লুনার হাত ধরে টেনে আড়ালে নিয়ে যায় শোভন।
– ছাড়ো শোভন। ভালো লাগছেনা আমার
– প্লিজ সরি। এবারের মতো মাফ করে দাও
– তোমার জায়গায় আমি হলেও সন্দেহ করতাম। এতে সরি বলার কিছু নেই
– তাহলে কথা বলোনা কেন আমার সাথে
– কারন আমার প্রতি তোমার বিশ্বাস নেই।
– সরি। ( কাদতে লাগে শোভন)
– এই কাদছো কেন হু
– তুমিও তো কেদে কেদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছো
– তাই বলে তুমি কাদবে? কাদবেনা বলছি। একদম কাদবেনা ( লুনাও কাদতে লাগে)
– আচ্ছা আমি কাদবোনা। তুমি প্লিজ কান্না থামাও।
– কখনো অবিশ্বাস করবেনা। মনে রাখবে আমি শুধু তোমারই আর কারো নয়।
– অবিশ্বাসই রিয়াল লাভ ভেঙে তছনছ করার মূল কারন। তুমিও আমাকে কখনো অবিশ্বাস করোনা প্লিজ
– হুম। লাভ ইউ পাগল
– লাভ ইউ টু পাগলি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত