“তুমি যেটা বলেছো সেটা কখনো সম্ভব না”। স্নিগ্ধ বিকেল। চারিদিকটা কেমন যেন অন্যরকম লাগছে। বসন্তের শেষের সময়টাতে প্রকৃতিটা যেন অন্যরকমই মনে হয়।
ফিরফিরে বাতাসে মুখোরিত হচ্ছে চারিদিক। কাউকে ভালোবাসি বলার একটি নিরব ও শান্ত পরিবেশ। তাই শ্রাবণীকে ইশারাতে সেটাই বললাম। কিন্তু সে তা বুঝতে পেরে
উপরের কথাটি বললো। শ্রাবণীর মুখ থেকে কথাটা শোনার পর একটা বড় ধরনের ধাক্কা খেলাম। মনে হচ্ছে পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়েছে।এই ভাবে কেন
ফিরিয়ে দিল মেয়েটা। ওর কাছ থেকে তো বেশি কিছু চাই নি। অবশ্য এটা ঠিক মানুষের সব চাওয়া পাওয়া পূরণ হয় না। আমি চোখ দুটো নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু
করে ফেললাম। কেমন যেন লজ্বাতে মরে যেতে ইচ্ছে করছে। কোনো মেয়েকে যদি ভালোবাসা হয় এবং সেটা যদি তাকে বলা হয় আর সে যখন না করে দেয় তখন
লজ্বার আর শেষ থাকে না।
.
শ্রাবণীকে প্রথম থেকেই ভাল লাগতো। অনেকে বলে প্রথম দেখাতে কেউ ভালোবেসে ফেলে। আসলে প্রথম দেখাতে কেউ ভালোবাসতে পারে না। যেটা পারে সেটা হলো
ভালো লাগা। আমারো শ্রাবণীকে প্রথম দেখেই ভালো লেগে গিয়েছিল। তারপর আস্তে আস্তে সেই ভালো লাগা ভালোবাসায় পরিনিত হলো। তাই শ্রাবণীকে ভালোবাসি
বলবো বলে ওকে নিয়ে আজ একটু ঘুরতে আসছি,অনেকক্ষন হাটলাম। আইসক্রিম , ফুচকা, খাওয়া শেষে একটা খোলা জায়গায় বসলাম। সেখানে বসতেই শ্রাবণী
বললো..
– আচ্ছা আবির তুমি হঠাত্ আমায় ঘুরাতে নিয়ে আসলে কেন?
– তোমার কি ভাল লাগছে না?
– আমি সেটা বলি নি। তুমি তো কখনো এইভাবে….
শ্রাবণী পুরো কথাটা শেষ করলো না। আসলে কথাটা সত্য আমি এই ভাবে কখনো ওকে ঘুরতে নিয়ে আসি নি। শ্রাবণীই আমাকে এদিক ওদিক নিয়ে গিয়েছে। আর আমি
এই প্রথম। হয়ত ও একটু অবাক হয়েছে। তবে আমি যে আজ তাকে আমার মনের কথাগুলো বলবো বলে এনেছি।
শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে বললাম..- শ্রাবণী তোমার মন ভাল তো?- এটা কেমন কথা? মন ভাল না থাকলে তোমার
সাথে আসতাম? (সে)
ঠিকি তো বলেছে ও। আসলে এই কথাটা বলার কারন হলো ওকে এখন আমি মনের কথা বলব। তাই একটু সাহস সন্চয় করছি। আগে জানতাম না কাউকে ভালোবাসি
বলতে সাহসের দরকার হয়। বলতে গেলে বীর পুরুষও কোনো সুন্দরী মেয়েকে ভালোবাসি বলতে গেলে বুক কাপবে। এটা কি কোনো ম্যাজিক্যাল শব্দ কে
জানে? শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে বললাম..
– শ্রাবণী একটা কথা বলবো?
– হ্যাঁ বলো।
আমি কথাটা কিভাবে বলবো তা ভেবে পাচ্ছি না। বাসা থেকে তেমন প্রিপারেশনও নিয়ে আসি নি। এইসব কথা বলতে হলে আগে থেকে প্রিপারেশন নেওয়া লাগে। ধুরর
মনে হচ্ছে সব গুলিয়ে যাবে। বুকটা সেই কখন থেকে কাপছে তার অস্তিত্ব আমি টের পাচ্ছি। তাই সরাসরি ভালোবাসি
না বলে একটু ঘুরিয়েই বললাম…
– না মানে তেমন কিছু না। মনে করো একটা ছেলে আর একটা মেয়ে তারা খুব ভাল বন্ধু। এখন ছেলেটা মেয়েটাকে আপন করে নিতে চায়। কিন্তু ছেলেটা বলতে পারছে
না। ছেলেটার কি করা উচিত্?
শ্রাবণী আমার কথাটা শোনে ভ্রু কুচকে একটু অবাক নয়নে তাকালো। মনে হচ্ছে আমি কথাটা বলে বিরাট অন্যায় করে ফেলেছি। ও নিশ্চয় আমার কথাটা বুঝেছে। সে
আমার দিকে অপলক তাকিয়ে রইল। আমি লজ্বার ভয় পেয়ে মাথাটা নিচু করে ফেললাম। বুকের ভিতরটা কেমন যেন করে উঠল। না বলা কথাগুলো যদি প্রকাশ হয়
তবে তা অন্য কেউ না বোঝে তখন যে কতটা একা আর শুন্যতা অনুভব হয় তা কেবল সেই জানে। সে খানিক্ষন নিরবতা পালন করে ও ঐ একদম উপরের কথাটিই
আমাকে বলেছে…
“তুমি যেটা বলেছো সেটা কখনো সম্ভব না” ।
(শ্রাবণী)
দুজনেই চুপচাপ রয়ে গেলাম। এখন মনে হচ্ছে কেনো যে ঐসব বলতে গেলাম। যদি না বলতাম ততাহলে সে হয়ত আমার সাথে কথা বলতো। কিন্তু এখন দুজনেই চুপ।
এতক্ষন কি হাসি খুশি ছিলাম আর মুহুর্তেই এমন একটা পরিবেশ তৈরি হলো যেন কেউ কাউকে চিনি না। শ্রাবণী নিরাবতা
কাটিয়ে বললো…
– কি হলো আবির? আমি কি বলেছি তুমি শুনেছো?
শ্রাবণীর কথা শুনে ওর মুখের দিকে তাকাতে ভয় হচ্ছে। কারন, লজ্বাতে আমি শেষ। মুখটা তুলে সামনের দিকে তাকালাম। আমার কথা বলার ইচ্ছে হারিয়ে গিয়েছে।
তবে আমি কোনোরকম মাথা নেড়ে হুমম বললাম। আমি বেশ বুঝতে পারছি সে আমার দিকে এখন তাকিয়ে আছে। তখনি সেসে বললো..
– দেখো আবির তুমি আমায় ভালোবাসো সেটা অনেক আগে থেকেই আমি অনুমান করেছি। আমি তোমার ভালোবাসাকে অবহেলা করছি না। আমি শুধু এটুকুই জানি
আমি ভালোবাসতে পারব না। আমি শ্রাবণীর কথা শুনে ওর দিকে তাকালাম। অপলক তাকিয়ে থেকে.. কি এমন কারনে আমায় ভালোবাসতে পারবে না? আমি কি
তোমার যোগ্য নই? কথাটা বলার ইচ্ছে ছিল কিন্তু বললাম না। কারন জোর করে সব কিছু পাওয়া যায় না। যে ভালোবাসতে চায় সে এমনিই ভালোবাসবে। শ্রাবণী আমাকে
ভালোবাসতে চাইনা সুতরাং তার কারন জানার প্রয়োজনও নাই। সে চাই না ব্যাস ঠিক আছে। পরিস্হিতি স্বাভাবিক করার জন্য একটা হাসি দিলাম।
হাসতে হাসতে বললাম..
– আরে পাগলি তুমি এই গুলা কি বলছো? হা হা হা তোমাকে আমি ভালোবাসতে যাব কেন? তুমি কি মনে করেছো? হা হা হা।
– দেখো আবির একদম হাসবা না। তুমি একটা ফাজিল।
– হিহিহিহি,,এতদিনে জানলে তাহলে?
– হুহ..
শ্রাবণীর মুখটা কেমন যেন অভিমানের মত হয়ে গেল। ফর্সা মুখটা কেমন যেন লাল হয়ে গেল। এইবার হয়ত সে লজ্বা পেয়েছে। ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আমি মনে মনে হেসে নিলাম।
।।
ওর সাথে আমার মাস পাঁচেক আগে পরিচয়। আমি এই ভার্সিটিতে নতুন এসেছি। তেমন কাউকে চিনি না। কদিন ক্লাস করে ভার্সিটিতে বের হয়ে একদিন দেখি,
কয়েকটা ছেলে একটি মেয়েকে খুব বাজে ভাবে র্য্যাগিং করছে। আমি দুর থেকে ব্যাপারটা দেখছি। আর দাড়িয়ে না থেকে কাছে যেয়ে বললাম..
– ভাইয়া এভাবে র্যাগ করা ঠিক না। খুব বাজে লাগে। আপনারা বড় তাই বলে এভাবে র্যাগ করতে হবে? একদমই ঠিক না..
আমার কথাটা শুনে ভাইয়ারা একটু অবাক হলো। অবাক হওয়ারি কথা,,কারনটা হতে পারে এর আগে হয়ত তাদেরকে এভাবে এসে কেউ কথা বলেনি। সবাই
দুর থেকে দাড়িয়ে দেখেছে ব্যাপারগুলো। কিন্তু তাদেরকে এসে আমার মত করে কেউ বলার সাহস পায়নি। ওদের মধ্যে একজন বললো..
– নিজেকে কি পন্ডিত ভাবো?
– স্যরি ভাইয়া,,তবে এমন র্যাগ করা ঠিক না।
– তোমার সাহস তো কম না দেখি? আবার কথা বলো??
ওনারা আমার থেকেও বড়। আমি তাদের থেকে ছোট হওয়াতে আমার কথা শুনে রাগ করেছে। আমি তখনও সেখানে দাড়িয়ে আছি। সবাই আমার দিকে রাগ নিয়ে
তাকিয়ে আছে। কেউ একজন বললো..
– ঐ এত কথা না বলে কানের নিচে দুইটা দে? সত্যি সত্যিই ওনাদের মধ্যে একজন আমাকে চড় মারতে এসেছে। চড় মারবে আর তখনি একটা হাত এসে আমায় রক্ষা
করলো। মানে ঐ ছেলেটার হাত ধরে ফেলল।
– কি ব্যাপার ওনাকে মারছেন কেন? কণ্ঠটা শুনে আমি একটু অবাক হলাম। শুধু আমি না আশেপাশের সবাই অবাক হলো। এতো দেখি সিনেমার মত নায়িকা হাজির
হয়ে গেল। অবশ্য সিনেমায় নায়ক হাজির হয় আর যখন নায়ক একটু সহজ সরল হয় তখন নায়িকা এসে উদ্ধার করে। তখন নায়িকা হুংকার দিয়ে বলে আমার জানকে
মারছিস তোদের এত বড় সাহস? আমার হাত থেকে কেউ বাচাঁতে পারবে না। তারপর মারামারি শুরু হয় ওইক ডিসুম ওইক ডুসুম। কিন্তু বাস্তবে এটা কি সম্ভব? এই যুগে
এই রকম মেয়ে আছে? কিন্তু কোন মারামারি হয় নি। তারপর কেউ কিছু বললো না। হয়ত এই মেয়েটি ছেলেদের থেকেও বড় কোনো নামকরাা পরিবারের। তাই হয়ত
এনাকে দেখে ওরা চলে গেল। আমি আর মেয়েটিও সেখান থেকে চলে আসলাম। মেয়েটির চুল গুলা খোলা ছিল। মেয়েটির মুখে একটা স্নিগ্ধতার আভা। আশ্চর্যের বিষয়
হলো একটা মানুষকে আকর্ষিত করার জন্য এই মেয়েটা একদম বিদ্যমান। ঠোটের কোনায় একটা তিল। সেদিনই ওকে দেখে আমার এক অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ
শুরু হলো। দুজনে হাটছি..
– ধন্যবাদ। আপনার অনেক সাহস মেডাম।
– হি হি হি। আর আপনি অনেক ভিতু তাই না? শুনেন মিঃ
শক্তি দিয়ে না হয় পারি না, তবে মুখে কিন্তু ঘায়েল করতে পারি। কি অদ্ভুত ভয়ংকর হাসি। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগলাম। মনে হচ্ছে মেয়েটা একটু বেশি কথা বলে।
তবে কথা বলার সময় নিচের ঠোট বাকিয়ে কথা বলে আর যখন হাসে তখন ঠোটের তিলটা যেন হাসির সৌন্দর্যের মাত্রা বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। আমি অবাক হয়ে চেয়ে
রইলাম।
– এই যে মিঃ কি দেখেন?
– না কিছু না।
– আপনাকে তো এই ভার্সিটিতে আগে কখনো দেখি নি। নতুন এসেছেন?
– হ্যাঁ
– কোন ইয়ার?
-……………, আপনি?
– আমিও সেম
এরপর ও যেটা করলো সেটার জন্য আমি একদম প্রশ্তুত ছিলাম না। ও ওর হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বললো..
– আমি শ্রাবণী। অবশ্য আমায় সবাই পাগলি বলে ডাকে। কারন সবাইকে পাগল করে ফেলি। হি হি হি। তুমি আমার সাথে কয়েকদিন চলাফেরা করলে তুমিও
পাগল হয়ে যাবা। এই যা আল্লাহ আমি আপনাকে তুমি করে বলে ফেলেছি। আপনি কিছু মনে করেন নি তো? হি হি হি। আপনার নাম কি? যদিও একটু বেশি কথা বলে।
বলুক না শুনতে বেশ ভাল লাগছে। মেয়েটা এতো মিশুক বিশ্বাস হচ্ছে না। আমার জানা মতে মেয়েরা একটু ভাব দেখায়। কিন্তু এই মেয়েটা অন্যান্য মেয়ের থেকে
আলাদা। যেখানে আমাকে এত কিছু বলার দরকার ছিল সেখানে ও বলছে। আমিও ওর হাতের সাথে হাত মিলিয়ে বললাম…
– আমি আমি আবির কিছ পারিবারিক পার্সোনাল ব্যাপারে এখানে এসেছি । আর ঠিক আছে তুমি করেই বলতে পারেন সমস্যা নেই। সেম ক্লাস.. এভাবেই শ্রাবণীর সাথে
আমার পরিচয় হয়।
।।
– কি হলো আবির চুপ করে থাকবা? শ্রাবণীর ডাকে বাস্তবে ফিরলাম।
– চলো বাসায় ফিরা যাক। অনেক লেইট হয়ে গেছে। (আমি)
.
বাসায় আসলাম মন ভাল নেই। ওর সাথে পরিচয় হওয়ার পর বেশির ভাগ সময়টা ওর সাথে পার করেছি। কেন যেন ওর সাথে কথা না বলে থাকতে পারতাম না। তাই বার
বার ওর কাছে ছুটে যেতাম। ওর বাসার সবাইও একটা মিশুক টাইপের। কারো মনে হিংসে জিনিষটা নেই। মাঝে মাঝে ও ওর সাথে শপিং এ নিয়ে যেত। তবে আমার
পকেট ফাকা করত না। আর এমন একটা মেয়ের জন্য পকেট ফাকা হলেও আপত্তি ছিল না। ওর একটা কাজ খুব ভাল লাগত সেটা হলো ওর একটা পছন্দের জায়গা
আছে। চারপাশে গাছ গাছালি আর কিচির মিচির পাখির শব্দ। পাশে একটা পুকুর। আর ঐ পুকুরে ও পা ডুবিয়ে বসে থাকত। তবে আসল কথা সে আমাকে ভালোবাসে
না। খুব খারাপ লাগছে ব্যাপারটা মনে পড়লে। কেনো যে জানাতে গেলাম সেসব? শুধু কষ্ট পাচ্ছি
..
পাচঁদিন হয়ে গেল ওর সাথে দেখা করলাম না। আসলে কেমন একটা লজ্জা লজ্জা অনুভব করতে লাগলাম ওর কাছে যেতে। মনে হচ্ছে কথাটা বলে খুব খারাপ করে
ফেলেছি। সত্যি কথা কি বন্ধুকে বন্ধু হিসেবে রাখাই ভাল, না হলে অনেক সময় বন্ধুত্বটাও নষ্ট হয়ে যায়। অনেক কষ্ট লাগল শ্রাবণী একটা বারো ফোন করে খবর নিল না।
আমিও নিজ থেকে খবর নিলাম না। কি করবো ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। না হচ্ছে ঠিক মত ঘুম, না হচ্ছে ঠিক মত খাওয়া। খালি ওর কথা মনে হচ্ছে। কি হয়
ভালোবাসা গ্রহণ করলে?
“এই দাড়াঁও বলছি”
৬ দিন পর, ভার্সিটিতে যাচ্ছি ঠিক তখনি পিছন থেকে শ্রাবণীর ডাক শুনতে পেলাম। হুট করে দাড়িয়ে পিছন ফিরে তাকালাম। সে জোরে হেটে আমার কাছে আসলো। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখটা নামিয় আমি বললাম..
– কিছু বলবা?
ঠাসসস…. একটা চড় বসিয়ে দিল আমার গালে। কিছু বলার আগেই চড়। আশ্চর্য ও চড় মারল কেন? আস্ত একটা বদ মেয়ে ফাজিল আরে চড় মারবি ভাল কথা তাই বলে
রাস্তায়? তাও আবার ভার্সিটির সামন। মান সম্মান সব গেল মনে হয় এইবারই। আমি বা গালটাতে হাত দিয়ে ভয়ার্ত দৃষ্টি নিয়ে শ্রাবণীর দিকে তাকালাম..
– তুমি এত সার্থপর কেন হুহ? এই পাচঁটা দিন একটি বারো আমার খোজঁ নিয়েছো আমি বেচেঁ আছি, নাকি মরে গিয়েছি? আমি অবাক হয়ে শ্রাবণীর দিকে তাকালাম। বলে
কি সে..মাথা ঠিক আছো তো ওর.? হঠাত্ এত মায়া মাখা মুখে কথা বলছে এর মানে কি? অবশ্য, একটা ছেলে যখন সারাদিন একটা মেয়েকে যথেষ্ট সময় দেয়। সুখ দুঃখ,
আবেগ , অভিমান বিনিময় করে। হঠাত্ যদি ছেলেটা মেয়েটার কাছ থেকে একটু দুরে সরে যায় তখনি মেয়েটার মাঝে একটা অদ্ভুত অনুভূতি তৈরি হয়। আর এই
অনুভূতিটা হৃদয়ে শিহরণ জাগায়। যেটা শ্রাবণীর মাঝে তৈরি হয়েছে। আমি একটা হাসি দিলাম।
– তুমি হাসছো? আরেকটা থাপ্পর খাবা বলে দিলাম। জানো ঐ দিনের পর থেকে আমার জানি খুব খারাপ লাগতে শুরু করেছিল। জানো কেমন জানি লাগত। মনে হচ্ছিল
আমার জীবন থেকে একটা মূল্যবান জিনিষ হারিয়ে ফেলেছি। আচ্ছা আমি কি তোমায় ভালোবাসি? এই রকম হচ্ছে কেন আমার?
.
আমি কি বলব ভেবে পাচ্ছি না। শুধু অবাক হয়ে শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে রইলাম। তখনি কেনো জানিনা ফাজলামি করতে ইচ্ছে করলো।। একটা হাসি দিলাম তারপর বললাম…
– আপনি কেডা আফা??
– ওই তুমি কি বললা আমি তোমার আফা? বদমাইশ এই পাচঁদিনে কি নতুন কাউকে পেয়েছো? খুন করে করে ফেলব বলে দিলাম। আমি তো তোমার….. মুহুর্তেই আমার
মনটা ভাল হয়ে গেল। এই ৫-৬ দিনে আমিও কেমন অনুভুতিহীন হয়ে পড়েছিলাম। সারাদিনের মাঝে তাকে মনে করাটা আমার কাজ ছিল। কিন্তু শেষের লাইনটা বুঝলাম না।
– তুমি আমার কি? এটা বললে নাতো। (আমি)
শ্রাবণী আরো রাগি হয়ে আমার দিকে তাকালো। ও আমার কানটা টেনে ধরে বললো…
– গাধা, আমি তোমার বউ।…
আশ্চর্য বউ না হতেই চড় আর কান টানা খেলাম ভবিষ্যতে আরো কি কি খেতে হবে এক আল্লাহ জানে। শুরু হল ভালোবাসার বন্ধন। যে বন্ধনে মিশে রবে
ভালোবাসা,,দুষ্টুমি আর বিশ্বাস। ওর হাত ধরে ভার্সিটিতে ঢুকলাম। মনে মনে বললাম.. “তুমি রবে নিরবে”
……………………………………………….(সমাপ্ত)……………………………………..