-দিপ তোর জন্য প্রতিদিন দাড়িয়ে থাকে ওই
মেয়েটা কেরে । (রাকিব)
-কোন মেয়ে (দিপ)
-ওইযে ছুটির পরে তোর কাছে চলে আসে আর
তুই তাকে পৌছে দিয়ে আসিস। (রাকিব)
-বলা যাবে না তোকে। (দিপ)
-কেনো বলা যাবে না দোস্ত, তই দেখতে তো
ভালই। তোর বউ নাকি রে যে বলতে লজ্জা
করছিস। (রাকিব)
-রাকিব এসব বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চাই
না। (দিপ)
—-
কিছুক্ষন পরে,
–
দিপ ওই দেখ মেয়েটি চলে আসছে তোর
কাছে। (রাকিব)
মেয়েটি সোজা এসে দিপের কাছে
দাড়ালো।
দিপ ও তার কয়েকবন্ধু মাঠে বসে আড্ডা
দিচ্ছিলো।
-কি ব্যাপার দাড়ালে কেনো। (দিপ)
-আমাকে বাড়িতে রেখে আসুন। ((দিপা)
-তুমি নিজে থেকে যেতে পারো না। (দিপ)
-আমার একা একা যেতে ভয় করে। (দিপা)
-এইযে আপু দিপ আপনার কে হয়। (রাকিব)
-কেনো ওনি আপনাদের বলে নি আমি ওনার
কে হয়। (দিপা)
-না আমি আপনার মুখে থেকে শুনতে চাই
(রাকিব)
-জ্বী আমি ওনার স্ত্রী। আমাদের কিছুদিন
আগে বিয়ে হয়েছে।(দিপা)
-দিপের দিকে তাকিয়ে দেখলাম বেচারা
লজ্জাই লাল হয়ে গেছে।
কিছু বলতে পারছে না।
-পরে আমরা ওদের কে ধন্যবাদ দিয়ে
বাড়িতে পাঠিয়ে দিলাম।
–ওদের সামনে বলার কি দরকার ছিলো তুমি
আমার বউ। (দিপ)
-ওরা যে বলতে বলল সেইজন্যই তো বললাম।
(দিপা)
-তাই বলে বলে দিবে (দিপ)
-এবার থেকে বললে আর বলবো না। (দিপা)
-বলেই যখন দিয়েছো তখন আর না বলে কি
হবে।
(দিপ)
-চলে এসেছি নামো এবার।(দিপ)
-আপনিও চলুন, এখন দুপুর বেলা কই যাবেন।
(দিপা)
-এই তোমাকে না বলেছি আমার ব্যাপারে
নাক গলাবে না।
-তাই বলে রোদের ভেতর আবার কোথাই
যাবেন। দুপুরে খেয়ে বিকালে যাবেন আবার।
এখন ভেতরে এসে ফ্রেস হয়ে নিন।
-না মেয়েটাকে নিয়ে আর পারিনা । বাইকটা রেখে বাড়ির ভিতরে আসলাম। বাড়িতে আসতে ভালো লাগে না একবারে
রাতে আসি প্রতিদিন। কিন্তু ইনার জন্য আজকে এখন থাকতে হলো বাড়িতে।
–
-পরের দিন,
–
আজকে আমাকে নিয়ে যাবেন না (দিপা)
-না আজকে যেতে হবে না। (দিপ)
-কেনো যাবেন না আজকে। (দিপা)
-টাকা নাই কাছে। (দিপ)
-আমি দিবো চলুন। (দিপা)
-কোথাই পাবে তুমি টাকা।
-কেনো আমাদের বাড়িতে কি টাকার অভাব আছে। আমার বাবার থেকে নিয়ে আসবো। আমাদের তো অনেক জমিজামা আছে, ওগুলো
বেচে এনে আপনাকে দিবো।
-হা হা হা হা হা।
-হাঁসছেন কেনো।
-তোমার কথা শুনে।
-আমি আবার হাসির কথা বললাম নাকি।
-না হাসির কথা না।
এখন চলো তোমাকে রেখে আসি।
-বললেন যে টাকা নাই।
-এমনিতেই বলেছিলাম।
এখন চলো .
-আচ্ছা চলুন।
-এভাবে প্রতিটাদিন ওকে রেখে আসতে হয় কলেজে। বাবা মার কারনে ওকে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি।
একবার ফেইল করুক না সবকিছু বাদ দিয়ে দিবো।
-আজকেও বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছি।
-তিনি এসে হাজীর।
একটু কথা ছিলো আপনার সাথে। (দিপা)
-এইখানেই বলো। (দিপ)
-একটা নিল কালারের কলম লাগবে আমার।
(দিপা)
-বন্ধুদের দিকে তাকালাম ওরা এই কথা শুনে মুখ চেপে ধরে হাঁসছে।
রাগে ওখান থেকে উঠে গেলাম। একটা কলম এনে দিয়ে বললাম কি করবে কলম
দিয়ে,নিজে আনতে পারো না।
-আমাকে কলম আনতে হবে কেনো আপনি
কিজন্য আছেন।
-মনে হচ্ছে কষে একটা চড় মারি কিন্তু বাবা
মায়ের জন্য পারলাম না।
ওকে কিছু বললেই সোজা বাবাকে গিয়ে
বলে দেবে।
-দোস্ত তোর বউটা না সহজ সরল।
-সহজ সরল বলছিস তুই ওকে।
-হুম দেখনা তোকে কতভালোবাসে। যে কোন
কাজে তোকে আগ ডাক দেই।
এখনকার মেয়েরা তো একাই একশো
বরদেরকে কিছুই বলে না।
-ওইযে তোর বউ আসছে নিয়ে যা।
-দিপাকে নিয়ে বাইক চালু করলাম।
দিপার মন বিষন্ন দেখাচ্ছে।
-কি ব্যাপার মন খারাপ। (দিপ)
-হুম অনেকটা খারাপ।(দিপা)
-কেনো খারাপ।
-রেজাল্ট ভালো না।
-কিইইইই।
তাহলে আর পড়াশোনা করে লাভ নাই
তোমার। আজকে থেকে তোমার কলেজ
যাওয়া বন্ধ।
-আপনি যখন বলছেন তখন আর যাবো না।
-চলে আসছি নামো।
-বাইক থেকে দিপা নেমে সোজাবাড়ির
ভিতরে চলে গেলো।
-দুপুরে সবাই মিলে একসাথে খেলাম।
-বাবা দিপাকে আর পড়াশোনা করা লাগবে
না।
-কেনো কি হয়েছে।
-রেজাল্ট ভালো করে নি সেইজন্য।
ও বাড়িতেই থাকুক পড়াশোনা করিয়ে কি
লাভ বলো।
-ওকে পড়াশোনার কথা বাদ দিতে বললে তুই
আজকে থেকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবি।
-না বাবা কে বলেই দেখছি কোন লাভ নাই।
না খেয়ে উঠে আসলাম।
-এদেরকে ভালো পরামর্শ দিতে নাই।
-রুমে এসে দিলাম একটা ঘুম।
-ড্রয়িং রুমে চেচামেচির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে
গেলো।
-ঘুম থেকে উঠে দেখি প্রচন্ড পরিমানে জ্বর
এসেছে আমার।
বিছানা ছেড়ে উঠে যেতে পারছি না।
-দিপা দিপা এই দিপা।
-ডাকছেন আমাকে।
-হ্যাঁ, ওখানে কে এসেছে এতো লোকজন।
-আমার বান্ধবিরা এসেছে।
-কেনো এসেছে।
-বেড়াতে এসেছে। কেনো ওদের আসাও
নিষেধ নাকি।
-না না ঠিক আছে যাও।
-এই নিন ওষধ।
আপনার প্রচন্ড জ্বর ওষধটা খেয়ে নিন ভালো
লাগবে।
-আচ্ছা দাও।
-আপনাকে একটা কথা বলবো।
-কি কথা বলো।
-আমার টাকা লাগবে পাঁচশো।
সমস্যা নাই পরে দিয়ে দিবো।
-কি করবে টাকা।
-বন্ধুদেরকে মিষ্টি কিনে খাওয়াতে হবে।
বললাম যে ফ্রিজে আছে ওখান থেকে দিই।
কিন্তু না ওরা আমার নিজের টাকা দিয়ে
কিনা মিষ্টি খাবে।
-মানিব্যাগে আছে নিয়ে যাও।
-দিপা চলে গেলো টাকা নিয়ে।
-এসময় বন্ধুর ফোন। দোস্ত তোর বউ তো
কলেজের সবথেকে ভালো রেজাল্ট করেছে।
কলেজে সেই প্রথম হয়েছে।
-বলিস কি তুই।
-হ্যাঁ সত্যি। পার্টি দিবি কখন বল।
-কালকে দিবনি এখন রাখি।
-দিপা দিপা??
-ডাকছেন কেনো।
-তুমি এতো ভালো রেজাল্ট করেছো আমাকে বলনি কেনো।
-আমি সরি না বলার জন্য।
-দিপা আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। তোমাকে না জেনে অনেক কথা বলেছি।
-একি বলছেন আপনি স্বামীরা বউকে একটু বকবেই। এতে করে রাগ করার কিছু নেই।
আপনিই তো আমার সব। আপনাকে ঘিরেই আমার পৃথিবী।
-সত্যি দিপা তোমাকে আর কখনো কিছু বলবো না।
-কেনো বলবেন না অন্যাই করলে অব্যশই বলবেন।
-দিপা।
-জ্বী বলুন।
-এই দিপা।
-শুনতে পাচ্ছি বলুন।
-আমি তোমাকে ভালোবাসি দিপা।
-দিপা দৌড়ে এসে আমার বুকে মাথা রাখল। আমিও আপনাকে অনেক ভালোবাসি অনেক।
দিপাকে শক্ত করে ধরে রাখলাম জেনো কোনদিন হারিয়ে না যায়।
আল্লাহকে অনেক ধন্যবাদ এমন কাউকে আমার জীবনে পাঠানোর জন্য।
…………………………………..সমাপ্ত………………………………..