পরিপূর্ণ ভালোবাসা

পরিপূর্ণ ভালোবাসা

-“এই যে আপনার সমস্যা কি?গত ১ বছর ধরে দেখছি আপনি আমার পিছনে ঘুরছেন”।(তিথি)
-“আমার তো কোন সমস্যা নেই।আর আমি আপনার পিছনে ঘুরি না,আপনি আমার সামনে থাকেন।আমি যখনই
কোথাও যাই তখনই আপনি কোথায় থেকে আমার সামনে আসেন”।(তুষার)
-“আচ্ছা তাই।আপনাদের মতো ছেলেদের আমার ভালো করে চিনা আছে।সুন্দরি মেয়ে দেখলে তার পিছনে ঘুরেন।আচ্ছা
আপনাদের কি আর কোন কাজ নেই। আর যেন না দেখি”।(তিথি)
-“এই যে নিজেকে কি সেরা সুন্দরি মনে করেন, তাহলে বলবো ভুল ধারনা এইটা আপনার। আয়নায় কখনো নিজেকে দেখছেন

আর জানেন আপনাকে যে পেত্নির মতো লাগে।না পেত্নিও আপনার থেকেও দেখতে ভালো। আর আপনি তার থেকে খারাপ”।(তুষার)
-“দেখুন বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।আপনি আমাকে
চিনেন,আমি কে”?(তিথি)
-“আপনি জানেন না আপনি কে?আচ্ছা আপনার জন্য আমি ১ মিনিট নিরবতা পালন করছি।আর
আপনি কে?তা জানতে পারলে আমি আপনাকে জানিয়ে দিবো।কিন্তু আপনার ফোন নাম্বার তো
নেই আমার কাছে,আপনার নাম্বার দেন”।(তুষার)
-“আচ্ছা নিন।হইছে এবার”।(তিথি)
-“যাক শেষে নাম্বার পেলাম আপনার।বেশি কষ্ট করতে হলো না”।(তুষার)
-“এইটা আমি কি করলাম শেষ পর্যন্ত না বুঝেই আপনাকে নাম্বার দিয়ে দিলাম।আর খবর দার আমাকে ফোন দিবেন না আপনি”।(তিথি)
-“আচ্ছা ফোন দিবো না মেসেজ দিবো কেমন। এবার নামটা বলে দিন”।(তুষার)
-“মাইর খাইছেন কখনো।জান এখন আপনি আর কখনো আমাকে বিরক্ত করবেন না”।(তিথি)
-“আমি আপনার নাম জানতে চেয়েছি আর আপনি আমাকে জান বলেছেন শুনে অনেক ভালো লাগবো”।(তুষার)
-“উফ আমি জান বলি নাই,আপনাকে যেতে বলছি আমি।আর আমার নাম তিথি।এবার চলে জান।বাদর একটা”।(তিথি)
-“এই বাদরকেই বিয়ে করতে হবে।আর ধন্যবাদ নাম বলার জন্য আর নাম্বার দেবার জন্য”।(তুষার)
“আচ্ছা পরিচয় দিয়ে নেই আমি তুষার পড়ালেখা শেষ।এখন নিজেই ব্যবসা করছি।কারন চাকরি জন্য আর কতো
দিন বসে থাকো।ইন্টার্ভিউ দিয়েছি তাও কিছু হয় না।তাই নিজেই ব্যবসা শুরু করলাম।আর এতোক্ষন যার সাথে
কথা বলছিলাম সে হচ্ছে তিথি,অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ে।আমাদের এলাকায় ১ বছর আগে আসছে।প্রথম দেখাতেই
ভালো লাগে তিথি কে আমার।দেখতে যে অনেক সুন্দরি তা না শ্যামলা হলেও মায়াবী একটা ভাব আছে।আর এই
মায়াবী দেখেই আমার ভালো লেগেছে”।
“গত ১ বছর ধরে পিছনে ঘুরে কিছু বলতে পারলাম না।আর আজকে তিথি নিজেই আমার সাথে কথা বলছে।ভুলেই গেছি
নাম্বার দিছে যে আমাকে আমি তো একটা ফোন দেইনি।আপনাদের সাথে পড়ে কথা বলবো তিথির সাথে একটু কথা বলি”।
-“হ্যালো!কে বলছেন”?(তিথি)
-“এই বরকে কি কেউ আপনি করে বলে। তুমি করে বলো আমাকে”।(তুষার)
-“আপনি আমাকে কেনো ফোন দিয়েছেন, আপনাকে না আমি না করেছি।আর আপনি আমার বর কবে হয়েছেন। এই আশা বাদ দিন”।(তিথি)
-“না এই আশা বাদ দেওয়া যাবে না।তুমি দেখে দিও আমার সাথেই তোমার বিয়ে হবে”।(তুষার)
“এই মেয়ের সমস্যা কি আমি বুঝি না।একটু ভালো করে কথা বলতে পারে না।সমস্যা নেই আসতে আসতে সব ঠিক হয়ে যাবে।

তখন আর আমার ফোন দেওয়া লাগবে
না।নিজেই ফোন দিবে আমাকে”।
“চিন্তা করছি তিথি কে বলবো আজকে দেখা করতে।তারপর আমার মনের
কথা বলে দেবো।এখনো যদি না বলি পরি যদি অন্য কেউ এসে নিয়ে যায়। তখন কি হবে আমার।তখন তো মমতাজের সেই গানটা গেতে হবে
ফাইটা যায় ফাইটা যায়।না তা হতে দেওয়া যাবে না।আজকেই বলে দিবো আমি”।

“যেই ভাবা সেই কাজ তিথি কে ফোন দিয়ে বললাম বিকেলে দেখা করতে।তবে আশ্চর্যহলাম একবার বলাতেই রাজি হয়ে গেলো।
তার মানে তিথিও।ভালোই হলো আর কতো দিন এই ভাবে একা থাকা যায়”।
“বিকেলে সময় মতো আমি চলে আসলাম আর আগেই কিছু গোলাপ ফুল কিনে নিলাম।কি ব্যাপার ৪টা বাজে আসার
কথা এখনো আসছে না।তাহলে কি আমাকে মিথ্যা বলছে।না তিথি এমন মেয়ে না।আরে ঐতো তিথি আসছে আমি সব ভাবছিলাম।বাহ! তিথিকে
আজকে অনেক সুন্দর লাগছে।সাদা থ্রি-পিছের সাথে নীল ওড়না পরছে। চোখ ফিরাতেই পারছি না”।
-“কি এই ভাবেই তাকিয়ে থাকবেন নাকি দেখা করতে বলেছেন কেনো তা বলবেন”।(তিথি)
-“আসলে আজকে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে তো তাই চোখ ফিরাতেই পারছি না”।(তুষার)
-“আচ্ছা বুঝতে পারছি।সেই দিন বললেন পেত্ন মতো দেখতে আমি আর আজকে সুন্দর লাগছে। আচ্ছা বাদ দিন এখন বলেন আমার যেতে হবে কাজ আছে”।(তিথি)
-“বলতেই হবে তুমি বুঝে নিতে পারো না”।(তুষার)
-“আমি কি বুঝে নিবো।আপনি যদি আমাকে না বলেন আমি কি বুঝবো তাইলে”।(তিথি)
-“আচ্ছা বলছি।সারা জীবন তোমাকে জ্বালাইতে চাই দিবে কি সেই সুযোগ”?(তুষার)
-“মানে কি?এইটা বলতে আপনি আমাকে দেখা করতে বলছেন।আপনি আসলেই একটা ফাজিল”।(তিথি)
-“আচ্ছা বলছি রাগ করছো কেন।আমি তোমাকে ভালোবাসি কতোটা ভালোবাসি তা বলে বুঝাতে পারবো।যেই দিন প্রথম তোমাকে দেখি সেই দিন
তোমার আমার ভালো লাগে।তারপর থেকে তোমার পিছনে ঘুরলাম।আসলে তোমার সম্পর্কে জানার জন্য।একটা সুযোগ দিয়ে দেখো কখনো ছেড়ে যাবো না”।(তুষার)
-“এতো দিন লাগে বলতে এইটা।এই কথা শুনার জন্য কবে থেকে আমি অপেক্ষা করছি”।(তিথি)
-“মানে তুমি এতো তারাতারি রাজি হলে যে।আমি তো ভাবছি তোমাকে রাজি করানোর জন্য আবার কি না করতে হবে আমার”।(তুষার)
-“আরে একটা মেয়ে পিছনে কেউ ১ বছরে ঘুরলে সেই মেয়ে আবার রাজি হবে না তা কি করে হয়”।(তিথি)
-“আচ্ছা তাই বলো।তাইলে দেখি অন্য কেউ কে পাই কি না তাইলে আবার ১ বছর ঘুরবো সে রাজি হয়ে যাবে।তুমি কিন্তু ভালো বুদ্ধি দিছো আমাকে।তোমাকে অনেক ধন্যবাদ”।(তুষার)
-“কি বললা আবার বলো।তুমি যদি অন্য কোন মেয়ে সাথে কথা বলা তো দুরের কথা যদি তাকাও তাইলে তোমার চোখ উঠিয়ে ফেলবো আমি”।(তিথি)
-“আচ্ছা আর এমন করবো না।কিন্তু তুমি তো এক বারো বলো নাই”।(তুষার)
-“আচ্ছা বলতেই হবে।ভালোবাসি তোমাকে অনেক ভালোবাসি”।(তিথি)
-“এই বার ঠিক আছে।চলো তাইলে আমরা হারিয়ে যাই দূর এক অজানাতে যেখানে শুধু তুমি আর আমি,আমি আর তুমি থাকবো”।(তুষার)
“ভালোবাসর মানুষ কে পাবার মধ্যে কতোটা ভালো লাগা কাজ করে তা বলে বুঝানো মতো না।যে তার ভালোবাসার মানুষকে পেয়েছে সে জানে শুধু”।
:
…………………………………………. সমাপ্ত …………………………………….

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত