সদ্য শ্যাম্পু করা ভেজা চুলগুলোর মাতাল করা ঘ্রাণে আমি নিজেই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছি। আর বরমশাইয়ের কি অবস্থা হবে ভেবে এক ধরনের পৈশাচিক আনন্দে মন ভরে উঠছে। ইতিমধ্যেই বরমশাই এসে ঘরে ঢুকলেন। তাড়াতাড়ি করে চেহারায় গম্ভীরতা ভাব এনে আমি আমার আগের রূপে ফিরে গেলাম। ড্রেসিংটেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হতে হতে আড়চোখে দেখছি, তিনি প্যান্টের পকেটে কি যেন খুঁজে চলেছেন। হবে হয়তো কোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। এমনই করেন, জায়গামতো কোনো কাগজপত্র না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করার পর শেষমেশ সেই কাগজপত্র আবিষ্কৃত হয় বিছানায় বালিশের নিচে। এর কারণ জিজ্ঞেস করলেই তিনি তেড়ে এসে একই উত্তর দেন সবসময়,
– দরকারি কাজ করার সময়ই তো তোমার যত রঙ-তামাশা শুরু হয়। গভীর মনোযোগ দিয়ে জরুরী ফাইলপত্র দেখার সময় কানের কাছে এসে কাঁচের চুড়ির আওয়াজ করে কে, শুনি? পিঠে সুঁড়সুঁড়ি দেয় কে? তবুও পাত্তা না পেলে কানের লতিতে ঠুস করে কামড় বসিয়ে দেয় কে? আর এতকিছুর পর আমি আর নিজেকে আটকাতে না পেরে সময় বাঁচানোর উদ্দেশ্যে হাতের ফাইলপত্র সব বালিশের নিচে ঢুকিয়ে দিলেই দোষ? এর প্রতিউত্তরে আমি আর কিছু বলতে পারি না দেখে প্রশ্ন করাই ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু গত এক সপ্তাহ যাবত আমার রঙ-তামাশা বন্ধ আছে তাই এখন কাগজপত্র খুঁজে না পাওয়ার পেছনে আমার কোনো হাত নেই। মনোযোগ দিয়ে চোখে কাজল টেনে নিচ্ছিলাম, হুট করে তিনি পেছন থেকে এসে জিজ্ঞেস করলেন,
– আমার হাতঘড়িটা দেখেছো প্রিয়তি? তার গায়ের সাথে হালকা ধাক্কা লেগে কাজল নষ্ট হয়ে গেলো আমার। চোখ বড় বড় করে তার দিকে তাকাতেই তিনি অপরাধী ভঙ্গীতে বললেন,
– ইশ্ রে, কাজল তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো। আবার নতুন করে কাজল।দিতে গেলে অনেকটা দেরী হয়ে যাবে। দেখো ক’টা বাজে? এই কথা বলে তিনি শার্টের হাতাটা গুঁটিয়ে নিয়ে হাতটা আমার দিকে উঁচু করে ধরলেন। হাতঘড়িটা তার হাতেই পরা ছিল। সবটাই কাজল নষ্ট করার নাটক ছিল আসলে। আমি চোখমুখ কঠিন করে বললাম,
– ছ্যাড়াব্যাড়া আবার কি শব্দ? কতবার না করেছি না এইসব উদ্ভট শব্দগুলো আমার সাথে ব্যবহার না করতে? তিনি আমার দিকে এগিয়ে আসলেন।
– শুনো, এমনিতেই তুমি আমাকে প্রচুর মানসিক অত্যাচারে রাখো।
এই যেমন এখনের কথাই বলি। তোমার শ্যাম্পু করা চুলের ঘ্রাণে আমার ভেতরের ইমরান হাশমিটা মুহূর্তেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠে, একথা তুমি খুব ভালো করেই জানো। আর আমি জানি, গত এক সপ্তাহের ধারা বজায় রাখতে তুমি এখন আমাকে তোমার পায়ের কাছেও আসতে দিবে না, সেখানে চুল অব্দি পৌঁছানো তো অনেক দূরের কথা। তার উপর এইযে আমার পছন্দমতো প্যাঁচ দিয়ে শাড়ি পরেছো, মেদহীন ফর্সা তুলতুলে পেটটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, গলার কাছের তিলটা বারবার আমাকে কাছে ডাকছে, এসবের কোনো গুরুত্ব কি তোমার কাছে আছে? নেই। এই এতকিছুর কাছে আমার এই নাটকীয় ছোটখাটো প্রতিশোধগুলো খুবই নগ্ন, ওহ্ স্যরি নগন্য। আসলে মাথার ভেতর শুধু ওসব ঘুরছে তো তাই মুখেও আমি সামনে ঘুরে চুলটা কোনোরকম আঁচড়ে নিয়ে কঠিন গলায় বললাম,
– আমি একা যাবো, একদম আমার পিছুপিছু আসবেন না।
বরমশাই আমার কথা শুনলেন না। ঠিকই আমার পিছু নিয়ে বাইকে করে আমাকে মেজো খালামণির বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে গেলেন। আমিও আর কথা বাড়িয়ে সময় নষ্ট করলাম না কারণ বেচারার এমনিতেই অফিসের দেরী হয়ে যাচ্ছে। বাসায় ঢুকতেই মেজো খালামণি তড়িঘড়ি করে এসে জিজ্ঞেস করলেন,
– একা এলি যে? ফয়সাল কোথায়?
– উনার অফিস আছে। বিয়ের দিন আসবেন।
– মানে কি? অফিস থেকে রাতে এখানে চলে আসলেই তো হয়।
– বাসায় আমার ফুপু শ্বাশুড়ি একা আছেন খালামণি।
– হ্যাঁ, উনাকেও তো সেদিন দাওয়াত দিয়ে আসলাম।
– ফুপুর কোমড়ে ব্যথা খালামণি, এজন্য আসতে পারবেন না।
খালামণি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু আমি তার আগেই ব্যাগ নিয়ে ভেতরের ঘরে চলে গেলাম। এসেছি আমার খালাতো বোন উপমার বিয়েতে। বিয়ের সাতদিন আগে আমাকে আসার জন্য জোর করা হলেও আসতে পারলাম তিনদিন আগে। সত্যি কথা বলতে আমারই ইচ্ছে করছিলো না এতদিন আগে চলে আসতে। বিয়ের পর অভ্যাস খারাপ হয়ে গেছে। নিজের সংসার ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে মন সায় দেয় না। তাই আজ আসবো কাল আসবো করে করে চারদিন পার করলাম। বরমশাই আসবেন বিয়ের দিন। এর আগে নাকি তার অফিস থেকে ছুটি মিলবে না। তাছাড়া ফুপু শ্বাশুড়ি আছেন বাসায়। সব মিলিয়ে আমিও আর জোর করতে পারিনি।
বাড়িভর্তি মেহমান। বিয়েবাড়ি বলে কথা, এমনটাই স্বাভাবিক। এতদিন পর সব কাজিনদের একসাথে পেয়ে বেশ আনন্দ লাগছে। সবচেয়ে বেশি আনন্দ লাগছে ভুটকিকে পেয়ে। ভুটকি হচ্ছে মেজো খালামণির ননাশের মেয়ে। বিয়ে হয়েছে একবছরের মতো হবে। বিয়ের আগে খালামণির বাসায় থেকেই পড়াশুনা করতো বলে আমাদের সাথে মেলামেশা আর ঘনিষ্ঠতা তুলনামূলকভাবে বেশি। ওকে আমরা আদর করে ভুটকি বলে ডাকি ঠিকই কিন্তু ওর আসল নাম ইলমা। ভুটকিকে আপনারা মোটাসোটা গোছের এক বিশাল হাতির সাইজ ভেবে ভুল করবেন না একদম। পাতলা গড়নের ছিমছাম দেহের অধিকারী সে। ভুটকি নামটা আমাদের দেয়া আর এর পেছনে যুক্তিযুক্ত কোনো কারণ নেই। ও আমার থেকে মাত্র দু’বছরের বড়। দেখতেও সুন্দর মাশাল্লাহ্, বেশ কর্মঠ। যে কোনো অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতিতে সবার কাজের চাপ কমে যায়।
কারণ ও খুব তড়িৎ গতিতে কাজ করতে পারে। এরমধ্যে ওর একটা অভ্যাস যেটা আমার কাছে বরাবরই খুব ভালো লাগে, সেটা হচ্ছে- ও সারাদিন ধরে কাজ করবে এবং কাজ করতে করতে পান খাবে। কাজ করার সময় তার মুখে চাপাভর্তি পান সবসময়ই থাকে। এই বয়সী একটা মেয়ে সারাদিন পান মুখে দিয়ে ঠোঁট লাল করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, ব্যাপারটা সত্যিই ইন্টারেস্টিং। রান্নাঘরে ভুটকি চা করছিলো, আমি গিয়ে বরাবরের মতো পেছন থেকে জোরে চিৎকার দিয়ে ভয় দেখালে, ও কেঁপে উঠলো। তারপর বুকে একদলা থুথু ছিটিয়ে দিয়ে আমাকে দেখে মিষ্টি হেসে জিজ্ঞেস করলো,
– তুই কখন এলি? বিয়ে হয়ে গেছে তবুও ছেলেমানুষি যায় নি না?
– তোমারও তো পান খাওয়ার অভ্যাসটা যায় নি। কত কুল গো তুমি ভুটকি! এই বলে আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
রাতে সব কাজিনরা মিলে আড্ডা দেয়ার সময় ভালো লাগার বদলে আমার কেমন একা একা লাগছিলো। আড্ডা উপভোগ করতে পারছিলাম না বলে কিছুক্ষণ পরই উঠে চলে আসলাম। ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে ফোন হাতে নিলাম বরমশাই কল দিয়েছেন কিনা দেখার জন্য। না, দেন নি। আমি নিজে থেকে কিছুতেই কল দিবো না দিবো না ভেবেও শেষ পর্যন্ত দিয়েই ফেললাম। তিনবার রিং হওয়ার পর কল রিসিভ করলেন তিনি। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বললেন,
– উঁহু, প্রিয়তি। এত রাতে কেউ কল দেয়? ক’টা বাজে দেখেছো?
সাথে সাথে লাইন কেটে দিলাম আমি। রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে আমার। নিজে তো একবারো কল দিলোই না, আমি দিলাম তাতেও টনক নড়লো না। উল্টো নীতিবাক্য শুনিয়ে দিলো। আর এদিকে আমি তাকে ছাড়া নিঃশ্বাসটা পর্যন্ত ঠিকঠাক নিতে পারছি না, অথচ ওদিকে তিনি নাক ডেকে বেঘোরে ঘুমোচ্ছেন! কার জন্য আমি বিরহকাল পার করছি তাহলে! অনেক হয়েছে টিপিক্যাল বাঙালী বউয়ের মত আবেগে ভাসতে থাকা, কাল থেকে আমি ভুটকির মত কুল হয়ে যাবো। পান খেতে খেতে কাজ করবো, ঘুরে বেড়াবো, আড্ডা দিবো। তখন দেখবো কার কত পোড়ে। বরমশাইয়ের আসার কথা বিয়ের দিন কিন্তু তিনি এসে হাজির হলেন আমি আসার পরদিনই। বেশ অবাক হলাম তাকে দেখে। আমাকে কোনো প্রশ্ন করতে হয়নি, তিনিই আগ বাড়িয়ে এসে বোকা বোকা হাসি হেসে বললেন,
– ফুপুকে জিজ্ঞেস করলাম একা থাকতে পারবে কিনা। বললো থাকতে পারবে। তাই চলে এলাম। আর অফিস থেকে ছুটি ম্যানেজ করে নিয়েছি।
নতুন জামাই এসেছে বলে খাতিরযত্নের কোনো কমতি রাখছে না কেউ, বিশেষ করে শালীসমাজ। শালীদের এত সেবাযত্নে শালীদের দুলাভাই সেই ভাবে আছেন। আমার দিকে ফিরে তাকানোরও সময় পাচ্ছেন না। আর আমি ভেতরে ভেতরে জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছি। হুট করে একটা বিশ্রী কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললেন বরমশাই। ভরা মজলিসে সবার সামনে আমাকে ডেকে বললেন,
– বউ শুনছেন, আমাকে এক কাপ চা দিবেন প্লিজ? শালীদের ঘুষ না দিলে চা পাওয়া যাচ্ছে না তাই আমি হালাল পথ বেছে নিলাম। বউয়ের কাছ থেকে চা পেতে নিশ্চয়ই কোনো ঘুষ লাগবে না, বলুন? উপস্থিত সবাই হা হয়ে তাকিয়ে রইলো আমাদের দিকে। উপমা এসে জিজ্ঞেস করলো,
– এই দুলাভাই, আপনি আপুকে “আপনি আপনি” করছেন কেন? বরমশাই স্বাভাবিকভাবে উত্তর দিলেন,
– বা রে! তোমরা খেয়াল করো নি তোমাদের আপু যে আমাকে “আপনি” করে ডাকে? তো তিনি যেহেতু আমাকে
এতটা সম্মান দিচ্ছেন, আমার কি উচিৎ না সমপরিমাণ সম্মান তাকে ফেরত দেয়া? আমি কোনো কথা না বলে সেখান থেকে চলে এলাম। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপমান সহ্য করার কোনো মানেই হয় না। এভাবে যেখানেসেখানে তার এই হুটহাট আমাকে “আপনি” বলে সম্বোধন করাটা সবার চোখে পড়ে গেলো একসময়। ছোটরা মজা নিলেও, বড়রা ব্যাপারটাকে ভালোভাবে দেখছেন না মোটেও। কিন্তু বরমশাইকে বুঝানোর সাধ্য কার! রাতে উপমার ঘরে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, বরমশাই এসে আমাকে আড়ালে ডেকে নিলেন।
– তুমি এই পান খাওয়া কোথ থেকে শিখেছো? রেগে গিয়ে পালটা প্রশ্ন করলাম আমি,
– কেন, সমস্যা কি?
– সমস্যা কি মানে? বিশাল সমস্যা। পান খেলে জিহবা ভারী হয়ে যায় জানো? তখন কথা আটকে আসে। তোতলানো যেটাকে বলে। পরে দেখা যাবে, বিশেষ সময়ে তুমি যখন আমাকে সুঁড়সুঁড়িজনক কথাবার্তা বলবে, তখন কথাগুলো আটকে আটকে আসবে। ধরো তুমি আমাকে বলছো, “এই আরেকটু কাছে আসো না।” তুমি এই একটা কথা বলতে বলতেই আমার উত্তেজনা সব বিড়াল হয়ে যাবে। সমস্যা না বলো?
– ছিঃ আপনি এত অশ্লীল কেন?
– বিয়ের পর প্রথম প্রথম তো বলতে “আমি কিছু বুঝি না কেন” আর এখন এই অপবাদ হজম করতে হচ্ছে।
– যান তো এখান থেকে। ভুটকিও তো পান খায়, কই ওর কথা তো আটকে আসে না।
– আরে সবার জিহবার ধারণক্ষমতা তো এক না। এই যেমন…
আরেকটা অশ্লীল উদাহরণ শোনার আগে আমি দু’কান চেপে ধরে বরমশাইয়ের সামনে থেকে দ্রুত পায়ে হেঁটে প্রস্থান করলাম।
একটা বিশেষ কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে বরমশাইয়ের উপর রেগে আছি আমি। রাগের কারণটা পরে বলছি।কই এখন তিনি আমার রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করবেন, তা না করে উল্টো আরো রাগিয়ে দিচ্ছেন! সময় অসময়ে যেখান যাই সেখানে গিয়ে হাজির হন। তারপর আমি যেখানে বসি, যা যা করি সব নকল করেন। ধরুন, আমি শাড়ির আঁচল দিয়ে গলার ঘাম মুছতে মুছতে পান চিবুতে চিবুতে সবজি কাটছি, তিনিও শরীরে গামছা প্যাঁচিয়ে এসে সেটা দিয়ে গলার ঘাম মুছতে মুছতে চুইংগাম চিবুতে চিবুতে পাশেই দাঁড়িয়ে সবজি কাটতে লেগে যাবেন। কি বাজে একটা ব্যাপার, বলুন তো? আর আশেপাশের মানুষ আড়চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। অস্বস্তি হয় আমার খুব। ভালো এক যন্ত্রণায় পড়লাম বরমশাইকে নিয়ে। ভুলভাল বুঝিয়ে আমাকে ঘরে ডেকে এনে আমাকে এখন শর্ত দিচ্ছেন তিনি।
– শুনো প্রিয়তি, তুমি যদি আমাকে “আপনি” বলা বাদ দিয়ে “তুমি” বলা শুরু করতে পারো তাহলে আমিও নিজেকে শুধরে নিবো। তোমাকে আর রাগাবো না আর সবার সামনে “আপনি” বলেও সম্বোধন করবো না। আমি বরমশাইয়ের কথা পাত্তা না দিয়ে রাগ দেখিয়ে বলে দিলাম,
– বলবো না তুমি করে, দেখি কি করতে পারেন।
এই কথা আমার বলতে দেরী হয়েছে কিন্তু তার আমাকে কোলে তুলে নিতে দেরী হয়নি একটুও। দরজা খোলা, ঘরভর্তি মানুষ হাঁটাহাঁটি করছে। যে কোনো সময় যে কেউ দেখে ফেলবে। লজ্জায় জমে যাওয়ার মত অবস্থা আমার। এরমধ্যেই ঘরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ভুটকি আমাদের দেখে ফেললে সবাইকে ডাকতে শুরু করে দিলো। যে ভয়টা পাচ্ছিলাম, তাই হলো শেষমেশ।
রাগের কারণটা বলি এবার। আমার জন্মদিনের পরদিন আমার এক্সকে মানে বরমশাইয়ের সেই রুমমেটকে, যাকে নিঃস্ব করে ছেড়ে দিয়েছিলেন বরমশাই একদিন, তাকে বাসায় দাওয়াত করে এনে খাইয়েছেন তিনি। তাও আবার আমাকে না জানিয়ে। আমাকে দিয়ে সারাদিন ধরে রান্না করিয়েছেন। বলেছেন বিশেষ অতিথি আসবে। তার এই ধরনের হঠাৎ জেগে ওঠা মানবতাবোধগুলো আমার যে একেবারেই সহ্য হয় না, এটা তিনি বুঝতেই চান না।
অনেক হয়েছে, আর না। আজ রাতেই শান্তিচুক্তি করতে হবে। বিয়েবাড়িতে এসেও যদি সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকতে হয়, এর চেয়ে যন্ত্রণাদায়ক আর কিছু হয় না। শ্যাম্পু করা চুলে এলোমেলো হয়ে নাভির নিচে শাড়ি পরে প্রস্তুতি নিচ্ছি এখন, শান্তিচুক্তির প্রথম ধাপের জন্য।