ভালবাসাগুলো

ভালবাসাগুলো

দুইদিন আগে আমার কিছু গার্লফ্রেন্ডর লিস্ট করে গল্প আকারে পোস্ট দিয়ে ছিলাম। ভুলবশত ঐ লিস্টে সাদিয়ার নামটা ছিল না।আমি আর যাই কোথায়? আমার গার্লফ্রেন্ড নিয়া ঐ পোস্টটা দেওয়ার পর সাদিয়া আমারে মেসেজ দিলো।মেসেজে লিখলো

ঐ কুত্তা , হারামি,বান্দর,ইদুর,তেলাপোকা, চিকার ছাও।তুই না শুধু আমারে ভালবাসিস।তাহলে ঐসব কি? আমি বসে বসে মনের আনন্দে চা পান করছিলাম।সাদিয়ার এইরকম মেসেজটা দেখে ঠোঁট দুইটা নেড়ে উঠলো।চা পরে জিব্বাটা পুড়ে গেলো।আমি চোখ দুইটা বড় বড় করে দেখতে লাগলাম।কি কি বলেছে তার গালিতে আমায়।তার গালি দেখে আমি রিপ্লাই দিলাম ঐসব মানে তুমি কি বলতেছো জানু! তুই আমারে জানু বলবিনা! জানুরে জানু না ডাকলে আমি জানডাই যে মইরা যাইবো।এমন সাজা আমারে দিও না।

আমি তোর জানু না।আমি তোর জানু হইলে যাদের নিয়া গল্প লিখছস ঐগুলা কেডা। না জানু বলেই কোন লাভ হইলো না।তাই কইলাম আরে শ্বাশুড়ির ছেরি।ঐগুলা তো গল্পের গার্লফ্রেন্ড। আর তুমি আমার জানু।তুমি বলো ঐগুলা আর তুমি কি এক? তুমি সব মিথ্যা বলতেছো। কই আমাকে নিয়া তো এত কিছু কোনদিন লিখো নাই। তার মানে আমারে কি তুমি ভালবাসো না? না জানু কি বলো? তোমারে আমি অনেক ভালবাসি। তাই তো তোমারে নিয়া সবসময় আমার মনের মধ্যে লিখি। ঐসব পোস্টে লিখিনা।

সত্যি তো বলতেছো? এইবার লাইনে আইছে।হুম জানু সত্যি বলতেছি। সাদিয়ার মেসেজ রিপ্লে দিতে দিতে দেখি কলেজ গেইট দিয়ে মিষ্টি ঢুকতেছে।সাদিয়াকে বললাম। ঠিকাছে জানু এখন রাখি।তোমাকে বিকাল বেলা ফোন দিমুনে। সাদিয়া আমার কথায় সম্মতি দিলো। সাদিয়ারে বাদ দিয়া মিষ্টির সামনে গিয়া ফুটাস করে দাঁড়াইলাম।আমারে দেইখাই মিষ্টি যেনো আকাশ থাইকা পড়লো।বুকে ফুফু দিতে দিতে বললো

তোমারে আমি সেই কখন থেকে খু্ঁজতেছি।কোথায় ছিলা তুমি? তুমি জানো না মিষ্টি তোমারে ছাড়া বুকটা আমার খালি খালি লাগে। হইছে আর ডং কইরো না।আমি সব জানি। হুম জানো! কিন্তু জানোনা তোমারে কত ভালবাসি আমি।তোমারে না পাইয়া আমার বুকের ভিতরে বিরহ সৃষ্টি হইছিলো।তাই তো আমি কলেজের বারান্দায় মন খারাপ করে বসে আছিলাম।তোমারে দেইখা পরাডা ফিরা আইলো।তাই এহন তোমার সামনে আসলাম।

আহারে আমার বাবুতা।আর তোমার বিরহে থাকতে হবেনা। চলো দু’জনে বসে গল্প করি। মিষ্টির সাথে প্রায় ৩০ গল্প করে বিদায় দিলাম। এদিকে পকেটে থেকে ফোন বের করে দেখি ১০ মিসড কল বাই Unknown Number।অবাক হওয়ারই কথা ; যে আননোন নাম্বার থেকে এত কল কেনো? আসলে এটা আননোন নাম্বার না।এটা হচ্ছে আমার গার্লফ্রেন্ড ইকরার নাম্বার।যা Unknown Number লিখে সেভ করে রাখছি।যেনো কেউ বুঝতে না পারে।

যাই কোন ইকরা হচ্ছে আমার সেই গার্লফ্রেন্ড যে আমাকে অনেক বেশি ভালবাসে।তার দুনিয়াবি বলতে আমাকে বুৃঝে।খুবই আবেগী আর মায়াবী চেহারা মেয়েটা।মাঝে মাঝে মনে হয়। আমার মত একটা ছেলেকে কেমনে করে এই মেয়েটা ভালবাসে। মাঝে মাঝে আমারি আফসোস হয়।আবার নিজেকে নিজে বলি “তামিম তোর ভাগ্যটা খুব ভালো রে ” না হলে কি আর এই মেয়ে তোকে ভালবাসে। ইকরাকে ফোন দিলাম।ফোন রিসিভ করেই নাক টানার শব্দ শুনতে পেলাম।বুঝতে বাকি রইলো না মেয়েটা কাঁদতেছে। আমি বললাম ইকরা মাই ডার্লিং তুমি কাঁদছো কেনো??

ঐ পাশে কোন শব্দ নেই।শুধু নাক টানার শব্দ।তাই আবার বললাম ইকরা ডার্লিং তুমি কাঁদছো কেনো? আপনি আমাকে ডার্লিং বলবেন না। কেনো ডাকবোনা তুমি আমার একমাত্র ডার্লিং।যদি তোমাকে ডার্লিং না ডাকতে পারি।তাহলে কাকে ডাকবো বলো। না আপনি আমাকে ডার্লিং ডাকবেন না।আপনি শুধু আমাকে কাঁদান। তুমি এ কথা বলতে পারলা? (আমিও একটু মোড নিলাম) তোমাকে আমি কাঁদাতে পারি বলো? তোমাকে কত ভালবাসি আমি!

ভালবাসেন না ছাই! কতগুলা ফোন দিলাম।আপনি একটা ফোন রিসিভ করলেন না।আপনি জানেন না ;আপনার সাথে কথা না বলতে পারলে আমি ভাল থাকতে পারিনা! আমার কাঁন্না পায়।আপনি কেনো এমন করেন? সরি মাই ডেয়ার ডার্লিং।আসলে তোমাকে কষ্ট পেলে আমারো অনেক কষ্ট হয়।আসলে বন্ধু রাকিবের গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝামেলা হইছে।সেই ঝামেলা মিটাতে গিয়ে তুমি যে ফোন দিছো খেয়াল করিনি।ফোনটাও সাইলেন্ড ছিল।নেক্সড আর এমন হবেনা।কান ধরলাম।

মনে থাকে যেনো! হুম খুব মনে থাকবে।এবার একটা হাসি দাও। পারবো না। এইযে তুমি হাসলে।আচ্ছা এখন রাখি ভালো থেকো। ইকরা আরো কিছুক্ষণ কথা বলতে চাইলো।এদিকে আমার আম্মিজান ফোন দিয়া মোবাইল কাপায়া ফেলতেছে।ইকরার ফোন কেটে আম্মিজানকে ফোন দিলাম। আম্মিজান ফোনটা রিসিভ করেই বললো

– বাপজান আপনি কোথায়? বাহ আম্মিজান এত সুন্দরকরে বাপজান বলতেছে।কুচতো গরবর হে। আমিও বললাম এইতো আম্মিজান রাস্তায়।

– তা বাপজান তুমি রাস্তায় কি করো? কিছুনা আম্মিজান
– বাপজান আপনারে যে সেমাই কিনে আনার জন্যে আর গরুর গোস্ত কিনে আনার জন্যে টাকা দিছিলাম।তো আমার সেমাই আর গরুর গোস্ত নিয়া কি বাড়িতে আসবেন?

কাম সাড়ছে।টাকা দিয়া তো আমি ফাবিয়ারে নিয়া রেস্টুরেন্ট খাবার খায়া ফেলছি।ওহ ফাবিয়ার কথা বলা হয়নি।ফাবিয়া আমার অন ইজ অনলি ক্রাশ।বুকের ব্যথাটা বেড়ে যায় ফাবিয়া দূরে থাকলে।কাছে থাকলে এত খুশি লাগি।কিন্তু লাশির বেটি (পড়ুন শালির বেটি) শুধু খাই খাই করে।আজকেও দেখা হবার পর বলে বিরিয়ানি খাওয়াইতে।ফাবিয়ারে বিরিয়ানি খাওয়া আম্মার টাকা কেল্লাফাতে হয়েগেছে। কি হলে কথা বলছেন না কেনো বাপজান। বুঝলাম আজকে আমার রক্ষা নাই।আম্মারে কইলাম তুমি একটু ওয়েট করো।আমি এক্ষুনি নিয়া আইতাছি তোমার সেমাই আর গরুর গোস্ত।

আম্মার ফোন কাইটা ফোন দিলাম আমার টাকার গাছ মিতুকে।নামটা যত সুন্দর মনটা তার আর সুন্দর। একদম সাদা ফকফকা।তার মাঝে আমি বলতে দিওয়ানা।বড়লোক বাবার মেয়ে।টাকা পয়সার অভাব নাই।কি জন্যে যে আমার মত ফকিরকে ভালবাসে আল্লাহ জানে।আমার টাকা পয়সার অভাব হলেই মিতুকে বলি।টাকা নেওয়ার সময় বলি সুদ করে দিবো।কিন্তু এখন পর্যন্ত দিয়েই যাচ্ছে সুদ করতে পারছিনা।ভাবছি একবারে বাসর রাতে মহরানা দিয়ে সুদ করে দিবো।মিতুকে ফোন দিলাম।

কেমন আছো মিতু? মনে পড়লো তাহলে? কি বলো।তোমাকে তো সবসময় মনে পড়ে আমার।শুধু তুমি বুঝো না। সেই সকালের পর আর ফোন দাওনি। আসলে ফোনে ব্যালেন্স নাই।বন্ধু নাহিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে লোড করে তোমাকে ফোন দিলাম। হুম বুঝলাম।তা কেমন আছো তুমি? আগে তুমি বলো কেমন আছো? ভালো আছি। আমি ভাল নেই! কেনো কি হলো আবার তোমার!

আর বল না।আম্মা ১ হাজার টাকা দিয়েছিলো গোস্ত আর সেমাই নিতে।আম্মার বোন আসবে।টাকা পকেটে নিয়া আড্ডা দিচ্ছিলাম। তারপর রুবেল্লা আছেনা, রুবেল, আশিক, সিয়াম এরা মিলে টাকা নিয়া নেই। বলে পার্টি করবে।আমি চেয়েও পেলাম না। এখন কেমন করে যে আম্মার জন্যে গোস্ত আর সেমাই নিবো ভেবে পাচ্ছিনা। এত ভাবতে হবেনা।বুঝতে পেরেছি আমি।তুমি তোমার বিকাশ মেসেজ চেক করো। মিতুর কথামত মেসেজ চেক করলাম।দেখি ১৫০০শ টাকার নোটিফিকেশন আসছে।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত