স্বার্থপরতা ও স্বার্থকতা

স্বার্থপরতা ও স্বার্থকতা

মুন ভাইয়া,শিফা আপু আর তানজিম ভাইয়ার গল্পটাঃ-
..
তিনটা মানুষই ঢাকা ভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিল।মুন চৌধুরী আর তানজিম দুজন অনেক ভালো বন্ধু।জীবনে বন্ধুত্ত্বের সংজ্ঞা শুধু মুন আর তানজিমের থেকেই পাওয়া যায়।কেউ একজন আরেকজনকে ছাড়া থাকতে পারেনা।আর মুনের প্রেমীকা শিফা।দুজন দুজনকে খুব বেশিই ভালোবাসে।দারুণ বোঝে একে অপরকে।মুনের বাসা কুড়িগ্রাম শহরে।শিফার বাসা ঢাকাতেই।আর তানজিম এর বাসা দিনাজপুরে।
আচ্ছা চলুন গল্পটা তানজিম ভাইয়ার মুখেই শুনি…
মুন আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধু।ওর নামটা যেমন মুন চেহারাতেও চাঁদের মতো জ্যোছনা।আর পাঁচটা স্বাভাবিক মানুষের থেকে বেশি উচ্চতা।বাবরি দোলানো চুলগুলো দারুণ সিল্কি।আমার দেখা বাংলা সিনেমার সব নায়কদের থেকে উত্তম গঢ়নের।সম্পদের অভাব নেই।চৌধুরী পিতার একমাত্র সন্তান।বাবার অগাধ সম্পত্তির একমাত্র অংশীদার মুন।এটা ২০০৫ সাল হবে মুন আমাকে ওদের বাসায় নিয়ে যায় ঘুরতে।বিশাল এক রাজপ্রাসাদতুল্য বাড়ি।আমার মনে হয়েছিল বাড়ির ভিতরের পুরো এলাকা জুড়ে সুন্দর একটা ফুটবল টিমের অনায়াসে খেলা সম্ভব হবে।আর ওর বাবা মায়ের আচরণে আর আদর যত্নে যে কারো মাতৃ-পিতৃ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে যাবে।
,
মুন প্রেম করতো ভার্সিটির বড় বোন শিফা আপুর সাথে।মার্শাআল্লাহ্ ভার্সিটির টপ সুন্দরী আর মেধায় আরো টপার ছিলো আপু।শিফা আপু ছিলো মধ্যবিত্ত্ব পরিবারের।নিজে টিউশনি করাতো।কিন্তু মুন তার জন্য আলোর দূত হয়ে আসে।
ভার্সিটি জীবনের সব খরচ বহন করতে থাকে মুন।চলে রাত দিন প্রেম।অর্থ যেখানে সীমাহীন অন্ততো চাওয়া পাওয়ার প্রেম সেখানে দীর্ঘ।রাতদিন কথা বলতো মুন।তখনকার সবচেয়ে দামী ফোন ছিলো ওদের হাতে।ভার্সিটির এমন কেউ ছিলো না যে তাদের সম্পর্কের কথা জানে না।ঢাকার বুকে এমন কোনো পার্ক নেই যে তাদের দুজনের পদচিহ্ন পড়েনি।
,
মাঝে মাঝে মুন সেমিষ্টার ফি বাবদ ডাবল টাকা নিতো বাসা থেকে।আর ফূর্তি করতো।এভাবে পেরিয়ে যায় তিনটে বছর।তাদের সম্পর্কের গাঢ়ত্ব তখন টাকায়।শিফা আপু সব সময় এটা ওটা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র মুনের কাছে থেকে চাইতো।মুনকে বলার সময়টা তাতে সামনে এনে হাজির করতো যা চাইতো।যেখানে শুধু প্রণয়ের বাকি সেখানে এমনটা স্বাভাবিক।
,
মুন শিফা আপুকে এক বছর ড্রপ দিয়ে একসাথে পড়ার জন্য বলে।কিন্তু শিফা আপু তা এড়িয়ে যেতে থাকে।আপুর ভার্সিটি জীবন শেষ হয়।সময়ের সাথে মুনের সাথে ধীরে ধীরে যোগাযোগ করা কমাতে থাকে।মুন সব সময় ফোন দিতে থাকে।কিন্তু অপাশ থেকে নানা অজুহাত আসে ব্যস্ততার। পরিপূর্ণ মুন তখন ছন্নছাড়া। সিগারেট ধীরে ধীরে জীবনের নিত্যসঙ্গী হতে থাকে।ধোঁয়াশা জীবনে ধোঁয়ার ভেতরে থাকাটা শ্রেয়।ফার্মগেটের ঐ দুইতলা ফ্লাটের ছাদে নিশিরাত কাটতে থাকে।কয়েক প্যাকেট সিগারেট আর শীতল বাতাসে মুনের চাঁদ বদন অঙ্গে কলঙ্ক জড়ো হতে থাকে।হারিয়ে যেতে থাকে রূপের দ্যুতি। দিনের আলোয় সিগারেটের ধোঁয়া আর ক্যারাম খেলায় পার করে সময়।পুরো একটা বিচ্ছিন্ন জীবন।আমি তানজিম বন্ধু হয়ে বোঝাতে পারিনি।
,
যখন বলতাম মুন ভুলে যা ওসব।মুন বলতো আরে তানজিম তুই বল আমার কোনদিকে কমতি? আর কি চাই রে মেয়েটার?
সবকিছুই তো দিয়ে দিয়েছি ওকে।ওর কোনোকিছুতে সামাণ্য কমতি রাখিনি।আর কি চায় রে ও?
কি চায়????
,
নিকোটিনের রাসায়নিকে জীবন যখন অতিষ্ঠতা থেকে মুক্তি না পায়।মুন তখনি মুখোমুখি হয় শিফা আপুর।বিয়ের প্রস্তাব দেয় শিফা আপুকে।কিন্তু সে প্রস্তাব প্রাত্যাখান করে।
হৃদয়ো পিঞ্জরের পোষা পাখিরে…
আমারে ছাড়িয়া গেলা কই…?
মুন সারাদিন ফ্লাটের ছেলেদের সাথে ক্যারাম খেলতো সিগারেট খেতো।আর রাতে একা একা কান্না করতো।মাঝে মাঝে হুহু করে কেঁদে উঠতো।সবাই চমকে যেতো।ধীরে ধীরে মুনের পাগলামী বাড়তে থাকে। আর তখনি একদিন খবর পাই শিফা আপু বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে নিয়োগ পেয়েছে।মুন লজ্জা-শরম ফেলে আবার বিয়ের প্রস্তাব দেয় শিফা আপুকে।
সেদিন মুনকে শিফা আপু বলেছিলো আমাকে পেতে হলে বিসিএস ক্যাডার হতে হবে আমার মতো।মুন কিছুই বলেনি সেদিন।মাথাটা নিচু করে চলে এসেছিলো।
মুন ফিরে এসে দুপুরে গোসল করে যহরের নামাজের জন্য আমাকে ডাক দেয়।আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রই ওর দিকে।যে কি না শুক্রবার জুম্মার দিনেও নামাজ বাদ দিয়ে ক্যারাম খেলে সে ডাকছে নামাজ পড়তে যাওয়ার জন্য। খুব বেশিই হাসি পেলো আমার।
ঠাট্টা করে বলেই ফেললাম মুন আজ কয় রাকাত নামাজ পড়বি ভাই বিশ না পঁচিশ?
কিছু না বলেই বেরিয়ে চলে গেলো।সারাদিন ঠিক মতো নামাজ পড়লো।মনে মনে ভাবছি।আগামীকাল সকালটা হলেই তো ওযুর কথাও ভুলে যাবি আর নামাজ!
রাতে ওর রুমে থাকলাম।কোনো সিগারেট খেলো না।রাত জেগে ক্যারাম খেলে।আজ তাও খেলতে গেলো না।
–এই তানজিম উঠ রে ফযরের আযান দিচ্ছে।অযু করে নে মসজিদে যাবো।
খুব বেশিই হাসি পেলো আমার।হাহাহা ব্যাটা স্বপ্ন দেখছিস দেখ আমাকে তুললি কি জন্য?
–ফযরের আযান দিচ্ছে রে শুন-
ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলাম ওমা,ঠিকিতো ফযরের সময় হয়ে গেছে।ওঠে দুজনে মসজিদে গেলাম।নামাজ শেষ করে ওকে খুঁজছি।মসজিদের বাইরেও দাড়িয়ে নেই।এমন তো হয়না!আমাকে ছেড়ে যাবার কথা না।
বাসায় এসে দেখি ও রুমে বসে খাতায় রুটিন সাজাচ্ছে।বই নাই অথচো পড়ার রুটিনে বইয়ের নাম লিখছে।
যা ইচ্ছে করুক।প্রিয়জনকে ভূলার জন্য এসব পাগলামী মন্দ না।এসব করে যদি ওর মনে শান্তি মিলে আমি তাতেই খুশি।
,
সকাল নয়টার দিক বেরিয়ে পড়লো।আমি জিজ্ঞেস করলাম কই যাবি?
বললো বাংলাবাজার।
দুপুর হতে না হতেই একগাদা বই নিয়ে হাজির।আমিতো অবাক!
এ কি মুন? এতো বই কি করবি?
সব বইগুলো উল্টেপাল্টে দেখলাম।সব বিসিএস প্রস্তুতির গাইড।আর বুঝতে দেরি হলো না যে এবার সত্যি সত্যি এ পাগল হইছে।
মজা নেওয়ার জন্য বলেই ফেললাম মুন আমাকেও কিছু বই ধার দিস দস্ত তোর মতো বিদ্যাপতি হবো।
ও আমাকে বললো তানজিম আজ থেকে আমাকে একদম বিরক্ত করবি না।আর আমার রুমের দরজায় যেনো কেউ অযোথা ধাক্কা না দেয়।কথাগুলো মনে রাখিস।
আমি মনে মনে ভাবছি এবার পড়ে ফাটাইছিস!বইগুলো সব আমাকেই পড়তে হবে জানি।ভালোই হলো অতিরিক্ত কিছু টাকা বাঁচলো আমার।খুশি খুশি লাগছে হালকা।
,
মুনের রুমের পাশেই আমার রুম।রাতে দেখলাম পড়ছে।রাত তখন ১টা বাজে। আমি মনে করলাম ঘুমিয়ে পড়বে কিছুক্ষণ পর।ভোর ৪টার দিক ঘুম ভাঙলো।তখন দেখছি ওর রুমে আলো জ্বলছে।কয়দিন পড়বি এমন করে? একদিনেই শেষ।
,
আজ দুপুরে আমাকে নামাজের জন্য ডাকলো না।একাই নামাজে গেলো ফিরে এসে খেয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।আমিতো পুরা অবাক!যে ছেলে সারাদিন ক্যারাম খেলা নিয়ে ব্যস্ত ওর এতো পরিবর্তন।ফোন সব সময় বন্ধ রাখে।আর ফোনে মিসকল এলার্ড চালু করা যখন ফোন অন করে দেখে কে কে ফোন দিছিলো,তাদের কল করে কথা বলতো।আর যদি বলতো ফোন কেনো বন্ধ রাখিস রে? উত্তর–ফোনটা না একটু সমস্যা হইছে।
তো নতুন ফোন নে?
নিবো রে।
এভাবে একদিন দুইদিন না পুরো ছয়টা মাস মুন আগের পৃথিবী থেকে দূরে ছিলো।
ছয়মাস পর আমাকে একদিন ডাকলো।বললো তানজিম আমাকে না কি বিসিএস ক্যাডার হতে হবে রে মেয়েটাকে বিয়ে করার জন্য।এবার দেখি কে ঠেকায় বিসিএস থেকে। কোথা থেকে প্রশ্ন করবে রে।কোন বইয়ের কোন পৃষ্ঠা থেকে প্রশ্ন করে বিসিএস এ যে আমি বিসিএস পাবোনা।প্রশ্ন কর তো এই রুমে যতো বই আছে সবগুলো থেকে প্রশ্ন কর।দেখি আমি বইয়ের পৃষ্ঠাসহ বলতে পারি কি না?
আমি তো পুরা টাস্কি!
কি বলে এই ছেলে ছয় মাসে এতোগুলো বইয়ের পৃষ্ঠাসহ মুখস্ত!আধা পাগল আর নেই।এবার পুরো মাথাটাই গেছে।
পৃথিবীর মানচিত্রটা আমার সামনের দেওয়ালে ঝুলিয়ে দিয়ে বলছে,তানজিম আমি উল্টা ঘুরছি।তুই মানচিত্র থেকে প্রশ্ন কর?
আমারও একটু কৌতুহল বাড়লো,দেখি একটু চেষ্টা করে।
,
একটার পর একটা দেশের রাজধানীর নাম,বিমানবন্দর,বড় শহর,কোন দেশের পাশে অবস্থিতো?বিশেষ করে যেসব ছোট্ট দেশ মানচিত্রে ঠিক মতো খুঁজে পাওয়া যায়না।দেখার জন্য ম্যাগনিফাইসিং গ্লাস ব্যবহার করতে হয় ঐসব দেশের আশেপাশের বিষয় বস্তু থেকে প্রশ্ন করেছি।উত্তরে নির্ভূল সব তথ্য দিয়েই চলেছে মুন।
ভাবলাম ছয় মাস বসে বসে শুধু মানচিত্রটা মুখস্ত করছে।
বই থেকে প্রশ্ন করতে থাকলাম।এমন কোনো বই ছিলো না যার কোণ থেকে প্রশ্ন করিনি!নির্ভূল উত্তর সাথে পৃষ্ঠাসহ বলে দিয়েছে।
আমি তানজিম ভার্সিটি ভর্তির শুরু থেকে প্রিপারেশন নিচ্ছিলাম বিসিএস এর জন্য।কিন্তু আমার মাথায় এমন কোনো কঠিন প্রশ্ন পাইনি যে মুন কে আটকাই।সেদিন মনে হয়েছিল নেশার প্রতিফলন কোথায়।ত্যাগ আর পরিশ্রমের শক্তি কতোটা কঠিন জিনিসকে বসে আনে।
সামনে বিসিএস পরিক্ষাও চলে এলো।মুন আবার নিয়মিতভাবে ক্যারাম খেলা শুরু করলো।তবে নামাজের প্রতি ছিলো বেজায় কঠোর।নামাজ যেনো তার জন্য মেধা ধরে রাখার শিকল।
,
দুজনে বিসিএস দিলাম।ও দুটো ক্যাটাগরিতে পরীক্ষা দিলো।একটা শিক্ষা বিষয়ক অন্যটা আইনে।
পরিক্ষা শেষে বাসায় এসে বললো তানজিম দুটোতেই টিকে যাবো মনে হয়।
কিছুদিন পর রেসাল্ট হলো।সত্যি সত্যি অবাক হওয়ার মতো বিষয় মুন দুটো ক্যাটাগরিতে টিকে গেছে।আমার ঐবার বিসিএস হয়নি।
মুন আমাকে বলছে তানজিম কোনটা বেশি ভালো হবে রে? শিক্ষা অফিসার নাকি ম্যাজিস্ট্রেট?
আচ্ছা শিফা যেহেতু শিক্ষা অফিসার আমিও সেটাতেই ভাইভা দেই কি বলিস?
আমি আগ্রহ প্রকাশ করি।তৎক্ষণাত বলে,না রে আমি ম্যাজিস্ট্রেট হবো।নিজেস্ব গাড়ি হবে।আর সম্মানও অনেক হবে কি বলিস।
আমার আর কি তোর যে টা ভালো লাগে।
,
কিছুদিন পর শিফা আপুর ফোন।মুন ফোন রিসিপ করে।
–হ্যালো কে বলছেন?
–আমি–
-আমি টা কে?
–আমি শিফা।কেমন আছো?
ফোনটা কেটে দেয় মুন।হয়তো শিফা আপু এতোদিন লুকিয়ে খোঁজ খবর নিতো মুনের।নয়তো পত্রিকার পাতায় মুনের এ সুসংবাদ পেয়েছে।যেখানেই পাক এটা স্বার্থপরতা।
এভাবে নিয়মিতো ফোন করতে থাকে মুনকে।মুন নানা অজুহাতে তাকে ব্যস্ততা দেখায়।পরে পরে ভীষণ গালি দিতে শুরু করে।তাও শিফা আপু ফোন দিতে থাকে।বাধ্য হয়ে মুন সিমটা চেঞ্জ করে ফেলে।
,
এরমধ্যে মুনের ভাইভা শেষ।এখন ফলাফলের অপেক্ষায়।
একদিন হঠাৎ করে শিফা আপু বাসায় এসে হাজির।কিভাবে যে কার কাছে ঠিকানা নিছে কে জানে।দুপুরের পর।মুন দরজা বন্ধ করে তখন ঘুমোচ্ছে।
হাজার হলেও ভার্সিটির বড় আপু আবার শিক্ষা অফিসার তাই সবাই আপুকে সম্মান করি।আপু মুনকে ডাকতে বলে।
এক ছোটো ভাই মুনকে ডাকতে যায় কিন্তু মুন দরজা খুলে না।শেষে আপু নিজেই দরজা ধাক্কা দেয়।আপু বলে আমি শিফা দরজা খুলো কথা আছে তোমার সাথে।
মুন ভেতর থেকে উত্তর জানায়,এখন ঘুমানোর সময় বিরক্ত করবেন না।তাও আপু বার বার ডাকতে থাকে।মুনের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে সেদিন শিফা আপু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছিলো।শেষে যাওয়ার আগে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে যায়।
,
মুনকে বুঝাই আরে ভাবির সাথে এমন করিসনা।
-এই ব্যাটা কে তোর ভাবি?আমি বিয়ে করছি?যেদিন বিয়ে করবো সেদিন ভাবির কথা বলিস।
–যাইহোক এক সময় তো ভালোবেসেছিলি নাকি?
-“একসময়টা” না অনেক দামী।ওটার মূল্য সবাই বোঝেনা তানজিম।
আমি আর কিছুই বলতে পারিনি।
,
ভাইভার রেসাল্ট দেওয়া হলো।মুন ম্যাজিস্ট্রেট পদে টিকেও গেলো।এখন শুধু নিয়োগ এর অপেক্ষা।এমন সময় শিফা আপু এক ভদ্রলোককে সঙ্গে নিয়ে হাজির।পরে পরিচয় করানোর সময় জানতে পারি ভদ্রলোক শিফা আপুর বাবা।
ডাকা হলো মুনকে।শিফা আপুর বাবা সরাসরি বলছে,দেখো বাবা শিফা অবুঝ,ও না বুঝে ভুল করছে।ওকে ক্ষমা করে দাও।আর আমি নিজে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি।
মুন আংকেলকে একটা চেয়ার এগিয়ে দিলেন বসার জন্য।
তারপর বললেন,আংকেল শিফাকে আমি কোনোদিনও বিয়ে করবো না।আর আংকেল আমি ম্যাজিস্ট্রেট,ও শিক্ষা অফিসার।কেমন বেমানান তাই না?
আংকেল দেখুন আমি আপনি মুরুব্বী। আপনাকে অপমান করার রেশ আমার নেই,তাই বলছি শিফাকে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়েন।আর আমি যেহেতু ম্যাজিস্ট্রেট তো ম্যাজিস্ট্রেট কোনো মেয়ে খুঁজেই বিয়ে করবো।
শিফা আপু হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে।সে কি কান্না।আংকেল নিজের মেয়ের কান্নায় নিজেকে সামলাতে পারে না!
আর আমার সামনে একটা শিক্ষা অফিসারের অসোহায় কান্না দেখে নিজের অজান্তে গাল বেঁয়ে জল পড়ে।
..
অতঃপর দু টি মানুষ আলাদা আলাদা ভাবে নতুন করে জীবন শুরু করে।
..
[আসলে সম্পর্ক ক্যারিয়ার দেখে হয়না।দু টো মনের পারস্পারিক মিলনের ফলে হয়।আমরা যেটা আশা করি কয়েকদিন পর সেটা অন্যকারো উপার্জিত বস্তু।আর মানুষকে সৃষ্টিকর্তা অসীম ক্ষমতা দিয়েছেন যার ফল পরিশ্রমের দ্বারা দ্রুত উপলব্ধি করা যায়]
শিফা আপু হয়তো ভালো নেই,কিন্তু সেটা ভাগ্যের দোষে না।
মুন ভাইয়া হয়তো অনেক সুখে আছে,সেটা শুধু মাত্র ত্যাগ আর পরিশ্রমের ফলে।

ভালো থাকুক সবাই সব সময়।
সুখে থাকুক ভালোবাসার মানুষগুলো।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত