সকাল ১০ টা, খুব আরামে ঘুমুচ্ছিলাম কিন্তু বন্ধুজাতি নামক যে পদার্থ আছে এদের আবার আরাম সহ্য হয় না।।তো আমার আরামটা যে তাদের সহ্য হবে সেই আশা করাটাও রীতিমতো নিরাশা।।তাই এই সক্কাল বেলা ফোনের বাজখাই রিংটোনে চোখ মেলে তাকাতে হলো আমায়।।বিরক্ত নিয়ে ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়েই দেখি বেস্টুর কল।।নামটা দেখে বিরক্তিটা মুহূর্তেই কয়েক ধাপ বেড়ে গেলো। ।ইচ্ছে করছে ফোনের মধ্যে ডুকে হারামিটাকে কয়েকটা চড় থাপড়া দিয়ে আসি…বিরক্তিকর।।
হ্যা বল,,কি বলবি? দোস্ত??(চেঁচিয়ে) কি হয়েছে? দোস্ত?? থাপ্পর চিনোস??এক থাপ্পরে গাল ফাটায় ফেলবো।দোস্ত দোস্ত না করে ঝেরে কাঁশ।কাহিনী কি? দোস্ত,, জানিস কি হয়ছে?? তুই বলবি না আমি ফোন রাখবো?? আরে রেগে জানিস কেন?? না রাগবো কেন?তোর মধুর সুর শুনে নাচতে ইচ্ছে করছে(তীক্ষ্ণ গলায়) তো নাচ না,,,আমি মানা করছি নাকি?? এই তুই ফোন রাখ,,,শালা হারামি। আরে আরে শুন শুন,,,জানিস ওই ম্যাজিস্টেট আমার জন্য ভেলেন্টাইন গিফ্ট পাঠায়ছে,,,ভাবা যায়?? ভাবা যায় কি না সেটা বসে বসে চিন্তা কর। আমি রাখছি।।খবরদার সারাদিনে কল করে মাথা খাবি তো খুন করবো।।
ওকে কিছু বলতে না দিতেই ফোনটা কেঁটে দিলাম।।এই এক প্যারাময় মাইয়া।একটা বিষয় মাথায় ঢুকলে ওটা রিপিটেডলি চলতে থাকে ওর মাথায়।।এমনি মেজাজ আমার চারশো বিশ তার উপর আসছে গাঁজাখোরি গল্প শোনাতে।।সেই রাত বারটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত বসে ছিলাম বয়ফ্রেন্ড নামক মানুষটার একটা ম্যাসেজের আশায়।এটলিস্ট একটা উইশ তো করবে,,হাজার হলেও আজ ভ্যালেন্টাইস ডে।।কোথাকার কোন ম্যাজিস্ট্রেট আমার বেস্টুকে সকাল না হতেই গিফ্ট পাঠিয়ে চলেছে আর উনার কোনো খবর নাই।।কেমনডা লাগে??তাই বিরক্ত হয়ে শেষ মেশ আমিই ফোন দিলাম।।
তিন তিনটা বার রিং হওয়ার পর মহারাজের ফোন ধরার সুযোগ হলো।।ফোনটা ধরেই বাজখাঁই গলায় বলে উঠলেন,, কি সমস্যা তোর?? কি সমস্যা মানে??কই তুমি? কই আমি মানে??এতো সকালে একটা ব্যাচেলার ছেলেকে তুই ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করছিস তোর লজ্জা করছে না?আবার জিজ্ঞেস করছিস আমি কই?? এখানে লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু আমি খুঁজে পাচ্ছি না শুভ্র ভাই,,সো লজ্জা পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।।আর এখন সকাল??দুপুর হতে চললো,, দশটা বেজে গেছে অলরেডি(রাগী গলায়) দশটা বাজছে তো তোর সমস্যা কি??ব্যাচেলারদের দশটা সময়ও ভোর চারটা।।আর শুক্রবার হলে তো কথাই নেই।। ফাউল কথা বাদ দিয়ে বলো তো তুমি আছোটা কই??
কই আবার??ভার্সিটির হলের যে সিটটা আমার জন্য বরাদ্দ তার উপর কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে ছিলাম।।কিন্তু তুই আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়েছিস। ফাজিল মেয়ে।(দমক দিয়ে) তোমার কাছে আমার থেকে ঘুম বড় হলো, শুভ্র ভাই? অবশ্যই বড়।আরে তুই থাকিস সুদূর ময়মনসিংহ।। এই নিঃসঙ্গ চট্টগ্রামে এই ঘুমই আমার সাথী,,, যা এবার ফুট।। কিহহহ এতো অপমান,,,ফাইন তুমি থাকো তোমার ঘুম নিয়ে,, অসহ্য এই এই কখন থেকে তুমি তুমি করছিস।ভুলে গেছিস আমি তোর থেকে ছয় বছরের বড়।আপনি বল কিছু না বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।রাগে মাথা ফেঁটে যাচ্ছে। ঠিক এই সময়ই আপু একটা বাসন্তী রঙের শাড়ি নিয়ে খুশিতে গদগদ হয়ে বলে উঠলো,, এই রোদ.?শাড়িটাতে আমায় কেমন মানাবে রে?? ভালো…কিন্তু কেনো? তোর ভাইয়ার সাথে ঘুরতে যাবো ভালোবাসা দিবস বলে কথা।
ভাইয়া ময়মনসিংহ কখন এলো,?(অবাক হয়ে) কাল রাতে এসেছে।।আমি যাই রেডি হই এবার রাগটা আরো মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো,,মানুষের বয়ফ্রেন্ড ঢাকা থেকে চলে আসছে আর এই বলদটা একটা উইশ পর্যন্ত করতে পারছেন না।।এতো ঘুম উনার।।ইচ্ছে করছে উনার বিছানায় এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে আসি যত্তোসব।।এতো মেজাজ খারাপের মধ্যে আবারো ফোনটা বেজে উঠলো…ভেবেছিলাম আবারো আমার তাড় ছিঁড়া বেস্টু কিন্তু না প্লাবন ফোন দিয়েছে।।অনিচ্ছা সত্যেও ফোনটা ধরলাম.. কি সমস্যা??(বিরক্তি নিয়ে) বহুত সমস্যা দোস্ত,, সমস্যা নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে মর,, আমাকে ফোন দিছিস কেন?? আরে দোস্ত,,,গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরতে যাবো কি গিফ্ট দিবো বুঝতাছি না।।কিছু সাজেস্ট কর তো। আমার মাথা গিফ্ট কর ডাফার তোর মাথা গিফ্ট করলে তো শুভ্র ভাই আমার মাথা কেটে ফেলবে রে.. শালা,,মর তুই শুভ্র ভাইয়ের চামচা।।
ফোনটা কেঁটে মুখ ফুলিয়ে বসে আছি।।আপুও দেখলাম নাচতে নাচতে সেজেগুজে বেরিয়ে গেলো।।আমি বুঝতে পারছি না, আমি কার ভারা ভাতে ছাই দিছি যার জন্য শুভ্র ভাইয়ের মতো এমন এক আনরোমান্টিক অপদার্থ বিএফ জুটছে কপালে।।..সারাটাদিন এভাবেই কেটে গেলো একটা বার ফোনটাও দেই নি সে,কে জানে নতুন কাউকে পেয়েছে কিনা।কি মনে করে বিকেলের দিকে একা একাই সাজতে বসে গেলাম।নীল শাড়ি,,হাত ভরা নীল চুরি,,চোখে ঘন কাজল,,কপালে ছোট্ট টিপ, লম্বাচুলগুলো খোলে দিয়ে পায়ের পায়েলের রুনুঝুনু শব্দ তুলে হাঁটা দিলাম ছাঁদের দিকে।।ছাদের এক কোনায় আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি আর ভাবছি আজ থেকে দুইবছর আগের কথা।।আজকের এই দিনটাতেই শুভ্র ভাই প্রোপোজ করেছিলো আমায়।।
কি অদ্ভুত ছিলো সব বই পড়ছিলাম হঠাৎই ফোনটা বেজে উঠলো।।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ১১ টা বেজে ৫৫ মিনিট।এতো রাতে শুভ্র ভাইয়ার ফোন দেখে অবাক হলাম।অবাকের পালা শেষ করে ফোনটা কানে নিয়ে সালাম দিয়েই বললাম,, শুভ্র ভাই এতো রাতে? ওয়ালাইকুমুস সালাম,,নিচে আয়। মানে??(অবাক হয়ে) মানে হলো।।তোরা যে দু’ তলায় থাকিস।।তার সিঁড়ি বেয়ে তর তর করে নিচে নেমে আয়।।আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। মানে কি?এতো রাতে তুমি রাস্তায় কি করো?? মশাদের সাথে পিকনিক করি,,ডাফার।।এতো কথা বলিস কেন??নিজে নামতে বলছি নিচে নাম ব্যস আমি পারবো না।।এতো রাতে নিচে ইম্পসিবল। সবই পসিবল।।দুই মিনিটের মধ্যে নিচে আয়,, পারবো না। তুই পারবি,,,তোর বাপসহ পারবে তাহলে বাবাকেই বলো,, রাখছি খবরদার রোদ,,,দুইমিনিটের মধ্যে নিচে না নামলে তোর অবস্থা যে আমি কি করবো,,তুই চিন্তাও করতে পারবি না।
কথাটা বলেই ফোনটা কেঁটে দিলো শুভ্র ভাই।।লও ঠেলা,,শুভ্র ভাইকে আমি যথেষ্ট ভয় পাই,,আম্মুকে তারচেয়েও বেশি ভয় পাই।।তবুও ভয় ভয় পায়ে আম্মুর রুমে উঁকি দিলাম,,আম্মু এখনো ঘুমায় নি।।কি করবো এখন?অনেক ভেবে আম্মুকে বললাম,,নিচ তলার মাহিমা আপুর কাছ থেকে ক্যালকুলেটার আনতে যাচ্ছি আমারটা কাজ করছে না।।আম্মু কিছুক্ষণ আমার দিকে নিরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে নিজের কাজে মন দিলেন।।আমিও দোয়া দুরুদ পড়ে বেরিয়ে এলাম রাস্তায়।
সোডিয়ামের আলোতে স্পষ্টই দেখতে পেলাম এলোমেলো চুলে,, একরাশ ক্লান্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শুভ্র ভাই।।গায়ে ব্রাউন টি-শার্ট,,একটা ব্ল্যাক জ্যাকেট,,ব্লু জিন্স,,কেটস আর ঘাড়ে একটা ব্যাগ।।আমাকে দেখেই ক্লান্তিমাখা হাসি দিয়েই বলে উঠলেন,, এসেছিস?? হুম,,এখানে কোনো ডেকেছো??বাসায় চলো।। নাহ,,এতো রাতে বাসায় গেলে ফুপি সন্দেহ করবে। কেনো?? তুই বুঝবি না হাদা,, কথাটা বলেই একগুচ্ছ টকটকে লাল গোলাপ বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে।।।কোনো ফর্মালিটি না করেই বলে উঠলেন,,, ফুলগুলো হাতে নে।।তোর জন্য।।খবরদার রোদ ছুড়ে ফেলবি না বা এটা বলবি না যে নিবি না।।নিজের টিউশনির টাকায় কিনেছি,,টাকার মায়া বড় মায়ারে পিচ্চি,,সো ছুড়াছুঁড়ি করবি তো এক চড়।
কিন্তু এগুলো কেন??(কনফিউশড হয়ে) দেখ রোদ,,,তুই আমার দিকে ভাই ভাই নজরে তাকালেও আমি কিন্তু তোর দিকে ওলওয়েজ প্রেম প্রেম নজরেই তাকাই।।বুঝছিস??বুঝিস নি?? আমি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালাম যে বুঝি নি।।উনি চরম বিরক্তি নিয়ে আমার হাতে একটা উপন্যাসের বই গুঁজে দিয়ে বলে উঠলেন,,, তোর বুঝা লাগবে না।।এখন উত্তর দক্ষিণ না তাকিয়ে সোজা রুমে যা।। কিন্তু?? দেখ রোদ,,পুরো আট ঘন্টা জার্নি করে আসছি।।এখন বাসায় গিয়ে রেস্ট নিবো কাল আবারো বেক করতে হবে।। সো কাহিনী না করে যা এখান থেকে আমিও আর কিছু না বলে ঘুরে দাঁড়ালাম।।দুই কদম ফেলতেই পিছে থেকে ডাক পড়লো,, রোদ??
হুহ(পিছু ফিরে) এদিকে আয় আমি উনার কাছে আসতেই নিচে বসে আমার পায়ের দিকে হাত বাড়ালেন আমি ওমনি লাফিয়ে উঠলাম,”,করেন কি শুভ্র ভাই??” তার উত্তরে বিরক্তিমাখা চাহনী দিয়ে বলে উঠলেন,,”এতো লাফাস কেন??চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক।।তোর পা কেটে নিয়ে যাবো না।” আমিও এবার চুপচাপ মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে রইলাম।।উনি আমার পায়ে একটা কিছু পড়িয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েই কানের কাছে ফিসফিস করে বলে উঠলেন,,”ভালোবাসি তোকে,, এটা বুঝতে এতোক্ষণ লাগে??” কথাটা শুনে দুই মিনিট হ্যাং মেরে দাঁড়িয়ে থেকে বোকার মতে বলে উঠলাম,,” তুমি কি আমায় প্রোপোজ করছো শুভ্র ভাই?”আমার কথাটা কানে যেতেই দিলেন এক ধমক।।সেদিন উনার এক ধমকে দৌড়ে পালিয়েছিলাম।।
কথাটা ভাবতেই মনের অজান্তেই হাসি ফুটে উঠলো ঠোঁটের কোনে।দুই বছর ঘুরে আজও ওই একইদিনে দাঁড়িয়ে আছি আমি।।তারিখটা যেমন সেইম ঠিক তেমনই আমিও আগের মতোই আছি।।শুধু বদলে যাওয়া বছরগুলোর মতো বদলে গেছে শুভ্র ভাই,,,হঠাৎই পায়ের শব্দে পিছে ফিরে তাকালাম।।নীল পাঞ্জাবী,, এলোমেলো চুল,,ক্লান্তি ভরা হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শুভ্র ভাই।। সেইদিনের মতো আজও ক্লান্ত সে।কেন জানি অবাক হলাম না,,মন বলছিলো উনি আসবেন।।উনি হাসি মুখে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে হাতে একগুচ্ছ লাল গোলাপ গুঁজে দিতে দিতে বলে উঠলেন,,, কি রে??শাড়ি পড়ে পেত্নী সেজে আছিস কেন??আমি পেত্নীদের দেখে ক্রাশ খাই না।।
উনার কথায় হেসে উঠলাম।।হাত দিয়ে উনার এলোমেলো চুলগুলো ঠিক করে দিতে দিতে বললাম,,, তো মশাই এতোক্ষণে?? আর বলিস না,,রাতে বাস মিস হয়ে গিয়েছিলো।।সকালে বাস পেলাম দশটায় আর এখানে আসতে আসতে পাঁচটা।। বাস থেকে নেমেই সোজা তোর কাছে।।ক্ষুধায় পেট জ্বলে গেল।। উইশ করো নি কেন??(মুখ কালো করে) উইশ করার কি আছে??তুই আমার জন্য ওলওয়েজ স্পেশাল।।স্পেসিফিক কোনো দিনে ভালোবাসা দেখাতে পারবো না। কথাটা বলেই নিচে বসে পড়লেন উনি।।।আমি অবাক হয়ে বললাম,,” নিচে বসলে কেনো?” আমার ইচ্ছে তোর কি?এই এই তুই নিচে বসতেছিস কেন?
আমার ইচ্ছে তোমার কি?(নিচে বসতে বসতে মুচকি হেসে) খুব পেকেছিস,, কথাটা বলেই আবারো আমার পায়ের দিকে হাত বাড়ালেন।।আমি পা সড়িয়ে নিতে গেলেই শক্ত করে চেপে ধরে রাগী চোখে তাকালেন আমার দিকে।।এবার আমি চুপ।।গালে হাত দিয়ে উনার পাগলামো দেখছি।।পকেট থেকে আলতার কৌটা বের করে খুব যত্ন করে লাগাচ্ছেন পায়ে।। এসব কি?? দেখছিস না??তোর এই গেটাপের সাথে আলতাটাই মিসিং ছিলো।এবার পার্ফেক্ট। কিভাবে জানলে শাড়ি পড়বো? তোকে তোর থেকেও বেশি জানি আমি।।
উনার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।।এই ছেলেটা আমায় হাজারবার নতুন নতুন পদ্ধতিতে মুগ্ধ করে চলেছে ক্রমাগত।।সবার বয়ফ্রেন্ডের মতো দামি দামি গিফ্ট কখনোই দেয় না সে।।কিন্তু প্রত্যেকবারই অদ্ভুত সব কাজ করে অসাধারন কিছু মোমেন্ট ক্রিয়েট করে সে।।এগুলোতেই যে প্রশান্তি!! হঠাৎই উনি বলে উঠলেন,,, তুই কাল থেকে দুই ঘন্টা করে রোদে দাঁড়িয়ে থাকবি।।এটা তোর হোমওয়ার্ক। বুঝলি? কিন্তু কোনো? (অবাক হয়ে) তুই ফরসা হয়ে যাচ্ছিস।।তোর উজ্জল শ্যাম রংটায় আমার চাই।।ফরসা হলে খুন করে ফেলবো।। এহহ,,,নিজে যে সাদা ভূত সেটা?? ওটা আমায় মানায়,,আর এটা তোকে।।আমি এই তোকেটাকেই চাই সারাজীবন ,,উইথআউট এনি চেঞ্জেস।।এই বিষয়ে নো কম্প্রোমাইজ,,এক ফোঁটাও চেঞ্জ হবি না বলে দিলাম।।
হুহ,, আচ্ছা চুল খুলে রাখছিস কেন??খোঁপা কর।।দাঁড়া আমি করে দিচ্ছি,,কিভাবে করতে হয় সেটা বলে দে শুধু।।আজ নিজে হাতে খোঁপা বেঁধে বেলি ফুলের মালা জড়াবো তাতে।। উনি খোঁপা করার চেষ্টা করছেন,,,আমি খিলখিল করে হাসছি আর উনি সমান তালে বকে চলেছেন।।।এভাবে বত্রিশ দাঁত বের করে হাসলে নাকি তার বুকে ব্যাথা করে।।ঠিক এমন একটা পরিস্থিতিতে আম্মু ছাদে এসে হাজির।।আম্মুকে দেখেই সে বিদ্যুৎ বেগে উঠে দাঁড়ালো।আমিও লজ্জায় লাল,,, কি রে শুভ্র কখন এলি? এইতো কিছুক্ষণ ফুপি,, তা হঠাৎ?? গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে আসছি।।ভালোবাসা দিবস বলে কথা।ও তাই?তো কই তোর গার্লফ্রেন্ড??(ভ্রু কুচঁকে) বা…বাড়িতে ওর বাপের বাড়িতে।।হেহেহে(জোড়পূর্বক হাসি দিয়ে) আচ্ছা??খুব ভালো,,তো রোদ?তোর হাতে এতো ফুল? কে দিলো?
এবার দুজনেই মাথা চুলকাতে লাগলাম।। মা যে বুঝে গেছে তা বেশ বুঝতে পারছি।।শুভ্র একটা গাঁজাখোরি যুক্তি দিতে গিয়েছিলো মা ওকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়েই মুচকি হেসে বলে উঠলেন,,, হয়েছে,,লাগবে না। বেশ বুঝতে পারছি।ড্রামা শেষ হলে খেতে আয়।।রোদ আজ বিরিয়ানি রান্না করেছে।। কিহহহহ??আমার বউ…(মা তাকাতেই)মানে বোন,,আমার বোন রান্না করছে? উনার কথায় মা হাসতে হাসতে নিচে নেমে গেলেন।।আমিও হাসতে হাসতে শেষ।।সেই হাসিতে মিশে আছে তার মুগ্ধতা, যে মুগ্ধতায় আমি হাজারবার মুগ্ধ হতে চাই।।