ভালোবাসা

ভালোবাসা

আজ আমাদের বিয়ের ১০ তম দিন অথচ কেউ কাউকে স্পর্শ করিনি এখন পর্যন্ত।জুথিকার সাথে আমার বিয়েটা হয় পারিবারিক ভাবেই, তাই হয়তো সে আমাকে এখনো মেনে নিতে পারেনি। বিয়ের কিছুদিন পর বাসা থেকে চলে যেতে হলো,কারন ছুটি শেষ হইছে। তাই অফিস থেকে একটু দুরেই বাসা নিলাম।ভেবেছিলাম বিয়ের পর মেস লাইফের কষ্টোটা আর থাকবেনা কিন্তু এখন তার থেকেও বেশি কষ্টো মনে হয়।

আমার মনে হয় জুথিকা আমাকে মেনে নিতে পারেনি,ভবিষ্যতে মেনে নিবে কিনা সেটাও বলতে পারিনা। আস্তে আস্তে আমাদের বিয়ের ১ মাস পূর্ণ হয়ে গেলো কিন্তু আমার রাজকন্যার কোনো পরিবর্তন হলোনা। এভাবে বিয়ের ৩ মাস হয়ে গেলো,এখন একটু একটু সে আমাকে মেনে নিয়েছে। ধীরে ধীরে আমাদের বিবাহিত জীবনটা সুখের হতো লাগলো। এখন আমার মনে হয় সে আমাকে মেনে নিয়েছে,সেতার সম্পূর্ণ সত্তা দিয়ে আমাকে ভালোবাসে। আমি যদি অফিস থেকে দেরিতে আসি তাহলে ফোন দেয়,আমার জন্য অপেক্ষা করে। এভাবে ১ টা বছর কেটে গেলো

এই এক বছরে আমি একটা জিনিস লক্ষ করেছি মাসের শেষ দিন সে খুব ভালোবাসা নিয়ে অনেক সুন্দর করে সাজে।
হয়তো বা বিশেষ কোনোদিন তাই হয়তো আমার জন্য সাজে। একদিন আমি দুপুরে বাসায় এসে কলিং বেল চাপলাম(আমার বাসায় আসার কথা ছিলোনা) সে যখন দরজা খুললো তখন তাকে মনে হয় নতুন করে দেখলাম সে আজ অনেক সুন্দর করে সেজেছে। চুল গুলো খোলা রেখেছে, চোখে কাজল,ঠোঁটে লিপস্টিক, কপালে টিপ। এরকম কখনো এর আগে আমি তাকে দেখিনি। আমাকে দেখে মনে হয় তার মন খারাপ হয়ে গেলো। তাকে দেখে মনে হলো সে অন্য কাউকে আশা করেছিলো। ও বলল তুমি, আমি বললাম কেনো অন্য কাউকে আশা করেছিলে নাকি? জুথিকা চুপ হয়ে গেলো,আমি বললম এমনি মজা করলাম চলো খুব ক্ষুধা লাগছে খেতে দাও।

তারপর খেয়ে চলে অফিসে চলে গেলাম। এভাবে অনেকটাদিন পার হয়ে গেলো। মাসের শেষ দিন জুথিকা ভালোবাসা নিয়ে কার জন্য সাজে আমার জন্য নাকি অন্য কারো জন্য? আমি এসব কি ভাবছি নিজের বউকে সন্দেহ করছি যে কিনা তার জীবনের চেয়েও আমাকে বেশি ভালোবাসে।আমি এসব ভাবা বাদ দিলাম আজ আবার ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখ তাই আবারও আজ দুপুরে বাসায় যাচ্ছি। আজও একই অবস্থা, জুথিকা পৃথিবীর সমস্ত ভালোবাসা নিয়ে কারো জন্য অপেক্ষা করছে।সে কি আমি নাকি অন্য কেউ?সন্দেহ করতে চাইনা কিন্তু না করেও পারিনা। আজ আবারো জানুয়ারি মাসের শেষ দিন। আজ আর আমি বাসায় যাবোনা, আমি দেখবো কি হয় আজ?

২ টা বাজে আমি বাসায় গেলাম না। ৩ টা বেজে গেলে আমি নিজের চোখ দুটো বন্ধ করলাম আর অনুভব করতে লাগলাম৩টা বেজে ৩০ মিনিট একটা নীল রঙের সচ্ছ কাচের গাড়ি আমার বাসার সামনে দাড়ালো। কিছুক্ষণ পর জুথিকা বের হয়ে আসলো, তাকে বললো ম্যাডাম গাড়িতে বসেন। প্রায় ৩০ মিনিট যাবার পর গাড়ি থেমে গেলে। জুথিকা গাড়ি থেকে নেমে একটা বাড়ির দিকে যাচ্ছে, সে যাচ্ছে আর আমি দেখছি দরজার সামনে গিয়ে কলিং বেলে চাপ দেওয়ার সাথে সাথেই সুন্দর, সুদর্শন দুইটা হাত ভিতর থেকে বের হয়ে আসলো,তাকে ভিতরে নেওয়ার জন্য। সে ভিতরে গেলো আমি অনুভব করার সমাপ্তি ঘটালাম।

এখন রাতটা বাজে আমি বাসায় যাচ্ছি বাসায় গিয়ে দেখলাম সে শুয়ে আছে আমি কিছু বললাম না।জুথিকা বলল ফ্রেশ হয়ে আসো ডিনার করবো। ডিনার করছি দুজন,চাকুটা নষ্ট হয়ে গেছে তরকারি কাটা যায়না কালকে ভালো দেখে একটা চাকু নিয়ে এসো। জুথিকা আমাকে বললো আমি বললাম ঠিক আছে,অফিসে বসে আছি কোনো একটা কিছু নিয়ে আমি চিন্তিতো। চিন্তা করা বাদ দিলাম কারন তখন প্রায় ৮ বাজে বাজারে গিয়ে একটা চাকু কিনে নিয়ে বাসায় গেলাম। চাকু দেখে বললো এতো ধার? আমি বললাম হুম অনেক ধার মানুষ খুন করা যাবে চাকু দিয়ে।

রাতে ডিনার করে বারান্দায় বসে আসি। কিছুক্ষণ পর দেখলাম রুমের মধ্য কেউ প্রবেশ করছে কিন্তু কে আসবে রুমের মধ্যে। দরজা লাগানো বাহিরে থেকে কোনো মানুষ ভিতরে আসতে পারবেনা। তাহলে রুমের মধ্যে ছায়াটা কার? আমি রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তারপর কি হয়েছিলো আমি জানিনা পরদিন সকাল ১০ টার সময় নিজেকে হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার করলাম। তারপর জুথিকার কথা জিজ্ঞেস করলাম ডাক্তার বললো আপনি রাস্তায় পড়ে ছিলেন কেউ হয়তো খুন করতে চেয়েছিলো। আর আপনার বউকে খুব নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

তাকে হত্যার করার আগের তার চোখ দুটো তুলে ফেলা হয়েছে, তার স্তনদুটো কেটে ফেলা হয়েছে, তার হাত ও পায়ের নখগুলো তুলে ফেলা হয়েছে। আর এসব করা হয়েছে জীবিত থাকা অবস্থায়। আর তারপর আপনাকে হয়তো মেরে ফেলে দিয়েছিলো রাস্তায়, কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেচে গেছেন। কিন্তু আপনি মাথায় অনেক আঘাত পেয়েছেন,আপনাকে অনেকদিন বিশ্রামে থাকতে হবে। আজ ১ বছর পর আমি হাটতেছি খোলা আকাশের নিচে খুব মুগ্ধতা নিয়ে সবশেষে এটাই বলবো সব কথা বলা হয়না কিছু কথা পাঠককে বুঝে নিতে হয়

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত