তুই শুধু আমার

তুই শুধু আমার

ওই কুত্তার বাচ্চা এখন তোর চোখে ঘুম ধরে না না । আমার সাথে প্রেম করার সময় তো দশটা না বাঁচতে তুই ঘুমে মঙ্গল গ্রহে চলে যেতি। আর এখন রাত ভর ফষ্টি নষ্ট করতেছিস তাতে তোর ঘুম পাচ্ছে না না।

ফোনের ডাটা অন করে ঘুমিয়ে গেছি সকালে উঠে দেখি এক্স-গার্লফ্রেন্ড অনেক গুলো মেসেজ দিয়েছে। ব্রেকআপ এর প্রায় এক মাস পর মেসেজ দিয়েছে তাই একটু অবাক হলাম। এই এক মাসে ভুলেও একটা মেসেজ দেয়নি। আমিও দিইনি মিছে মিছি সন্দেহ করে। একটা মেয়ের মেসেজে যদি রিপ্লাই দিই তাহলে ওর মাথা খারাপ হয়ে যায়। এক্স গার্লফ্রেন্ড এর মেসেজ হওয়ায় একটু আগ্রহ নিয়ে দেখতে লাগলাম। প্রথম মেসেজ আসসালামু আলাইকুম একটু পর ওই কেমন আছো এখনো রাগ করে আছো ।

=কিছু তো বলো।

আচ্ছা বাবা সরি আর তোমাকে সন্দেহ করবো না এবার তো কথা বল ওই কুত্তা কথা বলিস না কেন ওই কুত্তার বাচ্চা এখন তোর চোখে ঘুম ধরে না না.. আমার সাথে প্রেম করার সময় তো দশটা না বাঁচতেই ঘুমে মঙ্গল গ্রহে চলে যেতি। আর এখন রাতভর ফষ্টিনষ্টি করতেছিস তাতে তোর ঘুম পাচ্ছে না না? একটু পর আবার মেসেজ দিছে ওই এমন করতেছ কেন রিপ্লাই দাও না প্লিজ। আচ্ছা আমি ভুল করেছি আমাকে যা খুশি তাই শাস্তি দাও তবুও প্লিজ কথা বল। আর মেসেজ পড়তে পারিনি তার আগেই আননন নাম্বার থেকে কল আসলো

আমি: হ্যালো আসসালামু আলাইকুম কে বলতেছেন

আজ একটু দেখা করতে পারবে আস্তে আস্তে কথাটা বলল কণ্ঠস্বর শুনে আমার বুঝতে বাকি থাকল না এটা আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড।

আমি: নাম্বার কই পাইছো?

এক্স গার্লফ্রেন্ড: আমার আদরের ননদ থাকতে তোমার নাম্বার জোগাড় করা আমার কাছে কোন ব্যাপারই না।

আমি: ওহ্ ভালো

এক্স গার্লফ্রেন্ড: হুম আজ একটু দেখা করতে পারবা। তোমাকে না খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।

আমি: সরি আমি খুব ব্যস্ত আছি আমার পক্ষে সম্ভব না

এক্স গার্লফ্রেন্ড: তবু আমি অপেক্ষা করবো

আমি: তোমার যা ইচ্ছা করো আমি যেতে পারব না বলে ফোন কেটে দিলাম। বিকালে বাসা থেকে বের হব এমন সময় ছোট বোন মনি হাত ধরে টেনে তার রুমে নিয়ে গেল।

মনি: ভাইয়া তুই এই ড্রেস পড়ে ভাবির সাথে দেখা করতে যাবি…?

আমি: আমি কারো সাথে দেখা করতে যাচ্ছি না আমি খেলতে যাচ্ছি। আর ওকে খবরদার ভাবি বলবি না ওর সাথে আমার ব্রেকআপ হয়ে গেছে।

মনি: তোর ব্রেকআপ এর গুষ্টি কিলাই। ভাইয়া তুই তো জানিস ভাবি কি রকম একজেদি মেয়ে। তুই যদি না যাস ওখান থেকে এক পাও নড়তে না। আর এখনকার যে দিনকাল যদি খারাপ কিছু হয়ে যায় তখন কি হবে।

আমি: আমি কি ওকে বলছি নাকি পার্কে গিয়ে বসে থাকতে।

মনি: তুই বলিস নি ভালো কথা এখন প্লিজ যা। তুই না আমার লক্ষী ভাই প্লিজ।

আমি: আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি কিন্তু ওকে বলে দিবি শুধু তুই বলছিস দেখে যাচ্ছি আবার যেন উল্টাপাল্টা না ভবে।

মনি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল ঠিক আছে যা বলে দেবো আর শোন ব্লু ব্লেজার টা পড়িস ওটা পরে তোকে খুব হ্যান্ডসাম লাগে। পার্কে ঢুকে একটা মেয়েকে দেখে ক্রাশ খাইলাম । সামনে দিকে তাকাতেই দেখি এক্স গার্লফ্রেন্ড চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তার সামনে যেতেই ঠাস করে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিল গালে। আমি গালে হাত দিয়ে বললাম কি হল তুমি আমাকে মারলে কেন? এক্স গার্লফ্রেন্ড দাগ কটমট করতে করতে বলল তুই ঐ মায়েকে দেখলি কেন? আমার চোখ আছে আমি দেখবো তাতে তোমার কি?

আমারও হাত আছে আমি মারব তাতে তোর কি। ফালতু বলে আমি চলে এসতে নিলে সে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। আমার কলার শক্ত করে ধরে ঝাকাতে ঝাকাতে বললো একটা কথা শোনে নে তুই শুধু আমার তোর সবকিছুর উপর শুধু আমার অধিকার। তোর চোখ দুটো শুধু আমাকে দেখবে অন্য কোন মেয়েকে না। এরপর কোন মেয়ের দিকে তাকালে চোখ দুটো তুলে নেব বলে দিলাম। আর যদি বেশি তেড়িবেড়ি করিস নারী নির্যাতনের কেস করে দেবো তোর নামে।

আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি নীলার এমন রুপ আজ প্রথম দেখলাম। এর আগে কখনো নীল আমার সাথে তুই তোকারি করে কথা বলেনি ব্রেক-আপের দিনও না। আমি তোকে ভালোবাসি তুই শুধু আমাকে দেখবি তোর চোখ কেন অন্য মেয়ের দিকে যায়। তাই বলে তুমি এই ভরা মজলিসের মধ্যে আমাকে থাপ্পর মারবে। আমি মারব আদর করবো সেটা আমার অধিকার আছে তুমি কেন অন্য মেয়ের দিকে তাকাবে। ওরা আটা ময়দা মেখে এসেছে মানুষকে দেখানোর জন্য ওদের দেখলে চোখ নষ্ট হয়ে যাবে আমাকে দেখো ন্যাচারাল সুন্দরী ।

আমি আস্তে আস্তে বললাম ঙঙঙঙঙঙঙ নিজের মনে হয় আটা ময়দা মাখে না কি বললা কই কিছু বলিনি তো এতদিন হয়ে গেল একবার তো খোঁজ নিলে না বেঁচে আছি কি মরে গেছি একবার জানতেও ইচ্ছে করলো না তোমার এটাই তোমার ভালোবাসা ছিল? তুমিতো ব্রেকআপ করলে আর তুমি হয়তো সেদিনকার কথা ভুলে গেছো তুমি বলেছিলে যে তোমাকে যেন আর বিরক্ত না করি তাই আমি তোমার সাথে কোন যোগাযোগ রাখিনি।

এক্স গার্লফ্রেন্ড: ও আমার আল্লাহর মাসুম বান্দা এমন ভাব করতেছো যে তুমি আমার সব কথা শোনো। আমি যা বলব তুমি তাই করবে ব্রেকআপ বললাম আর সেটা তুমি মেনে নিলে। কেন আমাকে একটা থাপ্পর মেরে বলতে পারলে না আমি তোমাকে ভালোবাসি ব্রেকআপ ব্রেকআপ মানি না। এখন যদি আমি বলি যে আমাকে বিয়ে করো তাহলে কি বিয়ে করবে? আমি বললাম হ্যা চলো বিয়ে করব কোলবালিশের সাথে আর রোমান্স করতে ভালো লাগেনা। বিয়ে করলেই তোমার সাথে রোমান্স করব কত মজা হবে বল..?

যা কুত্তা বলে আমার বুকে কিল মারতে লাগলো। নীলাকে বুকে জড়িয়ে বললাম ভালোবাসি আমার পাগলি টাকে। তাহলে আমাকে ছুঁয়ে বলো আর কখনো কোন মেয়ের দিকে তাকাবে না। পাগল নাকি তাহলে আমার এত নেচারাল সুন্দরী হবু বউকে দেখব কিভাবে। আমি ছাড়া অন্য কোন মেয়ের দিকে কখনো তাকাবা না। আচ্ছা যাও কথা দিলাম পাশ দিয়ে একটা মেয়ে আমার চুল দেখতে দেখতে যাচ্ছিল। লীলা আমার চুল এলোমেলো করে দিয়ে বলল ওই স্পাইক কেন করেছো। আর তোমাকে না এই ব্লু ব্লেজার পড়তে নিষেধ করেছি।

আমি: কেন কি হয়েছে?

এটা পড়লে তোমাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগে মেয়েরা তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে তাই তাহলে তো তোমার অনেক খুশি হওয়ার কথা। আমার ওতো খুশি হওয়া লাগবে না তুমি শুধু আমার আমি আমার জিনিসের মধ্যে কাউকে ভাগ বসাতে দেব না। কখনো দেব না কথাটা মাথায় ভালো মত ঢুকে রাখো।

আমি দুষ্টুমি করে বললাম নীলা আমি না ঐ মেয়ের উপর ক্রাশ খায়ছি  কুত্তা এমন জায়গায় মারবো জীবনে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবি না। তখন দেখবো তুই কাকে দেখে ক্রাশ খাস আর তোকে দেখে কোন মেয়ে ক্রাশ খায়। একটা কথা মাথায় ঢুকে রাখো আমার জিনিস শুধু আমার। মেয়েরা এমনই হয় তাদের আপন জনের মধ্যে কাউকে ভাগ বসাতে দেয় না। যারা পাঁচ ছটা করে প্রেম করে তাদের ক্ষেত্রে এই হিসাবটা নাও মিলতে পারে…

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত