– নিজেরে আয়না দেখছিস? কি যোগ্যতা আছে তোর আমার বউ হওয়ার?? যত্তসব,,
– শুনে রাখ, বাবা যদি আমাকে জোর না করতো তোর মত কালো মেয়েকে আমি আমার বাসার কাজের মেয়ে হিসেবেও রাখতাম না
– বামণ হয়ে চাঁদ ধরার স্বপ্ন থেকে থাকলে সেটা ভুলে যা।
আর কথা বলতে পারলো না রাইয়ান,, ঢলে পড়লো বিছানায়। নেশার চোটে ঘুমিয়ে গেছে। কাজল এখনো বসে আছে,, চোখের পানি যেন থামতেই চাচ্ছে না। তারপর চোখ মুছে নিজেকে শক্ত করে। এই অপমান তো নতুন না। কাজল রাইয়ানের জুতো জোড়া খুলে ওকে ভালোভাবে শুইয়ে দেয়।সারারাত নির্ঘুম কাটে।
কাজল আর রাইয়ানের বাবা খুব ই ঘনিষ্ঠ বন্ধু।বাবাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে আরোও গভীর করতেই কাজল আর রাইয়ানের বিয়ে। কাজল দেখতে শ্যাম বর্ণ, ছোট খাটো একটি মেয়ে। রং টা কালো হলেও দেখতে প্রচন্ড মায়াবী, টানটান চোখ, সরু নাক, চিকন ঠোঁট জোড়া,, কিন্তু রং এর কারণে সব যেন ঢাকা পড়ে যায়। দেখতে যেমন মায়াবী,, স্বভাবও ঠিক তেমনই মার্জিত।
কোনোদিন তাকে কারোর সাথে উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখা যায় নি। আর রাইয়ান যেন ঠিক বিপরীত,, মা মরা ছেলে বলে বাবা কোনোদিন শাসন করেন নি তাই বকে গেছে। দেখতে খুবই সুদর্শন। বাবার জোরাজোরিতে কাজলকে বিয়ে করতে হয়। বিয়েটা মন থেকে মেনে নিতে পারছে না,, এতো কালো মেয়েকে কিভাবে মেনে নিবে, কিভাবে ভালোবাসবে?? বিয়ের পর থেকেই কাজলকে এড়িয়ে যায়। হ্যা না বাদে কোনো কথা বলে না। কাজল ভেবেছিলো হয়তো সময় নিচ্ছেন আর তাকেও সময় দিচ্ছে কিন্তু তা নয়। আজ যখন বন্ধুদের সাথে ছাইপাশ খেয়ে নেশার চোটে কাজলকে অকথ্য ভাষায় অপমান করলে কাজলের বুঝতে বাকি রইলো না আসলে তাদের সম্পর্কে সমস্যাটা কোথায়।
ছোট বেলা থেকে এই কালো হওয়া নিয়ে কম কটু কথা শুনতে হয়নি। কিন্তু এই কটু কথায় রফিক সাহেবের কিছুই যেন যায় আসতো না। মেয়েকে তিনি যথেষ্ট ভালোবাসেন,, মেয়ে কালো হলেও যাতে কোনো অংশে তার কমতি না থাকে৷ তার বিশ্বাস,, রুপ না গুণেই পরিচয় মানুষের। কিন্তু আজ বাবার ধারণা যে মিথ্যে হয়ে গেলো,, রাইয়ান তো দেখলো না তার গুণ। উল্টো কালো বলে অপমানটাই ভাগ্যে জুটলো। বিয়ের পর থেকে রাইয়ানের এড়িয়ে যাওয়ার কারণ সে বুঝতে পারছে। আচ্ছা আল্লাহ তো বানানোর সময় তফাৎ করেন নি তবে মানুষ কেনো করেন??
কাজল আর রাইয়ানের সম্পর্ক তো ছিলো,, বাইরের সবার কাছে। কিন্তু ভেতরে সবই ফক্কা। বাড়ির কেউ জানে না তাদের মধ্যে কি চলছে। এভাবেই বেশ কিছু মাস কেটে যায়। সেদিনের পর থেকে রাইয়ান আর কাজলের ভেতর প্রয়োজন ব্যতীত কথা হয় নি। একই ঘরে একই বিছানায় শুয়েও যে অচেনাদের সময় থাকা যায় তার জীবন্ত প্রমাণ এই দুজন। রাইয়ানের যদিও পরদিন সকালে নেশা কাটতে মনে পড়েছিলো যে সে কাজলের সাথে কি করেছে। কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজনটা রাইয়ান বোধ করে নি। হাঁপিয়ে উঠেছিলো,,ভালো মানুষ সাজতে সাজতে। মনের বিরুদ্ধে বিয়ে করা গেলেও ভালোবাসা যায় না। আর যদি কাউকে ভালোই না বাসি তবে তাকে জীবনে ঠায় দেই কি করে।
সময় বহমান, কারোর জন্য থেমে নেই। আজকাল রাইয়ানের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না, কিছু টাকার খুব প্রয়োজন,, খুব জোগাড় করার চেষ্টা করছে কিন্তু পেরে উঠছে না। খাওয়া দাওয়ার ঠিক নেই, রাত রাত বারান্দায় সিগারেট টেনেই দিন চলছে। একই ঘরে থেকে এটা এড়িয়ে যাওয়ার মতো মেয়ে কাজল নয়। অনেক সাহস সঞ্চয় করে একদিন বারান্দায় গেলো,, রাইয়ান তখন রাতের ঢাকা শহর দেখতে ব্যস্ত। ঢাকা শহর আজিব কারখানা,কখনো ঘুমায় না এই শহর। রাত বারোটায় ও সেই কোলাহল দেখা যায়। রায়হান হাতে গোল্ডলিফ, চোখ তার স্থির,, রাতের শহর দেখতে সে ব্যস্ত আজ। গোল্ডলিফটা প্রচুর কড়া, টানলে নাকি মাথা ফাকা হয়ে যায় টেনশন রিলিজ হয়। কাঁধে কারোর স্পর্শে ভাবনার জগতে ছেদ পরলো রাইয়ানের।
– আপনি কি কিছু নিয়ে চিন্তিত?
– তুমি ঘুমাও নি?
– আপনিও তো ঘুমান নি।
– হুম,, তোমার অকর্মা বর তার নিজের কিছু ভুল সিদ্ধান্তের মাশুল দিচ্ছে।
– বুঝলাম না
– ঘুমিয়ে পড়ো, বুঝলেও সমাধান দিতে পারবে না
– এসব ছাইপাঁশ খেলে সমাধান মিলবে?
এমন প্রশ্নে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায় রাইয়ান।তারপর মুচকি হেসে বলে,
– না মিললেও টেনশন থেকে মুক্তি পাবো ক্ষণিকের
– জোর করবো না তবে এতোটাও গন্ডমূর্খ নই যে, টেনশন শেয়ার করা যাবে না। বলতে পারেন। জানেন তো টেনশন শেয়ার করলেও টেনশন কমে। তার জন্য নিকোটিনের ডিব্বা পুড়িয়ে ফুসফুস জ্বালাতে হয় না।
স্ত্রীর কাছে নাকি কিছু লুকাতে নেই। এই সাত মাসে কাজল বাড়ির বড় বউয়ের কোনো দায়িত্ব অপূর্ণ রাখে নি। রাইয়ানের বাবার যোগ্য বউ মা সে, রাহার( রাইয়ানের বোন) প্রিয় ভাবী। আর সত্যিই তো এই টেনশন গুলো আর নিজের ভেতরে রাখতে পারছে না। প্যাকেট প্যাকেট গোল্ডলিফ তো টানছে কই কমছে না তো। তাই অনেক কিছু ভেবে কাজলকে সব খুলে বললো রাইয়ান। দশ লাখ টাকা হলে মন্দ হতো না। সেদিন কাজলকে কথা গুলো বলতে পারায় খুবই শান্তি লাগছিলো। পরদিন বিকালে রাইয়ানের অফিসে কাজল হাজির। অবাক হয়েছে প্রচুর রাইয়ান,, কাজল বাসা থেকে খুব কম বের হয়।
– এখানে দশ লাখের মতো টাকা আছে, এতে কি হবে?
– এতো টাকা পেলে কোথায়?
– বিয়ের গয়না, মায়ের দুল আর বালা বাদে বিক্রি করে দিয়েছি। ওগুলো মায়ের স্মৃতি তো
– এতো অকর্মা ভাবো নাকি??
– নাহ, তা নয়। এমনেও যে বিয়ের কোনো মূল্য আপনার কাছে নেই সেই বিয়ের গয়না দিয়েও বা আমি কি করতাম। আর এই পার্থিব জিনিসে আমার লোভ নেই।
– কিন্তু
– বিপদ কেটে গেলে নাহয় আবার বানিয়ে দিয়েন
ছোটবেলায় রাইয়ান পড়েছিলো বটে, কালো রং এর নাকি শোষণ ক্ষমতা প্রচুর,, সব তাপ, গরমকে শোষণ করে। বড়ো অদ্ভুত এই রং। আজ জীবন্ত প্রমাণ পেলো। এক রাতে তার চিন্তাকে এই কালো মেয়েটা গ্রাস করে ফেললো। এমন বুঝি মেয়ে হয়?? মেয়েদের নাকি জামা, গয়নায় অনেক আকর্ষণ থাকে,, এই মেয়েটা কিভাবে এতগুলো গয়না বিক্রি করে দিলো। অবশ্য বড্ড সাধারণ এই মেয়েটা,, এক রং এর থ্রিপিস আর বেণী এই তার সাজা। বাহিরের চাকচিক্য বাড়ানোর কোনো প্রচেষ্টা তাকে রাইয়ান এই সাত মাসে করতে চেখে নি। অবশ্য এ নিয়ে কম উপহাস ও করে নি। অথচ এই লোকটাকে টেনশন মুক্ত করতে এতো গুলো গয়না বিক্রি করে দিলো।
সেদিনের পর থেকে রাইয়ানের কাজলের প্রতি নিচু দৃষ্টির পরিবর্তন ঘটে। এখন আর রাতের শহর একা দেখে না সে,কাজল তার সঙ্গী। কিন্তু জীবন সঙ্গী হতে যে অনেক পথ। বন্ধুত্বের সম্পর্ক তাদের খুব ভালোই যাচ্ছিলো। এখন রাইয়ান আর কাজলকে কালো বলে অপমান করে না বরং রোজ অফিস থেকে আসার সময় ফুচকা, বকুল ফুলের মালা নিয়ে আসে। কাজল এতেই খুশি। বন্ধু তো হতে পেরেছে। এক বছরের বিবাহ বার্ষিকীতে উপহার হিসেবে কাজলের কাছে যখন জিজ্ঞেস করে কি চাই, কাজল বলে,
– একটা কালো শাড়ি আর এক কৌটা কাজল।
– কালো শাড়ি তুমি পড়বে?
– ভাববেন না টর্চ দিয়ে খুজতে হবে না।
কতটা ভাংগার পরে নিজের দূর্বলতাকে নিজের হাসির কারণ করা যায় তা কাজলই জানে। রাইয়ান আর কথা বাড়ায় নি। সে কাজলের জন্য কালো শাড়ি ই কিনেছিলো। কালো সুতির শাড়ির উপর কালো সুতার কাজ করা। বড্ড চমৎকার শাড়িটা। দাম একটু বেশি ই নিয়েছিলো। কিন্তু কাজলকে এই আজ অবধি একটা সুতাও কিনে দেওয়া হয় নি। এই প্রথম মুখ ফুটে কিছু চেয়েছে। তা না দিলে যে অমানুষে পরিণত হবে রাইয়ান।
শাড়িটা পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলো কাজল। তার স্বামীর দেওয়া প্রথম উপহার বলে কথা। কোনো মেয়ের হাসিও যে এতোটা মনোমুগ্ধকর লাগতে পারে তা রাইয়ানের জানা ছিলো না। আজকাল যেনো কাজলের সব কাজেই সে মুগ্ধ হয়। একটা মেয়ে এতোটা গুণী। লোকে বলে, ” ডোন্ট জাজ দ্যা বুক ফ্রম ইটস কভার” কাজল তার প্রমাণ। তার কালো রং এর জন্য তার গুণ গুলো জানার প্রয়োজনবোধ হয় নি রাইয়ানের। কিন্তু যত কাজল কে জানছে, তত যেন অবাক হচ্ছে। এই নারী কতটা রহস্যময়ী,মায়াবী, তা বোঝার সাধ্য তার নেই।
কালো রং যে কালো মেয়েদের ভালো লাগে না এটা খুবই ফাউল ধারণা। কাজলকে কালো রং এ দেখে রাইয়ানের ধারণা ও পাল্টে গেছে। এতো মায়াবী ও মেয়ে হয়? আচ্ছা প্রেমে পড়ে গেলো রাইয়ান এই কালো মেয়েটার। যাকে বউ হিসেবে মানতে যোগ্যতার প্রশ্ন তুলেছিলো তার প্রেমে পড়লো৷ না না এটা আবেগ। এখনো ওকে পরিচয় করাতে খচখচ লাগে। প্রেমে পড়ে নি রাইয়ান। সেদিন অনেক ঘুরাঘুরি করেছিলো তারা দুজন। কালো শাড়ি পড়ে বিয়ের এক বছর পর সেদিন প্রথম বের হয়েছিলো কাজল। মেয়েটার যে বিরিয়ানি এতো ভালো লাগে তা হয়তো না বের হলে জানাই যেনো না। শুকনা পাটকাঠি হলে কি হবে খুব ভোজন রসিক মেয়েটা। রাইয়ানের যেনো সবই অজানা, অথচ রাইয়ানের প্রতিটা সেকেন্ডের খবর কাজলের আছে।
দিন যেতে থাকে, রাইয়ানের আর কাজলের বন্ধুত্বটা যেন গাঢ় হতে থাকে। একদিন আবার কিছু বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে মদ খাওয়া হয় রাইয়ানের। সেদিন ঘরে কাজল একাই ছিলো। শ্বশুর, ননদ গ্রামে ঘুরতে যাওয়াতে আজ কাজ কম। তাই একটু শুয়ে বসে থাকতে ক্ষতি কি। শুয়ে থাকতে থাকতেই ঘুমিয়ে পড়লো। তাই গোসল করতে করতে রাত হয়ে যায়। নেশায় টুলতে টুলতে রাতে বাড়ি ফিরে রাইয়ান। নেশার ঘোরে কাজলকে বড্ড মায়াবতী আর স্নিগ্ধ লাগছিলো।
ভেজা চুল গুলো আর কপালে জমে থাকা পানিও যে কাম জাগায় সেদিন রাইয়ান বুঝতে পারলো। বিয়ের পর এই প্রথম কাজলের কাছে এসেছে। তার তপ্ত ছোয়া কাজলের এতোদিনের তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে প্রশান্তি বয়ে নিয়ে এলো। সকালে বড্ড দেরি করেই ঘুম ভাংগে রাইয়ানের। গোসলের সময় পিঠের আর বুকের আঁচর গুলো তাকে কালকের ভুলের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিলো। নিজেকে পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট মনে হচ্ছিলো। না জানে কাজল কি ভাবছে। অপরপাশে কাজল নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ ভাবছিলো,, কারণ তাদের ছিন্ন সম্পর্কে জোড়া লাগছে।
সেদিনের পর থেকে বিবেকের তারণায় ভেতরে ভেতরে জ্বলছে রাইয়ান। অথচ নিজের সুখের সংসারের স্বপ্ন বুনে যাচ্ছে কাজল। প্রয়োজন ব্যতীত রাইয়ান কথাও বলছে না। এবার আর না পেরে ঠিক করলো, বলেই দিবে। বলে দিবে কাজলকে সেদিনের ভুলের কথা। ক্ষমা চেয়ে নিবে কাজলের কাছ থেকে। কিন্তু এই ক্ষমাও যে একটা ভুল হয়ে দাঁড়াবে তা কে জানতো। এই ক্ষমা কাজলের স্বপ্নগুলোকে চাঁপা দিতে যথেষ্ট।
একদিন বিকেলে বাবা ফোন করে দ্রুত বাড়ি আসতে বলায় মিটিং ছেড়ে চলে আসে। এসে যা জানতে পারে তাতে কেমন রিয়েক্ট করা উচিত রাইয়ানের জানা নেই। রাইয়ান বাবা হতে চলেছে। বাবা হওয়ার অনুভূতি বোধ হয় পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দময় অনুভূতি। রাইয়ান বেশ টের পাচ্ছে সেটা। আচ্ছা দেড় বছর তো হয়েই এলো, সম্পর্কটাকে একটা সুযোগ দিলে মন্দ হয় না। আর মায়াবতীকে তো খারাপ লাগে না,, হোক না সে কালো। রুমে যেয়ে কাজলকে জড়িয়ে ধরে বলে,
– কাজল, তুমি জানো না আমি যে কতটা খুশি। আমাকে তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ বানিয়ে দিয়েছো।
– আচ্ছা আমার বাচ্চাও তো আমার মত কালো হবে। মেনে নিতে পারবেন তো। আপনার একটা ভুলের মাশুল আমার বাচ্চাকে অবহেলা পেয়ে দিতে হবে।
– কি বলছো এসব, আমি জানি আমি তোমাকে এই কালো হওয়া নিয়ে কম অপমান করি নি। একটা অমানুষ ছিলাম। ক্ষমা চাইলেও সেটা ক্ষমা করা যাবে না। কিন্তু বিশ্বাস করো,এই সম্পর্কটাকে আমি মন থেকে মেনে নিয়েছি। আমি তোমাকে আমাদের বাচ্চাকে কোনো কষ্ট পেতে দিবো না। একবার বিশ্বাস করে দেখো। সত্যি বলছি। একটা সুযোগ দেও।
– দিলাম, সুযোগ দিলাম। দেখবেন এবার যাতে ভুল না হয় তবে কিন্তু আসলেই ভুলের মাশুল সারজীবন দিতে হবে। আসলেই কিছু ভুলের মাশুল সারাজীবন দিতে হয়, রাইয়ান আজো দিচ্ছে। আজ কাজল নেই। ডেলিভারির কমপ্লিকেশনের জন্য বাচ্চাকে বাঁচানো গেলেও, কাজলকে বাঁচানো গেলো না। এই পঁচিশটা বছর কাজলকে বাদে কাঁটিয়ে দিলো রাইয়ান। কাজুকে একাই মানুষ করেছে,বিয়ে দিয়েছে অথচ কাজলের জায়গা কাউকে দেয় নি। ডেলিভারির আগ মুহূর্তের কথা গুলো যেন এখনো রাইয়ানের কানে বাজছে,
– বড্ড ভালোবাসি আপনাকে।
কিন্তু এর উত্তর যে রাইয়ানের দেওয়া হলো না। তার মায়াবতীকে বলাই হলো না, তার হৃদয়ে কতটুকু জুড়ে এই মায়াবতীর বিস্তার। সুযোগ যখন ছিলো,,তখন অবজ্ঞা করেছিলো। আর আজ ২৫ টা বছর প্রতিনিয়ত তাকে ভালোবেসে যাচ্ছে অথচ সে নেই।।