অনুপম ভালবাসা

অনুপম ভালবাসা

আজ হঠাৎ করে আমি খুবই অসুস্থতা
বোধ করছি। আমার আকাশ যেন
মেঘে ঢেকে গেছে, হয়তো
আমি আর বাঁচবো না।
আমার বউ ওফিস শেষে বাসায় ফিরলো। ডোর বেল বেজেই চলছে,,, আমি কি করে দরজা খুলবো.! বিছানা থেকেই যে উঠতে পারছি না।

অনেক কষ্টে এসে দরজা খুলেই নিচে পড়ে গেলাম। আকাশটা যেন আমার বউয়ের মাথায়ও ভেঙে পড়লো। অঝর ধারায় আমার বউ জল

ঝরাচ্ছে। ওর ও পা গুলো এগুচ্ছে না। একটু পর হামড়ে এসে আমাকে জরিয়ে ধরে, চোখে প্রশান্ত সাগর তৈরী করলো। অনেক কষ্টে বিছানায়

আসলাম। নীলা আমায় জিজ্ঞেস করেই যাচ্ছে,, হঠাৎ করে তোমার কি হলো.? তোমায় তো ভালো রেখে গেলাম.? তোমার শরীল
খারাপ করছে, তুমি আমায় ফোন করলে না কেন.? বলেই থেমে গেলো,
আর কেঁদেই চললো। কোনো কথা বলার সামর্থ্য আমার নেই। নীলা প্রায়
কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কাকে ডাকবে,
ডাক্তারে নিয়ে যাবে কিছুই বুঝতে
পারছে না। আমাদের দু’জনেরই পরিবার ঢাকা থাকেন আর আমরা চাকুরী সূত্রে সিলেট। আমি অনেক কষ্টে কথা বললাম, নীলা কাঁদছো যেন,

আমার কিছু হবে না। আর
তুমি কাঁদলে আমার চোখের জল
মুছে দেবে কে, আমায় দেখবে
কে, কেঁদোনা, নীলা.! কেঁদোনা।
নীলা কাঁন্না বাড়িয়ে দিয়ে, কেঁদে কেঁদে
বলে উঠলো,, তোমার কন্ঠ এমন
লাগছে কেন.!। তোমার কি হয়েছে,!
তোমার তো কিছু হতে পারে না।
মেয়েটি বাচ্চাদের থেকেও আরো
উচ্চস্বরে চিৎকার করে কাঁদছে। হঠাৎ
আম্মু ফোন দিলেন, নীলা শুধু সবুজ
বাটন টিপলো, আর কেঁদেই চললো।
আমি ফোনটা নিয়ে আম্মুকে ভাঙা ভাঙা গলায় বললাম, আম্মু আমি অসুস্থ দোআ করো। জানি না তখন আম্মুর কি অবস্থা হয়েছিলো।

আর কথা বলতে পারলাম না,
আমি জ্ঞান হারালাম।
দু’দিন পর জ্ঞান ফিরলো, আম্মুকে পাশে দেখলাম,
উনি কাঁদছেন। জিজ্ঞেস করলাম, আম্মু.! নীলা কোথায়.? আম্মু বললেন, ওই
পাশের ব্যাডে। আবার আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। বললাম, কেন.? আম্মু.! নীলার কি হয়েছে। আম্মু বললেন, তোমার
অপারেশনের জন্য তৎক্ষণিক রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না বলে, নীলা একাই এই
দেহ নিয়ে ২ব্যাগ রক্ত দিয়েছে,
এখনও রক্ত শূন্যতায় জ্ঞানহীন।
ডাক্তার বলেছেন, ৩৬ ঘন্টা সময়
লাগবে জ্ঞান ফিরতে। আমি নিশ্চুপ।
ভাবলাম, পাগলীটার ভালবাসা দেখো,
নিজে মরে ভালবাসার মানুষকে বাঁচাতে চাচ্ছে। আম্মুকে বলবো একটু
ডাক্তার ডাকার জন্য ঠিক তখনই নীলা
জেগে উঠলো…..

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত