আমার স্ত্রী

আমার স্ত্রী

মিরা,আমার স্ত্রী।আজ তার ষষ্ঠতম মৃত্যুবার্ষিকি।লোক সমাজে আমি একজন আদর্শ স্বামীর দৃষ্টান্ত,যে কিনা তার স্ত্রী মারা যাওয়ার এতো বছর পর্যন্ত দ্বিতীয় বিয়ে করেনি,প্রতি বছর মাদরাসায় এতিমখানায় অনেক খরচ করেন স্ত্রীর নামে,সে আদর্শ না হয়ে পারে বলুন?আমি একজন বাবাও বটে,আমার ছয় বছর বয়সী একটি মেয়ে ও রয়েছে।আমার কলিজার টুকরা সে।আসোলে যে যতো যাই বলুক আমার মেয়েকে সত মায়ের অত্যাচারিত করার কোনো শখ নেই!!কিন্তু একটি কঠিন সত্য কি জানেন?আমি আসোলে আমার স্ত্রীকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছি…

মিরাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম পরিবারের অমতে,আসোলে আমার দেখা মিরা ছিলো জগতের সেরা মেয়ে,যাকে চোখ বন্ধ করে ভালোবাসা যায়,বিশ্বাস করা যায়।খুব সহজ সরল স্বাভাবিক মায়াবি একটা মেয়ে আমার মিরা!তিনবছর বিয়ের আগে জমিয়ে প্রেম করেছি,প্রেম করেছি বলা যায় না,প্রতিদিন নতুন করে আমি মিরার প্রেমে পড়তাম,এতো হাসিখুশি প্রানবন্ত একজন মানুষ,তার ভুবন ভোলানো হাসি,মায়াবি চোখ আমাকে পাক্কা প্রেমিক বানিয়ে ফেলেছিলো!

আমার মিরা যখন রাগে অভিমানে কাদতো আমারও চোখে পানি চলে আসতো,আমি পাগলের মতো হয়ে যেতাম তার রাগ ভাঙ্গাতে,প্রচন্ড রাগী ছিল মিরা,তবু আমি কিভাবে যেনো ওকে আমার ঘরে পোষ মানিয়ে ছিলাম,মিরা রাগী হলেও বাধ্য ছিলো,আমার সব কথা শুনতো।আমি বুঝে গিয়েছিলাম আমাকে পাগলের মতো ভালো মিরা ছাড়া আর কেউ বাসতে পারবেনা।আমি স্বার্থপর হই আর যা ই হই মিরাকে আমার চাই ই চাই!আল্লাহ আমার কোনো দোয়া ই আজ পর্যন্ত বৃথা যেতে দেন নি,আমি আমার মিরা কে আমার করে পোয়েছিলাম কোনো এক বসন্তের দিনে,প্রেমিকা মিরা থেকে আমার স্ত্রী মিরা যেনো আরো সুন্দর, আরা মায়াবতী হয়ে গেলো।বাসর রাতে মিরা আনার পা ছুয়ে সালাম করার পর, আমি মিরাকে ডায়েরী গিফ্ট করে বলেছিলাম…মিরা এই ডায়েরীটা তোমার জন্য। মিরা লাজুক মুখ করে আমার দিকে পিটপিট করে তাকালো,কিছু বললো না! আমি একটু হতাশ হয়ে বললাম,জিগেস করলেনা বাসর রাতে ডায়রী কেনো?

মিরা লজ্জা আর হাসি মিশিয়ে বলল,তুমি তো পাগল,পাগলে কি না গিফট দেয়,বলে হিহি করে হাসতে লাগলো!!
আমি কিছুটা সিরিয়াস মুড নিয়ে বললাম,মিরা শোনো সংসার জীবনটা অনেক কঠিন,এখানে মনোমালিন্য গুলোকে বেশী প্রশ্রয় দেয়া যাবেনা,দিলেই সংসারে অশান্তি হবে ভালোবাসায় খাদ দেখা দিবে,আর যেহেতু তুমি অনেক রাগি সব কিছু চেপে বসে থাকো তাই একটা সহজ সমাধান আমি বের করেছি!সেটা হলো এই ডায়েরী!! মিরা এবার একটু আগ্রহ নিয়ে বলল,তাই নাকি?বলো দেখি তোমার কেমন সমাধান! আমি এবার বিজ্ঞের মতো বললাম,আমি একজন আদর্শ স্বামি হতে চাই,আর এই জন্য অবশ্যই তোমার সাহায্য প্রয়োজন। মিরা এবার খিকখিক করে হাসতে শুরু করলো,হাসি যেনো থামেই না!!

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম উফ্ আমার কথা শুনবে তো আগে নাকি!?শুনো এই ডায়েরীতে তুমি প্রতিদিন আমার সম্পর্কে কিছুনা কিছু লিখবে?আমার দোষ গুন যা ইচ্ছা! আমি প্রতিদিন রাতে সেটা পড়বো!এবং নিজেকে সংশোধন করবো!মনে থাকবে? মিরার আনন্দে ঝলমল করতে করতে বললো,ফ্যান্টাসটিক আইডিয়া,তুমি তো অনেক জোস হাজবেন্ড!তুমি আদর্শ স্বামীর প্রথম ধাপ পার করে ফেলেছো!বাসর রাতেই বউকে ইমপ্রেস করে ফেলেছো। আমি কিন্তু আদর্শ স্বামীর দায়িত্ব পালন করা শুরু করে দিয়েছিলাম,দুই তিন দিন পর পর ডায়েরী পরতাম…গালভরা একগাদা প্রশংসা লিখে রাখতো মিরা!

কিন্তু জীবনের রং গুলো মনে হয় সব জায়গায় একরকম ভাবে ছড়ানো থাকেনা,সাদাকালো অংশ ও থাকে!আমার জীবনটাও একসময় সাদামাটা হতে লাগলো! কাজের অনেক ব্যাস্ততা,বড় সন্তান হিসাবে পরিবারের দায়িত্ব সব কিছু মিলিয়ে আমি আস্তে আস্তে রোবট হয়ে গেলাম! মিরার প্রতি কেয়ার কমে শূন্যের কোঠায় নেমে আসলো! সত্যি বলতে কি আমার কোনো কিছুই আর ভালো লাগতোনা,মিরার রাগ অভিমান উটকো ঝামেলা মনে হতে লাগলো!

বাসায় আসলেই মিরার গোমরা মুখ আমার দেখতে ভালো লাগতোনা! আমি চাইতাম মিরা হাসি মুখে কথা বলুক কিন্তু না সে সব সময় মুড অফ করে রাখতো!প্রথম দিকে রাগারাগি করতো আস্তে আস্তে রাগ করাও ছেড়ে দিলো!বিয়ের প্রথম দিকে মিরা খুব ঘুরতে যেতে চাইতো,আমি তখন নিয়ে যেতে পারিনি,আসোলে আর্থিক দিক থেকে অতোটা সচ্ছল ছিলাম না,কিন্তু পরে সচ্ছলতা আসলো কিন্তু মন নেই!মিরাকে অবশ্য দুএকবার হালকাভাবে বলেছিলাম চলো ঘুরে আসি,মিরা কোনো উত্তর দেয় নি!খুব মেজাজ খারাপ হতো!!তাই বলা বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম।

আমি মিরাকে প্রায় ই বিমর্ষ হয়ে জানালার গ্রীল ধরে দাড়িয়ে থাকতে দেখতাম,কিন্তু কেনো যেনো জানতে চাইতাম না মন খারাপের কারন!মিরা চাপা স্বভাবের,কারন বের করাও কঠিন কাজ ছিলো,তাই আর আগবাড়িয়ে ঝামেলায় পড়তে চাইতাম না! তবে এতো না বলার মধ্যে মিরার কয়েকটা আবদার খুব মনে পড়ে,আমাদের তৃতীয় বিবাহবার্ষীকি তে মিরা বলেছিলো আবির আসার সময় আমার জন্য বেলী ফুলের গাজরা আনতে পারবে?আজকে আমি তোমার পছন্দের নীল শাড়িটা পড়বো!

আমি সেদিন রাতে খালি হাতে গিয়েছিলাম,আমি আসোলে ভুলে গিয়েছিলাম!লজ্জায় আর মিরার সাথে কথা বলিনি,মিরা খুব সুন্দর করে সাজগোজ করে আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলো,সেদিন হয়তো ওকে ভালোবেসে বুকে টেনে নিতে পারতাম,কিন্তু আমি সাহস পাইনি,আর বেচারি রাগে অভিমানে খোবে ওপাশ ফিরে সারারাত কেদে বালিশ ভিজিয়েছে!সবকিছু বুঝেও আমি নিশ্চুপ ছিলাম!কেনো ছিলাম জানিনা!

সেদিনের পর মিরা আমার কাছে কিচ্ছু চায়নি!একদম কিচ্ছুনা!শুধু আমার মেয়ের ডেলিভারীর তিনদিন আগে আমার হাত ধরে বলেছিলো আবির একটা কথা রাখবে? আমি গম্ভীর মুখে বলেছিলাম হু বলো মিরা কাপা কাপা গলায় বললো,আমাদের বাবুটার আসতে আর বেশীদিন নাই,এই কয়টা দিন তুমি প্লিজ আমার কাছে থাকো,অফিস থেকে ছুটি নিলে হয় না?

আমার কেনো যেনো ন্যাকামি লাগলো,এসব আহ্লাদ কথাবার্তা বিয়ের আগেই ভালোলাগতো এখন লাগেনা!তবুও নিজেকে শান্তরেখে বললাম,মিরা তুমি তো শিক্ষিত মেয়ে,নিজেও জব করেছো,কাজের জায়গায় কোনো কম্প্রোমাইজ চলেনা এটা তো বুঝো! তুমি ভয় পাচ্ছো কেনো?মা বাবা রিতু আছে,সবাই তো তোমার পাশেই আছে! মিরা ছলছল চোখে আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বললো প্লিজ আবির প্লিজ!আমার তোমাকে খুব পাশে পেতে ইচ্ছা হয়,প্লিজ জাস্ট কয়েকটা দিন!

আমি অনিচ্ছা সত্বেও বললাম ঠিকআছে আমি চেষ্টা করবো সত্য বলতে আমি কোনো চেষ্টা ই করিনাই,আমার কেনো যেনো বাসায় আসতে ভালো লাগতোনা!এমন না আমি মিরাকে ভালোবাসতাম না,অথবা পরনারী আশক্তি!তবু কেনো যেনো সংসারটা আমার ভালো লাগতোনা! আমার ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিয়ে আমার মিরা চলে গেলো তিনদিন পর,আমার স্ত্রী এনিমিয়ায় ভুগছিলো,নরমাল ডেলিভারীর পর প্রচন্ড রক্তখরনে মিরার মৃত্যু হয়!আমার বাচ্চাটাও হয় অসুস্থ প্রিম্যাচিউর বেবী!তাকে গ্লাসে রাখা হলো ট্রিটমেন্টের জন্য।

আমি সম্ভবত ট্রমায় ছিলাম,মিরার খাটিয়া কাধে নিলাম,নিজ হাতে আমার মিরাকে কবরে শোয়ালাম,মাটি দিলাম খুব স্বাভাবিক ভাবে!!তখনো জানতাম না আমি মিরার খুনি! মিরার শূন্যতা সেদিন বুঝলাম যেদিন বাড়িভর্তি মেহমান চলে যাওয়ার পর,আমার মিরার ঘরে ঢুকলাম!খাটে মিরার ওড়না পড়ে ছিলো,বুকের ভিতরটা মোচর দিয়ে উঠলো!আমার এমন লাগলো কেনো,আমি তো সংসার থেকে মুক্তি চেয়েছিলাম!নিজেকে যথাসম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে শুয়েপড়লাম!কিন্তু বিছানায় মিরার বালিশ কোলবালিশ পড়ে আছে আমার মিরা তো নাই!

আমার বুকের ভেতর হুহু করে উঠলো!আমি সেদিন প্রথম কাদলাম হাউমাউ করে কাদলাম,মিরার কাপড় চোপড় জড়িয়ে ধরে কাদলাম!!আমি কি হারিয়েছি,আমি কি কবরে রেখে আসলাম!আমার সব দুঃখ কষ্ট তো মিরার সাথে শেয়ার করতাম এখন এই কষ্ট আমি কাকে বলবো?একা ঘরে আমার দম বন্ধ হয়ে আসলো!!আমি তো সংসার থেকে মুক্তি চেয়েছিলাম,মিরার কাছ থেকে তো চাই নি,তবে কেনো মিরা চলে গেলো!কিসের এতো রাগ খোব ছিলো ওর!কিসের এতো অভিমান,এতো স্বার্থপর নিষ্ঠুর ও!

আমি পাগলের মতো মিরার ড্রয়ারের কাপড় গুলো একটা একটা করে বের করতে লাগলাম,সব কাপড়ে মিরার শরীরের গন্ধ মিশে আছে!তারপর ই হঠাত চোখে পড়লো সেই ডায়েরীটা যেটা বিগত কয়েক বছর পড়া হয়নি!
আমি পড়তে লাগলাম,আর শিহরিত হলাম….আমি কতটা নিষ্ঠু, আমি কতটা পাষান! মিরা আমাকে বিশ্বাস করেছিলো,ভেবেছিলো আমি তার অভিযোগ গুলো পড়বো,শুধরাবো কিন্তু আমি দিনের পর দিন তাকে অবহেলা করেছি,আমার প্রতিটা অবহেলার গল্পশেষে মিরা গোটা গোটা করে লিখেছে,যত যাই হোক আমার আবির পৃথিবীর সেরা স্বামী!!এটা লিখার কোনো যুক্তি খুজে পেলাম না,হয়তো সে নিজেকে শান্তনা দিতো,আর মনে প্রানে চাইতো আমি সত্যিই আদর্শ স্বামী হই!

মিরার কিছু লেখা লেখা আমার মনে দাগ কেটে গেছে,যার জন্য আমি নিজেকে কোনোদিন মাফ করতে পারবোনা আবির তুমি তো জানতে আমার খুব জ্বর,আমার অসুখ করলে একা থাকতে ভালো লাগেনা,খেতে ভালো লাগেনা,কি হতো যদি বাসায় ফিরে আমার কপালে হাত রেখে জ্বর মাপতে,একটু আদর করতে!! তুমি এতো মন ভোলা কেনো আবির?আমাকেও ভুলে যাবা?অবশ্য চেষ্টা করে লাভ নাই আমি তোমাকে কোনোদিন ভুলতে দিবো না আমার আদর্শ স্বামী! আবির তুমি বকলে আমার খুব কষ্ট হয়,আমার কষ্টগুলো আর আগের মতো কেনো বুঝনা?আমাকে আর ভালো লাগেনা?আমার সাথে আর খারাপ ব্যবহার করোনা প্লিজ!

আমার কাটা হাতটা আবির নিজ হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো ঠিকি,কিন্তু একটাবার জিগেস করলোনা,মিরা ডান হত কেটেছে,ভাত খাবে কিভাবে?আমি হেল্প করবো?আবির তুমি কি জানোনা আমার তোমার হাতে খেতে ভালো লাগে!আজ না খেয়ে থাকবো,কি হবে খাবো না ভাত তুমি বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাও,আমার সাথে যাওনা আমাদের মেয়ে হবে শুনে আবির কষ্ট পেলো,কিন্তু খুব বাজে স্বপ্ন দেখি আজকাল,আবিরের সাথে আরেকজনের বিয়ে!!আল্লাহ তুমি আমার আবিরের সাথে আমার জন্নাত দিয়ো আর কিছু চাই না!!!আমার সেরা স্বামী যেনো শুধু আমারি থাকে এটাই ছিলো মিরার শেষ লেখা,আমার সাথে জান্নাত!!আমি কি করে পারবো আরেকজনের সাথে সংসার বাধতে!আমি তো মিরাকে অবহেলায় ছুড়ে ফেলে রেখে হত্যা করেছি!আমি যদি আমার স্ত্রীর খেয়াল রাখতাম তবে সে এতো রোগেশোকে ভুগতোনা!

সবচেয়ে বয়াবহ বেপার হলো,যখন আমি জানলাম,আমি নরমাল ডেলিভারি চেয়েছিলাম বলে, ওটিতে ঢোকার পর মিরা মত বদলে ফেলে,রীতিমতো জোরাজুরি করেই নরমাল ডেলভারী করতে চায়,এই মেয়েটা সারাজীবন আমার ইচ্ছার মূল্য দিয়ে আসলো! আর বিনিময়ে আমি তাকে দিলাম মৃত্যুদন্ড! আমার দেয়া প্রতিটি উপহার যত্নে আগলে রেখেছে,মরা গোলাপ বেলীতে ভরপুর ব্যাগ!কবেনা কবে দিয়েছি সব রেখেদিয়েছে! অথচ আমি ই তাকে ফেলে দিয়েছি!প্রচ্ন্ড রাগ অভিমান বুক ভরা কষ্টনিয়ে আমার মিরা চলে গেছে আমাকে ছেড়ে!দিয়ে গেছে উপহার হিসেবে আমার মেয়েকে! আমার মেয়েটা দেখতে অবিকল মিরার মতো হয়েছে।মিরার মতো রাগ ও হয়েছে মিরার শরীরের গন্ধ আমার মেয়ের শরীরেও!যে কিনা সকাল বিকাল রাতে মিরার সৃতি বহন করে!

আচ্ছা মানুষের কি আরেকটা জনম হয়?আরেকবার পৃথিবীতে আসা যাবে!যদি পারতাম তবে আমি সত্যি সত্যি আমার স্ত্রীর সেরা স্বামী হয়ে থাকতাম,ইশ যদি পারতাম একবার নিজেকে শুধরাতম মিরা জানো আমি এখন নিয়মিত নামাজ পড়ি,সত চিন্তা করি,সত ভাবে থাকতে চেষ্টা করি,আমাকে জান্নাতি হতে হবে তো,তা না হলে তোমার সাথে জান্নাতে যাবো কি করে বলোতো? আমি হয়তো আদর্শ স্বামী হতে পারনি কিন্তু আদর্শ বাবা হবো,দেখে নিও ওপারে ভালো থেকো আমার মায়াবতী…

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত