সারপ্রাইজ

সারপ্রাইজ

রুপা অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে । সে কিছুদিন যাবৎ লক্ষ্য করছে একটা ছেলে তাকে ফলো করছে। ব্যপারটা সে বুঝতে পেরেও কিছু মনে করে না। সে যে রাস্তা দিয়ে যায় ঠিক সেই পথেই ছেলেটা প্রতিদিন দাড়িয়ে থাকে। এছাড়া সে যে দিকে যায় ছেলেটা সেদিকেই ফলো করতে থাকে ।

কিন্তু এভাবে বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর রুপা ছেলেটার কাজকর্মে বিরক্তবোধ করতে থাকে । তাই সে ছেলেটাকে প্রতিদিন বকাবকি করলেও ছেলেটা হেসে চলে যায়। এভাবে প্রায় ১ মাস যাওয়ার পর ছেলেটা রুপাকে প্রপোজ করে। রুপা ছেলেটাকে নানান কথা বলে ফিরিয়ে দেয়। ছেলেটা চলে যাওয়ার আগে রুপাকে একটা কথা বলে যে, “রুপা তুমি আমায় আজ থেকে খুব বেশি মিস করবে ।” এরপর থেকে রুপা স্বাভাবিক ভাবেই স্কুল যেতে থাকে কিন্তু সেই ছেলেটাকে সে আর দেখতে পায়না। ছেলেটাকে রোজ কার মত বকা দেয়া গুলো রুপা ভীষন মিস করতে থাকে। এমনকি যে যায়গায় দাড়িয়ে ছেলেটা রুপাকে বিরক্ত করত সেখানে এখন দু একটা কুকুর ছাড়া আর কিছুই সে দেখতে পায়না। এবার সত্যি সত্যি রুপা ছেলেটাকে মিস করতে থাকে।

এভাবে প্রায় দুই মাস চলে যাওয়ার পর রুপা একদিন হঠাৎ করেই ছেলেটাকে সেই আগের জায়গাটাতে দেখতে পায়। ছেলেটা আবার রুপাকে প্রপোজ করলে এবার রুপা ছেলেটাকে মেনে নেয়। এরপর থেকে ওদের মধ্যে প্রেম চলতে থাকে। রুপা ছেলেটাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসতে শুরু করে। ছেলেটা রুপাকে বিভিন্ন ভাবে ইমোশনাল কথা বলে রুপাকে নিয়ে ঘুরতে শুরু করে। এমনকি স্কুল পালিয়ে এখন ওরা সিনেমা দেখতে যায়। ছেলেটার নাম অভি । রুপা এখন অভিকে ছাড়া আর কিছুই বুঝেনা। সে যা বলে রুপা তাই করতে প্রস্তুত থাকে। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগায় অভি। একদিনের ঘটনা,

অভিঃ-তুমি আমায় ভালোবাসো ?

রুপাঃ–পাগলের মত।

অভিঃ-তাহলে আমি তোমার সাথে একান্ত কিছু সময় কাটাতে চাই।

রুপাঃ-দেখো অভি। আমার এখনো মাত্র ১৫ বছর।

আমি এখনো নাবালিকা। প্লিজ তুমি অন্য কিছু চাও।

অভিঃ-তার মানে তুমি আমায় ভালোবাসোনা।ওকে ভালো থেকো।

রুপাঃ-তুমি বোঝার চেষ্টা কর।আমি তোমায় খুব ভালোবাসি।

এরপর অভি রুপাকে নানা ভাবে বোঝানোর চেষ্টাকরে। সে বলে একথা সে কাউকে বলবেনা। অনেক জোরাজুরির পর রুপা রাজি হয়ে যায় । কিন্তু রুপা অভিকে বলে সে অভিকে সারপ্রাইজ দিতে চায়। অভি বলে কিসের সারপ্রাইজ। রুপা বলল এখন নয় পরে। এর কিছুদিন পরে রুপার বাবা মা ও ছোটবোন তাদের ফুফুদের বাসায় বেড়াতে যায়। বাড়িতে অনেক কাজ থাকায় রুপা জোরাজুরি করে বাসায় থেকে যায়। সেদিন রুপা ফোন করে অভিকে বাসায় আসতে বলে। অভিতো খুশিতে আত্নহারা। সে মনে মনে খুব খুব খুশি। তাই সে রুপাদের বাসায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

রুপাঃ- আসছো।

অভিঃ-তোমায় খুব ভালোবাসি তাই না এসে থাকতে পারলাম না।

রুপাঃ-এসো ভেতরে এসো।

অভিঃ-তা আর বলতে হবেনা। বলেই অভি ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।

এরপর অভি আস্তে আস্তে রুপা দিকে এগুতে থাকে রুপাও পেছতে থাকে। এরপর অভি রুপার বিভিন্ন স্পর্শকাতর অংশে হাত দিতে থাকে। এরপর অভি রুপাকে বিছানায় শোয়ায়। সে যেইমাত্র রুপার সালোয়ার খুলতে যাবে ঠিক সেই সময় দরজায় কড়া নাড়তে থাকে কেউ। অভি খুব ভয় পেয়ে যায় এরপর রুপা অভিকে ফেলে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়। সাথে সাথেই পুলিশ ঘরে ঢুকে যায়। রুপা অভিকে বলে তোমার সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ আজ তোমাকে আমি দিলাম। এরপর রুপা সব ঘটনা পুলিশকে খুলে বলে। ৮ম শ্রেনির মেয়ের এমন সাহসীকতা দেখে পুলিশ তার অনেক প্রশংসা করে। চলে যাওয়ার সময় অভি তার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।

পুলিশের ” গাড়িতে করে যখন অভিকে নিয়ে যাওয়া হয় তখন রুপা একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। কেননা তার ভালোবাসা সত্য ছিল। কিন্তু অভির ভালোবাসা ছিল মিথ্যা। সে তাকে শুধু ভোগ করতে চেয়েছে। তার চোখে হালকা পানি আসে। পানিটা কষ্টের নয় আনন্দের। সে এমন একটা মেয়ে যে কিনা নিজের সম্মান রক্ষা করতে এত বড় একটা ঝুকি নিয়েছিল। আসলে রুপার বাবা মা যেদিন বেড়াতে যায় রুপা পুলিশকে সেদিনই ফোন দিয়ে জানিয়ে দেয়।রুপা আজ স্বপ্ন দেখছে পুলিশ হওয়ার। কেননা সব অজ্ঞাত মেয়েরা যারা এমন প্রতারনার শিকার হয় তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব যে রুপার।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত