–আপনি প্লিজ আমার কাছে আসবেন না (মিম কিছুটা কাপা কাপা কন্ঠে)
=কেন?তুমি আমার বউ আমি তোমার কাছে আসব নাতোকার কাছে যাবো?(আমি)
=জানি না(নিচু সরে)
=তাহলে আমি তোমার কাছে আসবই বলে খাটের উপর বসে পরলাম।আমি ওর কথা শোনারআগেই মুখের সামনে হতে ঘোমটা একটু সরালাম।—-
—-আমার সদ্য বিবাহিত বউকে দেখেই ক্রাশ খেলাম।কিন্তু চোখ দুটা লাল হয়ে আছে।আমি ওর গালে এক্টূহাত লাগাতেই বাচ্চার মতো কাদতে শুরু করল।
=আরে আরে তুমি কাদছো কেন?(আমি)
=(কেদেই চলেছে)
=আরে মেয়ে তুমি কাদছো কেন প্লিজ কাদা বন্ধ করোকিন্তু সে কাদা থামালোই না।
—-আমি তার থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলাম।আমি একটু বেশি গান শুনতে পছন্দ করি বলে রুম সাউন্ড প্রুফতাই সমস্যা হয়নি।নাহলে এতক্ষনে আমার আব্বু আম্মুএসে আমাকে ঝারতে শুরু করত।কিছুক্ষন বাদে সে এক্টূকান্না থামালো।
=কি হলো এভাবে কাদছিলে কেন? মাথা নিচু করে আছে আর থর থর করে কাপছে।আমিবুঝতে পারলাম সে প্রচন্ড ভয়ে আছে।আমি তার দিকেএকটু এগোতেই সে আমার থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টকরছে।
—-আমি ওর হাতটাএকটু ধরতেই সে কেপে উঠল।আমি তার ভয় দেখেহাতটা সরিয়ে নিলাম।
=তুমিকি আমাকে ভয় পাচ্ছো?(আমি)
=(মাথা নাড়িয়ে হ্যা সুচক)
=কেন?
=লজ্জা লাগছে(নিচু সরে)
=এই পাগলী আমিতো তোমার স্বামী আমার সামনে এতো লজ্জা কিসের?বলেই আমি ওর সামনে বসলাম এবং মুখটা উচুকরলাম।
—-আমি ওর মুখে ভয়ের ছাপ দেখতে পেলাম। তাই আমি সরে গিয়ে ওকে খাটে সুতে বললাম এবং আমি সোফায় আশ্রয় নিলাম।ওও আপ্নাদেরতো আমাদের পরিচয়টাই দিলাম না।আমি রবিন।আর আমার বউ এর নাম মিম।সে একটু বেশিই লজ্জাবতি।সে নাকি তার স্বামীকেও এতো লজ্জা পাচ্ছে।হায় আল্লাহ কেমন ভাগ্য আমার।তো আমার লজ্জাবতী বউটা আমাকে দেখলে প্রচন্ড ভয় পায়।
—-আমাকে দেখলেই সে একটু দূরে দূরে থাকে যেন আমি একটা খুনি আর আমি তাকে খুন করতে চাচ্ছি।তাই আমি এই সব ঝামেলা থেকে দূরে থাকতেই আমার ২ সপ্তাহ এর ছুটি কেন্সেল করে এক সপ্তাহ করে নিলাম।যাতে ওই মেয়েটা একটু মুক্তভাবে চলে। ১মাস পর আমার আজ একটু ভালো লাগছে না তাই হাফ টাইম অফিস করে বাসায় চলে আসলাম।—
—-বাসায় এসে কলিংবেল চাপতেই সে এসে দরজা খুলে দিল। সে বুঝেন নি?আরে আমার লজ্জাবতী বউ।সেয়ামাকে দেখে দোড়।এখন অবশ্য মাঝে মাঝে আমার সাথে কথা বলে।তবে বিশেষ প্রয়জন ছাড়া না।আমি আমার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।তার পর আমি বসে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছী।এমন সময় মিম আমার পাশে এসে দাড়াল।ওকে দেখে আমি আবার নতুন করে ওর প্রেমে পড়ে গেলাম।–
—-চুল গুলো ছাড়া।টানা হরিনি চোখ। উফফ কোইতো রোখলো
=কিছু বলবে?(আমি)
=আপনি আজ এতো দ্রুত চলে আসলেন কেন?(নিচু কন্ঠে মিম)
=ওর এমন কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম।তাও নিজেকে সামলে নিলাম।
=ভালো লাগছিল না তাই কেন কোনো সমস্যা?
=না মানে এমনি বলেই চলে যাচ্ছিল।—-
—-কিন্তু আমি ওর হাতটা ধরে একটানে ওকে আমার উপর টেনে নিলাম।
=এই কি করছেন আমাকে ছাড়ুন কেও দেখে ফেলবে। (মিম)
=কেও দেখবে না।আর দেখলেই বা কি হবে আমি তোমার স্বামী।
=প্লিজ আমাকে ছাড়ুন।
=আচ্ছা ছেঁড়ে দিব তার আগে একটা ইয়ে দেও
=ইয়ে কি
=ইয়ে মানে বুঝো না
=না
=আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি বলেই ওর কপালে আমার ভালোবাসার ছোয়া দিলাম। মেয়েটা কেপে উঠল।—
—এই এটা আপনি কি করলেন?(মিম)
=কেন আমি তোমাকে ইয়ে বোঝাচ্ছি।এখন আমাকে একটা ইয়ে দেও
=কেন আপনি দিলেন যে।
=সেটাতো আমি দিলাম এবার তুমি দেও
=না আমি দেব না
=তাহলে আমিও ছাড়বন না।
=প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন
=ছাড়ব না।তুমি আগে একটা ইয়ে দেও
=আমি দিতে পারব না
=দিবে না তুমি
=না
=আচ্ছা ঠিক আছে তোমার দিতে হবে না বলেই আমি ওকে ছেড়ে দিয়ে আমার ফোন আর মানিব্যাগ নিয়ে বাইরে যাবো এমন সময়
=এই আপনি কোথায় যাচ্ছেন
=বাইরে
=কোথায়
=এক ফ্রেন্ড এর বাসায়
=কেন?
=সে আমাকে অনেক পছন্দ করে তাই তার কাছে যাচ্ছি মিম এবার লাফ দিয়ে আমার সামনে এসে দাড়াল
=কেন আপনি সেখানে যাচ্ছেন কেন?(মিম)
=ইয়ে খেতে
=কেন আপনি তার কাছে কেন যাবেন?
=তুমিতো আমায় ইয়ে দিবেনা তাই আমি তার কাছেই যাই সেটা ভালো
=না না আপনি যাবেন না।—-
—-আমি আপনায় ইয়ে দেব কিন্তু দিনে একটা
=দিনে একটা মানে বছরে ৩৬৫ টা।থাক তার চেয়ে ভালো আমি ওর কাছেই যাই ও আমাকে মাসে অন্তত ৩০০ টা দিবে
=আচ্ছা ঠিক আছে দিনে ৫ টা তার বেশি না
=আচ্ছা ঠিক আছে এখন তাহলে দেও
এই আপনারা একটু ঘুরে দাড়ান আমার লজ্জা লাগছে। কিছুদিন পর রাতে আমি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আমার ছোট ভাগনীর সাথে একটু কথা বলছি।তার এবার ৫ বছর বয়স।এমন সময় মিম চুপি চুপি আমার পিছে এসে দাড়াল।আমি টের পেয়েও না বুঝার ভান করে দাঁড়িয়ে রইলাম।—-
—-আচ্ছা আমি রাখি এখন
=ঠিক আছে মামা
=আমার আদরটা দিবেনা?
=উম্মাহ
=I LOVE U
=I LOVE U TOO মামা
=আচ্ছা পরে কথা হবে।
বলেই ফোন্টা কেটে দিলাম।আমি ইচ্ছা করে ওর সাথে এমন করে কথা বলছিলাম কারন আমি জানি ও আমার ভাগনীর কন্ঠ শুনতে পারিনি।আর আমি যা বলেছে সেটা মানুষ শুনলে একটু ভুল বুঝতেই পারে।—-
—-আর আমি সেটাই চেয়েছিলাম। আমি পিছনে ঘুরতেই মেয়েটাকে দেখে একটু ভয় পাওয়ার ভান করলাম।মেয়েটার চোখ লাল হয়ে আছে
=কি ব্যাপার তুমি এখানে?কখন আসলে?একবার বলবে না।(আমি)
=কার সাথে কথা বলছিলেন?(মিম)
=কই কেও নাতো
=মিথ্যা বলবেন না আমি শুনেছি
=কি শুনেছো?
=আপনি ফোনে কাকে যেন I love u বললেন আবার একটা ইয়েও খেলেন কে মেয়েটা?
=ছিল একজন।—-
—-কেন তোমার জ্বলছে?
=জ্বলবে না কেন?আমার ভালোবাসার মানুষ অন্য কাউকে ভালোবাসি বললে আমার কি জ্বলবে না? আমি এবার পাশের একটি সোফায় বসে মিম কে আমার কোলে টেনে বসালাম।মেয়েটা কোনো বাধা দিল না।
=তার মানে আমার পাগলীটা আমাকে ভালোবাসে
=হুম(মাথা নিচু করে)
=তাহলে আমার থেকে এতো দূরে থাক কেন?
=লজ্জা লাগে।কিন্তু তাই বলে আপনি অন্য কাউকে ভালোবাসবেন? আমি ওর মাথা আমার বুকে রেখে দিয়ে বললাম
=আরে পাগলী ওটা আমার ছোট ভাগনী ছিল।
=আমি বিশ্বসাস করি না
=আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমায় কল রেকর্ড শোনাচ্ছি আমার ফোনের অটো রেকর্ড চালু আছে।—-
—-আমি সেটা ব্যাবহার করলাম।তার পর সে একটু শান্ত হোলো।
=সরি
=কেন
=আপনাকে সন্দেহ করার জন্য
=এর জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে
=কি শাস্তি (একটু ভয় পেয়ে)
=আজ থেকে আমি তোমার সাথে খাটে শোব আর তুমি আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবে
=না এটা হয়না
=আচ্ছা তাহলে আমি যাই
=কোথায়?
=সেই ফ্রেন্ড এর বাসায়
=মেরে ফেলব
=কাকে?
=আপনাকে
=কিভাবে?
=এভাবে
বলেই আমার ঠোটে ভালোবাসার ছোয়া দিয়ে দিল। আমি ওকে কোলে তুলে বেডরুমে নিয়ে গেলাম।আর বাকিটা ইতিহাস। এভাবেই মেয়েরা যতো যাই করুক না কেন।তারা তাদের ভালোবাসার ভাগ কাউকে দিতে রাজি থাকে না।আর আমি আমার ভাইদের কাছে এটাই আশা করব তারা যেন তাদের ভালোবাসার ভাগ শুধু একজনকেই দেয়।এবং কক্ষনো তাকে যেন কষ্ট না দেয়।
সমাপ্ত