ব্লাউজের হুক খুলে পিঠটা উদাম করে দিলাম। ইফাদ কোমরের বেল্ট দিয়ে কষিয়ে মারছে।ফুলশয্যার রাতে স্বামী তথা প্রিয় মানুষের হাতে এমন এলোপাতাড়ি মার খাবো কখনও ভাবিনি।যে ছেলেটা আমাকে এত আপ্রাণ হয়ে বিয়ে করল সে কেন ফুলশয্যায়ই এমন রূপ নিল? কাছে এসেই হাত ধরে যেখানে চুমুতে জড়িয়ে নেবার কথা সেখানে হাত ধরে হ্যাচকা টানে বিছানার কাছটায় এনে কষিয়ে প্রথমেই কয়েকটি চড়-থাপ্পড় লাগালো। বিস্ময়ের ঘোর না কাটতেই এক ধাক্কায় বিছানায় ফেলে মারার উপকরণ খুঁজতে আশপাশে মাতালের মতো তাকিয়ে যখন যুঁতসই কিছু পেলনা তখন ওয়্যার্ড্রোব খুলে বেল্ট বের করলো।কিন্তু কেন এমন হল? এসব ভাবার আগে নিজেকে বাঁচানোর চিন্তা করা উচিত।ইফাদ যখন আমার শত বাধা,প্রশ্নের তোয়াক্কা না করে এলোপাতাড়ি মারধর করেই চলছে বড্ড সাহস করে তখন পিঠ উদাম করে দিলেও এখন আঘাত সইবার মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সমস্ত শরীর কাঁপছে।প্রচণ্ড আঘাতে শরীর যেন কেটেকুটে ফালাফালা হয়ে যাচ্ছে।
দমখিঁচে চিৎকার আটকে রাখতে চাইছি,সেটা বোবা আর্তনাদ হয়ে বেরিয়ে আসছে।এই আর্তনাদ কি রুমের বাইরে শোনা যাচ্ছে?সবাই কি ভাবছে ? উফ্ ইফাদ কেন এমন করছে ? পেঁয়াজের খোসার মতোই হ্যাচকা টানে বেনারসি খুলে নিয়ে মেঝেতে ছুঁড়ে ফেলল। ইয়া আল্লাহ রক্ষা করো রক্ষা হলো তখনই যখন মারতে মারতে একসময় হাঁপিয়ে উঠল! এরপর এক মূহুর্ত দেরী না করে বের হয়ে গেল! ইফাদ ছেলে হিসেবে একটু জেদী টাইপের।কিন্তু পাঁচ বছরের প্রেমে আমি তার এরকম আচরণ সামান্যও আঁচ করতে পারিনি! আমার এতোদিনের বিচার বিশ্লেষণ ঝুপ করেই মিথ্যে হয়ে গেল? ইফাদ আসলে চাইছেটা কী? পরদিন সকাল বেলায় শ্বশুরালয়ের নতুন আত্মীয়দের খুব ভালো করে পরখ করতে লাগলাম।
এমন কেউ তো অবশ্যই আছে, কারো না কারো তো অবশ্যই আমার প্রতি বিদ্বেষ রয়েছে যার প্রভাব বাসর রাতের আকস্মিক মারধর। আর সেই বিদ্বেষীনি ব্যাক্তিটি যদি হন শ্বশুর কিংবা শ্বাশুড়ী তাহলে তো সব হিসাব মিলে যাবে। দুপুর নাগাদ শ্বশুর- শ্বাশুড়ী, দেবর-ননদিনীর সবাইকে কমবেশি যাচাইবাছাই করা হয়ে গেল কিন্তু সন্দেহভাজন কাউকে চোখে পড়লো না। শ্বশুরালয়ে প্রায় সবাইকেই আমার উপর সন্তুষ্ট মনে হল। বিশেষ করে আমার বিমান বাহিনী থেকে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত শ্বশুর মানুষটিকে বেশ ভালো মনের মনে হল। বাড়ির বড় বৌ বলে আমাকে একটু বেশি সন্মানে রাখার তাগিদ দিলেন সবাইকে। এমন মানুষদের সন্দেহ করাও অন্যায় মনে হল। আমার অবচেতন মনে ধারণা ছিল শ্বশুর কিংবা শ্বাশুড়ী কারও হয়তো আমাকে অপছন্দ, অথবা কোনো ব্যাপারে আমাদের লাভ-ম্যারেজ বলে মেনে নিতে পারছেন না।
যার ফল স্বরূপ ফুলসয্যায় ইফাদের এমন আচরণ কিন্তু এখন কাকে সন্দেহ করব? হঠাৎ করে কেন ইফাদ এমন বদলালো? আমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছেনা।সময় যতই গড়াচ্ছে দিন ফুরোচ্ছে আমার বুকের মধ্যখানি কেউ খামচে ধরছে ক্ষণে ক্ষণে। সবশেষে ইফাদ ড্রাগ এডিট কিনা সন্দেহ হল! হলে পাঁচটা বছরে আমি একবারও টের পেতাম না? ওদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে।ভয়ে একেকবার দিশেহারা হয়ে উঠছি।শরীরের ব্যাথাগুলো একেকবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে!অনেক খেয়ালী হয়ে শরীরে আঘাতের দাগগুলো লুকিয়ে রাখতে হচ্ছে।তবুও ননদের চোখে হাতের কব্জিতে রক্তজমা লালচে কালো আঘাতের চিহ্ন ধরা পড়ে গেল।একমাত্র ননদিনী আমার ভয়াটুকু চোখমুখে কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল বলে বারবার চাপাচাপি করছিল জানতে।কিন্তু তারসঙ্গে এখনই এসব ব্যাপারে আলোচনা করাটা ঠিক হবে বলে মনে হলো না। ওদিকে ইফাদ সারাদিন বেশ স্বাভাবিক ছিল।তবে একবারও আমার চোখাচোখি হয়নি।
একবারও আমার সঙ্গে কথা বলেনি।অথচ সংসার নিয়ে কত রঙিন স্বপ্ন দেখেছি! পার্কের শানবাধাই পাথরের চেয়ার টেবিলে চোখে চোখে কত হাজার দেনা পাওনার সময়ের কথা মেটাবার দিন এখন,অথচ ইফাদ বুকের ভেতরে সাইক্লোন ছুটে,মনের আঁজলা ভিজানো স্বপ্নেরা আজ ছোটাছুটি করে, যে পৃথিবী রঙধনুর ক্যানভাস ছিল সেই পৃথিবী বড্ড সাদাকালো বেরঙীন হয়ে উঠলো এক রাতেই। আমি বুঝে উঠতে পারলাম না কি হচ্ছে, কেমন হচ্ছে,কেন হচ্ছে? রাত বাড়তেই বুকটায় সাহস বাঁধলাম। নিজেকে গুছাতে চেষ্টা করলাম, ভাবলাম গতকাল রাতটা দুঃস্বপ্ন ছিল।আজ এমন হবে না । ঐতো ঐ আমার স্বপ্নের পুরুষ,ভালোবাসার একমাত্র মানুষ ইফাদ হাত নেড়েনেড়ে বাবার সঙ্গে কথা বলছে।কত্ত স্বাভাবিক কি সুন্দর !বেছেবেছে বিয়েতে গিফটের কয়েকটি শাড়ি থেকে টর্চ করে বাসন্তী রঙের একটা শাড়ি পরলাম,এ রংটা ইফাদের পছন্দের। চোখ ভরে কাজল দিলাম।
ঠোঁটে গাঢ় গোলাপি লিপস্টিক। আমার ঠোঁটের গাঢ় গোলাপি লিপস্টিক ইফাদের খুব পছন্দের।চুলগুলোও ছেড়ে দিলাম।আয়নার সামনে নিজেকে ইফাদের চোখে যাচাই করলাম। কোথায় যেন অসংগতী মনে হল , পরক্ষণেই ভ্রু-জোড়ার মাঝখানে টিপ জুড়লাম। আমি কখনোই কপালের ঠিক মাঝখানে টিপ পরতে পারিনা।যখনই টিপ পরেছি ইফাদ আদুরে গলায় বকাঝকা করতে করতে ঠিক করেছে। আজও কি এমন হবে? ভাবতেই গায়ে শিহরণ জাগে প্রতিটি রক্তকণিকা নেচে উঠে।মনে হয় সারা পৃথিবীজুড়ে শুধু ইফাদই একমাত্র পুরুষ , আর সেই পুরুষের একমাত্র অর্ধাঙ্গিনী আমি, শুধু আমি,কেবল আমি…ঘড়ির কাঁটা পৌনে একটা ছুঁইছুঁই। ইফাদের রুমে আসবার নাম নেই। এখনো বন্ধুদের সঙ্গে ছাদে বসে আড্ডায় বুঁদ ! আর আমি অপেক্ষায় অভিমানী হতে হতে রাগ জমাচ্ছি চোখেমুখে।কখন যে তন্দ্রা লেগেছে টের পাইনি।
দরজা লক হবার শব্দে তন্দ্রা ছুটে গেল। অজান্তেই চোখ বাঁই করে ঘুরে গেল ঘড়ির কাঁটায়।রাত প্রায় দুইটা। সোনালী রঙা পাঞ্জাবী পরে ইফাদ দরজার লকারে হাত রেখে এখনো কি যেন ভাবছে। পেছন থেকে মুখ দেখতে পাচ্ছি না। ফর্সা ঘাড়ের আনেকটা আমার দিকে তাকিয়ে যেন লোভ দেখাচ্ছে- দেখ ঋতু তোমার স্বপ্নের পুরুষটা কত্ত সুন্দর! পাঁচটা বছর ধরে যে সুন্দরতম মানুষটিকে ঘিরে স্বপ দেখেছো সে এখন একান্তই তোমার চিরসঙ্গী ! সমস্ত অধিকার জুড়ে সে সার্বক্ষনিক তোমার। ইফাদের সবচেয়ে সুন্দর হচ্ছে তার হাতদুটি ।পাঞ্জাবীর হাতা গুটানো,সেইদিকে তাকাতেই একটা জিনিস চোখে পড়তেই গা শিওরে উঠছে! ইফাদের হাতে একটা জালিবেত,অদ্ভুত তো! এই বেত দিয়ে কি হবে? এই বেত আবার আমার উপর খাটাবে নাতো!
বেলকনিতে কফির মগ হাতে দাঁড়িয়ে আছি,শহুরে সন্ধ্যার আকাশে ঘরমুখো পাখিদের কলরব নেই। সামনে বাড়ির নিচতলায় বেলকনিতে মাঝারি আকারের খাঁচায় একটা বিদেশি টিয়ে,কাঁচা হলুদ রঙের!বড্ড অস্থির এই টিয়েটা।দ্রুত গতিতে পুরো খাঁচায় ছুটছে, বলাযায় উপর থেকে নিচে নিচ থেকে উপর কেবল বৃত্তাকারে ঘুরছে,খোলা আকাশের খোঁজে! একটাই আশা-এই বন্দীশালার দ্বার তার জন্য হয়তো একদিন উন্মুক্ত হয়ে যাবে আমার বিবাহিত জীবনের আজ তৃতীয় দিন।এই তৃতীয় দিনে এসে আমার মনে হচ্ছে ঐ টিয়াটার মতোই আমি বন্দী, কয়েদি।শুধু মুখ ফুটে বলার ভাষার বড্ড অভাব। ভাবতেই অবাক হলাম, ইফাদের সংসার তিন দিনের মধ্যেই বন্দীশালা হবে পাঁচ বছরের রিলেশনে একবারও ভাবিনি।
বিয়ের পর থেকে তিনদিনে ইফাদ আমার সঙ্গে একটা কথাও বলেনি!দুটো রাত শুধু নিঃশব্দে মারধোর করেছে।কতবার প্রশ্ন করেছি–কি আমার অপরাধ? উত্তর আসেনি।আজ আর শরীরের দাগগুলো লুকিয়ে রাখা যায় নি শ্বশুরালয়ে।লজ্জা, আড়ষ্টতা লোপ পাচ্ছে। সবাই চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখেছে।কোনো প্রশ্ন করেনি। মনে হচ্ছে ইফাদকে সবাই ভয় পায়।এবং সবাই এই অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য লজ্জিত।এজন্যই হয়তো এবাড়ির প্রতিটি মানুষকে অল্প সময়ে খুব ভালো লেগেছে। ইফাদ কি চাইছে আমি স্বেচ্ছায় চলে যাই? আগামীকাল বৌভাতের পর ইফাদকে নিয়ে বাবার বাড়ি যাবার কথা।আব্বু আম্মু সব আয়োজন করছে।অথচ এদিকে আমি! অসংখ্য আশংকায় মন কেঁপে কেঁপে উঠছে।চোখের নিচে কালিতে শুকনো জলের দাগ।এ চোখ দেখে আম্মু ঠিকই বুঝে নেবে ভাবতে ভাবতে ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া কফির মগটা হাতে নিয়ে শ্বশুরের রুমে গেলাম।বাবা আমাকে দেখেই কাছে ডেকে পাশে বসালেন।চাঙ্গা স্বরে বললেন-
–কফি টা কি আমার জন্য?
আমি চমকে উঠলাম, এই ঠান্ডা কফি বাবার হাতে দেই কি করে? আমতা আমতা বললাম-
–বাবা দুমিনিট ওয়েইট করেন।আমি আপনার জন্য এক্ষুনি কফি করে আনছি।
ফেনা তোলা কফিতে চুমুক দিয়ে বাবা আমার মাথায় হাত রাখলেন।কাল রাতের আঘাতের চিহ্ন টা গলার কাছেই, পাছে তার চোখে পড়ে যায়, আঁচল তুলে ঘোমটাটা আরও বড় করলাম। বাবা আমাকে জড়িয়ে নিলেন,কিছুই বললেন না। আশপাশ নীরব, শুধু আমাদের সদ্য গড়া বাবা মেয়ের সম্পর্কের কিছু নিঃশ্বাসের শব্দ হচ্ছে।বাবা তার বুকে জড়িয়ে নিয়ে কেমন যেন নিঃশব্দ সান্ত্বনা দিলেন।আমি যেন এই নিস্তব্ধতায় খুঁজে পেলাম সঠিক পথ!
খালি মগটা নিয়ে ফেরার সময় বাবা ছোট্ট করে শুধু বললেন–“ঋতু মা,ইফাদ রাতে ফিরলে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলো” রাতে হালকা খাওয়ার পরেই ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, ইফাদ আজ রুমে ফিরতেই বাবার রুমে পাঠালাম।কতক্ষণ বাবার রুমে ছিল খেয়াল করতে পারছিনা।যখন ঘুম ভাঙল তাকিয়ে দেখি ইফাদ আমার সামনে দাঁড়িয়ে! খুব সম্ভবত আমার মুখের উপর তার নিঃশ্বাস এর পরশে ঘুম ভেঙেছে।ঘোর কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বিয়ের পর এই প্রথম বারের মতো ইফাদ কথা বলে উঠলো
–বাবার কাছে নালিশ করেছো এত্তো সাহস কে দিয়েছে?
–হুম না না তো
–আমি রোজ রাতে তোমার গায়ে হাত তুলি এটা বাবাকে বলতে লজ্জা করলোনা!?
–ইফাদ, প্লিজ শান্ত হও,শোনো আমি বাবাকে কিচ্ছু বলিনি বিশ্বাস করো।
–একদম চুপ,গলা টিপে মেরে ফেলবো।খুব বাড় বেড়েছে তাইনা? এখন যদি আদর করে গায়ে হাত দেই সে খবর কি বাবার কাছে যাবে হুম?
–কি আবোলতাবোল বলছো! বিয়ের পর থেকে তুমি পুরোপুরি বদলে গেছ।কিন্তু কেন?
–বিয়ে বিয়ে বিয়ে তোমরা মেয়েরা না এই শব্দটাকেই অনেক বেশি কিছু ভাবো,এই সামাজিক লোক দেখানো
নিয়ম টাকেই বড় মনে কর।একবারও ভেবেছো যদি মনের মিল না থাকে এই বিয়ে শব্দ টার কোনো মানে নেই।এই শব্দটা কেবল একটা শেকল অবশ্য কোনো কোনো মেয়ের জন্য এই শেকল সোনার শেকল!..
–আচ্ছা… আমি কি কখনো এমন বলেছি?এরকম বলার অর্থইবা কি?আমার অপরাধ টা জানিয়ে শাস্তি দাও অন্তত।আমি আমার কষ্টের চেয়ে তোমার কষ্টটায় বেশি আঘাত পাচ্ছি!ইফাদ প্লিজ… আমি আর সইতে পারছি না প্লিজ….
–মনে পড়ে ঋতু সেদিন, মিমের গায়ে হলুদের রাতের কথা…ভোররাতের দিকে সবাই যখন ক্লান্ত হয়ে ঘুমুলো আমি তোমাকে একটু কাছে টানলাম, কপালে চুমু খেলাম… তুমি আমার বুকের ভেতর মাথা রেখে একটু একটু কাঁপছিলে?
–হুম,, তো?
–এর পরপরই মিমের কোন এক আত্মীয় এসে পড়ায় আমি সতর্কতায় সেখান থেকে সরে গেছি।
–হুম,
–কিন্তু সেদিনের সেই ক্ষণটুকু আমি মন থেকে সরাতে পারিনি এখনো।তাই এরপর একদিন মনের সঙ্গে খুব যুদ্ধ করে তোমাকে ডেকে আনলাম হোটেল রুমে, মনে পড়ে ঋতু?
–তুমি কি বলতে চাইছো?ইফাদ আমি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি…।সেদিন আমি তোমার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করেছি এটা ঠিক কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি এটাও সত্যি।
–মিথ্যা সব মিথ্যা, মিথ্যা তুমি, তোমার ভালোবাসা, সব মিথ্যা।তোমার মতো মেয়েদের কাছে কেবল বিয়ে নামক শব্দটাই বড়।তোমরা বিয়ে শব্দটাকেই ভালোবাসো।সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত আন্তরিক ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই তোমাদের কাছে।আমার মন,আমার ভালোবাসার প্রয়োজন তোমার ছিল না কখনও।ছিল তো কেবল আজকের এই বিবাহিতা লেবাসের। নয়তো সেদিন হোটেলের রুমে আমাকে একটু ভুলের জন্য কষিয়ে চড় বসিয়ে দিতে না। বিয়ের জন্য চ্যালেন্জ ছুঁড়ে দিতে না,আমি তোমাকে ভালোবাসার অধিকার যদি রাখি তোমাকে আত্মীকভাবে পাবার অধিকারও নিশ্চয় ছিল।আমি তো কখনো তোমার স্থানে অন্য কাউকে বসাতে পারিনি।আমি তোমাকে ভালোবাসি তোমাকেই অর্ধাংগিনী ভেবেছি সবসময়।আমার কাছে তুমি এখন এইখানে আমার সংসারে যা তখনও তাই ছিলে এই বিশ্বাস বিয়ে নামক শব্দটাতেই ছিল আমার ভালোবাসার জন্য নয়! আজ আমাদের সমাজে প্রচলিত বিয়ে মানে যৌতুক আদান প্রদানের বৈধ আসর।
তোমার বাড়ি থেকে আসার সময় কতকত যৌতুক এনেছো গুনে শেষ করতে পারবে ঋতু? অথচ আমি তোমাকে সেই পাঁচ পাঁচটি বছর ধরে বিনা যৌতুকে বিনা বিনিময়ে ভালোবেসেছি, অস্থিমজ্জায়, শিরাউপশিরায় লালন করেছি। তুমি এই ভালোবাসা কে অবিশ্বাস করেছিলে। তোমার ভক্ষকবেশী সাজানো বিয়েতেই বিশ্বাস ছিল আমি তোমার বিশ্বাস পূর্ণ করেছি মাত্র। আমাকে নয় তোমার লোকদেখানো সংসার প্রয়োজন আমি সেই সংসার দিয়েছি।আমার ভালোবাসা তোমার প্রয়োজন নেই।তা থেকে তুমি নিজেকে বঞ্চিতা মনে করোনা যেন!