জামাইয়ের সাথে ঝগড়া করে একটা ফেসবুক আইডি খুললাম।নাম দিলাম এন্জেলিনা সাদিয়া।সুন্দর দেখতে একটা মেয়ের পিকও লাগিয়ে দিলাম। শুনেছি ফেসবুকে নাকি মানুষ প্রেম করে।শুধু প্রেম নয় বিয়েও নাকি অনেকে করেছে।আমিও ঠিক করেছি,ফেসবুকে প্রেম করে পালিয়ে যাব।আর থাকব না এই সংসারে।কথায় কথায় বলে আমার দ্বারা নাকি কিছু হবে না।এবার আমি দেখিয়ে দিব,আমি ও পারি। আইডি খুলতেই সুন্দর সুন্দর দেখতে একটা নয় ছয় সাতটা ছেলের রিকুয়েস্ট দেখেই খুশিতে বেডের উপর থেকে নিচে পড়ে গেলাম।আল্লাহ আমার দিকে মুখ তুলে তাকায়ছে।না হলে এত সুন্দর দেখতে ছেলেরা আমাকে রিকুয়েস্ট দেয়।আমাকে ঠেকায় কে।শুরু করে দিলাম প্রেম।
-হ্যালো।
-হ্যায়
-তুমি না অনেক কিউট।
-কি যে বলো,তুমিতো আমার থেকে সুন্দর।
-আচ্ছা তুমি কি ম্যারিড?
-তুমি টেনশন করো না থাকলেও ডিভর্স দিয়ে দিব।
-হাও কিউট।
সারা-রাত জামাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে চ্যাটিং করলাম।সেও দেখলাম ফোন নিয়ে ব্যস্ত।তাতে আমার কি আমি এখন প্রেম করাই ব্যস্ত। এভাবে তিন-চার দিন গেল।প্রেমতো জমে ক্ষীর।আমিও মহা আনন্দে আছি।আমি কি পারি সে এবার দেখতে পাবে। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবার মেসেঞ্জারে ডুকলাম।
-হায় বেপি!
-হ্যালো বাবুতা
-আমার বেপিটা কি করে?
-আর বলো না বাবু।মনটা আজ ভিষন খারাপ।
-কেন বাবু?
-আমার ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে।আম্মুর ফোন দিয়ে তোমার সাথে কথা বলছি।আম্মুকে বললাম টাকা দাও।টাকাতো দিলোই না উল্টে বকা দিল।সেই দুঃখে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিলাম।
-আহারে।তুমি না খেলে আমিও খাবো না।
-কি? তুমি এখনো খাওনি?
-তুমি না খেলে আমি খাই বলো?
-ওলে আমার বাবুতা।কিন্তু আমার ফোন না দিলে যে আমি খাব না প্রতিজ্ঞা করেছি।
-ওহ। আচ্ছা ঠিক আছে।(আমিতো খাওয়া দাওয়া শেষ করেছি ও খেলো কি না খেলো তাতে আমার কি)
-বাবু…
-হা বেপি
-তুমি আমাকে একটু ভালোবাসো না…
-এমন কেন বলছো বেপি
-আমি না খেয়ে আছি আর তুমি বলছো ঠিক আছে।
-নিজেই নিজের মুখে একটা চর মারলাম।এই জন্যই আমার জামাই বলে আমার দ্বারা কিছু হবে না।আচ্ছা বলো কি করব?
-টাকাটাতো তুমি দিলেই পারো?
-আমি?
-হা।দেখো না তোমার আলমাড়ির মধ্যে শাড়ির ভাজে কিছু টাকা পাও কি না?
-তুমি কি করে জানলে আমি শাড়ির ভাজে টাকা রাখি?
-আরে আইডিয়া।একেই বলে মনের মিল।বুঝনা।
-হুম।
জামাইয়ের কাছ থেকে কাল অনেক কষ্টে ১০০০০টাকা নিয়ে ছিলাম শপিং করার জন্য।নতুন নতুন প্রেম করার ক্ষপপরে পড়ে আজ তাও হারাতে বসলাম।মনকে শান্তনা দিলাম।প্রেম করলে একটু খরচ করতে হয়। জামাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে প্রেম আলাপ করতে লাগলাম।নিজে খেয়েও বললাম তুমি না খেলে আমি খাব না।জমানো টাকা যা ছিল সব তাদের পেছনে খরচ করলাম।প্রেমে পরলে মানুষ ত্যাগ শিকার করে আমি তার একমাত্র প্রমান।কত কষ্টের টাকা।একটু একটু করে সবটাই দিয়ে দিলাম।বুকটা ফেটে কান্না পাচ্ছিল।তবুও কাঁদিনি।ত্যাগ স্বিকার করছি বলে কথা। সকাল থেকেই জামাইয়ের সাথে তুমুল ঝগড়া। একপযার্য়ে তাকে বলেই দিলাম আজ আমি চলেই যাব-
-শোন তোমার সংসার আমি আর করব না।
-তা কোথায় যাবে শুনি।
-আমার বয়ফ্রেন্ডের কাছে?
-কে?ওই কিউট পোলা রাকিব?
-হা।কিন্তু তুমি নাম জানলে কি করে?
-ওটা আমার ফেক আইডি।
-তোমার?আরে ওটাতো একটা আমার আরো বয়ফ্রেন্ড আছে?
-হুম জানি।তোমার সাথে সংসার করছি আর তোমাকে চিনবো না।
-তাদের সাথেই যাব।
-তা কার সাথে যাবে।ভদ্র পোলা শুভ,ছোট ছেলে আবির,লাইকার বয় ইমরান নাকি ফেসবুক ফেমাস করিম মিয়া।
-তুমি এদের সবাইকে চিনো?
-আরে বোকা ওগুলো সবই আমার আইডি।
-কি?তারমানে টাকা গুলো সব তুমি নিয়েছো।আমাকে মিথ্যা বলে।
-আমার টাকা আমি নিয়েছি।মিথ্যা বলার কি আছে?
-আমি আর থাকব না।
-যাও না।ওই যে দরজা।
-সত্যি যাব বলে দিলাম
-একদম।তা টাকা পয়সা কি কিছু আছে নাকি লাগবে?
-সবইতো নিয়ে নিয়েছো।
-এই নাও ভাড়ার টাকা।যা আছে চলে যেতে পারবে।
-লাগবে না বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম।কিছুক্ষন পর আবার রুমে আসলাম বলছিলাম-
-হা বলো না।আমি জানতাম তুমি ওই দরজা পযর্ন্তই যাবে।
-সবই তো তোমার আইডি তাই না।
-জ্বি
-কিং স্টার রবিন এটা কেন বাদ দিলে?এটা নিশ্চয় তোমার না?
-ওহ হা বলতে ভুলে গিয়ে ছিলাম।
-কি?
-মানে ওটা ও আমি।
-আমি অজ্ঞান।তবে বয়ফ্রন্ডের শোকে না আমার টাকার শোকে।